ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪

নেশার টাকা না পেয়ে আমবাগান কেটে সাবাড়!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৫৯:৩২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ নভেম্বর ২০২৩
  • / ১৮ বার পড়া হয়েছে

জীবননগর অফিস:
জীবননগর উপজেলার ধোপাখালী গ্রামে নেশার টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় স্বামী সোহেল রানার নির্যাতনে ঘরছাড়া হয়েছেন তরুণা খাতুনসহ তার বিধবা মা। রাতের আধারে শাশুড়ীর দুই বিঘা জমির আমবাগান কেটে সাবাড় করে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে। তরুণা খাতুন জীবননগর উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের ধোপাখালী গ্রামের পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা মৃত আবুল কালামের কনিষ্ঠ কন্যা।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালে তরুণার বিয়ে হয় একই গ্রামের বাসিন্দা জমশের আলীর ছেলে সোহেল রানার সাথে। তাদের প্রায় ৮ বছরের দাম্পত্য জীবনে ফুটফুটে এক শিশুকন্যা ও এক ছেলের জন্ম হয়। দাম্পত্য জীবনের শুরুতে সোহেল রানা সংসারে অভাব অনটন থাকায় ঢাকায় একটি দোকান দিয়ে ব্যবসা করত। গত কয়েক বছর দাম্পত্য জীবন ভালো চললেও বাকি দুই বছরই মাদক সেবন করে তরুণার ওপর অত্যাচার ও নির্যাতন শুরু করে। অবশেষে নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তরুণা তার মায়ের কাছে চলে আসে। এবং তরুণা সোহেল রানাকে তালাক দিয়ে দেয়। তালাক দেওয়ার পর সোহেল রানা তার শ্বশুরবাড়ি ভাঙচুর চালায়। তার ভয়ে তরুণা ও তার মা নিজ গ্রাম ছেড়ে জীবননগরে বাসা ভাড়া করে বসবাস করছেন।

সম্প্রতি গত বুধবার তরুণার মা বাড়ি থেকে বের হতেই সোহেল রানা চাকু নিয়ে তার শাশুড়ীর ওপর আক্রমণ চালায়। এসময় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ছুটে এলে সোহেল রানা পালিয়ে যায়। পরে রাতে সোহেল রানা তার দলবল নিয়ে দুই বিঘা জমির আমগাছ কেটে সাবাড় করে দেয়। এ ঘটনায় তরুণার মা বাদী হয়ে জীবননগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

গৃহবধূ তরুণার মা মুসলিমা খাতুন বলেন, ‘আমার ছেলে নেই, মেয়েকে নিয়ে আমার জীবন। নেশা করে প্রতিনিয়ত সোহেল রানা নির্যাতন চালায়। অবশেষে বাধ্য হয়ে তার থেকে আমার মেয়েকে ছাড়িয়ে নিয়েছি। তারপরও তার হাত থেকে আমরা রেহাই পাচ্ছি না। তার ভয়ে গ্রাম ছেড়ে জীবননগরে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকছি। সেখানে এসেও আমার ও আমার মেয়েকে হত্যা করার চেষ্টা করছে। শুধু তাই নয়, আমার শেষ সম্বল দুই বিঘা জমির আমগাছ কেটে দিয়েছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই। এবং এর থেকে আমি এবং আমার মেয়ে বাঁচতে চাই।’

ইউপি সদস্য টিটু মিয়া বলেন, ‘সোহেল রানা মাদক সেবন করে থাকে। এর আগেও সে তরুণার ওপর নির্যাতন করতো। সে সময় সামাজিক বিচার সালিশে মীমাংসা করা হয়েছিল। তারপর সে এখনও ভালো হয়নি। তার ভয়ে গোটা পরিবারের লোকজন গ্রামছাড়া। প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা না নিলে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’

জীবননগর থানার এসআই জামাল হোসেন বলেন, ‘ধোপাখালী গ্রামে মুসলিমা খাতুন নামের একজন থানায় এসে তার আমবাগান কেটে দেওয়ার অভিযোগ করেন। অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে, সে এলাকা থেকে পালিয়ে গেছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

নেশার টাকা না পেয়ে আমবাগান কেটে সাবাড়!

আপলোড টাইম : ০৮:৫৯:৩২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ নভেম্বর ২০২৩

জীবননগর অফিস:
জীবননগর উপজেলার ধোপাখালী গ্রামে নেশার টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় স্বামী সোহেল রানার নির্যাতনে ঘরছাড়া হয়েছেন তরুণা খাতুনসহ তার বিধবা মা। রাতের আধারে শাশুড়ীর দুই বিঘা জমির আমবাগান কেটে সাবাড় করে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে। তরুণা খাতুন জীবননগর উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের ধোপাখালী গ্রামের পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা মৃত আবুল কালামের কনিষ্ঠ কন্যা।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালে তরুণার বিয়ে হয় একই গ্রামের বাসিন্দা জমশের আলীর ছেলে সোহেল রানার সাথে। তাদের প্রায় ৮ বছরের দাম্পত্য জীবনে ফুটফুটে এক শিশুকন্যা ও এক ছেলের জন্ম হয়। দাম্পত্য জীবনের শুরুতে সোহেল রানা সংসারে অভাব অনটন থাকায় ঢাকায় একটি দোকান দিয়ে ব্যবসা করত। গত কয়েক বছর দাম্পত্য জীবন ভালো চললেও বাকি দুই বছরই মাদক সেবন করে তরুণার ওপর অত্যাচার ও নির্যাতন শুরু করে। অবশেষে নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তরুণা তার মায়ের কাছে চলে আসে। এবং তরুণা সোহেল রানাকে তালাক দিয়ে দেয়। তালাক দেওয়ার পর সোহেল রানা তার শ্বশুরবাড়ি ভাঙচুর চালায়। তার ভয়ে তরুণা ও তার মা নিজ গ্রাম ছেড়ে জীবননগরে বাসা ভাড়া করে বসবাস করছেন।

সম্প্রতি গত বুধবার তরুণার মা বাড়ি থেকে বের হতেই সোহেল রানা চাকু নিয়ে তার শাশুড়ীর ওপর আক্রমণ চালায়। এসময় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ছুটে এলে সোহেল রানা পালিয়ে যায়। পরে রাতে সোহেল রানা তার দলবল নিয়ে দুই বিঘা জমির আমগাছ কেটে সাবাড় করে দেয়। এ ঘটনায় তরুণার মা বাদী হয়ে জীবননগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

গৃহবধূ তরুণার মা মুসলিমা খাতুন বলেন, ‘আমার ছেলে নেই, মেয়েকে নিয়ে আমার জীবন। নেশা করে প্রতিনিয়ত সোহেল রানা নির্যাতন চালায়। অবশেষে বাধ্য হয়ে তার থেকে আমার মেয়েকে ছাড়িয়ে নিয়েছি। তারপরও তার হাত থেকে আমরা রেহাই পাচ্ছি না। তার ভয়ে গ্রাম ছেড়ে জীবননগরে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকছি। সেখানে এসেও আমার ও আমার মেয়েকে হত্যা করার চেষ্টা করছে। শুধু তাই নয়, আমার শেষ সম্বল দুই বিঘা জমির আমগাছ কেটে দিয়েছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই। এবং এর থেকে আমি এবং আমার মেয়ে বাঁচতে চাই।’

ইউপি সদস্য টিটু মিয়া বলেন, ‘সোহেল রানা মাদক সেবন করে থাকে। এর আগেও সে তরুণার ওপর নির্যাতন করতো। সে সময় সামাজিক বিচার সালিশে মীমাংসা করা হয়েছিল। তারপর সে এখনও ভালো হয়নি। তার ভয়ে গোটা পরিবারের লোকজন গ্রামছাড়া। প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা না নিলে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’

জীবননগর থানার এসআই জামাল হোসেন বলেন, ‘ধোপাখালী গ্রামে মুসলিমা খাতুন নামের একজন থানায় এসে তার আমবাগান কেটে দেওয়ার অভিযোগ করেন। অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে, সে এলাকা থেকে পালিয়ে গেছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’