ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

নতুন সংক্রমণে ১০ নম্বরে বাংলাদেশ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৫৭:০৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ অগাস্ট ২০২০
  • / ১১৩ বার পড়া হয়েছে

করোনা প্রতিরোধে যথাযথ পদক্ষেপ নিন
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে সারা বিশ্বই এক ভয়ংকর পরিস্থিতির মুখোমুখি। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, সৃষ্ট মহামারির কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে প্রত্যেকটি খাত। অন্য দিকে মানুষের জীবনযাপনের স্বাভাবিকতাও ব্যাহত হয়েছে। এরই মধ্যে দীর্ঘদিন অচলাবস্থা চলার পর কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে বিশ্ব। যদিও আমলে নেওয়া জরুরি, সংক্রমণ ও মৃতের সংখ্যা থেমে নেই। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, করোনাভাইরাস সংক্রমিতের সংখ্যা হিসাবে বিশ্ব তালিকায় ১৫ নম্বরে থাকলেও নতুন করে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বিচারে বাংলাদেশের নাম ১০ নম্বরে উঠে এসেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশের ওপরে রয়েছে ভারত, আমেরিকা, ব্রাজিল, রাশিয়া, পেরু, মেক্সিকো, কলোম্বিয়া, আর্জেন্টিনা ও ফিলিপাইন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সোমবার বাংলাদেশে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয় ২ হাজার ৫৯৫ জন। এছাড়া খবরে প্রকাশিত তথ্য মতে জানা গেল, ২০ দিনের মাথায় ফের তিন হাজার ছাড়ায় দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত মানুষের সংখ্যা। সর্বশেষ গত ২৯ জুলাই ৩ হাজার ৯ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ শনাক্তের পর তিন সপ্তাহের শেষের দিকে (২০ দিন) এসে একদিনে এটি সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। মঙ্গলবার দুপুরে মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো করোনাভাইরাস বিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। আমলে নেওয়া দরকার, ওয়ার্ল্ডোমিটারের পরিসংখ্যান পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, তালিকার ১০টি দেশের মধ্যে পেরু, মেক্সিকো, কলোম্বিয়া, ফিলিপাইন এই ৪টি দেশে শনিবারের তুলনায় সোমবার নতুন আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে। এছাড়া এ তালিকার বাইরে দক্ষিণ আফ্রিকা, স্পেন, ফ্রান্স ও ইরাকেও ওই সময় নতুন সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। অথচ বিশ্বতালিকার ১৩ নম্বরে থাকা বাংলাদেশে নতুন করে শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা প্রায় ২৫ শতাংশ বেড়েছে। ফলে নিচের দিকে থাকা তিনটি দেশকে টপকে বাংলাদেশের অবস্থান ১০ নম্বরে এসে দাঁড়ায়। আমরা বলতে চাই, দেশের করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণকারী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা যখন বলছেন, বিশ্বের করোনায় আক্রান্ত দেশগুলোতে নতুন করে সংক্রমণের হার ক্রমেই নিম্নমুখী হলেও বাংলাদেশে তা অনেকটা একই জায়গায় স্থিতিশীল রয়েছে। বরং সময় সময়ে তা কিছুটা বাড়ছে। আর করোনা নিয়ে সরকারের দায়িত্বশীলদের বিভ্রান্তিকর তথ্যে জনসচেতনতা উধাও হয়ে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলেও যে বিষয়টি সামনে আসছে- তা আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি। কেননা, এ পরিস্থিতি চলমান থাকলে দেশে করোনার প্রকোপ হ্রাস পেতে দীর্ঘ সময় লাগবে এমন আশঙ্কার বিষয়ও উঠে এসেছে। এমনকি আগামীতে এ মরণব্যাধির প্রকোপ আরো ভয়াবহভাবে বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। আমরা বলতে চাই, যখন সারা বিশ্বেই কারোনভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে এবং এই পরিস্থিতিতে দেশে করোনা নিয়ে অসচেতনতার বিষয়টি আলোচনায় আসছে- তখন স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করাসহ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ঠিক রাখতেও উদ্যোগী হতে হবে। কেননা, এর আগে এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছে যে, মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোও হিমশিম খেয়েছে। ফলে কোথাও যেন দুর্বল স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ও নাজুক প্রস্তুতি না থাকে সেই দিকটি আমলে নেওয়াসহ করোনা রোধে জনসচেতনতার বিষয়টিও অগ্রহণ্য। এ কথা ভুলে যাওয়া যাবে না, স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চললে পরিস্থিতি মোকাবিলা কঠিন হয়ে পড়বে। মনে রাখতে হবে, সামগ্রিকভাবে করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ব এক ভয়ংকর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ফলে সচেতনতা বাড়ানোসহ প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ জারি রাখ অপরিহার্য। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, দেশের করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণকারী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের আশঙ্কার বিষয়টি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের পদক্ষেপ জারি রাখতে হবে। বলার অপেক্ষা রাখে না, পারস্পরিক বিচ্ছিন্নতা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, অকারণে ঘোরাফেরা না করাসহ প্রয়োজনীয় সচেতনতা এ সময়ে সবচেয়ে বেশি জরুরি। এছাড়া করোনা নিয়ে সরকারের দায়িত্বশীলদের বিভ্রান্তিকর তথ্যে জনসচেতনতা উধাও হয়ে যাওয়ার যে বিষয়টি সামনে আসছে, সেটা আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ ও তার বাস্তবায়ন হোক এমনটি প্রত্যাশিত।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

নতুন সংক্রমণে ১০ নম্বরে বাংলাদেশ

আপলোড টাইম : ০৯:৫৭:০৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ অগাস্ট ২০২০

করোনা প্রতিরোধে যথাযথ পদক্ষেপ নিন
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে সারা বিশ্বই এক ভয়ংকর পরিস্থিতির মুখোমুখি। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, সৃষ্ট মহামারির কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে প্রত্যেকটি খাত। অন্য দিকে মানুষের জীবনযাপনের স্বাভাবিকতাও ব্যাহত হয়েছে। এরই মধ্যে দীর্ঘদিন অচলাবস্থা চলার পর কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে বিশ্ব। যদিও আমলে নেওয়া জরুরি, সংক্রমণ ও মৃতের সংখ্যা থেমে নেই। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, করোনাভাইরাস সংক্রমিতের সংখ্যা হিসাবে বিশ্ব তালিকায় ১৫ নম্বরে থাকলেও নতুন করে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বিচারে বাংলাদেশের নাম ১০ নম্বরে উঠে এসেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশের ওপরে রয়েছে ভারত, আমেরিকা, ব্রাজিল, রাশিয়া, পেরু, মেক্সিকো, কলোম্বিয়া, আর্জেন্টিনা ও ফিলিপাইন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সোমবার বাংলাদেশে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয় ২ হাজার ৫৯৫ জন। এছাড়া খবরে প্রকাশিত তথ্য মতে জানা গেল, ২০ দিনের মাথায় ফের তিন হাজার ছাড়ায় দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত মানুষের সংখ্যা। সর্বশেষ গত ২৯ জুলাই ৩ হাজার ৯ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ শনাক্তের পর তিন সপ্তাহের শেষের দিকে (২০ দিন) এসে একদিনে এটি সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। মঙ্গলবার দুপুরে মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো করোনাভাইরাস বিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। আমলে নেওয়া দরকার, ওয়ার্ল্ডোমিটারের পরিসংখ্যান পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, তালিকার ১০টি দেশের মধ্যে পেরু, মেক্সিকো, কলোম্বিয়া, ফিলিপাইন এই ৪টি দেশে শনিবারের তুলনায় সোমবার নতুন আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে। এছাড়া এ তালিকার বাইরে দক্ষিণ আফ্রিকা, স্পেন, ফ্রান্স ও ইরাকেও ওই সময় নতুন সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। অথচ বিশ্বতালিকার ১৩ নম্বরে থাকা বাংলাদেশে নতুন করে শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা প্রায় ২৫ শতাংশ বেড়েছে। ফলে নিচের দিকে থাকা তিনটি দেশকে টপকে বাংলাদেশের অবস্থান ১০ নম্বরে এসে দাঁড়ায়। আমরা বলতে চাই, দেশের করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণকারী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা যখন বলছেন, বিশ্বের করোনায় আক্রান্ত দেশগুলোতে নতুন করে সংক্রমণের হার ক্রমেই নিম্নমুখী হলেও বাংলাদেশে তা অনেকটা একই জায়গায় স্থিতিশীল রয়েছে। বরং সময় সময়ে তা কিছুটা বাড়ছে। আর করোনা নিয়ে সরকারের দায়িত্বশীলদের বিভ্রান্তিকর তথ্যে জনসচেতনতা উধাও হয়ে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলেও যে বিষয়টি সামনে আসছে- তা আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি। কেননা, এ পরিস্থিতি চলমান থাকলে দেশে করোনার প্রকোপ হ্রাস পেতে দীর্ঘ সময় লাগবে এমন আশঙ্কার বিষয়ও উঠে এসেছে। এমনকি আগামীতে এ মরণব্যাধির প্রকোপ আরো ভয়াবহভাবে বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। আমরা বলতে চাই, যখন সারা বিশ্বেই কারোনভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে এবং এই পরিস্থিতিতে দেশে করোনা নিয়ে অসচেতনতার বিষয়টি আলোচনায় আসছে- তখন স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করাসহ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ঠিক রাখতেও উদ্যোগী হতে হবে। কেননা, এর আগে এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছে যে, মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোও হিমশিম খেয়েছে। ফলে কোথাও যেন দুর্বল স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ও নাজুক প্রস্তুতি না থাকে সেই দিকটি আমলে নেওয়াসহ করোনা রোধে জনসচেতনতার বিষয়টিও অগ্রহণ্য। এ কথা ভুলে যাওয়া যাবে না, স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চললে পরিস্থিতি মোকাবিলা কঠিন হয়ে পড়বে। মনে রাখতে হবে, সামগ্রিকভাবে করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ব এক ভয়ংকর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ফলে সচেতনতা বাড়ানোসহ প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ জারি রাখ অপরিহার্য। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, দেশের করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণকারী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের আশঙ্কার বিষয়টি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের পদক্ষেপ জারি রাখতে হবে। বলার অপেক্ষা রাখে না, পারস্পরিক বিচ্ছিন্নতা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, অকারণে ঘোরাফেরা না করাসহ প্রয়োজনীয় সচেতনতা এ সময়ে সবচেয়ে বেশি জরুরি। এছাড়া করোনা নিয়ে সরকারের দায়িত্বশীলদের বিভ্রান্তিকর তথ্যে জনসচেতনতা উধাও হয়ে যাওয়ার যে বিষয়টি সামনে আসছে, সেটা আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ ও তার বাস্তবায়ন হোক এমনটি প্রত্যাশিত।