ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত : পরিচালনা অবৈধ করেছে হাইকোর্ট

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৪:৩৩:৪৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ মে ২০১৭
  • / ৩১৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনের ১১টি ধারা ও উপধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলেও ঘোষণা করা হয়েছে। পৃথক তিনটি রিট আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গত বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।
অবৈধ হওয়া ধারাগুলো হলো- ৫, ৬ (১), ৬ (২), ৬ (৪), ৭, ৮ (১), ৯, ১০,১১, ১৩ ও ১৫। রায়ের ফলে এখন আর ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা যাবে না, তা করতে হলে আবার সংবিধানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে নতুন আইন প্রণয়ন করতে হবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। রায়ে বলা হয়, এ ধারাগুলো সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গের মধ্যে (নির্বাহী, আইন ও বিচার বিভাগ) ক্ষমতার পৃথককরণ-সংক্রান্ত সংবিধানের দুটি মৌলিক কাঠামোর বিরোধী। এ ১১টি বিধানই বিচার বিভাগের স্বাধীনতার সম্মুখভাবে আঘাত। রায়ের পর রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী হাসান এমএস আজিম বলেন, ২০০৯ সালের ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনের ১১টি বিধান অসাংবিধানিক ঘোষণা করার ফলে এ আইনের মাধ্যমে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে এখন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা যাবে না। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে হলে সংবিধান ও মাসদার হোসেন মামলার রায়ের আলোকে নতুন করে আইন প্রণয়ন করতে হবে। তিনি বলেন, রায়ে একই সঙ্গে রিট আবেদনকারী দুই ব্যক্তিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের দেয়া সাজা ও জরিমানার আদেশ অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। ১০ লাখ টাকা জরিমানার অর্থ ৯০ দিনের মধ্যে আবেদনকারী মজিবুর রহমানকে ফেরত দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু বলেন, খাদ্যে ভেজাল, কাপড়ের রঙ মেশানো, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও পরীক্ষার হলে নকল করাসহ আইনের তফসিলে থাকা ১০০টি অপরাধের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম পরিচালিত হতো, দ- দেয়া যেত। হাইকোর্টের রায়ের ফলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে না। তবে ওই ধরনের কোনো অপরাধ নজরে এলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে থানায় সোপর্দ করতে পারবেন। দুটি পৃথক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ছয় বছর আগে এবং অন্য একটি রিটের পরিপ্রেক্ষিতে পাঁচ বছর আগে রুল জারি করে জানতে চাওয়া হয়েছিল ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনের ৫,৬ (১), ৬ (২), ৬ (৪), ৭, ৮ (১), ৯, ১০,১১, ১৩ ও ১৫ ধারা কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না। ওই আইনের ৫ ধারায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার বিষয়ে বলা হয়েছে। এছাড়া ৬ (১), ৬ (২), ৬ (৪), ৭, ৮ (১), ৯, ১০ ধারায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা পদ্ধতি, ১১ ধারায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে দেয়া ক্ষমতা, ১৩ ধারায় আপিল ও ১৫ ধারায় তফসিল সংশোধনে সরকারকে দেয়া ক্ষমতার কথা বলা হয়েছে। রুল তিনটি একত্রে শুনানি শেষ হয় গত ৮ মার্চ। গত বৃহস্পতিবার রুল যথাযথ ঘোষণা করে রায় দেয়া হয়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত : পরিচালনা অবৈধ করেছে হাইকোর্ট

আপলোড টাইম : ০৪:৩৩:৪৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ মে ২০১৭

নিজস্ব প্রতিবেদক: নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনের ১১টি ধারা ও উপধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলেও ঘোষণা করা হয়েছে। পৃথক তিনটি রিট আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গত বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।
অবৈধ হওয়া ধারাগুলো হলো- ৫, ৬ (১), ৬ (২), ৬ (৪), ৭, ৮ (১), ৯, ১০,১১, ১৩ ও ১৫। রায়ের ফলে এখন আর ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা যাবে না, তা করতে হলে আবার সংবিধানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে নতুন আইন প্রণয়ন করতে হবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। রায়ে বলা হয়, এ ধারাগুলো সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গের মধ্যে (নির্বাহী, আইন ও বিচার বিভাগ) ক্ষমতার পৃথককরণ-সংক্রান্ত সংবিধানের দুটি মৌলিক কাঠামোর বিরোধী। এ ১১টি বিধানই বিচার বিভাগের স্বাধীনতার সম্মুখভাবে আঘাত। রায়ের পর রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী হাসান এমএস আজিম বলেন, ২০০৯ সালের ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনের ১১টি বিধান অসাংবিধানিক ঘোষণা করার ফলে এ আইনের মাধ্যমে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে এখন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা যাবে না। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে হলে সংবিধান ও মাসদার হোসেন মামলার রায়ের আলোকে নতুন করে আইন প্রণয়ন করতে হবে। তিনি বলেন, রায়ে একই সঙ্গে রিট আবেদনকারী দুই ব্যক্তিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের দেয়া সাজা ও জরিমানার আদেশ অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। ১০ লাখ টাকা জরিমানার অর্থ ৯০ দিনের মধ্যে আবেদনকারী মজিবুর রহমানকে ফেরত দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু বলেন, খাদ্যে ভেজাল, কাপড়ের রঙ মেশানো, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও পরীক্ষার হলে নকল করাসহ আইনের তফসিলে থাকা ১০০টি অপরাধের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম পরিচালিত হতো, দ- দেয়া যেত। হাইকোর্টের রায়ের ফলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে না। তবে ওই ধরনের কোনো অপরাধ নজরে এলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে থানায় সোপর্দ করতে পারবেন। দুটি পৃথক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ছয় বছর আগে এবং অন্য একটি রিটের পরিপ্রেক্ষিতে পাঁচ বছর আগে রুল জারি করে জানতে চাওয়া হয়েছিল ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনের ৫,৬ (১), ৬ (২), ৬ (৪), ৭, ৮ (১), ৯, ১০,১১, ১৩ ও ১৫ ধারা কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না। ওই আইনের ৫ ধারায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার বিষয়ে বলা হয়েছে। এছাড়া ৬ (১), ৬ (২), ৬ (৪), ৭, ৮ (১), ৯, ১০ ধারায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা পদ্ধতি, ১১ ধারায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে দেয়া ক্ষমতা, ১৩ ধারায় আপিল ও ১৫ ধারায় তফসিল সংশোধনে সরকারকে দেয়া ক্ষমতার কথা বলা হয়েছে। রুল তিনটি একত্রে শুনানি শেষ হয় গত ৮ মার্চ। গত বৃহস্পতিবার রুল যথাযথ ঘোষণা করে রায় দেয়া হয়।