ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

দামুড়হুদায় লকডাউনের প্রথম দিনেই ঢিলেঢালা ভাব!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৩৬:২৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুন ২০২১
  • / ৪৬ বার পড়া হয়েছে

প্রতিবেদক, দামুড়হুদা :
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় করোনা পরিস্থিতি মহামারী আকার নিলে তা রোধে শুরু হয়েছে ১৪ দিনের লকডাউন। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে এই লকডাউন শুরু হয়। লকডাউন কার্যকর করতে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন একত্রে কাজ করলেও দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা পৌরসভা ও উপজেলার আটটি ইউনিয়নে লকডাউনের প্রথম দিনেই অনেকটা ঢিলেঢালা ভাব দেখা গেছে। তবে লকডাউনের মধ্যে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করায় বিভিন্নস্থনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ২৫ জনকে জরিমানাও করেছে প্রশাসন।
জানা যায়, দামুড়হুদা উপজেলায় করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় গত সোমবার চুয়াডাঙ্গা জেলা কমিটির জরুরি সভায় লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। চুয়াডাঙ্গা করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধসংক্রান্ত জেলা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার গত সোমবার দুপুরে মঙ্গলবার থেকে লকডাউনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন। এবং পাঁচ দফা শর্ত দিয়ে সোমবার রাতেই এবিষয়ে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। শর্তগুলো হচ্ছে জাতীয় ও আঞ্চলিক সড়ক বা মহাসড়ক ও নৌপথে বা অন্য কোনো জেলা বা উপজেলা থেকে কেউ এ উপজেলায় প্রবেশ করতে কিংবা এ উপজেলা থেকে যেতে পারবে না। সবধরনের গণপরিবহন, জনচলাচল বন্ধ থাকবে। তবে জরুরি পরিসেবা ওষুধ ও চিকিৎসাসেবা, কৃষিপণ্য, নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য সরঞ্জাম সংগ্রহ ও পরিবহন এবং সীমিত পরিসরে ব্যাংকিং সেবা এর আওতাবহির্ভূত থাকবে। কাঁচাবাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে। শপিং-মলসহ অন্যান্য দোকান বন্ধ থাকবে। খাবারের দোকান ও হোটেল রেস্তোরাঁয় শুধু খাদ্য বিক্রয় বা সরবরাহ করা যাবে। কোনো অবস্থাতেই হোটেল-রেস্তোরাঁয় বসে খাবার গ্রহণ করা যাবে না। এবং মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করতে হবে।

লকডাইনের পাঁচ দফা শর্ত দিয়ে সোমবার রাতেই গণজ্ঞিপ্তি জারি করা হলেও দামুড়হুদা ও দর্শনার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দূরপাল্লা, অভ্যন্তরীণ পথে বাসসহ সবধরনের যানবাহন অবাধে চলাচল করতে দেখা গেছে। লকডাইনের তোয়াক্কা না করে বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল, বিভিন্ন যানবাহনে অধিকাংশ মানুষকে মাস্ক ব্যবহার করতে দেখা যায়নি। বিভিন্ন গ্রামের প্রবেশমুখে বাঁশ ও গাছ দিয়ে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা দেওয়া রয়েছে। তবে সে সকল প্রতিবন্ধকতায় উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন বা স্বেচ্ছাসেবকদের কেউ না থাকায় তা অমান্য করে অবাধে মানুষ চলাচল করছে। শপিং-মল ও দোকানপাঠ বন্ধ থাকলেও হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোতে বসে মানুষকে খাবার খেতে দেখা গেছে।
এদিকে, লকডাউনে দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গায় অবস্থিত চুল কারখানা বন্ধ থাকায় চুল ব্যবসায়ী ও কারখানা শ্রমিকদের ৪৩৪ জনকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা দিলারা রহমান চুল ব্যবসায়ী ও কারখানা শ্রমিকদের মধ্যে এই খাদ্য সহায়তা প্রদান করেন।
দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা দিলারা রহমান বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছি। মাইকিংয়ের মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে সতর্ককরাসহ লকডাউন ও স্বাস্থবিধি না মেনে চলাচলকারীদেরকে ভ্র্যাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হচ্ছে। আমরা লকডাউন কার্যকর করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। এই লকডাইন তখনই সার্থক হবে যখন সাধারণ মানুুষ, আইন মেনে চলবে, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে। সরকারের নির্দেশনা মেনে সকলে যার যার অবস্থান থেকে লকডাউন কার্যক্রম বাস্তবায়নে সচেষ্ট ভূমিকা পালন করলে আমরা এই মহামারী থেকে রক্ষা পাব, ইনশাল্লাহ।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

দামুড়হুদায় লকডাউনের প্রথম দিনেই ঢিলেঢালা ভাব!

আপলোড টাইম : ১০:৩৬:২৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুন ২০২১

প্রতিবেদক, দামুড়হুদা :
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় করোনা পরিস্থিতি মহামারী আকার নিলে তা রোধে শুরু হয়েছে ১৪ দিনের লকডাউন। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে এই লকডাউন শুরু হয়। লকডাউন কার্যকর করতে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন একত্রে কাজ করলেও দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা পৌরসভা ও উপজেলার আটটি ইউনিয়নে লকডাউনের প্রথম দিনেই অনেকটা ঢিলেঢালা ভাব দেখা গেছে। তবে লকডাউনের মধ্যে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করায় বিভিন্নস্থনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ২৫ জনকে জরিমানাও করেছে প্রশাসন।
জানা যায়, দামুড়হুদা উপজেলায় করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় গত সোমবার চুয়াডাঙ্গা জেলা কমিটির জরুরি সভায় লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। চুয়াডাঙ্গা করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধসংক্রান্ত জেলা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার গত সোমবার দুপুরে মঙ্গলবার থেকে লকডাউনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন। এবং পাঁচ দফা শর্ত দিয়ে সোমবার রাতেই এবিষয়ে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। শর্তগুলো হচ্ছে জাতীয় ও আঞ্চলিক সড়ক বা মহাসড়ক ও নৌপথে বা অন্য কোনো জেলা বা উপজেলা থেকে কেউ এ উপজেলায় প্রবেশ করতে কিংবা এ উপজেলা থেকে যেতে পারবে না। সবধরনের গণপরিবহন, জনচলাচল বন্ধ থাকবে। তবে জরুরি পরিসেবা ওষুধ ও চিকিৎসাসেবা, কৃষিপণ্য, নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য সরঞ্জাম সংগ্রহ ও পরিবহন এবং সীমিত পরিসরে ব্যাংকিং সেবা এর আওতাবহির্ভূত থাকবে। কাঁচাবাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে। শপিং-মলসহ অন্যান্য দোকান বন্ধ থাকবে। খাবারের দোকান ও হোটেল রেস্তোরাঁয় শুধু খাদ্য বিক্রয় বা সরবরাহ করা যাবে। কোনো অবস্থাতেই হোটেল-রেস্তোরাঁয় বসে খাবার গ্রহণ করা যাবে না। এবং মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করতে হবে।

লকডাইনের পাঁচ দফা শর্ত দিয়ে সোমবার রাতেই গণজ্ঞিপ্তি জারি করা হলেও দামুড়হুদা ও দর্শনার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দূরপাল্লা, অভ্যন্তরীণ পথে বাসসহ সবধরনের যানবাহন অবাধে চলাচল করতে দেখা গেছে। লকডাইনের তোয়াক্কা না করে বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল, বিভিন্ন যানবাহনে অধিকাংশ মানুষকে মাস্ক ব্যবহার করতে দেখা যায়নি। বিভিন্ন গ্রামের প্রবেশমুখে বাঁশ ও গাছ দিয়ে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা দেওয়া রয়েছে। তবে সে সকল প্রতিবন্ধকতায় উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন বা স্বেচ্ছাসেবকদের কেউ না থাকায় তা অমান্য করে অবাধে মানুষ চলাচল করছে। শপিং-মল ও দোকানপাঠ বন্ধ থাকলেও হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোতে বসে মানুষকে খাবার খেতে দেখা গেছে।
এদিকে, লকডাউনে দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গায় অবস্থিত চুল কারখানা বন্ধ থাকায় চুল ব্যবসায়ী ও কারখানা শ্রমিকদের ৪৩৪ জনকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা দিলারা রহমান চুল ব্যবসায়ী ও কারখানা শ্রমিকদের মধ্যে এই খাদ্য সহায়তা প্রদান করেন।
দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা দিলারা রহমান বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছি। মাইকিংয়ের মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে সতর্ককরাসহ লকডাউন ও স্বাস্থবিধি না মেনে চলাচলকারীদেরকে ভ্র্যাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হচ্ছে। আমরা লকডাউন কার্যকর করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। এই লকডাইন তখনই সার্থক হবে যখন সাধারণ মানুুষ, আইন মেনে চলবে, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে। সরকারের নির্দেশনা মেনে সকলে যার যার অবস্থান থেকে লকডাউন কার্যক্রম বাস্তবায়নে সচেষ্ট ভূমিকা পালন করলে আমরা এই মহামারী থেকে রক্ষা পাব, ইনশাল্লাহ।’