ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

দুঃশাসনের অবসান ঘটিয়ে বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাবে

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:০০:১৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • / ৬৯ বার পড়া হয়েছে

নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা
সমীকরণ প্রতিবেদন:
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় জানিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করেছে বিএনপি। প্রয়োজনে আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে হটিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার অঙ্গীকারও করেছেন দলটির নেতারা। নেতা-কর্মীদের সরকার পতন আন্দোলনের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে প্রস্তুত হওয়ারও আহবান জানিয়েছেন তারা। দেশব্যাপী নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে বিগত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থীদের নেতৃত্বে গতকাল বৃহস্পতিবার বরিশাল মহানগরের জিলা স্কুল মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপি নেতারা এসব কথা বলেন।
সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা কি এই দেশ দেখার জন্য যুদ্ধ করেছিলাম? যে দেশে সাধারণ মানুষকে গুম, খুন, হত্যা, অন্যায় অবিচার করা হয়। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ভারতের অভ্যন্তরে থেকে মুক্তিযুদ্ধ করেননি। তিনি দেশের প্রথম সারিতে থেকে বাংলাদেশের জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। দেশের প্রতি তার ভালবাসা থেকে সেদিন রণাঙ্গনে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু তার মতো একজন প্রকৃত সৈনিকের খেতাব বাতিল করতে চায় কিছু লোক। এই স্বাধীন দেশে আমরা এটা কখনো হতে দিব না। তিনি বলেন, পাশের দেশ মিয়ানমারের সামরিক শাসন হয়েছে। সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমেছেন স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে। বর্তমান সরকারের শাসন তো সেই স্বৈরশাসকের চেয়েও খারাপ। আমরা কয়জন রাজপথে নামতে নামতে পেরেছি?
বিএনপি›র এই সিনিয়র নেতা বলেন, এই স্বাধীন দেশে মুক্তিযুদ্ধাদের এখন কেউ স্মরণ করে না। যুদ্ধের সময়ে দেশে মুক্তিযোদ্ধা ছিল ৮০ হাজার, আর এখন হয়ে গেছে আড়াই লাখ। এটা সম্পূর্ণ আওয়ামী লীগের বদৌলতে। আজকের এই সমাবেশে আসার সময় জায়গায় জায়গায় পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের হয়রানি করেছে, আটক করেছে, বাধা দিয়েছে। নেতাকর্মীদের মধ্যে সেই প্রতিবাদ কোথায়? সেই প্রতিবাদের স্ফুলিঙ্গতো আমি দেখতে পাচ্ছি না। এখনকার তরুণরা কি অবদান রাখছেন এই দেশের জন্য? তাই আসুন এখনই সময় এই স্বৈরাচার সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে মাঠে নামার। আন্দোলনের মাধ্যমে এ সরকারকে হটিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করি।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, সমস্ত সিটি নির্বাচনে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করার স্বপ্ন দেখছে সরকার। আমরা অতীতে দেখেছি এবং বিশ্বাস করি আগামীতেও এই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোন সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারেরর অধীনে নির্বাচন চাই, মাফিয়া সরকারের অধীনে নয়।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, বিচার বিভাগ আর প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর আলাদা কিনা সেটা জানতে চাই। আমরা নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ চাই এবং নির্বাচন ব্যবস্থায় আমুল পরিবর্তন চাই।
খুলনা সিটি করপোরেশনের নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, ৬ সিটি করপোরেশনের প্রার্থীদের নিয়ে তারেক রহমানের নির্দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে সমাবেশ শুরু করেছি আমরা। মাফিয়া সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। তাই শেখ হাসিনার অধীনে আর কোন নির্বাচনে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। অবিলম্বে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে, অন্যত্থায় বিএনপি আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটিয়ে এই দাবি আদায় করবে।
বরিশাল বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন বলেন, চোর না শোনে ধর্মের কাহিনী, আজ চোর চোট্টা দিয়ে দেশ চালানো হচ্ছে। সমাবেশস্থলে আসতে আজ পথে পথে বাধা দেয়া হচ্ছে। নেতাকর্মীদের মারধর করা হচ্ছে। ভোলা নেতাকর্মীদের আসতে দেয়া হয়নি। সমাবেশস্থল ঘিরে রেখেছে পুলিশ। তারপরও নেতাকর্মীদের দমিয়ে রাখা যায়নি।
ঢাকা সিটি উত্তর করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী তাবিথ আউয়াল বলেন, দিন দিন জালিম সরকার স্বাভাবিক নির্বাচন হতে দিচ্ছে না। কোন নির্বাচনে ভোটাররা ভোট দিতে পারছে না।
ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেন, আজকে সমাবেশে আসার জন্য ঢাকা থেকে রওনা দেয়ার পর মাওয়া ঘাটে সরকার নির্লজ্জভাবে, ন্যাক্কারজনকভাবে ফেরি বন্ধ করে দেয়। কর্তৃপক্ষ অফিস বন্ধ করেই চলে যায়। আমাদের প্রায় ২৫টি গাড়ি এখনো সেখানে রয়ে গেছে। আমরা গণতন্ত্র পুনরাদ্ধের আন্দোলনে আছি। আমাদেরকে কোনো বাধা দিয়েই আটকানো যাবে না। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেই আমরা ঘরে ফিরে যাবো। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা যেভাবে গত ১৩ বছর ধরে অত্যাচার, নির্যাতন, মামলা হামলার শিকার হয়ে মাঠে আছেন, আপনাদেরকে দেখে আমি আরও উজ্জীবিত হলাম। আপনারা আগামী আন্দোলন সংগ্রামের জন্য প্রস্তুতি নিন। ইনশাআল্লাহ বরিশাল থেকেই সরকার পতনের আন্দোলন পাকাপোক্ত হবে।
বরিশাল মহানগরের সাবেক মেয়র মজিবুর সারোয়ারের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএনপি নেতা আবুল হোসেন খান, ওবায়দুল আকরাম, আলমগীর হোসেন প্রমুখ।
পূর্বঘোষিত এই বিক্ষোভ সমাবেশ এদিন বিকেল ৩টায় শুরু হয়। সমাবেশকে ঘিরে সকাল থেকেই সমাবেশস্থলের আশপাশ এবং গোটা শহরে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। শহরের প্রতিটি মোড়ে মোড়েই পুলিশ জলকামান নিয়ে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় শহরের মরকখোলা পুল, নতুন বাজার টেম্পু স্ট্যান্ডের মোড়, জেল খানার মোড়, আমতলার মোড়, হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা, কাকলী মোড় ও গীর্জা মহল্লার মোড়সহ বিভিন্ন জায়গায় ব্যারিকেড বসিয়ে সমাবেশস্থলে আসা বিএনপি নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষকে তল্লাশি চালায় পুলিশ। বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের অর্ধ-শতাধিক নেতাকর্মীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আটক করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন দলটির নেতারা।
এর আগে ঢাকা থেকে দক্ষিণ সিটির মেয়র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের নেতৃত্বে সমাবেশে অংশ নিতে যাওয়া গাড়ি বহর আটকে দেয়া মাওয়া ফেরি ঘাটে। ইশরাক জানান, ঘাটে গাড়ি বহর আসলে ফেরি কর্তৃপক্ষ তাদের অফিস বন্ধ করে চলে যায়। পরে লঞ্চে করে নেতাকর্মীদের নিয়ে পদ্মা পাড় হন ইশরাকসহ তার সাথে থাকা নেতাকর্মীরা।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

দুঃশাসনের অবসান ঘটিয়ে বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাবে

আপলোড টাইম : ১০:০০:১৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২১

নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা
সমীকরণ প্রতিবেদন:
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় জানিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করেছে বিএনপি। প্রয়োজনে আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে হটিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার অঙ্গীকারও করেছেন দলটির নেতারা। নেতা-কর্মীদের সরকার পতন আন্দোলনের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে প্রস্তুত হওয়ারও আহবান জানিয়েছেন তারা। দেশব্যাপী নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে বিগত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থীদের নেতৃত্বে গতকাল বৃহস্পতিবার বরিশাল মহানগরের জিলা স্কুল মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপি নেতারা এসব কথা বলেন।
সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা কি এই দেশ দেখার জন্য যুদ্ধ করেছিলাম? যে দেশে সাধারণ মানুষকে গুম, খুন, হত্যা, অন্যায় অবিচার করা হয়। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ভারতের অভ্যন্তরে থেকে মুক্তিযুদ্ধ করেননি। তিনি দেশের প্রথম সারিতে থেকে বাংলাদেশের জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। দেশের প্রতি তার ভালবাসা থেকে সেদিন রণাঙ্গনে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু তার মতো একজন প্রকৃত সৈনিকের খেতাব বাতিল করতে চায় কিছু লোক। এই স্বাধীন দেশে আমরা এটা কখনো হতে দিব না। তিনি বলেন, পাশের দেশ মিয়ানমারের সামরিক শাসন হয়েছে। সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমেছেন স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে। বর্তমান সরকারের শাসন তো সেই স্বৈরশাসকের চেয়েও খারাপ। আমরা কয়জন রাজপথে নামতে নামতে পেরেছি?
বিএনপি›র এই সিনিয়র নেতা বলেন, এই স্বাধীন দেশে মুক্তিযুদ্ধাদের এখন কেউ স্মরণ করে না। যুদ্ধের সময়ে দেশে মুক্তিযোদ্ধা ছিল ৮০ হাজার, আর এখন হয়ে গেছে আড়াই লাখ। এটা সম্পূর্ণ আওয়ামী লীগের বদৌলতে। আজকের এই সমাবেশে আসার সময় জায়গায় জায়গায় পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের হয়রানি করেছে, আটক করেছে, বাধা দিয়েছে। নেতাকর্মীদের মধ্যে সেই প্রতিবাদ কোথায়? সেই প্রতিবাদের স্ফুলিঙ্গতো আমি দেখতে পাচ্ছি না। এখনকার তরুণরা কি অবদান রাখছেন এই দেশের জন্য? তাই আসুন এখনই সময় এই স্বৈরাচার সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে মাঠে নামার। আন্দোলনের মাধ্যমে এ সরকারকে হটিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করি।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, সমস্ত সিটি নির্বাচনে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করার স্বপ্ন দেখছে সরকার। আমরা অতীতে দেখেছি এবং বিশ্বাস করি আগামীতেও এই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোন সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারেরর অধীনে নির্বাচন চাই, মাফিয়া সরকারের অধীনে নয়।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, বিচার বিভাগ আর প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর আলাদা কিনা সেটা জানতে চাই। আমরা নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ চাই এবং নির্বাচন ব্যবস্থায় আমুল পরিবর্তন চাই।
খুলনা সিটি করপোরেশনের নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, ৬ সিটি করপোরেশনের প্রার্থীদের নিয়ে তারেক রহমানের নির্দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে সমাবেশ শুরু করেছি আমরা। মাফিয়া সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। তাই শেখ হাসিনার অধীনে আর কোন নির্বাচনে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। অবিলম্বে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে, অন্যত্থায় বিএনপি আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটিয়ে এই দাবি আদায় করবে।
বরিশাল বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন বলেন, চোর না শোনে ধর্মের কাহিনী, আজ চোর চোট্টা দিয়ে দেশ চালানো হচ্ছে। সমাবেশস্থলে আসতে আজ পথে পথে বাধা দেয়া হচ্ছে। নেতাকর্মীদের মারধর করা হচ্ছে। ভোলা নেতাকর্মীদের আসতে দেয়া হয়নি। সমাবেশস্থল ঘিরে রেখেছে পুলিশ। তারপরও নেতাকর্মীদের দমিয়ে রাখা যায়নি।
ঢাকা সিটি উত্তর করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী তাবিথ আউয়াল বলেন, দিন দিন জালিম সরকার স্বাভাবিক নির্বাচন হতে দিচ্ছে না। কোন নির্বাচনে ভোটাররা ভোট দিতে পারছে না।
ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেন, আজকে সমাবেশে আসার জন্য ঢাকা থেকে রওনা দেয়ার পর মাওয়া ঘাটে সরকার নির্লজ্জভাবে, ন্যাক্কারজনকভাবে ফেরি বন্ধ করে দেয়। কর্তৃপক্ষ অফিস বন্ধ করেই চলে যায়। আমাদের প্রায় ২৫টি গাড়ি এখনো সেখানে রয়ে গেছে। আমরা গণতন্ত্র পুনরাদ্ধের আন্দোলনে আছি। আমাদেরকে কোনো বাধা দিয়েই আটকানো যাবে না। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেই আমরা ঘরে ফিরে যাবো। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা যেভাবে গত ১৩ বছর ধরে অত্যাচার, নির্যাতন, মামলা হামলার শিকার হয়ে মাঠে আছেন, আপনাদেরকে দেখে আমি আরও উজ্জীবিত হলাম। আপনারা আগামী আন্দোলন সংগ্রামের জন্য প্রস্তুতি নিন। ইনশাআল্লাহ বরিশাল থেকেই সরকার পতনের আন্দোলন পাকাপোক্ত হবে।
বরিশাল মহানগরের সাবেক মেয়র মজিবুর সারোয়ারের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএনপি নেতা আবুল হোসেন খান, ওবায়দুল আকরাম, আলমগীর হোসেন প্রমুখ।
পূর্বঘোষিত এই বিক্ষোভ সমাবেশ এদিন বিকেল ৩টায় শুরু হয়। সমাবেশকে ঘিরে সকাল থেকেই সমাবেশস্থলের আশপাশ এবং গোটা শহরে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। শহরের প্রতিটি মোড়ে মোড়েই পুলিশ জলকামান নিয়ে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় শহরের মরকখোলা পুল, নতুন বাজার টেম্পু স্ট্যান্ডের মোড়, জেল খানার মোড়, আমতলার মোড়, হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা, কাকলী মোড় ও গীর্জা মহল্লার মোড়সহ বিভিন্ন জায়গায় ব্যারিকেড বসিয়ে সমাবেশস্থলে আসা বিএনপি নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষকে তল্লাশি চালায় পুলিশ। বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের অর্ধ-শতাধিক নেতাকর্মীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আটক করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন দলটির নেতারা।
এর আগে ঢাকা থেকে দক্ষিণ সিটির মেয়র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের নেতৃত্বে সমাবেশে অংশ নিতে যাওয়া গাড়ি বহর আটকে দেয়া মাওয়া ফেরি ঘাটে। ইশরাক জানান, ঘাটে গাড়ি বহর আসলে ফেরি কর্তৃপক্ষ তাদের অফিস বন্ধ করে চলে যায়। পরে লঞ্চে করে নেতাকর্মীদের নিয়ে পদ্মা পাড় হন ইশরাকসহ তার সাথে থাকা নেতাকর্মীরা।