ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

নছিমন করিমন বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশনা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:৩৩:৫৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০১৭
  • / ৩৬২ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ ডেস্ক: সারা দেশের মহাসড়কগুলোতে নছিমন, করিমন, ভটভটিসহ অনিবন্ধিত গাড়ি চলাচল বন্ধে পদক্ষেপ নিতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।  এ বিষয়ে আগে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।  পরে মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, নছিমন, করিমন ও ভটভটির মতো কিছু অনিবন্ধিত গাড়ি আমাদের মহাসড়কগুলোতে চলছে। যার কারণে মহাসড়কগুলোতে দুর্ঘটনা বাড়ছে। আমরা জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে একটি রিট করেছিলাম। তখন রুল জারি করে অন্তর্র্বতীকালীন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। সেই রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আজকে রায় ঘোষণা করা হয়েছে। রায়ে রুল এবসলিউট (যথাযথ) ঘোষণা করেন আদালত। তিনি বলেন, রায়ে কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। প্রথমত, ১০টি জেলা যেগুলোর ব্যাপারে পত্রিকায় রিপোর্ট এসেছিল। এসব জেলার পুলিশ সুপারদেরকে বলছে নছিমন, করিমন ও ভটভটির মতো অনিবন্ধিত যান চলাচল বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এছাড়া আইজিপি, ডিআইজিসহ (হাইওয়ে) অন্যান্য বিবাদীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, বাংলাদেশের সকল জেলায় মহাসড়কগুলোতে এই ধরনের যানবাহন যেন চলতে না পারে সে ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলা হয়। আর সরকারকে একটা নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, আইনে একটা বিধান আছে সরকার এসব যানবাহনের বিরুদ্ধে যথাযথ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। সে ব্যাপারে সকল জেলা প্রশাসনের উপরে সরকারকে একটা সার্কুলার জারি করতে বলা হয়েছে, যাতে জেলা প্রশাসন প্রত্যেকটা জেলায় মহাসড়কে সমস্ত অনিবন্ধিত যান চলাচল বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের করতে পারে।  যারা এ সমস্ত নসিমন করিমন চালাচ্ছে সেসমস্ত ড্রাইভার ও মালিকদের কেউ ধরা পড়লে আইনগতভাবে তাদেরকে মোটর ভেহিকলস আইনের বিধান অনুযায়ী শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। আরেকটি বিষয়ে আদালত আদেশ দিয়েছেন, এই মামলায় নির্দেশনাগুলো দেওয়া হয়েছে তা বাস্তবায়নে কতটুকু অগ্রগতি হয়েছে প্রতি ছয় মাস পরপর একটা প্রতিবেদনের মাধ্যমে তা আদালতকে জানাতে বলা হয়েছে। মামলাটিকে কন্টিনিও মেন্ডামাস (চলমান মামলা) হিসেবে রাখা হয়েছে।  এর আগে ২০১৩ সালের ১৫ নভেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়, ‘মহাসড়কে দুর্ঘটনার কারণ অবৈধ যানবাহন নছিমন, করিমন ভটভটি’। পত্রিকায় প্রকাশিত সেই প্রতিবেদন যুক্ত করে হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে ২০১৪ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়। সেই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট একই বছরের ২ অক্টোবর এসব অনিবন্ধিত যানবাহন চলাচল বন্ধে অন্তর্র্বতীকালীন নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি রুল জারি করেছিলেন।  রুলে সড়ক ও মহাসড়কের যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে মোটর-ভেহিকল অর্ডিন্যান্সের বিধান কার্যকর করা এবং এ ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না জানতে চাওয়া হয়েছিল। স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, যোগাযোগসচিব, ডিআইজি (হাইওয়ে), বিআরটিএর চেয়ারম্যান, ওই পাঁচ জেলার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে বাগেরহাট, নড়াইল, সাতক্ষীরা, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ ও খুলনা ও যশোরের পুলিশ সুপারকে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। তবে এবার সারা দেশের মহাসড়কগুলোতেই নসিমন, করিমন ও ভটভটির মতো অনিবন্ধিত যান চলাচল বন্ধে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

নছিমন করিমন বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশনা

আপলোড টাইম : ১১:৩৩:৫৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০১৭

সমীকরণ ডেস্ক: সারা দেশের মহাসড়কগুলোতে নছিমন, করিমন, ভটভটিসহ অনিবন্ধিত গাড়ি চলাচল বন্ধে পদক্ষেপ নিতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।  এ বিষয়ে আগে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।  পরে মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, নছিমন, করিমন ও ভটভটির মতো কিছু অনিবন্ধিত গাড়ি আমাদের মহাসড়কগুলোতে চলছে। যার কারণে মহাসড়কগুলোতে দুর্ঘটনা বাড়ছে। আমরা জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে একটি রিট করেছিলাম। তখন রুল জারি করে অন্তর্র্বতীকালীন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। সেই রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আজকে রায় ঘোষণা করা হয়েছে। রায়ে রুল এবসলিউট (যথাযথ) ঘোষণা করেন আদালত। তিনি বলেন, রায়ে কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। প্রথমত, ১০টি জেলা যেগুলোর ব্যাপারে পত্রিকায় রিপোর্ট এসেছিল। এসব জেলার পুলিশ সুপারদেরকে বলছে নছিমন, করিমন ও ভটভটির মতো অনিবন্ধিত যান চলাচল বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এছাড়া আইজিপি, ডিআইজিসহ (হাইওয়ে) অন্যান্য বিবাদীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, বাংলাদেশের সকল জেলায় মহাসড়কগুলোতে এই ধরনের যানবাহন যেন চলতে না পারে সে ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলা হয়। আর সরকারকে একটা নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, আইনে একটা বিধান আছে সরকার এসব যানবাহনের বিরুদ্ধে যথাযথ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। সে ব্যাপারে সকল জেলা প্রশাসনের উপরে সরকারকে একটা সার্কুলার জারি করতে বলা হয়েছে, যাতে জেলা প্রশাসন প্রত্যেকটা জেলায় মহাসড়কে সমস্ত অনিবন্ধিত যান চলাচল বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের করতে পারে।  যারা এ সমস্ত নসিমন করিমন চালাচ্ছে সেসমস্ত ড্রাইভার ও মালিকদের কেউ ধরা পড়লে আইনগতভাবে তাদেরকে মোটর ভেহিকলস আইনের বিধান অনুযায়ী শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। আরেকটি বিষয়ে আদালত আদেশ দিয়েছেন, এই মামলায় নির্দেশনাগুলো দেওয়া হয়েছে তা বাস্তবায়নে কতটুকু অগ্রগতি হয়েছে প্রতি ছয় মাস পরপর একটা প্রতিবেদনের মাধ্যমে তা আদালতকে জানাতে বলা হয়েছে। মামলাটিকে কন্টিনিও মেন্ডামাস (চলমান মামলা) হিসেবে রাখা হয়েছে।  এর আগে ২০১৩ সালের ১৫ নভেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়, ‘মহাসড়কে দুর্ঘটনার কারণ অবৈধ যানবাহন নছিমন, করিমন ভটভটি’। পত্রিকায় প্রকাশিত সেই প্রতিবেদন যুক্ত করে হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে ২০১৪ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়। সেই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট একই বছরের ২ অক্টোবর এসব অনিবন্ধিত যানবাহন চলাচল বন্ধে অন্তর্র্বতীকালীন নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি রুল জারি করেছিলেন।  রুলে সড়ক ও মহাসড়কের যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে মোটর-ভেহিকল অর্ডিন্যান্সের বিধান কার্যকর করা এবং এ ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না জানতে চাওয়া হয়েছিল। স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, যোগাযোগসচিব, ডিআইজি (হাইওয়ে), বিআরটিএর চেয়ারম্যান, ওই পাঁচ জেলার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে বাগেরহাট, নড়াইল, সাতক্ষীরা, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ ও খুলনা ও যশোরের পুলিশ সুপারকে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। তবে এবার সারা দেশের মহাসড়কগুলোতেই নসিমন, করিমন ও ভটভটির মতো অনিবন্ধিত যান চলাচল বন্ধে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।