ইপেপার । আজমঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

তাওয়াফ করার নিয়ম ও সুন্নত

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:০৭:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ জুলাই ২০২১
  • / ৭৩ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম প্রতিবেদন:
পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। হাজিদের সর্বপ্রথম কাজই হলো (তামাত্তু ও কিরান হজকারীরা) নিজের জিনিসপত্র গুছিয়ে নেবে দ্রুত। এরপর পবিত্র হয়ে মোটেই দেরি না করে ‘হারাম শরিফে’ উপস্থিত হবেন এবং ‘তাওয়াফ কুদুম’ করবেন। ওমরাহ ও হজের তাওয়াফ ব্যতীত নফল তাওয়াফও করা যায়। যেমন- রাসুল (সা.), সাহাবা-আওলিয়া, আহলে বাইত, মা-বাবা ও অন্যান্য মুরুব্বি বা সন্তানদের স্মরণে কিংবা তাদের নামে তাওয়াফ করা।
তাওয়াফে যা ওয়াজিব
১. শরীর পবিত্র রাখা, অজু করা। নারীদের জন্য ঋতুস্রাব অবস্থায় তাওয়াফ করা জায়েজ নেই। ২. সতর ঢাকা। অর্থাৎ যেটুকু ঢাকা প্রত্যেক পুরুষ-নারীর জন্য ফরজ। ৩. ‘হাতিমে কা’বার’ বাইরে থেকে তাওয়াফ করা। ৪. হেঁটে তাওয়াফ করা। অক্ষম ব্যক্তি খাটিয়ার মাধ্যমে তাওয়াফ করতে পারেন। ৫. ‘হাজের আসওয়াদ’ থেকে শুরু করে ডানদিক দিয়ে তাওয়াফ শুরু করা। ৬. এক নাগাড়ে বিরতিহীনভাবে ‘সাতবার চক্কর’ দিয়ে তাওয়াফ পূর্ণ করা। ৭. ‘সাত চক্করে’ এক তাওয়াফ; এটা পূর্ণ হলেই ‘তাওয়াফের’ নামাজ পড়া।
তাওয়াফের সুন্নত কার্যাবলী
১. তাওয়াফের শুরুতে ‘হাজারে আসওয়াদ’ এর দিকে মুখ করা। ২. সম্ভব হলে ‘হাজের আসওয়াদ’ চুম্বন করা। নতুবা হাত দিয়ে দূর থেকে ইশারা করা। আর মুখে ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবর ওয়ালিল্লাহিল হামদ’ বলা। ৩. হাজের আসওয়াদ বরাবর দাঁড়িয়ে তাকবিরে তাহরিমা’র মতো উভয় হাত সিনা পর্যন্ত তোলা। ৪. যে তাওয়াফের পরে ‘সাঈ’ আছে, তাতে ‘ইজতেবা’ করা। অর্থাৎ ইহরামের চাদরের (উপরের অংশের) দুই মাথা ডান বগলের নিচ দিয়ে নিয়ে বাম কাঁধের ওপর ফেলে দেওয়া। ৫. ‘সাঈ’-যুক্ত ‘তাওয়াফে’র প্রথম তিন চক্করে ‘রমল’ করা। অথাৎ বীরের মতো হেলে দুলে জোর কদমে (একের পর এক পা ফেলে) চলা। ৬. বাকি চার চক্কর সাধারণ গতিতে (ধীরে ধীরে) সম্পন্ন করা। ৭. প্রত্যেক চক্কর তাওয়াফ শেষ করে এবং শেষ চক্করেরও পরে ‘হাজের অসওয়াদ’কে চুম্বন করা। সম্ভব না হলে দূর থেকে ইশারা করে- ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহ আকবর ওয়ালিল্লাহিল হামদ’ দোয়াটি পাঠ করা এবং ৩ নম্বর নিয়মের মতো দাঁড়িয়ে ইশারা করে ‘তাওয়াফ’ শেষ করা।
তাওয়াফের নিয়ত
নিয়ম আসলে পড়তে হয় না, বরং করতে হয়। হাদিসে ও ফিকহের কিতাবগুলোতে সর্বক্ষেত্রে নিয়ত করার কথা বলা হয়েছে। মনে মনে ইচ্ছে পোষণ করাকে নিয়ত বলে। তবে কেউ এরপর পড়তে চাইলে পড়তে পারেন। তবে নিয়ত করার চেয়ে পড়াকে কখনো গুরুত্বপূর্ণ মনে করা যাবে না। কেউ চাইলে পড়তে পারেন এভাবে : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি উরিদু তাওয়াফা বাইতিকাল হারাম ফায়াসসিরহু-লি, ওয়া তাক্বাব্বাল-হু-মিন্নি, সাবাআ’তা আশ্ওয়াত্বিন লিল্লাহি তাআলা।’ অথবা বাংলায় এভাবে বলতে পারেন : ‘হে আল্লাহ আমি তাওয়াফ পালনের জন্য নিয়ত করলাম।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

তাওয়াফ করার নিয়ম ও সুন্নত

আপলোড টাইম : ১০:০৭:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ জুলাই ২০২১

ধর্ম প্রতিবেদন:
পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। হাজিদের সর্বপ্রথম কাজই হলো (তামাত্তু ও কিরান হজকারীরা) নিজের জিনিসপত্র গুছিয়ে নেবে দ্রুত। এরপর পবিত্র হয়ে মোটেই দেরি না করে ‘হারাম শরিফে’ উপস্থিত হবেন এবং ‘তাওয়াফ কুদুম’ করবেন। ওমরাহ ও হজের তাওয়াফ ব্যতীত নফল তাওয়াফও করা যায়। যেমন- রাসুল (সা.), সাহাবা-আওলিয়া, আহলে বাইত, মা-বাবা ও অন্যান্য মুরুব্বি বা সন্তানদের স্মরণে কিংবা তাদের নামে তাওয়াফ করা।
তাওয়াফে যা ওয়াজিব
১. শরীর পবিত্র রাখা, অজু করা। নারীদের জন্য ঋতুস্রাব অবস্থায় তাওয়াফ করা জায়েজ নেই। ২. সতর ঢাকা। অর্থাৎ যেটুকু ঢাকা প্রত্যেক পুরুষ-নারীর জন্য ফরজ। ৩. ‘হাতিমে কা’বার’ বাইরে থেকে তাওয়াফ করা। ৪. হেঁটে তাওয়াফ করা। অক্ষম ব্যক্তি খাটিয়ার মাধ্যমে তাওয়াফ করতে পারেন। ৫. ‘হাজের আসওয়াদ’ থেকে শুরু করে ডানদিক দিয়ে তাওয়াফ শুরু করা। ৬. এক নাগাড়ে বিরতিহীনভাবে ‘সাতবার চক্কর’ দিয়ে তাওয়াফ পূর্ণ করা। ৭. ‘সাত চক্করে’ এক তাওয়াফ; এটা পূর্ণ হলেই ‘তাওয়াফের’ নামাজ পড়া।
তাওয়াফের সুন্নত কার্যাবলী
১. তাওয়াফের শুরুতে ‘হাজারে আসওয়াদ’ এর দিকে মুখ করা। ২. সম্ভব হলে ‘হাজের আসওয়াদ’ চুম্বন করা। নতুবা হাত দিয়ে দূর থেকে ইশারা করা। আর মুখে ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবর ওয়ালিল্লাহিল হামদ’ বলা। ৩. হাজের আসওয়াদ বরাবর দাঁড়িয়ে তাকবিরে তাহরিমা’র মতো উভয় হাত সিনা পর্যন্ত তোলা। ৪. যে তাওয়াফের পরে ‘সাঈ’ আছে, তাতে ‘ইজতেবা’ করা। অর্থাৎ ইহরামের চাদরের (উপরের অংশের) দুই মাথা ডান বগলের নিচ দিয়ে নিয়ে বাম কাঁধের ওপর ফেলে দেওয়া। ৫. ‘সাঈ’-যুক্ত ‘তাওয়াফে’র প্রথম তিন চক্করে ‘রমল’ করা। অথাৎ বীরের মতো হেলে দুলে জোর কদমে (একের পর এক পা ফেলে) চলা। ৬. বাকি চার চক্কর সাধারণ গতিতে (ধীরে ধীরে) সম্পন্ন করা। ৭. প্রত্যেক চক্কর তাওয়াফ শেষ করে এবং শেষ চক্করেরও পরে ‘হাজের অসওয়াদ’কে চুম্বন করা। সম্ভব না হলে দূর থেকে ইশারা করে- ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহ আকবর ওয়ালিল্লাহিল হামদ’ দোয়াটি পাঠ করা এবং ৩ নম্বর নিয়মের মতো দাঁড়িয়ে ইশারা করে ‘তাওয়াফ’ শেষ করা।
তাওয়াফের নিয়ত
নিয়ম আসলে পড়তে হয় না, বরং করতে হয়। হাদিসে ও ফিকহের কিতাবগুলোতে সর্বক্ষেত্রে নিয়ত করার কথা বলা হয়েছে। মনে মনে ইচ্ছে পোষণ করাকে নিয়ত বলে। তবে কেউ এরপর পড়তে চাইলে পড়তে পারেন। তবে নিয়ত করার চেয়ে পড়াকে কখনো গুরুত্বপূর্ণ মনে করা যাবে না। কেউ চাইলে পড়তে পারেন এভাবে : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি উরিদু তাওয়াফা বাইতিকাল হারাম ফায়াসসিরহু-লি, ওয়া তাক্বাব্বাল-হু-মিন্নি, সাবাআ’তা আশ্ওয়াত্বিন লিল্লাহি তাআলা।’ অথবা বাংলায় এভাবে বলতে পারেন : ‘হে আল্লাহ আমি তাওয়াফ পালনের জন্য নিয়ত করলাম।’