ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

নির্বাচনী প্রচারে উত্তাপ-উত্তেজনা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৩২:২৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮
  • / ৩৬৮ বার পড়া হয়েছে

প্রতীক বরাদ্দের পর প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারযুদ্ধে ব্যস্ত সময় কাটছে কর্মী-সমর্থকদের। প্রথম ও দ্বিতীয় দিনে উত্তেজনা চরমে পৌছেছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে সংঘাত-সংঘর্ষে অন্তত ৬০ জন আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। প্রচারের প্রথম দিকে এ ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনায় নির্বাচনের মাঠ যে উত্তপ্ত হবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। নাটোরের লালপুর, কুমিল্লা সদরসহ জেলার কয়েকটি নির্বাচনী এলাকা, রাজবাড়ী, জামালপুর, যশোর, চাঁদপুর, শেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুরে সংঘর্ষ ঘটেছে। কোনো কোনো এলাকায় একই দলের অন্তঃকোন্দলের কারণে একপক্ষ আরেক পক্ষের ওপর চড়াও হয়েছে। প্রচারের শুরুতেই এ ধরনের ঘটনা অশুভ ইঙ্গিত বহন করছে।বাংলাদেশে নির্বাচনও একটা উৎসব। কিন্তু এই উৎসবের আনন্দে কাঁটা হয়ে দাঁড়ায় অন্তর্ঘাত। দলের অভ্যন্তরে যেমন, তেমনি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষও অনেক সময় সংঘাতের কারণ হয়। এরই সঙ্গে যুক্ত হয় এক শ্রেণির দুর্বৃত্ত। পেশিশক্তি ও অস্ত্রের ব্যবহারও নির্বাচনের সময় দেখা যায়। কখনো কখনো অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার লক্ষ করা যায়। এ সবই সুস্থ রাজনীতি ও সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায়। নির্বাচনের সময় আরেকটি দুঃখজনক ঘটনা ঘটে। এটি হচ্ছে, ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর থেকেই এ ধরনের ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে। এমনিতেই দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। নির্বাচন-পূর্ব বা পরবর্তী সহিংসতায় তাদের অনিরাপত্তা বোধ আরো বেড়ে যায়। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে দেশের বিভিন্নস্থানে নির্বাচনী সহিংসতা চরমে পৌঁছেছিল। নির্বাচনের দিন যতই এগিয়ে আসবে সংঘাত-সহিংসতা ততই বাড়বে, এমন আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।শম সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে দেশের সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে। ফলে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বড় দায়িত্ব। নির্বাচনে ভোটগ্রহণের আগ পর্যন্ত সব রাজনৈতিক দলেরই জয়লাভ করার লক্ষ্য থাকবে। আবার নির্বাচনে পরাজয় মেনে নেওয়ার মনোভাব আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে গড়ে ওঠেনি। নির্বাচনে সবাই জয়লাভ করতে চায়। নিজেদের জয় নিশ্চিত করতে গিয়েই অনেক ক্ষেত্রে সংঘাতের ঘটনা ঘটে। যেমনটি গত দুই দিনে ঘটেছে। এমনকি বিএনপি মহাসচিবের গাড়িবহরে হামলা হয়েছে। একই দিন নোয়াখালীতে সংঘর্ষে জড়িয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। ওদিকে বিভক্ত আদেশে ঝুলে গেছে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ভোটভাগ্য। সব মিলিয়ে নির্বাচনী উত্তেজনার পারদ চড়তে শুরু করেছে প্রচারণার শুরুতেই। নির্বাচনকেন্দ্রিক সংঘাত-সংঘর্ষ মারাত্মক আকার ধারণ করার আগেই কঠোরভাবে তা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরো সচেতন ও সতর্ক হতে হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আরো কঠোর হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো বিকল্প নেই।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

নির্বাচনী প্রচারে উত্তাপ-উত্তেজনা

আপলোড টাইম : ০৯:৩২:২৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮

প্রতীক বরাদ্দের পর প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারযুদ্ধে ব্যস্ত সময় কাটছে কর্মী-সমর্থকদের। প্রথম ও দ্বিতীয় দিনে উত্তেজনা চরমে পৌছেছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে সংঘাত-সংঘর্ষে অন্তত ৬০ জন আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। প্রচারের প্রথম দিকে এ ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনায় নির্বাচনের মাঠ যে উত্তপ্ত হবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। নাটোরের লালপুর, কুমিল্লা সদরসহ জেলার কয়েকটি নির্বাচনী এলাকা, রাজবাড়ী, জামালপুর, যশোর, চাঁদপুর, শেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুরে সংঘর্ষ ঘটেছে। কোনো কোনো এলাকায় একই দলের অন্তঃকোন্দলের কারণে একপক্ষ আরেক পক্ষের ওপর চড়াও হয়েছে। প্রচারের শুরুতেই এ ধরনের ঘটনা অশুভ ইঙ্গিত বহন করছে।বাংলাদেশে নির্বাচনও একটা উৎসব। কিন্তু এই উৎসবের আনন্দে কাঁটা হয়ে দাঁড়ায় অন্তর্ঘাত। দলের অভ্যন্তরে যেমন, তেমনি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষও অনেক সময় সংঘাতের কারণ হয়। এরই সঙ্গে যুক্ত হয় এক শ্রেণির দুর্বৃত্ত। পেশিশক্তি ও অস্ত্রের ব্যবহারও নির্বাচনের সময় দেখা যায়। কখনো কখনো অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার লক্ষ করা যায়। এ সবই সুস্থ রাজনীতি ও সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায়। নির্বাচনের সময় আরেকটি দুঃখজনক ঘটনা ঘটে। এটি হচ্ছে, ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর থেকেই এ ধরনের ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে। এমনিতেই দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। নির্বাচন-পূর্ব বা পরবর্তী সহিংসতায় তাদের অনিরাপত্তা বোধ আরো বেড়ে যায়। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে দেশের বিভিন্নস্থানে নির্বাচনী সহিংসতা চরমে পৌঁছেছিল। নির্বাচনের দিন যতই এগিয়ে আসবে সংঘাত-সহিংসতা ততই বাড়বে, এমন আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।শম সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে দেশের সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে। ফলে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বড় দায়িত্ব। নির্বাচনে ভোটগ্রহণের আগ পর্যন্ত সব রাজনৈতিক দলেরই জয়লাভ করার লক্ষ্য থাকবে। আবার নির্বাচনে পরাজয় মেনে নেওয়ার মনোভাব আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে গড়ে ওঠেনি। নির্বাচনে সবাই জয়লাভ করতে চায়। নিজেদের জয় নিশ্চিত করতে গিয়েই অনেক ক্ষেত্রে সংঘাতের ঘটনা ঘটে। যেমনটি গত দুই দিনে ঘটেছে। এমনকি বিএনপি মহাসচিবের গাড়িবহরে হামলা হয়েছে। একই দিন নোয়াখালীতে সংঘর্ষে জড়িয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। ওদিকে বিভক্ত আদেশে ঝুলে গেছে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ভোটভাগ্য। সব মিলিয়ে নির্বাচনী উত্তেজনার পারদ চড়তে শুরু করেছে প্রচারণার শুরুতেই। নির্বাচনকেন্দ্রিক সংঘাত-সংঘর্ষ মারাত্মক আকার ধারণ করার আগেই কঠোরভাবে তা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরো সচেতন ও সতর্ক হতে হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আরো কঠোর হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো বিকল্প নেই।