ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

নতুন দুর্যোগ বজ্রপাত : একের পর এক মৃত্যু

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১২:৩২:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ জুন ২০২১
  • / ৫৮ বার পড়া হয়েছে

আলমডাঙ্গা-মুজিবনগরে তিনজনসহ সারা দেশে ২৩ জনের মৃত্যু
সমীকরণ প্রতিবেদন:
বজ্রপাতে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয় বাংলাদেশে। প্রতিবছর বৃষ্টির মৌসুমে (কাল বৈশাখি) বজ্রপাত বেশি হয়। চলতি বছরেও দেশে বজ্রপাতে মৃত্যু ও আহতের ঘটনা বাড়ছে। তাপমাত্রা ও বাতাসে সিসার পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়া, জনজীবনে ধাতব পদার্থের ব্যবহার বেড়ে যাওয়া, প্রচুর মোবাইল ফোন ব্যবহার ও এর রেডিয়েশন, প্রত্যন্ত অঞ্চলে মোবাইল নেটওয়ার্ক টাওয়ারের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া, বনভূমি বা গ্রামাঞ্চলে উঁচু গাছের সংখ্যা কমে যাওয়া, নদী নালা ভরাট ও নদী দখলসহ নানা কারণে বজ্রপাতে মৃত্যু বাড়ছে। বজ্রপাত বাড়ার সঙ্গে বিশ্বময় তাপমাত্রা পরিবর্তনের সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
শুধুমাত্র গতকালই সারা দেশে বজ্রপাতে আরও ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে চট্টগ্রামে চারজন, সিরাজগঞ্জে পাঁচজন, ফেনীতে দুজন, পটুয়াখালীতে দুজন, সাতক্ষীরায় দুজন, মেহেরপুরে দুজন এবং মাদারীপুর, নোয়াখালী, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, বরিশাল ও চুয়াডাঙ্গায় একজন করে মোট ছয়জন নিহত হয়েছেন। এদিকে, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলায় একজন ও মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলায় পৃথক স্থানে বজ্রপাতে স্কুলছাত্রীসহ দুজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রোববার বিকেলে পৃথক স্থানে এ বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে।
আলমডাঙ্গা:
আলমডাঙ্গার রুইথনপুরে বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রোববার বিকেলে এ ঘটনাটি ঘটে। নিহত কুরবান আলী রুইতনপুর গ্রামের মৃত ফকিরের ছেলে।
জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার চিৎলা ইউনিয়নের রুইতনপুর গ্রামের কুরবান আলী প্রতিদিনের ন্যায় গতকাল রোববার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে নিজ জমিতে চাষ করছিলেন। বিকেলে কালো মেঘের সাথে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। ওই বৃষ্টিতে বজ্রপাত সৃষ্টি হয়ে তাঁর শরীরে আঘাত করলে ঘটনাস্থলে গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুর খবর বাড়িতে পৌঁছালে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে আসে। পরে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁর দাফনকার্য সম্পন্ন হয়েছে।
অন্যদিকে, আলমডাঙ্গায় গতকাল রোববার বিকেলে বজ্রপাতে পোলতাডাঙ্গা গ্রামের ফরেজুলের ছেলে খোকনের পানবরজে বজ্রপাতে দুই কাঠা পানেরবরজ পুড়ে ভস্মিভুত হয়েছে।
মুজিবনগর:
মুজিবনগর উপজেলায় একই দিনে বজ্রপাতে স্কুলছাত্রীসহ এক কৃষক নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন- উপজেলার দারিয়াপুর ইউনিয়নের পুরন্দরপুর গ্রামের মৃত বকস নওদার ছেলে ফরিদ নওদা (৫০) এবং মোনাখালী ইউনিয়নের রশিকপুর গ্রামের কাশফিয়া (১১), সে ৫ম শ্রেণির ছাত্রী।
জানা যায়, গতকাল রোববার বিকেলে পুরন্দরপুর নটগাড়ির মাঠে কাজ করছিলেন কৃষক ফরিদ। মাঠে হঠাৎ বজ্রপাতে তাঁর মৃত্যু হয়। মাঠে থাকা অন্যান্য কৃষক তাঁকে দেখতে পেয়ে তাঁর লাশ বাড়ি নিয়ে আসে। সন্ধ্যায় তাঁর লাশ গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়।
অপর দিকে, শিশু কাশফিয়া দামুড়হুদা উপজেলার চন্দ্রবাস গ্রামের ওয়াছ করিমের মেয়ে। নিহত কাশফিয়া নানা বাড়ি মোনাখালী ইউনিয়নের রশিকপুরে বেড়াতে এসে গতকাল বিকেলে নানীসহ বান্ধবীদের নিয়ে আমবাগানে আম কুড়াতে গেলে বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে সন্ধ্যার দিকে তার বাবা চন্দ্রবাস গ্রামে নিহত মেয়েকে নিয়ে যান।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

নতুন দুর্যোগ বজ্রপাত : একের পর এক মৃত্যু

আপলোড টাইম : ১২:৩২:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ জুন ২০২১

আলমডাঙ্গা-মুজিবনগরে তিনজনসহ সারা দেশে ২৩ জনের মৃত্যু
সমীকরণ প্রতিবেদন:
বজ্রপাতে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয় বাংলাদেশে। প্রতিবছর বৃষ্টির মৌসুমে (কাল বৈশাখি) বজ্রপাত বেশি হয়। চলতি বছরেও দেশে বজ্রপাতে মৃত্যু ও আহতের ঘটনা বাড়ছে। তাপমাত্রা ও বাতাসে সিসার পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়া, জনজীবনে ধাতব পদার্থের ব্যবহার বেড়ে যাওয়া, প্রচুর মোবাইল ফোন ব্যবহার ও এর রেডিয়েশন, প্রত্যন্ত অঞ্চলে মোবাইল নেটওয়ার্ক টাওয়ারের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া, বনভূমি বা গ্রামাঞ্চলে উঁচু গাছের সংখ্যা কমে যাওয়া, নদী নালা ভরাট ও নদী দখলসহ নানা কারণে বজ্রপাতে মৃত্যু বাড়ছে। বজ্রপাত বাড়ার সঙ্গে বিশ্বময় তাপমাত্রা পরিবর্তনের সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
শুধুমাত্র গতকালই সারা দেশে বজ্রপাতে আরও ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে চট্টগ্রামে চারজন, সিরাজগঞ্জে পাঁচজন, ফেনীতে দুজন, পটুয়াখালীতে দুজন, সাতক্ষীরায় দুজন, মেহেরপুরে দুজন এবং মাদারীপুর, নোয়াখালী, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, বরিশাল ও চুয়াডাঙ্গায় একজন করে মোট ছয়জন নিহত হয়েছেন। এদিকে, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলায় একজন ও মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলায় পৃথক স্থানে বজ্রপাতে স্কুলছাত্রীসহ দুজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রোববার বিকেলে পৃথক স্থানে এ বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে।
আলমডাঙ্গা:
আলমডাঙ্গার রুইথনপুরে বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রোববার বিকেলে এ ঘটনাটি ঘটে। নিহত কুরবান আলী রুইতনপুর গ্রামের মৃত ফকিরের ছেলে।
জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার চিৎলা ইউনিয়নের রুইতনপুর গ্রামের কুরবান আলী প্রতিদিনের ন্যায় গতকাল রোববার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে নিজ জমিতে চাষ করছিলেন। বিকেলে কালো মেঘের সাথে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। ওই বৃষ্টিতে বজ্রপাত সৃষ্টি হয়ে তাঁর শরীরে আঘাত করলে ঘটনাস্থলে গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুর খবর বাড়িতে পৌঁছালে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে আসে। পরে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁর দাফনকার্য সম্পন্ন হয়েছে।
অন্যদিকে, আলমডাঙ্গায় গতকাল রোববার বিকেলে বজ্রপাতে পোলতাডাঙ্গা গ্রামের ফরেজুলের ছেলে খোকনের পানবরজে বজ্রপাতে দুই কাঠা পানেরবরজ পুড়ে ভস্মিভুত হয়েছে।
মুজিবনগর:
মুজিবনগর উপজেলায় একই দিনে বজ্রপাতে স্কুলছাত্রীসহ এক কৃষক নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন- উপজেলার দারিয়াপুর ইউনিয়নের পুরন্দরপুর গ্রামের মৃত বকস নওদার ছেলে ফরিদ নওদা (৫০) এবং মোনাখালী ইউনিয়নের রশিকপুর গ্রামের কাশফিয়া (১১), সে ৫ম শ্রেণির ছাত্রী।
জানা যায়, গতকাল রোববার বিকেলে পুরন্দরপুর নটগাড়ির মাঠে কাজ করছিলেন কৃষক ফরিদ। মাঠে হঠাৎ বজ্রপাতে তাঁর মৃত্যু হয়। মাঠে থাকা অন্যান্য কৃষক তাঁকে দেখতে পেয়ে তাঁর লাশ বাড়ি নিয়ে আসে। সন্ধ্যায় তাঁর লাশ গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়।
অপর দিকে, শিশু কাশফিয়া দামুড়হুদা উপজেলার চন্দ্রবাস গ্রামের ওয়াছ করিমের মেয়ে। নিহত কাশফিয়া নানা বাড়ি মোনাখালী ইউনিয়নের রশিকপুরে বেড়াতে এসে গতকাল বিকেলে নানীসহ বান্ধবীদের নিয়ে আমবাগানে আম কুড়াতে গেলে বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে সন্ধ্যার দিকে তার বাবা চন্দ্রবাস গ্রামে নিহত মেয়েকে নিয়ে যান।