ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

দারিদ্র্য দূরীকরণে ইসলাম

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১২:৩৫:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ অক্টোবর ২০১৬
  • / ৩৯৮ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম ডেস্ক: মানব সভ্যতার আদিম ও অলস পদ্ধতি ভিক্ষাবৃত্তি যা জীবিকা অর্জনের পুঁজি ও প্রায় পরিশ্রমবিহীন উপায়। বিপন্ন মানুষকে সহায়তা এবং অনগ্রসর মানুষের টিকে থাকার কৌশল হিসেবে ইসলাম দান-খয়রাতের বাধ্যবাধকতা ও উৎসাহ কোনোক্রমেই ভিক্ষাবৃত্তিকে সমর্থন করে না। ইসলামে কতগুলো কাজকে শর্তসাপেক্ষে ‘নিন্দনীয় বৈধ কাজ হিসেবে অনুমোদন দেয়া হয়। মূলত তা অধিকার নয় বরং সুযোগমাত্র। এগুলো হলো ঋণ গ্রহণ, বিবাহ-বিচ্ছেদ, ভিক্ষাবৃত্তি ইত্যাদি। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) অন্যের মুখাপেক্ষিতাকে কেবল সর্বনাশা অভাব আর অপমানকর দেনার ক্ষেত্রে অনুমোদন করেছেন। তিনি সতর্ক হওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘যে অভাবের কথা মানুষের কাছে প্রকাশ করে তার অভাব দূর হবে না বরং যে তা আল্লাহর কাছে নিবেদন করে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট’  আবু দাউদ। ইসলামী শরিয়তের সিদ্ধান্ত হলো, যার কাছে একদিন-একরাত টিকে থাকার মতো খাদ্য অথবা জীবিকা অর্জনের অবলম্বনস্বরূপ সামান্য পুঁজি আছে তার পক্ষে ভিক্ষা করা হারাম। অনুরূপভাবে মিথ্যা আবশ্যক দেখিয়ে অথবা কৃত্রিম, বিকৃত রূপ ধারণ করে অন্যের সহানুভূতি প্রত্যাশা করাও হারাম। ইসলাম কর্মহীন বেকার জীবনকে সমর্থন করে না বলেই হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) একজন সাহায্য প্রার্থীকে বনে গিয়ে কাঠ কাটার উপায় করে দিয়েছিলেন।’ আমাদের দেশে ভিক্ষাবৃত্তির বিচিত্র কৌশল ও মৌসুমি ভিক্ষুকের চিত্র অত্যন্ত করুণ এবং লজ্জাজনক। ভিক্ষুক নানা কৌশলে মানুষকে প্রভাবিত করে। কিন্তু আমাদের উচিত এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা। এ প্রসঙ্গে হজরত আবদুল্লাহ ইবনু মোবারকের উদ্ধৃতি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘কেউ আল্লাহর নামে সওয়াল করলে তাকে কিছু না দেয়াই আমার নিকট পছন্দনীয়।’ ভিক্ষাবৃত্তির কিছু কারণ ও বাস্তবতা হলো দারিদ্র্য, পারিবারিক অবহেলা, নি¤œ আয়, ভূমিহীনতা, অশিক্ষা, বসতবাড়ির অভাব, জনসংখ্যার চাপ ইত্যাদি। ভিক্ষাবৃত্তি নির্মূল করা খুব সহজ নয় এবং প্রায় সম্ভবও নয়। কিন্তু এ লজ্জা জাতিগতভাবে আমাদের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক। অক্ষমকে সহায়তা করা, তাকে স্বাবলম্বী হতে সাহায্য করা রাষ্ট্র, সমাজ ও ধনীদের কর্তব্য। ঠিক তেমনই ইহ-পারলৌকিক ভাবনায় ব্যক্তিরও উচিত ভিক্ষাবৃত্তির ও পরমুখাপেক্ষিতা থেকে নিজেকে মুক্ত করতে সংগ্রাম ও সাধনা করা। রাষ্ট্রীয়, সামাজিক উদ্যোগ ও কঠোর ব্যবস্থা এবং ব্যক্তির কঠিন শ্রম আর সংকল্পই পারে ভিক্ষাবৃত্তির মতো সামাজিক অনাচার প্রতিহত করতে। আর এভাবে ধীরে ধীরে পদক্ষেপ নিলেই সমাজ থেকে দারিদ্র্যের হার কমে আসবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

দারিদ্র্য দূরীকরণে ইসলাম

আপলোড টাইম : ১২:৩৫:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ অক্টোবর ২০১৬

ধর্ম ডেস্ক: মানব সভ্যতার আদিম ও অলস পদ্ধতি ভিক্ষাবৃত্তি যা জীবিকা অর্জনের পুঁজি ও প্রায় পরিশ্রমবিহীন উপায়। বিপন্ন মানুষকে সহায়তা এবং অনগ্রসর মানুষের টিকে থাকার কৌশল হিসেবে ইসলাম দান-খয়রাতের বাধ্যবাধকতা ও উৎসাহ কোনোক্রমেই ভিক্ষাবৃত্তিকে সমর্থন করে না। ইসলামে কতগুলো কাজকে শর্তসাপেক্ষে ‘নিন্দনীয় বৈধ কাজ হিসেবে অনুমোদন দেয়া হয়। মূলত তা অধিকার নয় বরং সুযোগমাত্র। এগুলো হলো ঋণ গ্রহণ, বিবাহ-বিচ্ছেদ, ভিক্ষাবৃত্তি ইত্যাদি। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) অন্যের মুখাপেক্ষিতাকে কেবল সর্বনাশা অভাব আর অপমানকর দেনার ক্ষেত্রে অনুমোদন করেছেন। তিনি সতর্ক হওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘যে অভাবের কথা মানুষের কাছে প্রকাশ করে তার অভাব দূর হবে না বরং যে তা আল্লাহর কাছে নিবেদন করে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট’  আবু দাউদ। ইসলামী শরিয়তের সিদ্ধান্ত হলো, যার কাছে একদিন-একরাত টিকে থাকার মতো খাদ্য অথবা জীবিকা অর্জনের অবলম্বনস্বরূপ সামান্য পুঁজি আছে তার পক্ষে ভিক্ষা করা হারাম। অনুরূপভাবে মিথ্যা আবশ্যক দেখিয়ে অথবা কৃত্রিম, বিকৃত রূপ ধারণ করে অন্যের সহানুভূতি প্রত্যাশা করাও হারাম। ইসলাম কর্মহীন বেকার জীবনকে সমর্থন করে না বলেই হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) একজন সাহায্য প্রার্থীকে বনে গিয়ে কাঠ কাটার উপায় করে দিয়েছিলেন।’ আমাদের দেশে ভিক্ষাবৃত্তির বিচিত্র কৌশল ও মৌসুমি ভিক্ষুকের চিত্র অত্যন্ত করুণ এবং লজ্জাজনক। ভিক্ষুক নানা কৌশলে মানুষকে প্রভাবিত করে। কিন্তু আমাদের উচিত এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা। এ প্রসঙ্গে হজরত আবদুল্লাহ ইবনু মোবারকের উদ্ধৃতি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘কেউ আল্লাহর নামে সওয়াল করলে তাকে কিছু না দেয়াই আমার নিকট পছন্দনীয়।’ ভিক্ষাবৃত্তির কিছু কারণ ও বাস্তবতা হলো দারিদ্র্য, পারিবারিক অবহেলা, নি¤œ আয়, ভূমিহীনতা, অশিক্ষা, বসতবাড়ির অভাব, জনসংখ্যার চাপ ইত্যাদি। ভিক্ষাবৃত্তি নির্মূল করা খুব সহজ নয় এবং প্রায় সম্ভবও নয়। কিন্তু এ লজ্জা জাতিগতভাবে আমাদের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক। অক্ষমকে সহায়তা করা, তাকে স্বাবলম্বী হতে সাহায্য করা রাষ্ট্র, সমাজ ও ধনীদের কর্তব্য। ঠিক তেমনই ইহ-পারলৌকিক ভাবনায় ব্যক্তিরও উচিত ভিক্ষাবৃত্তির ও পরমুখাপেক্ষিতা থেকে নিজেকে মুক্ত করতে সংগ্রাম ও সাধনা করা। রাষ্ট্রীয়, সামাজিক উদ্যোগ ও কঠোর ব্যবস্থা এবং ব্যক্তির কঠিন শ্রম আর সংকল্পই পারে ভিক্ষাবৃত্তির মতো সামাজিক অনাচার প্রতিহত করতে। আর এভাবে ধীরে ধীরে পদক্ষেপ নিলেই সমাজ থেকে দারিদ্র্যের হার কমে আসবে।