ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহে মামলা তুলে নিতে হুমকি : মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৪৭:১৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুন ২০২১
  • / ৪৫ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ প্রতিবেদক:
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ফুরসুন্ধি গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা (অব.) সেনাসদস্য মো. হাফিজুর রহমানের জমি দখল, গ্রাম থেকে উচ্ছেদের পায়তারা ও চাঁদাবাজি মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি এবং ষড়যন্ত্রমূলক মানববন্ধনের প্রতিবাদে ঝিনাইদহে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটি। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ঝিনাইদহ প্রেসক্লাব মিলনাতনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
মুক্তিযোদ্ধার কন্যা শাহানাজ পারভিন সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমরা কেউ আইনের উর্ধ্বে নয়। শহিদ শিকদার ও তার ছেলে রবিউল এমন কাজ করতে পারে না। আমার পিতা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ অবস্থায় আমার মাকে নিয়ে গ্রামে একা থাকেন। আমরা তিন বোন বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে সংসার করছি। আর একমাত্র ভাই ঢাকায় চাকরিতে কর্মরত। ফলে আমার অসুস্থ পিতা-মাতাকে নিয়ে একা বাড়িতে থাকার সুযোগে চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক মধু মোহন, উৎপল আমাদের বসতভিটা থেকে জমি দখল নিতে না পেরে, আমার পিতার নিকট ৫ লক্ষ টাকার চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে ঘর-বাড়ি ভেঙে আমাদের গ্রাম থেকে উচ্ছেদ করে দেওয়ার হুমকিও দেন। পরে আমার পিতা ০৬/০৪/২০২১ তারিখে কোর্টে একটি চাঁদাবাজি মামলা করেন, যার জিআর মামলা নং- ২১২/২২১। আসামীরা পুলিশের কাছে ধরা পড়ার পর গত ২০/০৫/২১ তারিখে দুপুর বেলা উক্ত মামলার সহযোগী হালিম, কামাল, জসীম, সোনালী, জায়েদ, রেজাউল, ইবরা এদের নেতৃত্বে আনুমানিক ১০০/১৫০ জন লোক আমাদের বসতভিটা ঘেরাও করে আমার পিতা-মাতাকে মারতে আসে। এছাড়াও আমার পিতার নাম ধরে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করাসহ দায়েরকৃত মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দেয়। সেসময় আমাকে ও আমার ভাইকে খুন ও জখম করাসহ বাড়ি-ঘর লুটপাটের ভয়ভীতি দেখায়। এরপর অন্য জায়গা থেকে লোক ভাড়া করে এনে মানববন্ধনের নামে আমাদের বিভ্রান্ত করাসহ সম্মানহানী করে। গ্রামের মানুষদের বোঝাচ্ছে যে তারা কতটা ক্ষমতাশালী এবং আমার পিতাসহ আমাদের নাম ধরে মাইকিং করে চাপ সৃষ্টি করা মানে আমরা যাতে মামলা তুলে নিই।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ঝিনাইদ ফুরসুন্ধির ২৫৮নং মৌজায় আমার দাদার জমি যার দাগ নং- ৪৬২। যেটা কামাল কাজী নামের একজন ভোগ দখল করে আসছে। এছাড়া ২৫১নং দাগটি কহিনুর ভোগ দখলে রেখেছে, ২৪২নং দাগ আমেনার দখলে, ২৩৮নং দাগ আছে হাসান ও মসলেম নামের আরও দুজনের দখলে। এছাড়া ৩৬৩নং দাগ থেকে ৭০ হাজার টাকার গাছ বিক্রি করেছে হালিম ও রেজাউল নামের আরও দুজন। এসব দাগের জমিগুলো আমি গত ০৫/০৬/২১ তারিখে আমিন নিয়ে মাপামাপি করি। এসময় উক্ত ব্যক্তিরা জমির মাপও মেনে নেন। তখন আমরা জমিতে খুটি পুতে আসি। তবে জমি মাপার ঠিক ৪দিন পর গ্রামের মাইকে অন্য কথা শুনতে পাই। ১০/০৫/২১ তারিখে দেখি আবার আমাদের উক্ত জমির উপর পূর্বের ন্যায় ইচ্ছামত রাস্তা ও ঘরনির্মাণ করা হচ্ছে। আমার পিতা একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়ে শেষ বয়সে এই প্রভাবশালী ভূমিদস্যূদের চাপাচাপিতে মারা যায় তাহলে এই লজ্জা পুরো বাঙালি জাতির। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা (অব.) সেনাসদস্য হয়েও আমার পিতাকে অন্যায়, অত্যাচার, নির্যাতন ও অপমানের শিকার হতে হচ্ছে। আমি এর সমাধান চাই। এবিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা হাফিজুর রহমান ও তার স্ত্রী রোকেয়া বেগম।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

ঝিনাইদহে মামলা তুলে নিতে হুমকি : মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

আপলোড টাইম : ১০:৪৭:১৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুন ২০২১

ঝিনাইদহ প্রতিবেদক:
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ফুরসুন্ধি গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা (অব.) সেনাসদস্য মো. হাফিজুর রহমানের জমি দখল, গ্রাম থেকে উচ্ছেদের পায়তারা ও চাঁদাবাজি মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি এবং ষড়যন্ত্রমূলক মানববন্ধনের প্রতিবাদে ঝিনাইদহে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটি। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ঝিনাইদহ প্রেসক্লাব মিলনাতনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
মুক্তিযোদ্ধার কন্যা শাহানাজ পারভিন সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমরা কেউ আইনের উর্ধ্বে নয়। শহিদ শিকদার ও তার ছেলে রবিউল এমন কাজ করতে পারে না। আমার পিতা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ অবস্থায় আমার মাকে নিয়ে গ্রামে একা থাকেন। আমরা তিন বোন বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে সংসার করছি। আর একমাত্র ভাই ঢাকায় চাকরিতে কর্মরত। ফলে আমার অসুস্থ পিতা-মাতাকে নিয়ে একা বাড়িতে থাকার সুযোগে চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক মধু মোহন, উৎপল আমাদের বসতভিটা থেকে জমি দখল নিতে না পেরে, আমার পিতার নিকট ৫ লক্ষ টাকার চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে ঘর-বাড়ি ভেঙে আমাদের গ্রাম থেকে উচ্ছেদ করে দেওয়ার হুমকিও দেন। পরে আমার পিতা ০৬/০৪/২০২১ তারিখে কোর্টে একটি চাঁদাবাজি মামলা করেন, যার জিআর মামলা নং- ২১২/২২১। আসামীরা পুলিশের কাছে ধরা পড়ার পর গত ২০/০৫/২১ তারিখে দুপুর বেলা উক্ত মামলার সহযোগী হালিম, কামাল, জসীম, সোনালী, জায়েদ, রেজাউল, ইবরা এদের নেতৃত্বে আনুমানিক ১০০/১৫০ জন লোক আমাদের বসতভিটা ঘেরাও করে আমার পিতা-মাতাকে মারতে আসে। এছাড়াও আমার পিতার নাম ধরে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করাসহ দায়েরকৃত মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দেয়। সেসময় আমাকে ও আমার ভাইকে খুন ও জখম করাসহ বাড়ি-ঘর লুটপাটের ভয়ভীতি দেখায়। এরপর অন্য জায়গা থেকে লোক ভাড়া করে এনে মানববন্ধনের নামে আমাদের বিভ্রান্ত করাসহ সম্মানহানী করে। গ্রামের মানুষদের বোঝাচ্ছে যে তারা কতটা ক্ষমতাশালী এবং আমার পিতাসহ আমাদের নাম ধরে মাইকিং করে চাপ সৃষ্টি করা মানে আমরা যাতে মামলা তুলে নিই।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ঝিনাইদ ফুরসুন্ধির ২৫৮নং মৌজায় আমার দাদার জমি যার দাগ নং- ৪৬২। যেটা কামাল কাজী নামের একজন ভোগ দখল করে আসছে। এছাড়া ২৫১নং দাগটি কহিনুর ভোগ দখলে রেখেছে, ২৪২নং দাগ আমেনার দখলে, ২৩৮নং দাগ আছে হাসান ও মসলেম নামের আরও দুজনের দখলে। এছাড়া ৩৬৩নং দাগ থেকে ৭০ হাজার টাকার গাছ বিক্রি করেছে হালিম ও রেজাউল নামের আরও দুজন। এসব দাগের জমিগুলো আমি গত ০৫/০৬/২১ তারিখে আমিন নিয়ে মাপামাপি করি। এসময় উক্ত ব্যক্তিরা জমির মাপও মেনে নেন। তখন আমরা জমিতে খুটি পুতে আসি। তবে জমি মাপার ঠিক ৪দিন পর গ্রামের মাইকে অন্য কথা শুনতে পাই। ১০/০৫/২১ তারিখে দেখি আবার আমাদের উক্ত জমির উপর পূর্বের ন্যায় ইচ্ছামত রাস্তা ও ঘরনির্মাণ করা হচ্ছে। আমার পিতা একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়ে শেষ বয়সে এই প্রভাবশালী ভূমিদস্যূদের চাপাচাপিতে মারা যায় তাহলে এই লজ্জা পুরো বাঙালি জাতির। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা (অব.) সেনাসদস্য হয়েও আমার পিতাকে অন্যায়, অত্যাচার, নির্যাতন ও অপমানের শিকার হতে হচ্ছে। আমি এর সমাধান চাই। এবিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা হাফিজুর রহমান ও তার স্ত্রী রোকেয়া বেগম।