ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

তারুণ্যের বিজয়ের ষোলকলা পূর্ণ হউক

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:১৭:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮
  • / ৩০০ বার পড়া হয়েছে

আফগানিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সর্বশেষ ম্যাচটি ছিল ‘ডু অর ডাই’। বুধবার রাতে পাকিস্তানের সঙ্গে ম্যাচটিও ছিল তাই। সেই লড়াইয়ে চোটের কারণে দলের বাইরে ছিলেন সাকিব ও তামিম। যারা আছেন, তাদের মধ্যেও গুরুত্বপূর্ণ কয়েক খেলোয়াড় ছিলো চোটে আক্রান্ত। বাংলাদেশের ব্যাটিং ইনিংসের চার ওভার দুই বল পার হতেই ১২ রানের ভিতরে তিন উইকেট পড়ে যায়। মুশফিক পাঁজরের চোটে অনেকটাই কাহিল। প্রথম ম্যাচে ব্যথানাশক ইনজেকশন নিয়ে খেলেছিল, বুধবার খেলতে নামলে পাঁজরের ব্যথা নিয়ে। ব্যাটিং ইনিংসের ৯১ শতাংশ ওভার বাকি থাকতে ৩০ শতাংশ উইকেটের পতন, প্রতিপক্ষ পাকিস্তানের মতো শক্তিশালী দল এমন অবস্থায় মুশফিকের পাঁজরের ব্যথা যেন ছড়িয়ে পড়েছিল আপামর দেশের মানুষের বুকে। ক্রিকেট টিমওয়ার্কের খেলা হলেও একটি নির্দিষ্ট দিনে ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে সাধারণত মহানায়ক হয়ে ওঠেন দুই-একজন ব্যাটসম্যান। বুধবার ছিল মুশফিকের মহানায়ক হয়ে উঠবার দিন। তলানি হতে বাংলাদেশের রানের স্কোর চূড়ায় তুলার যে ইনিংস সে খেলেছিল, তাতে মাত্র এক রানের জন্য শতক পূরণ করতে পারলো না। কিন্তু ৯৯ রানের ওই ইনিংসটি যেন শতকের মহিমাকেও হার মানালো। মুশফিককে অসাধারণ সঙ্গ দিলেন মিঠুন। মাহমুদউল্লাহ, মিরাজ, মাশরাফির সম্মিলিত ৫০ রানও বাংলাদেশের চূড়ান্ত স্কোরকে একটি ভালো জায়গায় নিয়ে দাড়ায়। পাকিস্তানের জন্য ২৪০ রানের টার্গেট খুব কঠিন কিছু নয়। কিন্তু মনে রাখতে হবে, ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় ঐশ্বর্য হলো এর অনিশ্চয়তা। এটা আবহাওয়ার পূর্বাভাস প্রদানের মতোবিদ্যমান আলামতে প্রবল বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকলেও খটখটে রোদ উঠতে পারে। আবার বিনামেঘে বজ্রপাতের মতো হঠাৎ বর্ষণমুখরও হতে পারে। এশিয়া কাপের ভেন্যু হিসাবে আবুধাবি অনেক বেশি শারীরিক সক্ষমতার পরীক্ষা নেয়। মরুর তীব্র গরম আর পানিশূন্যতা নিংড়ে নেয় খেলোয়াড়দের। সুতরাং অপেক্ষাকৃত তারুণ্যময় একটি দলই এই বৈরী পরিবেশের সাথে বুঝিতে পারবে অনেক বেশি। ম্যাচটির ব্যবচ্ছেদ করলে তা আরো স্পষ্ট বোঝা যায়। দ্রুত তিন উইকেট পড়বার পর দলের ইনিংস-সঞ্জীবনী ৬০টি রান তুলে নিয়েছেন তরুণ ব্যাটসম্যান মিঠুন। সৌম্য ব্যাটিংয়ে খারাপ করলেও বল হাতে ৫ ওভার সংযমী রান ও একটি উইকেট তুলে নেয়। লিটনও ব্যাট হাতে ব্যর্থ এবং উইকেটের পিছনে দুইটি ক্যাচ ছাড়লেও প্রয়োজনের মুহূর্তে দারুণ দুইটি স্ট্যামিপং করেছে। তরুণ মিরাজ ১০ ওভারে মাত্র ২৮ রান খরচ করে দুইটি উইকেট দখল করেছে। অন্যদিকে পাকিস্তানি টপ অর্ডারে তিন ব্যাটসম্যানের মধ্যে দুইজনের দ্রুত পতন ঘটিয়ে তুমুল চাপ সৃষ্টি করেছে মোস্তাফিজ, সব মিলিয়ে দখল করেছে চারটি উইকেট! আর মাশরাফি বিন মর্তুজার নেতৃত্বের মুন্সিয়ানা এবং তার ‘সুপারম্যান’ সুলভ শোয়েব মালিকের মহামূল্যবান ক্যাচটি চোখের কোণে বিস্ময়ঘোর জমিয়ে দেয়।
বাংলাদেশ এবার পশ্চিম হতে পুর্বের দিকে জয়ের রথ নিয়ে ধাবিত হচ্ছে। এশিয়া কাপে বাংলাদেশের সর্বপশ্চিম প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান ও পাকিস্তানকে পরাজিত করে সর্বশেষ দুইটি ম্যাচে। অতঃপর বাকি রয়েছে ভারত। পশ্চিম হতে পুর্বের এই জয়যাত্রা পূরণ হবে না ভারতের বিরুদ্ধে বিজয় না আসলে। আজকের ফাইনালে সেই বিজয়ের আশাবাদ ব্যক্ত করছি।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

তারুণ্যের বিজয়ের ষোলকলা পূর্ণ হউক

আপলোড টাইম : ০৮:১৭:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

আফগানিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সর্বশেষ ম্যাচটি ছিল ‘ডু অর ডাই’। বুধবার রাতে পাকিস্তানের সঙ্গে ম্যাচটিও ছিল তাই। সেই লড়াইয়ে চোটের কারণে দলের বাইরে ছিলেন সাকিব ও তামিম। যারা আছেন, তাদের মধ্যেও গুরুত্বপূর্ণ কয়েক খেলোয়াড় ছিলো চোটে আক্রান্ত। বাংলাদেশের ব্যাটিং ইনিংসের চার ওভার দুই বল পার হতেই ১২ রানের ভিতরে তিন উইকেট পড়ে যায়। মুশফিক পাঁজরের চোটে অনেকটাই কাহিল। প্রথম ম্যাচে ব্যথানাশক ইনজেকশন নিয়ে খেলেছিল, বুধবার খেলতে নামলে পাঁজরের ব্যথা নিয়ে। ব্যাটিং ইনিংসের ৯১ শতাংশ ওভার বাকি থাকতে ৩০ শতাংশ উইকেটের পতন, প্রতিপক্ষ পাকিস্তানের মতো শক্তিশালী দল এমন অবস্থায় মুশফিকের পাঁজরের ব্যথা যেন ছড়িয়ে পড়েছিল আপামর দেশের মানুষের বুকে। ক্রিকেট টিমওয়ার্কের খেলা হলেও একটি নির্দিষ্ট দিনে ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে সাধারণত মহানায়ক হয়ে ওঠেন দুই-একজন ব্যাটসম্যান। বুধবার ছিল মুশফিকের মহানায়ক হয়ে উঠবার দিন। তলানি হতে বাংলাদেশের রানের স্কোর চূড়ায় তুলার যে ইনিংস সে খেলেছিল, তাতে মাত্র এক রানের জন্য শতক পূরণ করতে পারলো না। কিন্তু ৯৯ রানের ওই ইনিংসটি যেন শতকের মহিমাকেও হার মানালো। মুশফিককে অসাধারণ সঙ্গ দিলেন মিঠুন। মাহমুদউল্লাহ, মিরাজ, মাশরাফির সম্মিলিত ৫০ রানও বাংলাদেশের চূড়ান্ত স্কোরকে একটি ভালো জায়গায় নিয়ে দাড়ায়। পাকিস্তানের জন্য ২৪০ রানের টার্গেট খুব কঠিন কিছু নয়। কিন্তু মনে রাখতে হবে, ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় ঐশ্বর্য হলো এর অনিশ্চয়তা। এটা আবহাওয়ার পূর্বাভাস প্রদানের মতোবিদ্যমান আলামতে প্রবল বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকলেও খটখটে রোদ উঠতে পারে। আবার বিনামেঘে বজ্রপাতের মতো হঠাৎ বর্ষণমুখরও হতে পারে। এশিয়া কাপের ভেন্যু হিসাবে আবুধাবি অনেক বেশি শারীরিক সক্ষমতার পরীক্ষা নেয়। মরুর তীব্র গরম আর পানিশূন্যতা নিংড়ে নেয় খেলোয়াড়দের। সুতরাং অপেক্ষাকৃত তারুণ্যময় একটি দলই এই বৈরী পরিবেশের সাথে বুঝিতে পারবে অনেক বেশি। ম্যাচটির ব্যবচ্ছেদ করলে তা আরো স্পষ্ট বোঝা যায়। দ্রুত তিন উইকেট পড়বার পর দলের ইনিংস-সঞ্জীবনী ৬০টি রান তুলে নিয়েছেন তরুণ ব্যাটসম্যান মিঠুন। সৌম্য ব্যাটিংয়ে খারাপ করলেও বল হাতে ৫ ওভার সংযমী রান ও একটি উইকেট তুলে নেয়। লিটনও ব্যাট হাতে ব্যর্থ এবং উইকেটের পিছনে দুইটি ক্যাচ ছাড়লেও প্রয়োজনের মুহূর্তে দারুণ দুইটি স্ট্যামিপং করেছে। তরুণ মিরাজ ১০ ওভারে মাত্র ২৮ রান খরচ করে দুইটি উইকেট দখল করেছে। অন্যদিকে পাকিস্তানি টপ অর্ডারে তিন ব্যাটসম্যানের মধ্যে দুইজনের দ্রুত পতন ঘটিয়ে তুমুল চাপ সৃষ্টি করেছে মোস্তাফিজ, সব মিলিয়ে দখল করেছে চারটি উইকেট! আর মাশরাফি বিন মর্তুজার নেতৃত্বের মুন্সিয়ানা এবং তার ‘সুপারম্যান’ সুলভ শোয়েব মালিকের মহামূল্যবান ক্যাচটি চোখের কোণে বিস্ময়ঘোর জমিয়ে দেয়।
বাংলাদেশ এবার পশ্চিম হতে পুর্বের দিকে জয়ের রথ নিয়ে ধাবিত হচ্ছে। এশিয়া কাপে বাংলাদেশের সর্বপশ্চিম প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান ও পাকিস্তানকে পরাজিত করে সর্বশেষ দুইটি ম্যাচে। অতঃপর বাকি রয়েছে ভারত। পশ্চিম হতে পুর্বের এই জয়যাত্রা পূরণ হবে না ভারতের বিরুদ্ধে বিজয় না আসলে। আজকের ফাইনালে সেই বিজয়ের আশাবাদ ব্যক্ত করছি।