ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহ পাসপোর্ট অফিসের ডিএডির যৌন কেলেংকারীর খবর নিয়ে তোলপাড়

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১২:৫৫:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ অগাস্ট ২০১৬
  • / ২৯১ বার পড়া হয়েছে

Passport-Officer-A-Mottalibঝিনাইদহ অফিস: ঝিনাইদহ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল মোত্তালেব সরকারের যৌন কেলেংকারীর খবর বিভিন্ন দৈনিকে প্রকাশে তোলপাড় শুরুু হয়েছে। সকালে পত্রিকার বান্ডিল ঝিনাইদহ শহরে এসে পৌছালে পত্রিকা নিয়ে কাড়াকাড়ি পড়ে যায়। অনেক গ্রাহক বৃহস্পতিবার কিছু আঞ্চলিক পত্রিকা পড়তে পারিনি। ঝিনাইদহ পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীরা পত্রিকা সংগ্রহে মরিয়া হয়ে ওঠে। এদিকে উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল মোত্তালেব সরকার বুধবার সন্ধ্যায় ঝিনাইদহ ছেড়েছেন। তিনি যাওয়ার আগে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য বিভিন্ন মহলে তদ্বীর করেন। বিভিন্ন স্থানে তিনি সংসদের ডেপুটি স্পিকার তার আত্মীয় বলে দম্ভোক্তি প্রকাশ করে বলেন, আমার কিছুই হবে না। আমি রুখসানা আফরিনকে দেখে নেব। উল্লেখ্য উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল মোত্তালেব সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক ঘুষ বাণিজ্যের পর এবার কর্মক্ষেত্রে হয়রানী, উত্যক্তসহ যৌন হয়রানীর অভিযোগ করেন তার অফিসের অফিস সহকারী রুখসানা আফরিন। পাসপোর্ট অফিসের মহাপরিচালকের বরাবর লিখিত অভিযোগ করার পর বিষয়টি তদন্ত করা হয়েছে। বুধবার ডিজি অফিসের সহকারী পরিচালক (সংস্থাপন) নাসরিন পারভিন নুপুর অভিযোগটি তদন্ত করেন। বুধবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঝিনাইদহ পাসপোর্ট অফিসের সব কাজ বন্ধ করে তদন্ত করা হয়। এ সময় তদন্ত কর্মকর্তা নাসরিন পারভিন নুপুর অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বক্তব্য লিপিবদ্ধ করেন। তদন্তকালে উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল মোত্তালেব সরকারের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের সত্যতা পান তিনি। পাসপোর্ট অফিসের মহাপরিচালকের বরাবর লিখিত অভিযোগে রুখসানা আফরিন উল্লেখ করেন, ঝিনাইদহ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে যোগদানের পর থেকেই উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল মোত্তালেব সরকার তাকে মানসিক ভাবে নির্যাতন করে আসছেন। আমি নিজের সংসার ও মান সন্মানের দিকে তাকিয়ে তাকে সংশোধন হওয়ার অনুরোধ করি। কিন্তু তিনি আমাকে অব্যাহত ভাবে আপত্তিকর ও অনৈতিক প্রস্তাব দিতে থাকেন। অফিস শেষ করে বাসায় গেলে তিনি রাতে তার বাসায় আসার প্রস্তাব দেন। যা আমার জন্য খুবই লজ্জা ও মানসিক যন্ত্রানার। সর্বশেষ গত ১১ জুলাই তিনি আমাকে আপত্তিকর প্রস্তাব দিলে আমি এর প্রতিবাদ করি। প্রতিবাদ করায় তিনি আমাকে অফিসিয়াল ভাবে ক্ষতি করার হুমকী দেন। তার কু প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গত ৭ আগষ্ট তিনি আমাকে বিনা অপরাধে শোকজ করেন। ৯ আগষ্ট আমি তার চিঠির উত্তর দিলে তিনি সন্তোষজনক হয়নি বলে চিঠি ফেরৎ দেন। এরপর তিনি আমাকে হুমকী ও চাপ প্রয়োগ করে চিঠি সংশোধন করে তার মতো করে জবাব প্রদানে বাধ্য করেন। ফলে আমি এখন স্বাভাবিক ভাবে অফিস করতে পারছি না। আমাকে হুমকী দেওয়া হচ্ছে। এদিকে পাসপোর্ট গ্রাহকদের অভিযোগ উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল মোত্তালেব সরকারের দুর্ব্যবহারে তারা সন্তুষ্ট নয়। তিনি পাসপোর্ট প্রতি তিনি ৯’শ টাকা ঘুষ আদায় করেন। টাকা না দিলে দিনের পর দিন ঘোরানো হয়। ইমার্জেন্সি পাসপোর্ট করতে গেলে সরকারী ফি বাদেও ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। এমন অভিযোগ করেন ঝিনাইদহ শহরের চাকলাপাড়ার কমল কুমার। গত ৩১ মে তার কাছ থেকে ২১ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। সুত্রমতে ইমার্জেন্সি পাসপোর্টের টাকা নিয়ে এক মাসের চালান জমা দেওয়া হয়। এতে সরকার প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হন। মহেশপুর এলাকার একাধিক ব্যক্তি এই অভিযোগ করেন। দ্রুত পাসপোর্ট প্রদানের কথা বলে ২০/২৫ দিন পর দেওয়া হয়। এ বিষয়ে উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল মোত্তালেব সরকার জানান, প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (সংস্থাপন) নাসরিন পারভিন নুপুর নিয়মিত ভিজিটে এসেছিলেন। তার বিরুদ্ধে কেও কোন অভিযোগ করেনি। এ সব মিথ্যা এবং বানোয়াট। মোত্তালেব সরকার বলেন, তাকে সরানোর চক্রান্ত হচ্ছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

ঝিনাইদহ পাসপোর্ট অফিসের ডিএডির যৌন কেলেংকারীর খবর নিয়ে তোলপাড়

আপলোড টাইম : ১২:৫৫:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ অগাস্ট ২০১৬

Passport-Officer-A-Mottalibঝিনাইদহ অফিস: ঝিনাইদহ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল মোত্তালেব সরকারের যৌন কেলেংকারীর খবর বিভিন্ন দৈনিকে প্রকাশে তোলপাড় শুরুু হয়েছে। সকালে পত্রিকার বান্ডিল ঝিনাইদহ শহরে এসে পৌছালে পত্রিকা নিয়ে কাড়াকাড়ি পড়ে যায়। অনেক গ্রাহক বৃহস্পতিবার কিছু আঞ্চলিক পত্রিকা পড়তে পারিনি। ঝিনাইদহ পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীরা পত্রিকা সংগ্রহে মরিয়া হয়ে ওঠে। এদিকে উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল মোত্তালেব সরকার বুধবার সন্ধ্যায় ঝিনাইদহ ছেড়েছেন। তিনি যাওয়ার আগে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য বিভিন্ন মহলে তদ্বীর করেন। বিভিন্ন স্থানে তিনি সংসদের ডেপুটি স্পিকার তার আত্মীয় বলে দম্ভোক্তি প্রকাশ করে বলেন, আমার কিছুই হবে না। আমি রুখসানা আফরিনকে দেখে নেব। উল্লেখ্য উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল মোত্তালেব সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক ঘুষ বাণিজ্যের পর এবার কর্মক্ষেত্রে হয়রানী, উত্যক্তসহ যৌন হয়রানীর অভিযোগ করেন তার অফিসের অফিস সহকারী রুখসানা আফরিন। পাসপোর্ট অফিসের মহাপরিচালকের বরাবর লিখিত অভিযোগ করার পর বিষয়টি তদন্ত করা হয়েছে। বুধবার ডিজি অফিসের সহকারী পরিচালক (সংস্থাপন) নাসরিন পারভিন নুপুর অভিযোগটি তদন্ত করেন। বুধবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঝিনাইদহ পাসপোর্ট অফিসের সব কাজ বন্ধ করে তদন্ত করা হয়। এ সময় তদন্ত কর্মকর্তা নাসরিন পারভিন নুপুর অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বক্তব্য লিপিবদ্ধ করেন। তদন্তকালে উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল মোত্তালেব সরকারের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের সত্যতা পান তিনি। পাসপোর্ট অফিসের মহাপরিচালকের বরাবর লিখিত অভিযোগে রুখসানা আফরিন উল্লেখ করেন, ঝিনাইদহ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে যোগদানের পর থেকেই উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল মোত্তালেব সরকার তাকে মানসিক ভাবে নির্যাতন করে আসছেন। আমি নিজের সংসার ও মান সন্মানের দিকে তাকিয়ে তাকে সংশোধন হওয়ার অনুরোধ করি। কিন্তু তিনি আমাকে অব্যাহত ভাবে আপত্তিকর ও অনৈতিক প্রস্তাব দিতে থাকেন। অফিস শেষ করে বাসায় গেলে তিনি রাতে তার বাসায় আসার প্রস্তাব দেন। যা আমার জন্য খুবই লজ্জা ও মানসিক যন্ত্রানার। সর্বশেষ গত ১১ জুলাই তিনি আমাকে আপত্তিকর প্রস্তাব দিলে আমি এর প্রতিবাদ করি। প্রতিবাদ করায় তিনি আমাকে অফিসিয়াল ভাবে ক্ষতি করার হুমকী দেন। তার কু প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গত ৭ আগষ্ট তিনি আমাকে বিনা অপরাধে শোকজ করেন। ৯ আগষ্ট আমি তার চিঠির উত্তর দিলে তিনি সন্তোষজনক হয়নি বলে চিঠি ফেরৎ দেন। এরপর তিনি আমাকে হুমকী ও চাপ প্রয়োগ করে চিঠি সংশোধন করে তার মতো করে জবাব প্রদানে বাধ্য করেন। ফলে আমি এখন স্বাভাবিক ভাবে অফিস করতে পারছি না। আমাকে হুমকী দেওয়া হচ্ছে। এদিকে পাসপোর্ট গ্রাহকদের অভিযোগ উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল মোত্তালেব সরকারের দুর্ব্যবহারে তারা সন্তুষ্ট নয়। তিনি পাসপোর্ট প্রতি তিনি ৯’শ টাকা ঘুষ আদায় করেন। টাকা না দিলে দিনের পর দিন ঘোরানো হয়। ইমার্জেন্সি পাসপোর্ট করতে গেলে সরকারী ফি বাদেও ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। এমন অভিযোগ করেন ঝিনাইদহ শহরের চাকলাপাড়ার কমল কুমার। গত ৩১ মে তার কাছ থেকে ২১ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। সুত্রমতে ইমার্জেন্সি পাসপোর্টের টাকা নিয়ে এক মাসের চালান জমা দেওয়া হয়। এতে সরকার প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হন। মহেশপুর এলাকার একাধিক ব্যক্তি এই অভিযোগ করেন। দ্রুত পাসপোর্ট প্রদানের কথা বলে ২০/২৫ দিন পর দেওয়া হয়। এ বিষয়ে উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল মোত্তালেব সরকার জানান, প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (সংস্থাপন) নাসরিন পারভিন নুপুর নিয়মিত ভিজিটে এসেছিলেন। তার বিরুদ্ধে কেও কোন অভিযোগ করেনি। এ সব মিথ্যা এবং বানোয়াট। মোত্তালেব সরকার বলেন, তাকে সরানোর চক্রান্ত হচ্ছে।