ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

টাকা ছাড়া মিলছে না বিনামূল্যের বই

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:২৭:২৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ জানুয়ারী ২০২১
  • / ১৫৩ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস:
ঝিনাইদহে টাকা না দিলে পাওয়া যাচ্ছে না বিনামূল্যের সরকারি বই। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা অভিযোগ করেন, সেশন ফি, ভর্তি ফিসহ নানা অজুহাতে নেওয়া হচ্ছে টাকা। আর পুরাতন বই জমা দিতে না পারলে বই প্রতি নেওয়া হচ্ছে আরও ৫০ টাকা। সদর উপজেলার ঘোড়শাল হামিদিয়া দাখিল মাদ্রাসায় যেয়ে এমন তথ্য মিলেছে। জেলা প্রশাসন ও শিক্ষা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর ওই মাদ্রাসার সুপার মো. ওয়াজেদ আলী বলছেন, ভর্তি ফির টাকা ছাড়া কোনো টাকা নেওয়া হচ্ছে না। এদিকে শিক্ষা অফিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সোমবার দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ভুক্তোভোগী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা জানান, উৎসব ছিল বিনামূল্যে বই পাওয়ার। আর নতুন বই পাওয়ার আনন্দে এসেছিল ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ঘোড়শাল হামিদিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। সে আনন্দে ভাটা পড়ে মাদ্রাসার সুপার ওয়াজেদ আলীর টাকা নেওয়ার দাবিতে। মাদ্রাসা সুপারের সাফ কথা সরকারি বই নিতে হলে ভর্তি ফির টাকা দিতে হবে। তা না হলে কোনো সরকারি বই দেওয়া হবে না। সুপারের এই কথায় বিপাকে পড়ে শিক্ষার্থীরা। অনেকে ৩৫০ থেকে ৭৫০ টাকা পরিশোধ করে নিয়েছে নতুন বই। আর পুরানো বই হারিয়ে গেলে দিতে হচ্ছে বই প্রতি ৫০ টাকা করে জরিমানা। ঘোড়শাল গ্রামের কৃষক নুর ইসলামের মেয়ে ৭ম শ্রেণির ছাত্রী রিতু সাড়ে তিনশ টাকা পরিশোধ করেই পেয়েছে নতুন বই।
হতদরিদ্র ইসাহাকের মেয়ে ৮ম শ্রেণির ছাত্রী শান্তা টাকা দিতে না পারার কারণে নতুন বই থেকে বঞ্চিত হয়েছে। টাকা নেওয়ার ঘটনা জানাজানি হলে এলাকার শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
অভিযুক্ত সুপার ওয়াজেদ আলী টাকার বিনিময়ে বই বিতরণের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, বিনামূল্যে বই দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের থেকে শুধু মাত্র ভর্তি ফি নেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা ভুল বুঝে এমন কথা রটাচ্ছেন।
স্থানীয় চেয়ারম্যান পারভেজ মাসুদ লিল্টন জানান, যারা সরকারের বিনামূল্যের বই বিতরণে টাকা চায়, তাঁদের শাস্তি হওয়া উচিত। মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোজাফফর হোসেন পলাশ জানান, শিক্ষা অফিসের পক্ষ থেকে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করে জড়িত সুপারসহ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমি দুই সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করে দিয়েছি।’
জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ জানান, ঘোড়শাল হামিদিয়া দাখিল মাদ্রাসায় টাকা ব্যতিত বই দিচ্ছে না, সে বিষয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছি। প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

টাকা ছাড়া মিলছে না বিনামূল্যের বই

আপলোড টাইম : ১০:২৭:২৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ জানুয়ারী ২০২১

ঝিনাইদহ অফিস:
ঝিনাইদহে টাকা না দিলে পাওয়া যাচ্ছে না বিনামূল্যের সরকারি বই। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা অভিযোগ করেন, সেশন ফি, ভর্তি ফিসহ নানা অজুহাতে নেওয়া হচ্ছে টাকা। আর পুরাতন বই জমা দিতে না পারলে বই প্রতি নেওয়া হচ্ছে আরও ৫০ টাকা। সদর উপজেলার ঘোড়শাল হামিদিয়া দাখিল মাদ্রাসায় যেয়ে এমন তথ্য মিলেছে। জেলা প্রশাসন ও শিক্ষা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর ওই মাদ্রাসার সুপার মো. ওয়াজেদ আলী বলছেন, ভর্তি ফির টাকা ছাড়া কোনো টাকা নেওয়া হচ্ছে না। এদিকে শিক্ষা অফিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সোমবার দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ভুক্তোভোগী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা জানান, উৎসব ছিল বিনামূল্যে বই পাওয়ার। আর নতুন বই পাওয়ার আনন্দে এসেছিল ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ঘোড়শাল হামিদিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। সে আনন্দে ভাটা পড়ে মাদ্রাসার সুপার ওয়াজেদ আলীর টাকা নেওয়ার দাবিতে। মাদ্রাসা সুপারের সাফ কথা সরকারি বই নিতে হলে ভর্তি ফির টাকা দিতে হবে। তা না হলে কোনো সরকারি বই দেওয়া হবে না। সুপারের এই কথায় বিপাকে পড়ে শিক্ষার্থীরা। অনেকে ৩৫০ থেকে ৭৫০ টাকা পরিশোধ করে নিয়েছে নতুন বই। আর পুরানো বই হারিয়ে গেলে দিতে হচ্ছে বই প্রতি ৫০ টাকা করে জরিমানা। ঘোড়শাল গ্রামের কৃষক নুর ইসলামের মেয়ে ৭ম শ্রেণির ছাত্রী রিতু সাড়ে তিনশ টাকা পরিশোধ করেই পেয়েছে নতুন বই।
হতদরিদ্র ইসাহাকের মেয়ে ৮ম শ্রেণির ছাত্রী শান্তা টাকা দিতে না পারার কারণে নতুন বই থেকে বঞ্চিত হয়েছে। টাকা নেওয়ার ঘটনা জানাজানি হলে এলাকার শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
অভিযুক্ত সুপার ওয়াজেদ আলী টাকার বিনিময়ে বই বিতরণের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, বিনামূল্যে বই দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের থেকে শুধু মাত্র ভর্তি ফি নেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা ভুল বুঝে এমন কথা রটাচ্ছেন।
স্থানীয় চেয়ারম্যান পারভেজ মাসুদ লিল্টন জানান, যারা সরকারের বিনামূল্যের বই বিতরণে টাকা চায়, তাঁদের শাস্তি হওয়া উচিত। মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোজাফফর হোসেন পলাশ জানান, শিক্ষা অফিসের পক্ষ থেকে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করে জড়িত সুপারসহ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমি দুই সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করে দিয়েছি।’
জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ জানান, ঘোড়শাল হামিদিয়া দাখিল মাদ্রাসায় টাকা ব্যতিত বই দিচ্ছে না, সে বিষয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছি। প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।