ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

জেলা প্রশাসকদের একগুচ্ছ নির্দেশনা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৫১:১৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ১১ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন:
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নতুন কোনো রাস্তা নির্মাণ না করা, পরিবহণ খাতে শৃঙ্খলা আনা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া, রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কঠোর হওয়াসহ জেলা প্রশাসকদের একগুচ্ছ দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বুধবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের অধিবেশনে সরকারের মন্ত্রী এবং বিভিন্ন দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পৃথক পৃথক সেশনে এসব নির্দেশনা দেন। জেলা প্রশাসকরাও বিভিন্ন সেশনে তাদের মতামত তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সারা দেশের কোথাও নতুন কোনও রাস্তা না করার জন্য জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) নির্দেশনা দিয়ে অধিবেশনের প্রথম সেশনে সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমার মন্ত্রণালয়ে সরকারের উন্নয়নমূলক অবকাঠামো পদ্মা, মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু টানেল, শত সেতু শত রাস্তা, ওভার পাস ফ্লাইওভারসহ সব কর্মকান্ড দৃশ্যমান। আগামী নির্বাচনের আগে যে রাস্তাগুলো রয়েছে সেগুলো মেরামত করতে চাই। ব্যবহার যোগ্য করতে চাই। যেগুলো আছে সেগুলো মেরামত করা, সংরক্ষণ করা আমাদের প্রথম ও প্রধান কাজ।’ ঢাকায় চালক ও আরোহী দুই জনই হেলমেট ব্যবহার করছে। কিন্তু মফস্বলে মোটরসাইকেলে কারও মাথায় হেলমেট নাই উলেস্নখ করে ডিসিদের তিনি বলেন, ‘জেলা পর্যায়ে এগুলো দেখতে হবে। যে যানগুলো শহরে এবং হাইওয়েতে যানজট সৃষ্টি করে, এসব যানবাহন মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, নসিমন-করিমন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সড়কের পরিবহনে শৃঙ্খলা আনাটাই হচ্ছে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।’ অধিবেশন শেষে সেতুমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, অনেক রাস্তা হয়েছে, অনেক সেতু হয়েছে, শৃঙ্খলা না এলে এগুলো ম্স্নান হয়ে যাবে। সেজন্য আমি শৃঙ্খলার ওপরে গুরুত্ব দিয়েছি। ডিসিদের বলেছি, শৃঙ্খলার বিষয়ে সহযোগিতা করতে এবং তারা করবেন বলে জানিয়েছেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) নির্দেশনা দিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দিন আবদুলস্নাহ বলেছেন, ১০৬ নম্বরে দুর্নীতির তথ্য জানাতে মানুষকে সচেতন করতে হবে। অধিবেশন শেষে দুদক চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের জানান, জেলা প্রশাসকরা সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। তাই জেলাতে কোনো দুর্নীতি হলে তার তথ্য পাওয়ার অনেক সোর্স রয়েছে তাদের। দুর্নীতির তথ্য পেলে তারা যেন বসে না থেকে সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ নেন, যাতে দুর্নীতি বন্ধ হয়। দুর্নীতিকে সঙ্গে রেখে স্মার্ট বাংলাদেশে পৌঁছানো সম্ভব নয় জানিয়ে তিনি ডিসিদের বলেছেন, দুর্নীতিবিষয়ক কোনো তথ্য ১০৬ নম্বরে ফোন করে কীভাবে জানাতে হয় সে বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে হবে। দুর্নীতি নির্মূল করার বিষয়ে আমাদের সংবিধানেই বলা আছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আইন হয়েছে, কমিশন হয়েছে। দুর্নীতির ক্ষেত্রে সেটা ডিসি হোক কিংবা এসি (সহকারী ভূমি কমিশনার) হোক, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যাবে, সেই অভিযোগ যদি অনুসন্ধান যোগ্য হয় আমরা তা করবো। কৃষিমন্ত্রী ডক্টর আব্দুর রাজ্জাক ডিসিদের বলেছেন, দেশের সব অনাবাদী জমি চাষের আওতায় আনতে হবে। করোনায় ধান কাটা একটা চ্যালেঞ্জ ছিল, আপনারা সেখানে অসাধারণ ভূমিকা রেখেছেন। সহযোগিতা করেছেন। খাদ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে বিতরণ সব কার্যক্রমে আপনাদের ভূমিকা প্রশংসনীয়। আগামী দিনে আমাদের আরও সহযোগিতা করেন। অধিবেশন শেষে কৃষিমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, দেশে ভোজ্যতেলের উৎপাদন বাড়াতে সরিষার চাষ বাড়ানো হয়েছে। আগে বিঘায় এক থেকে দুই মণ ভুট্টা হতো। আমাদের বিজ্ঞানীরা নতুন জাত উদ্ভাবন করার পর এখন বিঘাপ্রতি উৎপাদন হচ্ছে ৭ থেকে ১০ মণ। ডিসিদের মাধ্যমে এ প্রযুক্তিগুলো দ্রম্নত মাঠে কৃষকের কাছে পৌঁছাতে হবে। যেন চাষিরা এসব গ্রহণ করে। উৎপাদিত পণ্যের বাজারজাতকরণসহ সবকিছুতে জেলা প্রশাসকরা যেন ভূমিকা রাখেন এবং আমাদের সহযোগিতা করেন। খাদ্য নিয়ে ডিসিরা কোনো আশঙ্কার কথা বলেননি জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী ডক্টর রাজ্জাক সাংবাদিকদের বলেন, ‘দেশে অন্য সময়ের তুলনায় কৃষি উৎপাদন চারগুণ বেড়েছে। বর্তমানে ধান, গম, ভুট্টাসহ ৪ কোটি ৭০ লাখ টন খাদ্য উৎপাদন করছি। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে আমাদের খাদ্য উৎপাদন ছিল ১ কোটি ১০ লাখ টন, যা বর্তমানে চারগুণ বেড়েছে।’ পরিবেশ রক্ষায় সবসময় সজাগ থাকুন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন দেশের পরিবেশ ও বনের সুরক্ষা ও উন্নয়নে জেলা প্রশাসনকে সবসময় সজাগ থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন। যত্রতত্র অবৈধ ইটভাটা স্থাপন, জ্বালানি হিসেবে বনজ কাঠের অবৈধ ব্যবহার, নিষিদ্ধ পলিথিন শপিংব্যাগ, অবৈধভাবে পাহাড়-টিলা কর্তনকারী, অবৈধ করাতকল, বনভূমি ও নদী-খাল-জলাশয় দখলকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। অধিবেশন শেষে শাহাব উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ, বনায়ন কার্যক্রম, ইউকেলিপটাসসহ ক্ষতিকারক বৃক্ষ রোপণ বন্ধ করা, বনভূমি বন্দোবস্ত না দেওয়া, অবৈধভাবে বন্যপ্রাণী ও পরিযায়ী পাখির নিধন প্রতিরোধ, সংরক্ষিত বন ঘোষণার কার্যক্রমে জেলা প্রশাসকদের সহায়তা করার কথা বলেছেন। মন্ত্রী আরও জানান, সুন্দরবনের বাস্তুসংস্থান ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় নিষেধাজ্ঞাকালে মৌয়াল ও জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির পরিধিভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সেন্টমার্টিন, টাঙ্গুগুয়ার হাওড়সহ সংকটাপন্ন এলাকায় পরিবেশ ও ইকো-সিস্টেমের সুরক্ষায় স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে। রমজানে শক্ত ব্যবস্থা নেবেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি আসন্ন রমজানে দ্রব্যমূল্য ইস্যুতে কেউ যাতে সুযোগ না নেয় সে বিষয়ে শক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) নির্দেশ দিয়েছেন। অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রমজান মাস সামনে, আপনারা সরকারের হাত। আপনারা খেয়াল রাখবেন, কেউ যাতে সুযোগ না নেয়। শক্ত ব্যবস্থা নেবেন। একই সঙ্গে বলেছি ভোক্তাদের অধিকারের বিষয়ে তাদের সচেতন করতে হবে।’ দেশে দুর্ভিক্ষ হবে না দেশে খাদ্য সংকটের কোনো সুযোগ দেখেছেন না জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার ডিসিদের বলেছেন, ‘দেশে দুর্ভিক্ষ হবে না, হওয়ার কোনো চান্স নাই, যদি আলস্নাহ নিজের হাতে গজব না দেয়। সামনে বোরো আবাদ হচ্ছে, বোরোর আবাদও মানুষ পাগলের মতো করছে। বোরো ফলনও ভালো হবে যেখানে ১৫-১৬ মণ হতো, সেখানে এবার ২০-২৫ মণ হবে।’ অধিবেশনের পর খাদ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, খরার কারণে আমনের ফলন নিয়ে শঙ্কা থাকলেও এবার আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। সংগ্রহ ভালো হয়েছে, সরবরাহও ভালো আছে। সর্বশ্রেষ্ঠ মজুদ, এখন প্রায় ১৯ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন। সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘বাংলাদেশকে বৈশ্বিক বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। চালের দাম যাদের জন্য অসহনীয় পর্যায়ে, তাদের জন্য ওএমএস, খাদ্যবান্ধব ভিজিডি, ভিজিএফ ইত্যাদি আছে। শঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই, সবাই ভালো আছে। বাঙালির পেট ঠান্ডা, মাথাও ঠান্ডা আছে। অপচয় বন্ধ করতে হবে, বিয়ে বাড়িতে দেখা যায় যে ১০-১৫ শতাংশ খাবার অপচয় হচ্ছে।’ সরিষার ফলনে ভোজ্যতেল নিয়েও আশাবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শুধু মানিকগঞ্জ নয়, সারা দেশেই সরিষার আবাদ হচ্ছে, আমার ধারণা ৩০ শতাংশ ভোজ্যতেল এবার আমরা সরিষা থেকে সংগ্রহ করতে পারব।’ পস্নাস্টিক ব্যাগে চাল থাকলে জব্দ করুন পস্নাস্টিকের ব্যাগে ভরে দেশি চাল বাজারজাত করলে তা জব্দ করতে জেলা প্রশাসকদের (ভিসি) নির্দেশ দিয়েছেন পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর। মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বলেছি অনলি ভারতীয় চাল, বিদেশি চাল পস্নাস্টিকের ব্যাগে থাকলে আপত্তি নেই। কিন্তু দেশীয় চাল পস্নাস্টিকের ব্যাগে পেলে সামারি কোর্ড করে যেন জব্দ করা হয়। তাহলে আমাদের পাটপণ্যের ব্যবহার নিশ্চিত হবে।’ অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানিয়ে বস্ত্রমন্ত্রী বলেন, ‘ডিসিরা কলাগাছ থেকে সুতা তৈরির বিষয়ে কথা বলেছেন। অনেক দেশে কলাগাছ থেকে সুতা তৈরি হয়। আমাদের দেশে অনেক কলাগাছ হয়। কলাগাছ থেকে সুতা তৈরির বিষয়টি রিসার্চ ইনস্টিটিউটকে বলব।’ গুজবে সতর্ক থাকুন দেশে গুজব ও অপপ্রচার বেড়েছে জানিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ডিসিদের উদ্দেশে বলেছেন, আমরাও আশঙ্কা করছি এ বছর সবচেয়ে বেশি গুজব হবে। এ অবস্থায় আমাদের সবাইকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। ডিসিদের তিনি আরও বলেছেন, গুজব রোধে আমাদের সবচেয়ে বেশি নজর দিতে হবে। আমরা যেন গুজবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারি, জেলা প্রশাসকদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। আপনারা সোস্যাল মিডিয়ায় গুজব দেখেন, বিটিআরসিতে জানালেই আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি। অধিবেশন শেষে মোস্তাফা জব্বার সাংবাদিকদের জানান, ডিসিদের তিনি বলেছেন- আজকের বাংলাদেশ টেলিফোন নির্ভর নয়, ইন্টারনেটের ব্যাপক ব্যবহার হচ্ছে। অবৈধ আইএসপি বেড়েছে। বিটিআরসির লাইসেন্স ছাড়া কেউ যেন আইএসপি ব্যবহার করতে না পারে আপনারা ব্যবস্থা নেবেন। শিশু নিবাসে বয়স্কদেরও সিট আছে রাজধানীসহ সারা দেশেই ভিক্ষাবৃত্তি বাড়ছে, এমন উদ্বেগ প্রকাশ করে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডিসিদের উদ্দেশে বলেছেন, ঢাকায় ভিক্ষুকদের জন্য রাস্তায় চলা যায় না। ভিক্ষুকরা পথ আটকে টাকা চায়। এতে বহির্বিশ্বে আমাদের ইমেজ নষ্ট হয়। তিনি ডিসিদের আরও বলেছেন, আমাদের প্রতিটি শিশু নিবাসেই সিট খালি, কিন্তু রাস্তাঘাটে শিশুরা ঘুমায়। রাস্তাঘাটে চলতে-ফিরতে অনেক শিশু-কিশোরদের আমরা পড়ে থাকতে দেখি। শিশু নিবাসগুলোয় বয়স্কদের জন্যও ১০টি করে সিট বরাদ্দ আছে। আপনারা যেখানেই পথে-ঘাটে ভিক্ষুক, শিশু পাবেন, শিশুনিবাসে পাঠিয়ে দেবেন। অধিবেশন শেষে তিনি সাংবাদিকদের জানান, শতভাগ বয়স্ক, প্রতিবন্ধী ভাতা দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমাদের কাজটা ভালোভাবেই চলছে। তবে মাঠ পর্যায়ে কিছু সমস্যা হতেও দেখছি। টাকাটা মোবাইলের মাধ্যমে পৌঁছাচ্ছে না। বেদে সম্প্রদায়কে আমরা জায়গা দিচ্ছি, ভাতা দিচ্ছি। সেগুলো যেন সঠিকভাবে তাদের কাছে পৌঁছে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকদের সহযোগিতা কামনা করেছি। সাংস্কৃতিক আয়োজনে যেন অপসংস্কৃতি না ঢোকে যে কোনো ধরনের সাংস্কৃতিক আয়োজনে অপসংস্কৃতি যেন না ঢুকতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখার আহ্বান জানিয়েছেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ ডিসিদের বলেছেন, আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে এরই মধ্যে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদের চিঠি দিয়েছি। কোথাও কোনো কালচারাল আয়োজন করতে আগে থেকে অনুমতি নেওয়ার দরকার নেই। শুধু লক্ষ্য রাখতে হবে, সেই জায়গাতে যেন অপসংস্কৃতি না ঢোকে। অধিবেশন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘জঙ্গিবাদ রুখে দিতে সাংস্কৃতিক চর্চার কোনো বিকল্প নেই। একসময় আমাদের জারি গান, বাউল গান ও যাত্রা সবই চলত। সেই জায়গাটিতেই আমরা ফিরে যেতে চাই। আমরা যেন সংস্কৃতি দিয়ে জঙ্গিবাদকে রুখে দিতে পারি। এ বিষয়টিই আমি ডিসিদের বলেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। যেখানে একটি সিনেপেস্নক্স ও লাইব্রেরি থাকবে। সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রথমে আমরা ১০০ উপজেলা টার্গেট করে কাজ শুরু করব। এর মধ্যে ৩৫টি উপজেলার উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) প্রায় চূড়ান্ত।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

জেলা প্রশাসকদের একগুচ্ছ নির্দেশনা

আপলোড টাইম : ০৮:৫১:১৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৩

সমীকরণ প্রতিবেদন:
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নতুন কোনো রাস্তা নির্মাণ না করা, পরিবহণ খাতে শৃঙ্খলা আনা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া, রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কঠোর হওয়াসহ জেলা প্রশাসকদের একগুচ্ছ দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বুধবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের অধিবেশনে সরকারের মন্ত্রী এবং বিভিন্ন দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পৃথক পৃথক সেশনে এসব নির্দেশনা দেন। জেলা প্রশাসকরাও বিভিন্ন সেশনে তাদের মতামত তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সারা দেশের কোথাও নতুন কোনও রাস্তা না করার জন্য জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) নির্দেশনা দিয়ে অধিবেশনের প্রথম সেশনে সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমার মন্ত্রণালয়ে সরকারের উন্নয়নমূলক অবকাঠামো পদ্মা, মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু টানেল, শত সেতু শত রাস্তা, ওভার পাস ফ্লাইওভারসহ সব কর্মকান্ড দৃশ্যমান। আগামী নির্বাচনের আগে যে রাস্তাগুলো রয়েছে সেগুলো মেরামত করতে চাই। ব্যবহার যোগ্য করতে চাই। যেগুলো আছে সেগুলো মেরামত করা, সংরক্ষণ করা আমাদের প্রথম ও প্রধান কাজ।’ ঢাকায় চালক ও আরোহী দুই জনই হেলমেট ব্যবহার করছে। কিন্তু মফস্বলে মোটরসাইকেলে কারও মাথায় হেলমেট নাই উলেস্নখ করে ডিসিদের তিনি বলেন, ‘জেলা পর্যায়ে এগুলো দেখতে হবে। যে যানগুলো শহরে এবং হাইওয়েতে যানজট সৃষ্টি করে, এসব যানবাহন মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, নসিমন-করিমন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সড়কের পরিবহনে শৃঙ্খলা আনাটাই হচ্ছে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।’ অধিবেশন শেষে সেতুমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, অনেক রাস্তা হয়েছে, অনেক সেতু হয়েছে, শৃঙ্খলা না এলে এগুলো ম্স্নান হয়ে যাবে। সেজন্য আমি শৃঙ্খলার ওপরে গুরুত্ব দিয়েছি। ডিসিদের বলেছি, শৃঙ্খলার বিষয়ে সহযোগিতা করতে এবং তারা করবেন বলে জানিয়েছেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) নির্দেশনা দিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দিন আবদুলস্নাহ বলেছেন, ১০৬ নম্বরে দুর্নীতির তথ্য জানাতে মানুষকে সচেতন করতে হবে। অধিবেশন শেষে দুদক চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের জানান, জেলা প্রশাসকরা সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। তাই জেলাতে কোনো দুর্নীতি হলে তার তথ্য পাওয়ার অনেক সোর্স রয়েছে তাদের। দুর্নীতির তথ্য পেলে তারা যেন বসে না থেকে সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ নেন, যাতে দুর্নীতি বন্ধ হয়। দুর্নীতিকে সঙ্গে রেখে স্মার্ট বাংলাদেশে পৌঁছানো সম্ভব নয় জানিয়ে তিনি ডিসিদের বলেছেন, দুর্নীতিবিষয়ক কোনো তথ্য ১০৬ নম্বরে ফোন করে কীভাবে জানাতে হয় সে বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে হবে। দুর্নীতি নির্মূল করার বিষয়ে আমাদের সংবিধানেই বলা আছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আইন হয়েছে, কমিশন হয়েছে। দুর্নীতির ক্ষেত্রে সেটা ডিসি হোক কিংবা এসি (সহকারী ভূমি কমিশনার) হোক, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যাবে, সেই অভিযোগ যদি অনুসন্ধান যোগ্য হয় আমরা তা করবো। কৃষিমন্ত্রী ডক্টর আব্দুর রাজ্জাক ডিসিদের বলেছেন, দেশের সব অনাবাদী জমি চাষের আওতায় আনতে হবে। করোনায় ধান কাটা একটা চ্যালেঞ্জ ছিল, আপনারা সেখানে অসাধারণ ভূমিকা রেখেছেন। সহযোগিতা করেছেন। খাদ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে বিতরণ সব কার্যক্রমে আপনাদের ভূমিকা প্রশংসনীয়। আগামী দিনে আমাদের আরও সহযোগিতা করেন। অধিবেশন শেষে কৃষিমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, দেশে ভোজ্যতেলের উৎপাদন বাড়াতে সরিষার চাষ বাড়ানো হয়েছে। আগে বিঘায় এক থেকে দুই মণ ভুট্টা হতো। আমাদের বিজ্ঞানীরা নতুন জাত উদ্ভাবন করার পর এখন বিঘাপ্রতি উৎপাদন হচ্ছে ৭ থেকে ১০ মণ। ডিসিদের মাধ্যমে এ প্রযুক্তিগুলো দ্রম্নত মাঠে কৃষকের কাছে পৌঁছাতে হবে। যেন চাষিরা এসব গ্রহণ করে। উৎপাদিত পণ্যের বাজারজাতকরণসহ সবকিছুতে জেলা প্রশাসকরা যেন ভূমিকা রাখেন এবং আমাদের সহযোগিতা করেন। খাদ্য নিয়ে ডিসিরা কোনো আশঙ্কার কথা বলেননি জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী ডক্টর রাজ্জাক সাংবাদিকদের বলেন, ‘দেশে অন্য সময়ের তুলনায় কৃষি উৎপাদন চারগুণ বেড়েছে। বর্তমানে ধান, গম, ভুট্টাসহ ৪ কোটি ৭০ লাখ টন খাদ্য উৎপাদন করছি। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে আমাদের খাদ্য উৎপাদন ছিল ১ কোটি ১০ লাখ টন, যা বর্তমানে চারগুণ বেড়েছে।’ পরিবেশ রক্ষায় সবসময় সজাগ থাকুন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন দেশের পরিবেশ ও বনের সুরক্ষা ও উন্নয়নে জেলা প্রশাসনকে সবসময় সজাগ থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন। যত্রতত্র অবৈধ ইটভাটা স্থাপন, জ্বালানি হিসেবে বনজ কাঠের অবৈধ ব্যবহার, নিষিদ্ধ পলিথিন শপিংব্যাগ, অবৈধভাবে পাহাড়-টিলা কর্তনকারী, অবৈধ করাতকল, বনভূমি ও নদী-খাল-জলাশয় দখলকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। অধিবেশন শেষে শাহাব উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ, বনায়ন কার্যক্রম, ইউকেলিপটাসসহ ক্ষতিকারক বৃক্ষ রোপণ বন্ধ করা, বনভূমি বন্দোবস্ত না দেওয়া, অবৈধভাবে বন্যপ্রাণী ও পরিযায়ী পাখির নিধন প্রতিরোধ, সংরক্ষিত বন ঘোষণার কার্যক্রমে জেলা প্রশাসকদের সহায়তা করার কথা বলেছেন। মন্ত্রী আরও জানান, সুন্দরবনের বাস্তুসংস্থান ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় নিষেধাজ্ঞাকালে মৌয়াল ও জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির পরিধিভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সেন্টমার্টিন, টাঙ্গুগুয়ার হাওড়সহ সংকটাপন্ন এলাকায় পরিবেশ ও ইকো-সিস্টেমের সুরক্ষায় স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে। রমজানে শক্ত ব্যবস্থা নেবেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি আসন্ন রমজানে দ্রব্যমূল্য ইস্যুতে কেউ যাতে সুযোগ না নেয় সে বিষয়ে শক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) নির্দেশ দিয়েছেন। অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রমজান মাস সামনে, আপনারা সরকারের হাত। আপনারা খেয়াল রাখবেন, কেউ যাতে সুযোগ না নেয়। শক্ত ব্যবস্থা নেবেন। একই সঙ্গে বলেছি ভোক্তাদের অধিকারের বিষয়ে তাদের সচেতন করতে হবে।’ দেশে দুর্ভিক্ষ হবে না দেশে খাদ্য সংকটের কোনো সুযোগ দেখেছেন না জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার ডিসিদের বলেছেন, ‘দেশে দুর্ভিক্ষ হবে না, হওয়ার কোনো চান্স নাই, যদি আলস্নাহ নিজের হাতে গজব না দেয়। সামনে বোরো আবাদ হচ্ছে, বোরোর আবাদও মানুষ পাগলের মতো করছে। বোরো ফলনও ভালো হবে যেখানে ১৫-১৬ মণ হতো, সেখানে এবার ২০-২৫ মণ হবে।’ অধিবেশনের পর খাদ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, খরার কারণে আমনের ফলন নিয়ে শঙ্কা থাকলেও এবার আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। সংগ্রহ ভালো হয়েছে, সরবরাহও ভালো আছে। সর্বশ্রেষ্ঠ মজুদ, এখন প্রায় ১৯ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন। সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘বাংলাদেশকে বৈশ্বিক বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। চালের দাম যাদের জন্য অসহনীয় পর্যায়ে, তাদের জন্য ওএমএস, খাদ্যবান্ধব ভিজিডি, ভিজিএফ ইত্যাদি আছে। শঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই, সবাই ভালো আছে। বাঙালির পেট ঠান্ডা, মাথাও ঠান্ডা আছে। অপচয় বন্ধ করতে হবে, বিয়ে বাড়িতে দেখা যায় যে ১০-১৫ শতাংশ খাবার অপচয় হচ্ছে।’ সরিষার ফলনে ভোজ্যতেল নিয়েও আশাবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শুধু মানিকগঞ্জ নয়, সারা দেশেই সরিষার আবাদ হচ্ছে, আমার ধারণা ৩০ শতাংশ ভোজ্যতেল এবার আমরা সরিষা থেকে সংগ্রহ করতে পারব।’ পস্নাস্টিক ব্যাগে চাল থাকলে জব্দ করুন পস্নাস্টিকের ব্যাগে ভরে দেশি চাল বাজারজাত করলে তা জব্দ করতে জেলা প্রশাসকদের (ভিসি) নির্দেশ দিয়েছেন পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর। মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বলেছি অনলি ভারতীয় চাল, বিদেশি চাল পস্নাস্টিকের ব্যাগে থাকলে আপত্তি নেই। কিন্তু দেশীয় চাল পস্নাস্টিকের ব্যাগে পেলে সামারি কোর্ড করে যেন জব্দ করা হয়। তাহলে আমাদের পাটপণ্যের ব্যবহার নিশ্চিত হবে।’ অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানিয়ে বস্ত্রমন্ত্রী বলেন, ‘ডিসিরা কলাগাছ থেকে সুতা তৈরির বিষয়ে কথা বলেছেন। অনেক দেশে কলাগাছ থেকে সুতা তৈরি হয়। আমাদের দেশে অনেক কলাগাছ হয়। কলাগাছ থেকে সুতা তৈরির বিষয়টি রিসার্চ ইনস্টিটিউটকে বলব।’ গুজবে সতর্ক থাকুন দেশে গুজব ও অপপ্রচার বেড়েছে জানিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ডিসিদের উদ্দেশে বলেছেন, আমরাও আশঙ্কা করছি এ বছর সবচেয়ে বেশি গুজব হবে। এ অবস্থায় আমাদের সবাইকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। ডিসিদের তিনি আরও বলেছেন, গুজব রোধে আমাদের সবচেয়ে বেশি নজর দিতে হবে। আমরা যেন গুজবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারি, জেলা প্রশাসকদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। আপনারা সোস্যাল মিডিয়ায় গুজব দেখেন, বিটিআরসিতে জানালেই আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি। অধিবেশন শেষে মোস্তাফা জব্বার সাংবাদিকদের জানান, ডিসিদের তিনি বলেছেন- আজকের বাংলাদেশ টেলিফোন নির্ভর নয়, ইন্টারনেটের ব্যাপক ব্যবহার হচ্ছে। অবৈধ আইএসপি বেড়েছে। বিটিআরসির লাইসেন্স ছাড়া কেউ যেন আইএসপি ব্যবহার করতে না পারে আপনারা ব্যবস্থা নেবেন। শিশু নিবাসে বয়স্কদেরও সিট আছে রাজধানীসহ সারা দেশেই ভিক্ষাবৃত্তি বাড়ছে, এমন উদ্বেগ প্রকাশ করে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডিসিদের উদ্দেশে বলেছেন, ঢাকায় ভিক্ষুকদের জন্য রাস্তায় চলা যায় না। ভিক্ষুকরা পথ আটকে টাকা চায়। এতে বহির্বিশ্বে আমাদের ইমেজ নষ্ট হয়। তিনি ডিসিদের আরও বলেছেন, আমাদের প্রতিটি শিশু নিবাসেই সিট খালি, কিন্তু রাস্তাঘাটে শিশুরা ঘুমায়। রাস্তাঘাটে চলতে-ফিরতে অনেক শিশু-কিশোরদের আমরা পড়ে থাকতে দেখি। শিশু নিবাসগুলোয় বয়স্কদের জন্যও ১০টি করে সিট বরাদ্দ আছে। আপনারা যেখানেই পথে-ঘাটে ভিক্ষুক, শিশু পাবেন, শিশুনিবাসে পাঠিয়ে দেবেন। অধিবেশন শেষে তিনি সাংবাদিকদের জানান, শতভাগ বয়স্ক, প্রতিবন্ধী ভাতা দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমাদের কাজটা ভালোভাবেই চলছে। তবে মাঠ পর্যায়ে কিছু সমস্যা হতেও দেখছি। টাকাটা মোবাইলের মাধ্যমে পৌঁছাচ্ছে না। বেদে সম্প্রদায়কে আমরা জায়গা দিচ্ছি, ভাতা দিচ্ছি। সেগুলো যেন সঠিকভাবে তাদের কাছে পৌঁছে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকদের সহযোগিতা কামনা করেছি। সাংস্কৃতিক আয়োজনে যেন অপসংস্কৃতি না ঢোকে যে কোনো ধরনের সাংস্কৃতিক আয়োজনে অপসংস্কৃতি যেন না ঢুকতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখার আহ্বান জানিয়েছেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ ডিসিদের বলেছেন, আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে এরই মধ্যে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদের চিঠি দিয়েছি। কোথাও কোনো কালচারাল আয়োজন করতে আগে থেকে অনুমতি নেওয়ার দরকার নেই। শুধু লক্ষ্য রাখতে হবে, সেই জায়গাতে যেন অপসংস্কৃতি না ঢোকে। অধিবেশন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘জঙ্গিবাদ রুখে দিতে সাংস্কৃতিক চর্চার কোনো বিকল্প নেই। একসময় আমাদের জারি গান, বাউল গান ও যাত্রা সবই চলত। সেই জায়গাটিতেই আমরা ফিরে যেতে চাই। আমরা যেন সংস্কৃতি দিয়ে জঙ্গিবাদকে রুখে দিতে পারি। এ বিষয়টিই আমি ডিসিদের বলেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। যেখানে একটি সিনেপেস্নক্স ও লাইব্রেরি থাকবে। সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রথমে আমরা ১০০ উপজেলা টার্গেট করে কাজ শুরু করব। এর মধ্যে ৩৫টি উপজেলার উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) প্রায় চূড়ান্ত।’