ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহ পৌরসভায় চেক জালিযাতির মাধ্যমে ৩০ লাখ টাকা আত্মসাৎ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৭:২৩:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৭ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস:
ঝিনাইদহ পৌরসভার সাবেক মেয়রসহ চারজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ঝিনাইদহ সমন্বিত কার্যালয়ে মামলা হয়েছে। দুদকের অনুসন্ধানে অভিযুক্তরা হলেন- ঝিনাইদহ পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিণ্টু, সাবেক পৌরসভার সচিব আজমল হোসেন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান চান ও হিসাবরক্ষক মকলেচুর রহমান।
গতকাল সোমবার রাতে ঝিনাইদহ দুদকের উপ-পরিচালক মো. জাহিদ কামাল এ খবর নিশ্চিত করে জানান, চেক জালিযাতির মাধ্যমে অভিযুক্তরা পৌরসভার ৩০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় হেড অফিসের নির্দেশনা মোতাবেক গত ২২ জানুয়ারি দুদকের রেজিস্ট্রারে নথিভুক্ত করা হয়েছে, যার নম্বর ১। এর পূর্বেও দুর্নীতির দায়ে সাবেক পৌরসভার সচিব আজমল হোসেন ও হিসাবরক্ষক মকলেচুর রহমানকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। মন্ত্রণালয় জারিকৃত এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ঝিনাইদহ পৌরসভার ফান্ড তছরুপ ও চেক জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আজমল ও মকলেচুরের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ পৌর শাখা-১ এর উপ-সচিব আব্দুর রহমান এই প্রজ্ঞাপন জারি করেন। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ঝিনাইদহ পৌরসভার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা আজমল হোসেন বিভিন্ন সময় হিসাবরক্ষক মকলেচুর রহমানের সহায়তায় ৩৮টি চেকের মাধ্যমে ৭৪ লাখ ৫৮ হাজার ৮২ টাকা অবৈধভাবে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। বর্ণিত অভিযোগের বিষয়ে হিসাবরক্ষক মকলেচুর রহমান দোষ স্বীকার করে সম্প্রতি তদন্ত কর্মকর্তার কাছে লিখিত দেন। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে চেক জালিয়াতির ঘটনাটি তদন্ত করেন ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক দপ্তরের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ইয়ারুল ইসলাম।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ পৌরসভার সাবেক মেয়র সাইদুল করিম মিণ্টু চেক জালিয়াতির বিষয়টি আঁচ করতে পেরে ২০২১ সালের ২৭ শে জুন তার দপ্তরের ২৯৬ নম্বর স্মারকে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব (পৌর-১ শাখা) বরাবর চিঠি দেন। সেই চিঠির আলোকে মন্ত্রণালয় একটি তদন্ত কমিটি করে প্রতিবেদন প্রেরণ করার নির্দেশনা জারি করে। ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক দপ্তরের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ও ঝিনাইদহ পৌরসভার সাবেক প্রশাসক ইয়ারুল ইসলাম চেক জালিয়াতির ঘটনাটি তদন্ত করে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন প্রেরণ করেন।
এদিকে ঝিনাইদহ পৌরসভার নতুন মেয়র দায়িত্ব গ্রহণের আগেই চেক জালিয়াতির ৭৪ লাখ ৫৮ হাজার ৮২ টাকা জমা হয় পৌরসভার একটি অ্যাকাউন্টে। হিসাবরক্ষক মকলেচুর রহমান এই টাকা সোনালী ব্যাংকের ২৪০৭০০৪০০০৩১৬ নম্বর অ্যাকাউন্টে জমা দিলেও ঝিনাইদহ পৌরসভার অ্যাকাউন্টস সেকশনে তার কোনো ডকুমেন্ট ছিল না। নতুন মেয়র শাহরিয়ার জাহেদী হিজল দায়িত্ব গ্রহণের পর বিষয়টি জানাজানি হলেও ধামাচাপা পড়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে সাবেক পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিণ্টুর বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে ফোন দেওয়া হলে তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। ফলে তার মতামত গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে ঝিনাইদহ পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান চাঁন জানান, তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার কোনো বক্তব্য এ পর্যন্ত নেয়নি।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

ঝিনাইদহ পৌরসভায় চেক জালিযাতির মাধ্যমে ৩০ লাখ টাকা আত্মসাৎ

আপলোড টাইম : ০৭:২৩:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৩

ঝিনাইদহ অফিস:
ঝিনাইদহ পৌরসভার সাবেক মেয়রসহ চারজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ঝিনাইদহ সমন্বিত কার্যালয়ে মামলা হয়েছে। দুদকের অনুসন্ধানে অভিযুক্তরা হলেন- ঝিনাইদহ পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিণ্টু, সাবেক পৌরসভার সচিব আজমল হোসেন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান চান ও হিসাবরক্ষক মকলেচুর রহমান।
গতকাল সোমবার রাতে ঝিনাইদহ দুদকের উপ-পরিচালক মো. জাহিদ কামাল এ খবর নিশ্চিত করে জানান, চেক জালিযাতির মাধ্যমে অভিযুক্তরা পৌরসভার ৩০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় হেড অফিসের নির্দেশনা মোতাবেক গত ২২ জানুয়ারি দুদকের রেজিস্ট্রারে নথিভুক্ত করা হয়েছে, যার নম্বর ১। এর পূর্বেও দুর্নীতির দায়ে সাবেক পৌরসভার সচিব আজমল হোসেন ও হিসাবরক্ষক মকলেচুর রহমানকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। মন্ত্রণালয় জারিকৃত এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ঝিনাইদহ পৌরসভার ফান্ড তছরুপ ও চেক জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আজমল ও মকলেচুরের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ পৌর শাখা-১ এর উপ-সচিব আব্দুর রহমান এই প্রজ্ঞাপন জারি করেন। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ঝিনাইদহ পৌরসভার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা আজমল হোসেন বিভিন্ন সময় হিসাবরক্ষক মকলেচুর রহমানের সহায়তায় ৩৮টি চেকের মাধ্যমে ৭৪ লাখ ৫৮ হাজার ৮২ টাকা অবৈধভাবে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। বর্ণিত অভিযোগের বিষয়ে হিসাবরক্ষক মকলেচুর রহমান দোষ স্বীকার করে সম্প্রতি তদন্ত কর্মকর্তার কাছে লিখিত দেন। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে চেক জালিয়াতির ঘটনাটি তদন্ত করেন ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক দপ্তরের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ইয়ারুল ইসলাম।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ পৌরসভার সাবেক মেয়র সাইদুল করিম মিণ্টু চেক জালিয়াতির বিষয়টি আঁচ করতে পেরে ২০২১ সালের ২৭ শে জুন তার দপ্তরের ২৯৬ নম্বর স্মারকে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব (পৌর-১ শাখা) বরাবর চিঠি দেন। সেই চিঠির আলোকে মন্ত্রণালয় একটি তদন্ত কমিটি করে প্রতিবেদন প্রেরণ করার নির্দেশনা জারি করে। ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক দপ্তরের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ও ঝিনাইদহ পৌরসভার সাবেক প্রশাসক ইয়ারুল ইসলাম চেক জালিয়াতির ঘটনাটি তদন্ত করে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন প্রেরণ করেন।
এদিকে ঝিনাইদহ পৌরসভার নতুন মেয়র দায়িত্ব গ্রহণের আগেই চেক জালিয়াতির ৭৪ লাখ ৫৮ হাজার ৮২ টাকা জমা হয় পৌরসভার একটি অ্যাকাউন্টে। হিসাবরক্ষক মকলেচুর রহমান এই টাকা সোনালী ব্যাংকের ২৪০৭০০৪০০০৩১৬ নম্বর অ্যাকাউন্টে জমা দিলেও ঝিনাইদহ পৌরসভার অ্যাকাউন্টস সেকশনে তার কোনো ডকুমেন্ট ছিল না। নতুন মেয়র শাহরিয়ার জাহেদী হিজল দায়িত্ব গ্রহণের পর বিষয়টি জানাজানি হলেও ধামাচাপা পড়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে সাবেক পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিণ্টুর বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে ফোন দেওয়া হলে তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। ফলে তার মতামত গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে ঝিনাইদহ পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান চাঁন জানান, তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার কোনো বক্তব্য এ পর্যন্ত নেয়নি।