ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

দ্বিতীয় দফা সংলাপে প্রধানমন্ত্রীকে যা বলবেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৩০:৪৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ নভেম্বর ২০১৮
  • / ৩০১ বার পড়া হয়েছে

প্রাধান্য পাবে তিন দাবি
ডেস্ক রিপোর্ট: ৭ দফা থেকে ৩ দফায় নেমে আসছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। আগামীকাল ৭ নভেম্বর গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় বসা সংলাপে ৩ দফাকে গুরুত্ব দেবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গড়ে ওঠা নতুন এ রাজনৈতিক জোটের নেতারা। দাবি নিয়ে রফাদফা হলেই নির্বাচনের মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়বে যুক্তফ্রন্টে থাকা বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল। আর রফা না হলে দরকষাকষির জন্য আরো কিছুদিন সময় নেবে ঐক্যফ্রন্ট। তারপরও সমঝোতার কোনো লক্ষণ না দেখলে এক দফা দাবি নিয়ে রাজপথমুখী হতে পারে যুক্তফ্রন্ট।
যুক্তফ্রন্টের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কালকের সংলাপে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিনে মুক্তি এবং ভোটে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সাজা স্থগিত করার জোড়ালো দাবি থাকবে। এ বিষয়ে আইনি, রাজনৈতিক ও মানবিক কিছু যুক্তিও তুলে ধরবেন তারা। যুক্তির বিষয়গুলো নিয়ে ইতোমধ্যেই ব্যাপক সারসংক্ষেপ তৈরি করা হয়েছে। এসব নিয়ে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের মধ্যে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে- যা সংলাপে রওয়ানা হওয়ার আগে চূড়ান্ত করা হবে।
সূত্র জানায়, গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর মতিঝিলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের চেম্বারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকেও বিষয়গুলো নিয়ে চলে চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হয়। এতে উচ্চ আদালত থেকে খালেদা জিয়ার মামলা স্থগিত করে তাকে জামিন দেয়ার প্রস্তাব রয়েছে। বিষয়টি আদালতের এখতিয়ারে প্রধানমন্ত্রীর এমন মতামতের বিপক্ষে আইনি যুক্তি তুলে ধরবেন ড. কামাল হোসেন। তিনি খালেদা জিয়ার জামিন ও নির্বাচনে অংশ নেয়ার আইনি রাস্তা বের করে দেখাবেন। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীকে বোঝানোর চেষ্টা করা হবে নির্বাচনের ময়দানে খালেদা জিয়া না থাকলে লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড হবে না। নির্বাচনও গ্রহণযোগ্য হবে না। বড় ধরনের সংকটে পড়বে দেশ।
সূত্র জানায়, আগামীকালের বৈঠকে দশম জাতীয় সংসদ ভেঙে দেয়া ও আগামী ৮ নভেম্বর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না করার জন্য আহ্বান জানাবেন। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের বিষয় বলে মতামত দিলে যুক্তফ্রন্টের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে আওয়ামী লীগ নির্বাচন কমিশনকে তফসিল ও নির্বাচন পেছাতে দাবি করার আহ্বান জানাতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনকে এমন চিঠি দিলে ইসি বিষয়টিতে গুরুত্ব দেবে। কেননা, সরকারি ও বিরোধী উভয় দল একই দাবি করলে ইসির পক্ষে তা না মেনে চলার উপায় থাকে না। পাশাপাশি সংবিধান মেনে জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিতে প্রধানমন্ত্রীকে একমত হওয়ার প্রস্তাব দেবেন। যাতে দেশের নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সেরে ফেলতে পারে। কেননা, নির্বাচন নিয়ে জটিলতা ও অনিশ্চয়তার কারণে অনেক রাজনৈতিক দলই নির্বাচনী প্রস্তুতি নিতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রীকে বোঝানো হবে, এতে সংবিধানের কোনো বরখেলাপ হবে না।
সূত্র জানায়, একইভাবে বর্তমান মন্ত্রিসভা ভেঙে একটি নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভা গঠনের প্রস্তাবনা দেয়া হবে। এতে টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হিসেবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বা সংসদের বাইরে থাকা বিরোধী দলগুলোর মধ্য থেকে কয়েকজনকে মন্ত্রী করার প্রস্তাব দেয়া হবে। স্বরাষ্ট্র বা জনপ্রশাসনসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় এসব মন্ত্রীকে দায়িত্ব দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হতে পারে। এমনটা করলে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনাতেও আপত্তি থাকবে না জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের। সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এই তিন দফা দাবি মেনে নিলে আন্দোলন বাদ দিয়ে নির্বাচনমুখী হবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। দাবি না মানলে বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে রাজপথ বেছে নেবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। প্রধানমন্ত্রী তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত না জানাতে পারলে তাকে আরো সময় নিয়ে পুনরায় আলোচনা অব্যাহত রাখার দাবি থাকবে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

দ্বিতীয় দফা সংলাপে প্রধানমন্ত্রীকে যা বলবেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা

আপলোড টাইম : ১০:৩০:৪৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ নভেম্বর ২০১৮

প্রাধান্য পাবে তিন দাবি
ডেস্ক রিপোর্ট: ৭ দফা থেকে ৩ দফায় নেমে আসছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। আগামীকাল ৭ নভেম্বর গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় বসা সংলাপে ৩ দফাকে গুরুত্ব দেবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গড়ে ওঠা নতুন এ রাজনৈতিক জোটের নেতারা। দাবি নিয়ে রফাদফা হলেই নির্বাচনের মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়বে যুক্তফ্রন্টে থাকা বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল। আর রফা না হলে দরকষাকষির জন্য আরো কিছুদিন সময় নেবে ঐক্যফ্রন্ট। তারপরও সমঝোতার কোনো লক্ষণ না দেখলে এক দফা দাবি নিয়ে রাজপথমুখী হতে পারে যুক্তফ্রন্ট।
যুক্তফ্রন্টের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কালকের সংলাপে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিনে মুক্তি এবং ভোটে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সাজা স্থগিত করার জোড়ালো দাবি থাকবে। এ বিষয়ে আইনি, রাজনৈতিক ও মানবিক কিছু যুক্তিও তুলে ধরবেন তারা। যুক্তির বিষয়গুলো নিয়ে ইতোমধ্যেই ব্যাপক সারসংক্ষেপ তৈরি করা হয়েছে। এসব নিয়ে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের মধ্যে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে- যা সংলাপে রওয়ানা হওয়ার আগে চূড়ান্ত করা হবে।
সূত্র জানায়, গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর মতিঝিলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের চেম্বারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকেও বিষয়গুলো নিয়ে চলে চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হয়। এতে উচ্চ আদালত থেকে খালেদা জিয়ার মামলা স্থগিত করে তাকে জামিন দেয়ার প্রস্তাব রয়েছে। বিষয়টি আদালতের এখতিয়ারে প্রধানমন্ত্রীর এমন মতামতের বিপক্ষে আইনি যুক্তি তুলে ধরবেন ড. কামাল হোসেন। তিনি খালেদা জিয়ার জামিন ও নির্বাচনে অংশ নেয়ার আইনি রাস্তা বের করে দেখাবেন। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীকে বোঝানোর চেষ্টা করা হবে নির্বাচনের ময়দানে খালেদা জিয়া না থাকলে লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড হবে না। নির্বাচনও গ্রহণযোগ্য হবে না। বড় ধরনের সংকটে পড়বে দেশ।
সূত্র জানায়, আগামীকালের বৈঠকে দশম জাতীয় সংসদ ভেঙে দেয়া ও আগামী ৮ নভেম্বর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না করার জন্য আহ্বান জানাবেন। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের বিষয় বলে মতামত দিলে যুক্তফ্রন্টের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে আওয়ামী লীগ নির্বাচন কমিশনকে তফসিল ও নির্বাচন পেছাতে দাবি করার আহ্বান জানাতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনকে এমন চিঠি দিলে ইসি বিষয়টিতে গুরুত্ব দেবে। কেননা, সরকারি ও বিরোধী উভয় দল একই দাবি করলে ইসির পক্ষে তা না মেনে চলার উপায় থাকে না। পাশাপাশি সংবিধান মেনে জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিতে প্রধানমন্ত্রীকে একমত হওয়ার প্রস্তাব দেবেন। যাতে দেশের নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সেরে ফেলতে পারে। কেননা, নির্বাচন নিয়ে জটিলতা ও অনিশ্চয়তার কারণে অনেক রাজনৈতিক দলই নির্বাচনী প্রস্তুতি নিতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রীকে বোঝানো হবে, এতে সংবিধানের কোনো বরখেলাপ হবে না।
সূত্র জানায়, একইভাবে বর্তমান মন্ত্রিসভা ভেঙে একটি নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভা গঠনের প্রস্তাবনা দেয়া হবে। এতে টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হিসেবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বা সংসদের বাইরে থাকা বিরোধী দলগুলোর মধ্য থেকে কয়েকজনকে মন্ত্রী করার প্রস্তাব দেয়া হবে। স্বরাষ্ট্র বা জনপ্রশাসনসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় এসব মন্ত্রীকে দায়িত্ব দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হতে পারে। এমনটা করলে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনাতেও আপত্তি থাকবে না জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের। সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এই তিন দফা দাবি মেনে নিলে আন্দোলন বাদ দিয়ে নির্বাচনমুখী হবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। দাবি না মানলে বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে রাজপথ বেছে নেবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। প্রধানমন্ত্রী তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত না জানাতে পারলে তাকে আরো সময় নিয়ে পুনরায় আলোচনা অব্যাহত রাখার দাবি থাকবে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে।