ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

নির্ভরশীলতা হ্রাসে কর্মসংস্থানে জোর দেয়া উচিত

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:১১:০২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮
  • / ২৯৩ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ তথ্য মোতাবেক দেশে নির্ভরশীল মানুষের অনুপাত দাঁড়িয়েছে ৫৪ ভাগ। অর্থাৎ প্রতি একশ’ কর্মে নিয়োজিত মানুষের ওপর নির্ভরশীল ৫৪ জন। এটি অস্বাভাবিক নয়। বিবিএস-এর তথ্যানুযায়ী ২০০২ সালে প্রতি একশ’ জন কর্মে নিয়োজিত মানুষের বিপরীতে নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর অনুপাত ছিল ৮০ জন। ২০১১ সালে এই অনুপাত নেমে আসে ৬৮ দশমিক ৪ জন। গত পাঁচ বছর ধরে এই অনুপাত ঘুরপাক খাচ্ছে সাড়ে ৫৫ ভাগে। এ থেকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ক্রমোন্নতি সম্পর্কেও ধারণা মেলে বৈকি। বর্তমানে কর্মক্ষেত্রে নারীরা অনেক দূর অগ্রসর হয়েছে, বিশেষ করে পোশাক শিল্পে। এর বাইরেও প্রায় এক কোটি প্রবাসী বাংলাদেশী নিয়মিত অর্থ পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করছেন। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিসহ প্রবৃদ্ধিও যথেষ্ট ইতিবাচক। দেশে তারুণ্যের প্রাধান্যও বাড়ছে। সে অবস্থায় তরুণদের কর্মশক্তিকে কাজে লাগাতে পারলে আগামীতে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পাশাপাশি নির্ভরশীল মানুষের সংখ্যা কমে আসবে নিঃসন্দেহে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৭ লাখ ৫০ হাজার। এর মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ৮ কোটি ১০ লাখ এবং নারী ৮ কোটি ৭ লাখ ৫০ হাজার। সেক্ষেত্রে পুরুষ ও নারীর অনুপাতে ভারসাম্য বিরাজ করছে। তবে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। পরিসংখ্যান ব্যুরো বেকারের সংখ্যা ২৬ লাখ বললেও বাস্তবে এই সংখ্যা অনেক বেশি। তবে মোট জনসংখ্যার ৬৬ শতাংশই তরুণ ও কর্মক্ষম বিষয়টি নিঃসন্দেহে ইতিবাচক। আরও যা আশার কথা তা হলো, দিনে দিনে বাড়ছে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা। ২০৩০ সাল নাগাদ এই সংখ্যা পৌঁছাবে ৭০ শতাংশে। বাংলাদেশের জনসংখ্যার এহেন অগ্রগতির খবর প্রকাশিত হয়েছে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচীর (ইউএনডিপি) প্রতিবেদনে। এতে জনসংখ্যার সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরে বলা হয়েছে, কর্মক্ষম জনশক্তিকে কাজে লাগানোর মতো উন্নত শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ভিন্নধর্মী কাজ, কারিগরি দক্ষতা, সৃজনশীল জ্ঞান ও প্রশিক্ষণ বাংলাদেশের গড়ে তুলতে হবে। অদক্ষ জনশক্তিকে রূপান্তরিত করতে হবে দক্ষ জনশক্তিতে। জোর দিতে হবে কারিগরি শিক্ষা সম্প্রসারণের ওপর। বাড়াতে হবে শিক্ষার মান। জ্ঞান-বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার ওপর সবিশেষ গুরুত্বারোপ করতে হবে। নারী-পুরুষের সমতা অর্জনের দিকে নজর দিতে হবে। সর্বোপরি কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য জোর দিতে হবে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ ও শিল্পায়নের ওপর। আমরা মনে করি দেশে যে মানব সম্পদ রয়েছে তা ব্যবহারের জন্য পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। তাই সরকারি আধাসরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানসমূহে শূন্যপদে নিয়োগ এবং বিপুল যুবশক্তিকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থানে নিয়োজিত করতে পারলে আরও অগ্রগতি হতে পারে। আমরা শিক্ষিত যুবকদের আত্মকর্মসংস্থানের ওপর জোর দেওয়ার জন্য আহবান জানাই।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

নির্ভরশীলতা হ্রাসে কর্মসংস্থানে জোর দেয়া উচিত

আপলোড টাইম : ০৯:১১:০২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ তথ্য মোতাবেক দেশে নির্ভরশীল মানুষের অনুপাত দাঁড়িয়েছে ৫৪ ভাগ। অর্থাৎ প্রতি একশ’ কর্মে নিয়োজিত মানুষের ওপর নির্ভরশীল ৫৪ জন। এটি অস্বাভাবিক নয়। বিবিএস-এর তথ্যানুযায়ী ২০০২ সালে প্রতি একশ’ জন কর্মে নিয়োজিত মানুষের বিপরীতে নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর অনুপাত ছিল ৮০ জন। ২০১১ সালে এই অনুপাত নেমে আসে ৬৮ দশমিক ৪ জন। গত পাঁচ বছর ধরে এই অনুপাত ঘুরপাক খাচ্ছে সাড়ে ৫৫ ভাগে। এ থেকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ক্রমোন্নতি সম্পর্কেও ধারণা মেলে বৈকি। বর্তমানে কর্মক্ষেত্রে নারীরা অনেক দূর অগ্রসর হয়েছে, বিশেষ করে পোশাক শিল্পে। এর বাইরেও প্রায় এক কোটি প্রবাসী বাংলাদেশী নিয়মিত অর্থ পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করছেন। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিসহ প্রবৃদ্ধিও যথেষ্ট ইতিবাচক। দেশে তারুণ্যের প্রাধান্যও বাড়ছে। সে অবস্থায় তরুণদের কর্মশক্তিকে কাজে লাগাতে পারলে আগামীতে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পাশাপাশি নির্ভরশীল মানুষের সংখ্যা কমে আসবে নিঃসন্দেহে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৭ লাখ ৫০ হাজার। এর মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ৮ কোটি ১০ লাখ এবং নারী ৮ কোটি ৭ লাখ ৫০ হাজার। সেক্ষেত্রে পুরুষ ও নারীর অনুপাতে ভারসাম্য বিরাজ করছে। তবে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। পরিসংখ্যান ব্যুরো বেকারের সংখ্যা ২৬ লাখ বললেও বাস্তবে এই সংখ্যা অনেক বেশি। তবে মোট জনসংখ্যার ৬৬ শতাংশই তরুণ ও কর্মক্ষম বিষয়টি নিঃসন্দেহে ইতিবাচক। আরও যা আশার কথা তা হলো, দিনে দিনে বাড়ছে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা। ২০৩০ সাল নাগাদ এই সংখ্যা পৌঁছাবে ৭০ শতাংশে। বাংলাদেশের জনসংখ্যার এহেন অগ্রগতির খবর প্রকাশিত হয়েছে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচীর (ইউএনডিপি) প্রতিবেদনে। এতে জনসংখ্যার সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরে বলা হয়েছে, কর্মক্ষম জনশক্তিকে কাজে লাগানোর মতো উন্নত শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ভিন্নধর্মী কাজ, কারিগরি দক্ষতা, সৃজনশীল জ্ঞান ও প্রশিক্ষণ বাংলাদেশের গড়ে তুলতে হবে। অদক্ষ জনশক্তিকে রূপান্তরিত করতে হবে দক্ষ জনশক্তিতে। জোর দিতে হবে কারিগরি শিক্ষা সম্প্রসারণের ওপর। বাড়াতে হবে শিক্ষার মান। জ্ঞান-বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার ওপর সবিশেষ গুরুত্বারোপ করতে হবে। নারী-পুরুষের সমতা অর্জনের দিকে নজর দিতে হবে। সর্বোপরি কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য জোর দিতে হবে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ ও শিল্পায়নের ওপর। আমরা মনে করি দেশে যে মানব সম্পদ রয়েছে তা ব্যবহারের জন্য পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। তাই সরকারি আধাসরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানসমূহে শূন্যপদে নিয়োগ এবং বিপুল যুবশক্তিকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থানে নিয়োজিত করতে পারলে আরও অগ্রগতি হতে পারে। আমরা শিক্ষিত যুবকদের আত্মকর্মসংস্থানের ওপর জোর দেওয়ার জন্য আহবান জানাই।