ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ডাকসু নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:১৫:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৩ মার্চ ২০১৯
  • / ২৬৭ বার পড়া হয়েছে

অনাকাক্সিক্ষত সব ঘটনার তদন্ত হোক
বিশৃঙ্খলা ও অনিয়মের মধ্যদিয়ে শেষ হলো বহু কাক্সিক্ষত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ, ডাকসু নির্বাচন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে ছাত্রসমাজের অগ্রণী ভূমিকার কেন্দ্রে থাকা ডাকসু ও হল সংসদের সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালে। দীর্ঘ ২৮ বছর পর অনুষ্ঠিত নির্বাচন ঘিরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক ধরনের আবেগী উচ্ছ্বাসও ছিল। ঐতিহ্যের ডাকসু সক্রিয় হবে, ছাত্ররাজনীতি থেকে শুরু করে ক্রীড়া-সংস্কৃতি সব ক্ষেত্রে ডাকসু ভূমিকা রাখবে। কিন্তু নির্বাচনের দিন ভোটগ্রহণের আগে ও মাঝে যে ঘটনাগুলো ঘটল, তাতে সচেতন মহলকে হতাশই হতে হচ্ছে। শুরুতেই একটি হলে বস্তাভর্তি ব্যালট পেপার উদ্ধারের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে ভোটগ্রহণ শুরু হয় তিন ঘণ্টা দেরিতে। রোকেয়া হলেও ব্যালট পেপারভর্তি ট্রাংক ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় প্রায় তিন ঘণ্টা ভোটগ্রহণ বন্ধ রাখা হয়। এই রোকেয়া হলেই আক্রান্ত হয়েছেন সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সহসভাপতি প্রার্থী। ব্যাপক অনিয়ম, ভোটগ্রহণে বাধা এবং কারচুপির অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে বাম ছাত্রসংগঠনগুলো নিয়ে গঠিত প্রগতিশীল ছাত্রজোট। ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে ছাত্রদলও। ডাকসু নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে গতকাল মঙ্গলবার ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন সমর্থিত প্যানেলের এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। নতুন করে নির্বাচন দাবি করেছেন তাঁরা। ডাকসু নির্বাচন ঘিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মতো দেশের রাজনীতি সচেতন মানুষের বিপুুল আগ্রহ ছিল। ধারণা করা হয়েছিল, ডাকসুর পর দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নির্বাচন হবে। ছাত্ররাজনীতির বন্ধ জানালা খুলে যাবে। ক্রীড়া-সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে মেধাবী তারুণ্যের বিকাশ ত্বরান্বিত করবে ডাকসু নির্বাচন। স্বাভাবিকভাবেই এই নির্বাচন নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আরো বেশি সতর্ক ও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত ছিল। ‘অনেকেই এই নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করবে’ এই দায়সারা জবাব দেওয়ার আগে একটি প্রশ্নের উত্তর জানা আবশ্যক। প্রশ্নটি হচ্ছে, এসব ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার জন্য কি কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল? সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। ব্যর্থতার দায় সম্পূর্ণভাবে তাদেরই বহন করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কি যথোপযুক্ত পরিপক্বতার পরিচয় দিতে পেরেছে? নাকি ২৮ বছর পর ডাকসু নির্বাচন সম্পন্ন করতে গিয়ে আগে থেকেই তুষ্টচিত্তে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলেছিল তারা? দেশের ছাত্ররাজনীতির কেন্দ্র ডাকসু। ডাকসুকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। নির্বাচনের দিন ঘটে যাওয়া সব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

ডাকসু নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ

আপলোড টাইম : ০৯:১৫:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৩ মার্চ ২০১৯

অনাকাক্সিক্ষত সব ঘটনার তদন্ত হোক
বিশৃঙ্খলা ও অনিয়মের মধ্যদিয়ে শেষ হলো বহু কাক্সিক্ষত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ, ডাকসু নির্বাচন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে ছাত্রসমাজের অগ্রণী ভূমিকার কেন্দ্রে থাকা ডাকসু ও হল সংসদের সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালে। দীর্ঘ ২৮ বছর পর অনুষ্ঠিত নির্বাচন ঘিরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক ধরনের আবেগী উচ্ছ্বাসও ছিল। ঐতিহ্যের ডাকসু সক্রিয় হবে, ছাত্ররাজনীতি থেকে শুরু করে ক্রীড়া-সংস্কৃতি সব ক্ষেত্রে ডাকসু ভূমিকা রাখবে। কিন্তু নির্বাচনের দিন ভোটগ্রহণের আগে ও মাঝে যে ঘটনাগুলো ঘটল, তাতে সচেতন মহলকে হতাশই হতে হচ্ছে। শুরুতেই একটি হলে বস্তাভর্তি ব্যালট পেপার উদ্ধারের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে ভোটগ্রহণ শুরু হয় তিন ঘণ্টা দেরিতে। রোকেয়া হলেও ব্যালট পেপারভর্তি ট্রাংক ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় প্রায় তিন ঘণ্টা ভোটগ্রহণ বন্ধ রাখা হয়। এই রোকেয়া হলেই আক্রান্ত হয়েছেন সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সহসভাপতি প্রার্থী। ব্যাপক অনিয়ম, ভোটগ্রহণে বাধা এবং কারচুপির অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে বাম ছাত্রসংগঠনগুলো নিয়ে গঠিত প্রগতিশীল ছাত্রজোট। ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে ছাত্রদলও। ডাকসু নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে গতকাল মঙ্গলবার ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন সমর্থিত প্যানেলের এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। নতুন করে নির্বাচন দাবি করেছেন তাঁরা। ডাকসু নির্বাচন ঘিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মতো দেশের রাজনীতি সচেতন মানুষের বিপুুল আগ্রহ ছিল। ধারণা করা হয়েছিল, ডাকসুর পর দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নির্বাচন হবে। ছাত্ররাজনীতির বন্ধ জানালা খুলে যাবে। ক্রীড়া-সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে মেধাবী তারুণ্যের বিকাশ ত্বরান্বিত করবে ডাকসু নির্বাচন। স্বাভাবিকভাবেই এই নির্বাচন নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আরো বেশি সতর্ক ও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত ছিল। ‘অনেকেই এই নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করবে’ এই দায়সারা জবাব দেওয়ার আগে একটি প্রশ্নের উত্তর জানা আবশ্যক। প্রশ্নটি হচ্ছে, এসব ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার জন্য কি কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল? সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। ব্যর্থতার দায় সম্পূর্ণভাবে তাদেরই বহন করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কি যথোপযুক্ত পরিপক্বতার পরিচয় দিতে পেরেছে? নাকি ২৮ বছর পর ডাকসু নির্বাচন সম্পন্ন করতে গিয়ে আগে থেকেই তুষ্টচিত্তে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলেছিল তারা? দেশের ছাত্ররাজনীতির কেন্দ্র ডাকসু। ডাকসুকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। নির্বাচনের দিন ঘটে যাওয়া সব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।