ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

তিনদিনে শীতজনিত রোগে ৭৬ শিশু হাসপাতালে : একদিনেই ভর্তি ২৯

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৭:২৮:২০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৪ নভেম্বর ২০১৭
  • / ৪৫৮ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গায় নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়ছে : হাসপাতালের মেঝেতে রেখেই চিকিৎসা

আফজালুল হক: চুয়াডাঙ্গায় শীতজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়ছে। গত তিনদিনে সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে ৭৬ রোগী। এছাড়া বহির্বিভাগেও প্রতিদিন চিকিৎসা নিচ্ছে শতাধিক রোগী। হাসপাতালে সেবা নিতে আসা এসব শিশুর অধিকাংশই শীতজনিত নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। বিপুলসংখ্যক রোগীর সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক ও নার্সদের। শীত মওসুমের শুরুতেই হঠাৎ আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে গত কয়েক দিনে চুয়াডাঙ্গায় নিউমোনিয়া, সর্দিকাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়েছে শতশত শিশু। গতকাল চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে দেখা যায় ডায়ারিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে মায়েরা লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত তিনদিনে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৭৬শিশু। তাদের মধ্যে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ৬৫ শিশু ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ১১ শিশু। গতকাল শুক্রবার রাত পর্যন্ত নিউমোনিয়া আক্রান্ত ২৯ ও ডায়রিয়া আক্রান্ত ৬ শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। ফলে সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক এবং নার্সদের। এদিকে, শিশু ওয়ার্ডে নির্ধারিত শয্যার কয়েকগুন বেশি রোগী থাকায় অসুস্থ শিশুদের নিয়ে হাসপাতালের মেঝেতে থেকে সেবা নিতে হচ্ছে।
শিশু রোগীর স্বজনরা জানান, হাসপাতালে এসে বেড পাইনি। ঠান্ডায় ছোট ছেলে-মেয়েকে নিয়ে মেঝেতেই শুয়ে আছেন তারা। বেশি ঠাসাঠাসিতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। নার্সরা ঠিকমতো আসছে না। এছাড়া ওষুধ ঠিকমতো দিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন তারা।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) শামিম করিব জানান, গত তিনদিনে শীতজনিত রোগে ৭৬ শিশু সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। শুধু গতকালই ভর্তি হয়েছে ৩০ জনেরও বেশি শিশু। তাদের মধ্যে নিউমোনিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বেশি।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মাহবুবুর রহমান মিলন জানান, হঠাত আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। শিশুদের ঠিকমতো টিকা প্রদান ও ৬ মাস বয়স পর্যন্ত মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো হলে নিউমোনিয়া হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। তাছাড়া ঠা-া আবহাওয়া থেকে শিশুকে দূরে রাখা এবং গরম কাপড় পরিধান করানো অত্যন্ত জরুরি। ডায়রিয়া এক ধরনের পানিবাহিত রোগ। রোটা ভাইরাসের কারণে ডায়রিয়া হয়ে থাকে। ৬-১৬ মাস বয়সী আক্রান্ত শিশুকে ঘনঘন স্যালাইন ও মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। এছাড়া শিশুদের মায়ের বুকের দুধ ও রোটারিং টিকা দিলে ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে।
তিনি আরও বলেন, এসব রোগ থেকে রক্ষা পেতে শিশুদের ছয় মাস বয়স পর্যন্ত নিয়মিত বুকের দুধ পান করাতে হবে। সব শিশুর প্রতি যতœশীল হতে হবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে। শিশুদের জ্বর, অস্বাভাবিক কাশি ও পাতলা পায়খানা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিতে হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

তিনদিনে শীতজনিত রোগে ৭৬ শিশু হাসপাতালে : একদিনেই ভর্তি ২৯

আপলোড টাইম : ০৭:২৮:২০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৪ নভেম্বর ২০১৭

চুয়াডাঙ্গায় নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়ছে : হাসপাতালের মেঝেতে রেখেই চিকিৎসা

আফজালুল হক: চুয়াডাঙ্গায় শীতজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়ছে। গত তিনদিনে সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে ৭৬ রোগী। এছাড়া বহির্বিভাগেও প্রতিদিন চিকিৎসা নিচ্ছে শতাধিক রোগী। হাসপাতালে সেবা নিতে আসা এসব শিশুর অধিকাংশই শীতজনিত নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। বিপুলসংখ্যক রোগীর সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক ও নার্সদের। শীত মওসুমের শুরুতেই হঠাৎ আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে গত কয়েক দিনে চুয়াডাঙ্গায় নিউমোনিয়া, সর্দিকাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়েছে শতশত শিশু। গতকাল চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে দেখা যায় ডায়ারিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে মায়েরা লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত তিনদিনে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৭৬শিশু। তাদের মধ্যে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ৬৫ শিশু ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ১১ শিশু। গতকাল শুক্রবার রাত পর্যন্ত নিউমোনিয়া আক্রান্ত ২৯ ও ডায়রিয়া আক্রান্ত ৬ শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। ফলে সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক এবং নার্সদের। এদিকে, শিশু ওয়ার্ডে নির্ধারিত শয্যার কয়েকগুন বেশি রোগী থাকায় অসুস্থ শিশুদের নিয়ে হাসপাতালের মেঝেতে থেকে সেবা নিতে হচ্ছে।
শিশু রোগীর স্বজনরা জানান, হাসপাতালে এসে বেড পাইনি। ঠান্ডায় ছোট ছেলে-মেয়েকে নিয়ে মেঝেতেই শুয়ে আছেন তারা। বেশি ঠাসাঠাসিতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। নার্সরা ঠিকমতো আসছে না। এছাড়া ওষুধ ঠিকমতো দিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন তারা।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) শামিম করিব জানান, গত তিনদিনে শীতজনিত রোগে ৭৬ শিশু সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। শুধু গতকালই ভর্তি হয়েছে ৩০ জনেরও বেশি শিশু। তাদের মধ্যে নিউমোনিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বেশি।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মাহবুবুর রহমান মিলন জানান, হঠাত আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। শিশুদের ঠিকমতো টিকা প্রদান ও ৬ মাস বয়স পর্যন্ত মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো হলে নিউমোনিয়া হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। তাছাড়া ঠা-া আবহাওয়া থেকে শিশুকে দূরে রাখা এবং গরম কাপড় পরিধান করানো অত্যন্ত জরুরি। ডায়রিয়া এক ধরনের পানিবাহিত রোগ। রোটা ভাইরাসের কারণে ডায়রিয়া হয়ে থাকে। ৬-১৬ মাস বয়সী আক্রান্ত শিশুকে ঘনঘন স্যালাইন ও মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। এছাড়া শিশুদের মায়ের বুকের দুধ ও রোটারিং টিকা দিলে ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে।
তিনি আরও বলেন, এসব রোগ থেকে রক্ষা পেতে শিশুদের ছয় মাস বয়স পর্যন্ত নিয়মিত বুকের দুধ পান করাতে হবে। সব শিশুর প্রতি যতœশীল হতে হবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে। শিশুদের জ্বর, অস্বাভাবিক কাশি ও পাতলা পায়খানা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিতে হবে।