ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

দামুড়হুদায় সরকারি ২৯ বস্তা চাল পাচারের অভিযোগ, মেম্বার অবরুদ্ধ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:২২:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ এপ্রিল ২০২০
  • / ৬৭০ বার পড়া হয়েছে

rpt

প্রতিবেদক, দামুড়হুদা:
দামুড়হুদায় সরকারি ২৯ বস্তা চাল অসৎ উদ্দেশ্যে পাচারের অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। এ চাল পাচারের অভিযোগে লোকনাথ ক্লাব ঘরে জনগণ রিকাত মেম্বারকে আটকে রাখে। পরে প্রশাসন প্রাথমিক তদন্ত করে এ ঘটনায় রিকাত মেম্বারের সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় তাঁকে মুক্তি দেয়। এ ঘটনায় জব্দ করা হয়েছে গোডাউনের চাবি ও মাস্টাররোল। রহস্য উন্মোচনে গঠন করা হয়েছে দুই সদস্যের কমিটি। অল্প সময়ের মধ্যে তদন্ত স¤পন্ন করা হবে বলে জানিয়েছেন দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মুনিম লিংকন। গত বুধবার (০৮ এপ্রিল) সন্ধ্যার পর লোকনাথপুর গোডাউন থেকে ১০ টাকা কেজি দরের সরকারি ২৯ বস্তা চাল বাস্তুপুর গোডাউনে নেওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি হলে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করে এলাকাবাসী। পরে গোডাউন চেক করে ৬৫ বস্তা চাল পাওয়া যায়।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যায় ডিলার ছাত্তারের লোকনাথপুরস্থ গোডাউন থেকে ১০ টাকা কেজি দরের সরকারি ২৯ বস্তা চাল বাস্তুপুর গোডাউনে নেওয়া হয়। ঘটনাটি নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার রিকাত আলীকে লোকনাথপুর ক্লাব ঘরে আটকে রাখে। মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে সরকারি চাল পাচারের খবর। এলাকাবাসী কাল বিলম্ব না করে তাৎক্ষণিক ঘটনাটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানান। উত্তেজিত জনতা থামাতে দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল খালেক ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। এলাকাবাসী ও রিকাত মেম্বারের কাছ থেকে তিনি সব কথা শোনেন, যে ডিলারের মাধ্যমে ১০ টাকা দরে চাল বিক্রি হয় এবং সে ডিলার লোকনাথপুর গোডাউন থেকে চাল বাস্তপুর গোডাউনে নিয়ে যায়। যা এই চাল সর্ম্পকে কিছুই জানে না, তার কথার সত্যতা মিললে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়।
খবর পেয়ে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মুনিম লিংকন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মহিউদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে বাস্তুপুরে যান। মাস্টাররোল হিসেবে ওই গোডাউনে চাল থাকার কথা ২৯ বস্তা, কিন্তু সেখানে চাল পাওয়া যায় ৬৫ বস্তা। পরে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মুনিম লিংকন বাস্তপুর গোডাউনের চাবি এবং চাল বিতরণের মাস্টাররোল নিজ হেফাজতে নেন।
এ সময় ইউএনও উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, প্রত্যেক ওয়ার্ডে যাদের ১০ টাকা কেজি দরে চাল ক্রয়ের কার্ড আছে, যাদের অবস্থা ভালো হয়ে গেছে, তাঁদের থেকে ১০% কর্তন করে যারা এই কার্ড পাননি, তাদেরকে নতুন কার্ড করে দিতে বলা হয়েছে। কার্ডের বিষয়ে মেম্বার সংশ্লিষ্ট থাকায় এলাকাবাসীর ক্ষোভ সৃষ্টি হয়ে মেম্বারের সঙ্গে এমন আচরণ করেছে। ঘটনার মূল রহস্য তদন্ত ছাড়া বলা কিম্বা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব নয়। এ ঘটনায় বৃহ¯পতিবার (০৯ এপ্রিল) উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আশরাফ হোসেনকে সদস্য করে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে যতদ্রুত সম্ভব প্রকৃত ঘটনা জানানো হবে। মাস্টারোলে একই হাতের স্বাক্ষরের বিষয়ে তিনি বলেন, কোনো ধরণের গড়মিল পেলে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠিনভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে কেন রাতের বেলায় সরকারি চাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অবগত না করে তা সরানো হলো, তা সঠিক তদন্ত করে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জনগণের মধ্যে প্রকাশ করবে এমনটিই চাওয়া এলাকাবাসীর।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

দামুড়হুদায় সরকারি ২৯ বস্তা চাল পাচারের অভিযোগ, মেম্বার অবরুদ্ধ

আপলোড টাইম : ০৯:২২:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ এপ্রিল ২০২০

প্রতিবেদক, দামুড়হুদা:
দামুড়হুদায় সরকারি ২৯ বস্তা চাল অসৎ উদ্দেশ্যে পাচারের অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। এ চাল পাচারের অভিযোগে লোকনাথ ক্লাব ঘরে জনগণ রিকাত মেম্বারকে আটকে রাখে। পরে প্রশাসন প্রাথমিক তদন্ত করে এ ঘটনায় রিকাত মেম্বারের সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় তাঁকে মুক্তি দেয়। এ ঘটনায় জব্দ করা হয়েছে গোডাউনের চাবি ও মাস্টাররোল। রহস্য উন্মোচনে গঠন করা হয়েছে দুই সদস্যের কমিটি। অল্প সময়ের মধ্যে তদন্ত স¤পন্ন করা হবে বলে জানিয়েছেন দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মুনিম লিংকন। গত বুধবার (০৮ এপ্রিল) সন্ধ্যার পর লোকনাথপুর গোডাউন থেকে ১০ টাকা কেজি দরের সরকারি ২৯ বস্তা চাল বাস্তুপুর গোডাউনে নেওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি হলে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করে এলাকাবাসী। পরে গোডাউন চেক করে ৬৫ বস্তা চাল পাওয়া যায়।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যায় ডিলার ছাত্তারের লোকনাথপুরস্থ গোডাউন থেকে ১০ টাকা কেজি দরের সরকারি ২৯ বস্তা চাল বাস্তুপুর গোডাউনে নেওয়া হয়। ঘটনাটি নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার রিকাত আলীকে লোকনাথপুর ক্লাব ঘরে আটকে রাখে। মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে সরকারি চাল পাচারের খবর। এলাকাবাসী কাল বিলম্ব না করে তাৎক্ষণিক ঘটনাটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানান। উত্তেজিত জনতা থামাতে দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল খালেক ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। এলাকাবাসী ও রিকাত মেম্বারের কাছ থেকে তিনি সব কথা শোনেন, যে ডিলারের মাধ্যমে ১০ টাকা দরে চাল বিক্রি হয় এবং সে ডিলার লোকনাথপুর গোডাউন থেকে চাল বাস্তপুর গোডাউনে নিয়ে যায়। যা এই চাল সর্ম্পকে কিছুই জানে না, তার কথার সত্যতা মিললে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়।
খবর পেয়ে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মুনিম লিংকন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মহিউদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে বাস্তুপুরে যান। মাস্টাররোল হিসেবে ওই গোডাউনে চাল থাকার কথা ২৯ বস্তা, কিন্তু সেখানে চাল পাওয়া যায় ৬৫ বস্তা। পরে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মুনিম লিংকন বাস্তপুর গোডাউনের চাবি এবং চাল বিতরণের মাস্টাররোল নিজ হেফাজতে নেন।
এ সময় ইউএনও উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, প্রত্যেক ওয়ার্ডে যাদের ১০ টাকা কেজি দরে চাল ক্রয়ের কার্ড আছে, যাদের অবস্থা ভালো হয়ে গেছে, তাঁদের থেকে ১০% কর্তন করে যারা এই কার্ড পাননি, তাদেরকে নতুন কার্ড করে দিতে বলা হয়েছে। কার্ডের বিষয়ে মেম্বার সংশ্লিষ্ট থাকায় এলাকাবাসীর ক্ষোভ সৃষ্টি হয়ে মেম্বারের সঙ্গে এমন আচরণ করেছে। ঘটনার মূল রহস্য তদন্ত ছাড়া বলা কিম্বা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব নয়। এ ঘটনায় বৃহ¯পতিবার (০৯ এপ্রিল) উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আশরাফ হোসেনকে সদস্য করে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে যতদ্রুত সম্ভব প্রকৃত ঘটনা জানানো হবে। মাস্টারোলে একই হাতের স্বাক্ষরের বিষয়ে তিনি বলেন, কোনো ধরণের গড়মিল পেলে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠিনভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে কেন রাতের বেলায় সরকারি চাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অবগত না করে তা সরানো হলো, তা সঠিক তদন্ত করে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জনগণের মধ্যে প্রকাশ করবে এমনটিই চাওয়া এলাকাবাসীর।