ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

দামুড়হুদার দলকা বিলে শর্তভঙ্গ করে ‘মা’ মাছ আহরণের অভিযোগ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৫৯:০১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ জুলাই ২০১৮
  • / ৩৬৭ বার পড়া হয়েছে

প্রভাবশালীদের কাছে সাবলীজ : প্রকৃত মৎস্যজীবীরা বঞ্চিত : কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা
নিজস্ব প্রতিবেদক: দামুড়হুদার বিল দলকার খাস আদায়ের বিধি ও মৎস্য আইন অমান্য এবং সাধারণ মৎস্যজীবীদের বঞ্চিত করে সাবলীজ প্রদান করা হয়েছে। সেইসাথে বিলে চট জাল দিয়ে প্রজননের ভরা মৌসুমে ‘মা’ মাছ নিধনসহ প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকার মাছ আহরণের অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে প্রতিদিনই বিল দলকায় বিপুল পরিমান দেশী কাটরা ‘মা’ মাছ নিধন হচ্ছে। ফলে আগামীতে এই বিলের সকল প্রজাতির ‘মা’ মাছ সংকটে এলাকার জলাশয়গুলি মাছ শুন্য হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেবে। খাস আদায়ের ৭নং শর্ত মোতাবেক ‘মা’ মাছ আহরণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হলেও যথাযথ কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাবে খাস গ্রহণকারীরা সকল শর্ত অমান্য করে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকার ‘মা’ মাছ নিধনসহ অন্যান্য মাছ আহরণ করেই চলেছে। ফলে মাছের স্বাভাবিক প্রজনন যেমন ব্যাহত হচ্ছে সেইসাথে হারাচ্ছে জীববৈচিত্র। এ ব্যপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন বঞ্চিত মৎস্যজীবীরা।
চুয়াডাঙ্গার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দীন জানান, দামুড়হুদা উপজেলার বিল দলকা জলমহালের নিকট ও তীরে বসবাস করেন ১৮০জন কার্ডধারী মৎস্যজীবী। যাদের রয়েছে দলকা মরাগাংনী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লি. নামের একটি সমিতি। বিল দলকাই এই সমিতির সদস্যগণের একমাত্র আয়ের উৎস্য। তাই তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা ও জীবনমানের উন্নয়নে সমিতির আবেদনের প্রেক্ষিতে শর্তসাপেক্ষে জলমহালটি ১৪২৫ সনের ১লা জ্যৈষ্ঠ হতে ৩১ আষাঢ় পর্যন্ত ২২ লাখ টাকা খাস আদায়ে দুই মাসের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়। তবে অন্যান্য শর্তের মধ্যে ‘মা’ মাছ আহরণ ও সাবলীজ প্রদানের কোন অনুমতি নেই। অথচ সরেজমিনে ও নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায় উল্লেখযোগ্য এই শর্তভঙ্গ করে খাস আদায়কারী দলকা মরাগাংনী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লি. এর সভাপতি মঙ্গল মিয়া দামুহুদার রঘুনাথপুর গ্রামের প্রভাবশালী মিল্টন মিয়ার কাছে সাবলীজ প্রদান করায় গত ১লা জ্যৈষ্ঠ থেকে অদ্যবধি বিল দলকায় নির্বিঘেœ সকল প্রকার মাছের সাথে ‘মা’ মাছ আহরণ অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে, এ বিষয়ে দামুহুদার রঘুনাথপুর গ্রামের প্রভাবশালী মিল্টন মিয়ার কাছে বিল দলকায় মাছ আহরণের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, দলকা বিলের খাস আদায় আমার দায়িত্ব না। বিল দলকায় আমার সরবরাহকৃত চারা পোনার টাকা আনতেই সেখানে যাই। অপরদিকে মিল্টন মিয়ার ডান হস্ত বিলদলকায় সকল প্রকার কর্তৃত্ব ও প্রকৃত মৎস্যজীবীদের দমন-পীড়নের হোতা লক্ষীপুর গ্রামের লিটন সময়ের সমীকরণের কাছে স্বীকার করেন তারা দলকা মরাগাংনীতে নিজেরাই মাছ চাষ করেছেন এবং উক্ত বিলের মাছ আহরণ ও বিক্রয় করছেন।
এবিষয়ে বিলের খাস আদায়কারী মঙ্গল মিয়া জানান, রঘুনাথপুরের মিল্টন ও তাদের ক্যাডার লক্ষীপুরের লিটনরা নানা প্রকার মামলা হামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে এবং সকল মৎস্যজীবীদের প্রতিমাসে ১০ হাজার করে টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে দলকা মরাগাংনী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লি. এর নামে বিল নিয়ে এপর্যন্ত প্রায় ৩ থেকে ৪ কোটি টাকার মাছ ধরে নিয়েছে অথচ সমিতিরসদস্যদের একটি টাকাও দেয়নি। একই অভিযোগ পাওয়া গেছে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অসংখ্য মৎস্যজীবী সদস্যদের নিকট থেকে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

দামুড়হুদার দলকা বিলে শর্তভঙ্গ করে ‘মা’ মাছ আহরণের অভিযোগ

আপলোড টাইম : ১০:৫৯:০১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ জুলাই ২০১৮

প্রভাবশালীদের কাছে সাবলীজ : প্রকৃত মৎস্যজীবীরা বঞ্চিত : কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা
নিজস্ব প্রতিবেদক: দামুড়হুদার বিল দলকার খাস আদায়ের বিধি ও মৎস্য আইন অমান্য এবং সাধারণ মৎস্যজীবীদের বঞ্চিত করে সাবলীজ প্রদান করা হয়েছে। সেইসাথে বিলে চট জাল দিয়ে প্রজননের ভরা মৌসুমে ‘মা’ মাছ নিধনসহ প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকার মাছ আহরণের অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে প্রতিদিনই বিল দলকায় বিপুল পরিমান দেশী কাটরা ‘মা’ মাছ নিধন হচ্ছে। ফলে আগামীতে এই বিলের সকল প্রজাতির ‘মা’ মাছ সংকটে এলাকার জলাশয়গুলি মাছ শুন্য হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেবে। খাস আদায়ের ৭নং শর্ত মোতাবেক ‘মা’ মাছ আহরণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হলেও যথাযথ কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাবে খাস গ্রহণকারীরা সকল শর্ত অমান্য করে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকার ‘মা’ মাছ নিধনসহ অন্যান্য মাছ আহরণ করেই চলেছে। ফলে মাছের স্বাভাবিক প্রজনন যেমন ব্যাহত হচ্ছে সেইসাথে হারাচ্ছে জীববৈচিত্র। এ ব্যপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন বঞ্চিত মৎস্যজীবীরা।
চুয়াডাঙ্গার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দীন জানান, দামুড়হুদা উপজেলার বিল দলকা জলমহালের নিকট ও তীরে বসবাস করেন ১৮০জন কার্ডধারী মৎস্যজীবী। যাদের রয়েছে দলকা মরাগাংনী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লি. নামের একটি সমিতি। বিল দলকাই এই সমিতির সদস্যগণের একমাত্র আয়ের উৎস্য। তাই তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা ও জীবনমানের উন্নয়নে সমিতির আবেদনের প্রেক্ষিতে শর্তসাপেক্ষে জলমহালটি ১৪২৫ সনের ১লা জ্যৈষ্ঠ হতে ৩১ আষাঢ় পর্যন্ত ২২ লাখ টাকা খাস আদায়ে দুই মাসের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়। তবে অন্যান্য শর্তের মধ্যে ‘মা’ মাছ আহরণ ও সাবলীজ প্রদানের কোন অনুমতি নেই। অথচ সরেজমিনে ও নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায় উল্লেখযোগ্য এই শর্তভঙ্গ করে খাস আদায়কারী দলকা মরাগাংনী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লি. এর সভাপতি মঙ্গল মিয়া দামুহুদার রঘুনাথপুর গ্রামের প্রভাবশালী মিল্টন মিয়ার কাছে সাবলীজ প্রদান করায় গত ১লা জ্যৈষ্ঠ থেকে অদ্যবধি বিল দলকায় নির্বিঘেœ সকল প্রকার মাছের সাথে ‘মা’ মাছ আহরণ অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে, এ বিষয়ে দামুহুদার রঘুনাথপুর গ্রামের প্রভাবশালী মিল্টন মিয়ার কাছে বিল দলকায় মাছ আহরণের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, দলকা বিলের খাস আদায় আমার দায়িত্ব না। বিল দলকায় আমার সরবরাহকৃত চারা পোনার টাকা আনতেই সেখানে যাই। অপরদিকে মিল্টন মিয়ার ডান হস্ত বিলদলকায় সকল প্রকার কর্তৃত্ব ও প্রকৃত মৎস্যজীবীদের দমন-পীড়নের হোতা লক্ষীপুর গ্রামের লিটন সময়ের সমীকরণের কাছে স্বীকার করেন তারা দলকা মরাগাংনীতে নিজেরাই মাছ চাষ করেছেন এবং উক্ত বিলের মাছ আহরণ ও বিক্রয় করছেন।
এবিষয়ে বিলের খাস আদায়কারী মঙ্গল মিয়া জানান, রঘুনাথপুরের মিল্টন ও তাদের ক্যাডার লক্ষীপুরের লিটনরা নানা প্রকার মামলা হামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে এবং সকল মৎস্যজীবীদের প্রতিমাসে ১০ হাজার করে টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে দলকা মরাগাংনী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লি. এর নামে বিল নিয়ে এপর্যন্ত প্রায় ৩ থেকে ৪ কোটি টাকার মাছ ধরে নিয়েছে অথচ সমিতিরসদস্যদের একটি টাকাও দেয়নি। একই অভিযোগ পাওয়া গেছে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অসংখ্য মৎস্যজীবী সদস্যদের নিকট থেকে।