ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য; ইজিবাইকসহ টিভি জব্দ : বিভিন্নজনকে জেল-জরিমানা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:২৯:২২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ জুন ২০২১
  • / ৫৫ বার পড়া হয়েছে

৫ম দিনের লকডাউনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান, ১১৪ জনের কাছ থেকে প্রায় ৯৩ হাজার টাকা আদায়
কাজহীন মানুষের ঘরে ঘরে খাবার পৌছে দেওয়ার কথা ভাবছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম
নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গা সদর পৌরসভা, আলুকদিয়া ইউনিয়ন, দামুড়হুদা ও জীবননগর উপজেলায় চলছে কঠোর লকডাউন। সংক্রমণ রোধে প্রশাসনের ঘোষিত এসব এলাকায় লকডাউন চলছে বেশ কয়েবদিন ধরে। চুয়াডাঙ্গা শহরে পঞ্চম দিনের লকডাউনের মধ্যেও মানুষের তেমন কোনো আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। তবে এদিন প্রশাসন ও পুলিশসহ অন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মাঠে ছিল বেশ সক্রিয়ভাবে। পুলিশ ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের প্রভাবে জনসমাগম কিছুটা কম দেখা গেছে। এদিকে করোনার সংক্রমণ হার বৃদ্ধির খবরে মানুষের মধ্যে কিছুটা ভীতিও দেখা গেছে। তবে এদিনও যারা বাইরে বের হয়েছে, তাদেরকে পুলিশি জেরার মুখে পড়তে হয়েছে। একইসাথে জেলা প্রশাসনের ১১টি ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে জেলায় ১১৪ জনকে ৯২ হাজার ৪৮০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া লকডাউন না মানায় ১ জনকে ৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে এবং ১টি টিভি ও ৩২টি ইজিবাইক জব্দ করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গা সদর পৌর এলাকায় পঞ্চম দিনে পুলিশ ও প্রশাসনের ভূমিকা ছিল চোখে পড়ার মতো। শহরের সড়ক মোড় থেকে পাড়ার অলিগলি সবখানেই সক্রিয় ছিল প্রশাসন। প্রশাসনের সক্রিয়তায় সড়কে লোকজনের উপস্থিতি ছিল তুলনামূলক কম। বাজারঘাটেও তেমন কাউকে দেখা যায়নি। তারপরও যারা লকডাউন উপেক্ষা করে বাইরে বের হয়েছিল তাদেরকে পুলিশ ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের বাঁধার মুখে পড়তে হয়েছে। সেখানে সদুত্তোর দিতে না পারায় অনেককে গুণতে হয়েছে জরিমানা। আবার অনেককে ফেরত পাঠানো হয় বাড়িতে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিনভর অভিযান চালায় প্রশাসনের বেশ কয়েকটি দল।
সকাল আটটায় চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া আফরিন, নেজারত ডেপুটি কালেক্টর আমজাদ হোসেনসহ প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ পৌরসভার মোড়ে অভিযান চালায়। এসময় শহীদ আবুল কাশেম সড়ক ও কবরী রোডে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চলাচলকারী ৩২টি ইজিবাইক আটক করা হয়। প্রশাসন থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, লকডাউনে শহরে ইজিবাইক চলবে না। এ অভিযানের পর থেকে শহরে ইজিবাইকের সংখ্যা কম দেখা গেছে। টানা পাঁচদিনের লকডাউনের মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবারই ছিল শহরে ইজিবাইকের দাপট কম এবং কিছুটা লকডাউন লকডাউন ভাব।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ সাদিকুর রহমান গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার কোর্টমোড়, বড় বাজার চৌরাস্তা মোড়, আলী হোসেন মার্কেট, পৌরসভা মোড়, শেকরাতলা মোড়, ইসলামপাড়ার মোড়, তালতলা, হাজরাহাটি এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা কর। এসময় স্বাস্থ্যবিধি না মানার অপরাধে দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ১৮৮ ধারায় ৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৬ হাজার ৭ শ টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া লকডাউন উপেক্ষা করে চায়ের দোকানে টেলিভিশন চালানোর অপরাধে একটি টেলিভিশন সেট জব্দ করা হয়।
এদিকে, প্রশাসনের এ ধরনের পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছেন জেলার সচেতন মহলের মানুষ। তাঁরা বলছেন, এভাবে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়ন করলে সপ্তাহ ঘোরার আগেই কমে যাবে করোনা সংক্রমণের হার। মাস্ক পড়াসহ স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।
জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে প্রশাসন তৎপর আছে। শুধুমাত্র লকডাউন বাস্তবায়নের কথায় আমরা ভাবছি না, আমরা কাজহীন মানুষের ঘরে ঘরে খাবার পৌছে দেওয়ার কথাও ভাবছি।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য; ইজিবাইকসহ টিভি জব্দ : বিভিন্নজনকে জেল-জরিমানা

আপলোড টাইম : ০৯:২৯:২২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ জুন ২০২১

৫ম দিনের লকডাউনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান, ১১৪ জনের কাছ থেকে প্রায় ৯৩ হাজার টাকা আদায়
কাজহীন মানুষের ঘরে ঘরে খাবার পৌছে দেওয়ার কথা ভাবছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম
নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গা সদর পৌরসভা, আলুকদিয়া ইউনিয়ন, দামুড়হুদা ও জীবননগর উপজেলায় চলছে কঠোর লকডাউন। সংক্রমণ রোধে প্রশাসনের ঘোষিত এসব এলাকায় লকডাউন চলছে বেশ কয়েবদিন ধরে। চুয়াডাঙ্গা শহরে পঞ্চম দিনের লকডাউনের মধ্যেও মানুষের তেমন কোনো আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। তবে এদিন প্রশাসন ও পুলিশসহ অন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মাঠে ছিল বেশ সক্রিয়ভাবে। পুলিশ ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের প্রভাবে জনসমাগম কিছুটা কম দেখা গেছে। এদিকে করোনার সংক্রমণ হার বৃদ্ধির খবরে মানুষের মধ্যে কিছুটা ভীতিও দেখা গেছে। তবে এদিনও যারা বাইরে বের হয়েছে, তাদেরকে পুলিশি জেরার মুখে পড়তে হয়েছে। একইসাথে জেলা প্রশাসনের ১১টি ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে জেলায় ১১৪ জনকে ৯২ হাজার ৪৮০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া লকডাউন না মানায় ১ জনকে ৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে এবং ১টি টিভি ও ৩২টি ইজিবাইক জব্দ করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গা সদর পৌর এলাকায় পঞ্চম দিনে পুলিশ ও প্রশাসনের ভূমিকা ছিল চোখে পড়ার মতো। শহরের সড়ক মোড় থেকে পাড়ার অলিগলি সবখানেই সক্রিয় ছিল প্রশাসন। প্রশাসনের সক্রিয়তায় সড়কে লোকজনের উপস্থিতি ছিল তুলনামূলক কম। বাজারঘাটেও তেমন কাউকে দেখা যায়নি। তারপরও যারা লকডাউন উপেক্ষা করে বাইরে বের হয়েছিল তাদেরকে পুলিশ ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের বাঁধার মুখে পড়তে হয়েছে। সেখানে সদুত্তোর দিতে না পারায় অনেককে গুণতে হয়েছে জরিমানা। আবার অনেককে ফেরত পাঠানো হয় বাড়িতে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিনভর অভিযান চালায় প্রশাসনের বেশ কয়েকটি দল।
সকাল আটটায় চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া আফরিন, নেজারত ডেপুটি কালেক্টর আমজাদ হোসেনসহ প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ পৌরসভার মোড়ে অভিযান চালায়। এসময় শহীদ আবুল কাশেম সড়ক ও কবরী রোডে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চলাচলকারী ৩২টি ইজিবাইক আটক করা হয়। প্রশাসন থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, লকডাউনে শহরে ইজিবাইক চলবে না। এ অভিযানের পর থেকে শহরে ইজিবাইকের সংখ্যা কম দেখা গেছে। টানা পাঁচদিনের লকডাউনের মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবারই ছিল শহরে ইজিবাইকের দাপট কম এবং কিছুটা লকডাউন লকডাউন ভাব।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ সাদিকুর রহমান গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার কোর্টমোড়, বড় বাজার চৌরাস্তা মোড়, আলী হোসেন মার্কেট, পৌরসভা মোড়, শেকরাতলা মোড়, ইসলামপাড়ার মোড়, তালতলা, হাজরাহাটি এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা কর। এসময় স্বাস্থ্যবিধি না মানার অপরাধে দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ১৮৮ ধারায় ৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৬ হাজার ৭ শ টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া লকডাউন উপেক্ষা করে চায়ের দোকানে টেলিভিশন চালানোর অপরাধে একটি টেলিভিশন সেট জব্দ করা হয়।
এদিকে, প্রশাসনের এ ধরনের পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছেন জেলার সচেতন মহলের মানুষ। তাঁরা বলছেন, এভাবে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়ন করলে সপ্তাহ ঘোরার আগেই কমে যাবে করোনা সংক্রমণের হার। মাস্ক পড়াসহ স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।
জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে প্রশাসন তৎপর আছে। শুধুমাত্র লকডাউন বাস্তবায়নের কথায় আমরা ভাবছি না, আমরা কাজহীন মানুষের ঘরে ঘরে খাবার পৌছে দেওয়ার কথাও ভাবছি।