ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

দর্শনা পারকৃষ্ণপুরে চিকিৎসার নামে চলছে অপচিকিৎসা : প্রতারিত সাধারণ মানুষ : ভন্ড কবিরাজ হাবিবুরের ভন্ডামিতে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৪:৪৫:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ জুলাই ২০১৭
  • / ৭২৩ বার পড়া হয়েছে

আওয়াল হোসেন: দর্শনা পারকৃষ্ণপুরে হাবিবুর নামের এক ভন্ড কবিরাজ প্রতিবন্ধীসহ নানা জটিল রোগের চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছে। নিরক্ষর ভন্ড কবিরাজ হাবিবুর চিকিৎসা করে না- এমন কোন রোগ নেই। সব রোগেরই চিকিৎসক সে, আবার সব রোগের ঔষধও রয়েছে তার কাছে। গাছড়া, মাদুলী, সুতা বা ডোর পড়ে দেওয়াসহ কী নেই তার কাছে! তার কাছে আসা রোগীদের অজ্ঞতাকে পুঁজি করে সে হাতিয়ে নিচ্ছে টাকা, বিনিময়ে রোগ জটিলতায় ভোগান্তিসহ প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
কবিরাজ হাবিবুর জানায়, সে পাঁচ বছর যাবত চিকিৎসা দিয়ে আসছে। এই কবিরাজি তার বাপের দাদির কাছে শিখেছে।এ ছাড়াও অদৃশ্য থেকে কেউ একজন তাকে সহায়তা করে বলে দাবি তার। তিনি কে? – জানতে চাইলে কবিরাজ হাবিবুর বলে এসব বলা যাবে না। আর কিছু জিজ্ঞাসা করবেন না। এরপর সে একা একাই সালাম দেয় এবং হাত নাড়িয়ে কি সব বলতে থাকে। সামনে মোমবাতি আগরবাতি জালিয়ে এবং কিছু গাছ-গাছড়া নিয়ে আপনা আপনী বিড়বিড় করে বকতে থাকে সে। তার কাছে চিকিৎসা নিয়ে কেউ ভাল হয়েছে কী? জানতে চাইলে জিরাট গ্রামের আজানুর ও তার চাচাতো ভাই জসিমের গোপন রোগ ভাল হয়েছে বলে জানায়। তার আরো দাবি এ গ্রামের মৃত মুরআলীর ছেলে আবুল ফরাকে কে বা কারা কুফুরী করেছিল। তার গাঁ জ্বলতো, বাড়ি থাকতে পারতো না, সে ভাল হয়ে গেছে। কি কি বারে রোগী দেখেন এবং রোগীর সংখ্যা কত জানতে চাইলে সে বলে, শনিবার ও মঙ্গলবার রোগী দেখি। রোগীর সংখ্যা ১৫/২০ জন মত হয়।
এদিকে, বাড়াদী গ্রামের সরাফত আলীর স্ত্রী তার প্রতিবন্ধী ছেলে রাসেল (৮) কে নিয়ে দুই মাস ঘুরে কোন ফল পাইনি বলে জানান। রাসেলের কি হয়েছে জানতে চাইলে ভন্ড কবিরাজ বলে লাউয়ের ডগাই তাকে কুফুরী করেছে। যিনি করেছে তিনি মারা গেছে। ভাল হওয়ার বিষয় জানতে চাইলে বলে, দেরী হবে ভাল হতে। আসলে রাসেল প্রতিবন্ধী। এছাড়া দূর্গাপুর গ্রামের আতিয়ার রহমানের স্ত্রী তার তিন বছরের ছেলেকে নিয়ে হাবিবুর কবিরাজের কাছে এলে তিনি বলেন, বাতাস লেগেছে। আবার নানা বয়সের কারো মাজা ব্যাথা, কারো বিয়ে হচ্ছে রোগেরও চিকিৎসা দেয়া হয় এখানে। মদনা গ্রামের রতনের ভাগ্নে স্কুলে অজ্ঞান হয়ে যায়। তার জ্ঞান ফেরাতে নানা ছলাকলা দেখায় সে। এমন চিকিৎসা করে হাবিবুর কবিরাজ গ্রামের সরল সোজা মানুষদের ধোকা দিয়ে কবিরাজির নামে ভন্ডামী করে চলেছে।
এ বিষয়ে পারকৃষ্ণপুর গ্রামবাসী জানায়, সে মাঠে কাজ করে, কিভাবে কবিরাজ হয়েছে জানি না। এছাড়া গত একমাস আগে মাথাভাঙ্গা নদীর পাশ থেকে বাগদী সম্প্রদায়ের হাবিবুর ও নিমাই নামে দুইজনের মেয়েকে জোরপূর্বক ধর্ষন চেষ্টা করে সে বলে অভিযোগ। এ সময় তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে ওই দুই মেয়েকে উদ্ধার করে। এ নিয়ে গ্রামে শালিস বৈঠকও হয়। স্থানীয়রা এ ভন্ড কবিরাজ হাবিবুরের হাত থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষার্থে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

দর্শনা পারকৃষ্ণপুরে চিকিৎসার নামে চলছে অপচিকিৎসা : প্রতারিত সাধারণ মানুষ : ভন্ড কবিরাজ হাবিবুরের ভন্ডামিতে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

আপলোড টাইম : ০৪:৪৫:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ জুলাই ২০১৭

আওয়াল হোসেন: দর্শনা পারকৃষ্ণপুরে হাবিবুর নামের এক ভন্ড কবিরাজ প্রতিবন্ধীসহ নানা জটিল রোগের চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছে। নিরক্ষর ভন্ড কবিরাজ হাবিবুর চিকিৎসা করে না- এমন কোন রোগ নেই। সব রোগেরই চিকিৎসক সে, আবার সব রোগের ঔষধও রয়েছে তার কাছে। গাছড়া, মাদুলী, সুতা বা ডোর পড়ে দেওয়াসহ কী নেই তার কাছে! তার কাছে আসা রোগীদের অজ্ঞতাকে পুঁজি করে সে হাতিয়ে নিচ্ছে টাকা, বিনিময়ে রোগ জটিলতায় ভোগান্তিসহ প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
কবিরাজ হাবিবুর জানায়, সে পাঁচ বছর যাবত চিকিৎসা দিয়ে আসছে। এই কবিরাজি তার বাপের দাদির কাছে শিখেছে।এ ছাড়াও অদৃশ্য থেকে কেউ একজন তাকে সহায়তা করে বলে দাবি তার। তিনি কে? – জানতে চাইলে কবিরাজ হাবিবুর বলে এসব বলা যাবে না। আর কিছু জিজ্ঞাসা করবেন না। এরপর সে একা একাই সালাম দেয় এবং হাত নাড়িয়ে কি সব বলতে থাকে। সামনে মোমবাতি আগরবাতি জালিয়ে এবং কিছু গাছ-গাছড়া নিয়ে আপনা আপনী বিড়বিড় করে বকতে থাকে সে। তার কাছে চিকিৎসা নিয়ে কেউ ভাল হয়েছে কী? জানতে চাইলে জিরাট গ্রামের আজানুর ও তার চাচাতো ভাই জসিমের গোপন রোগ ভাল হয়েছে বলে জানায়। তার আরো দাবি এ গ্রামের মৃত মুরআলীর ছেলে আবুল ফরাকে কে বা কারা কুফুরী করেছিল। তার গাঁ জ্বলতো, বাড়ি থাকতে পারতো না, সে ভাল হয়ে গেছে। কি কি বারে রোগী দেখেন এবং রোগীর সংখ্যা কত জানতে চাইলে সে বলে, শনিবার ও মঙ্গলবার রোগী দেখি। রোগীর সংখ্যা ১৫/২০ জন মত হয়।
এদিকে, বাড়াদী গ্রামের সরাফত আলীর স্ত্রী তার প্রতিবন্ধী ছেলে রাসেল (৮) কে নিয়ে দুই মাস ঘুরে কোন ফল পাইনি বলে জানান। রাসেলের কি হয়েছে জানতে চাইলে ভন্ড কবিরাজ বলে লাউয়ের ডগাই তাকে কুফুরী করেছে। যিনি করেছে তিনি মারা গেছে। ভাল হওয়ার বিষয় জানতে চাইলে বলে, দেরী হবে ভাল হতে। আসলে রাসেল প্রতিবন্ধী। এছাড়া দূর্গাপুর গ্রামের আতিয়ার রহমানের স্ত্রী তার তিন বছরের ছেলেকে নিয়ে হাবিবুর কবিরাজের কাছে এলে তিনি বলেন, বাতাস লেগেছে। আবার নানা বয়সের কারো মাজা ব্যাথা, কারো বিয়ে হচ্ছে রোগেরও চিকিৎসা দেয়া হয় এখানে। মদনা গ্রামের রতনের ভাগ্নে স্কুলে অজ্ঞান হয়ে যায়। তার জ্ঞান ফেরাতে নানা ছলাকলা দেখায় সে। এমন চিকিৎসা করে হাবিবুর কবিরাজ গ্রামের সরল সোজা মানুষদের ধোকা দিয়ে কবিরাজির নামে ভন্ডামী করে চলেছে।
এ বিষয়ে পারকৃষ্ণপুর গ্রামবাসী জানায়, সে মাঠে কাজ করে, কিভাবে কবিরাজ হয়েছে জানি না। এছাড়া গত একমাস আগে মাথাভাঙ্গা নদীর পাশ থেকে বাগদী সম্প্রদায়ের হাবিবুর ও নিমাই নামে দুইজনের মেয়েকে জোরপূর্বক ধর্ষন চেষ্টা করে সে বলে অভিযোগ। এ সময় তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে ওই দুই মেয়েকে উদ্ধার করে। এ নিয়ে গ্রামে শালিস বৈঠকও হয়। স্থানীয়রা এ ভন্ড কবিরাজ হাবিবুরের হাত থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষার্থে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।