ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

জেলায় ১৫ দিনেই আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৫৪

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৫৪:৪৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ মে ২০২০
  • / ৩৩৮ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গায় সিনিয়র নার্সসহ আরও ৮ জনের করোনা পজেটিভ
রুদ্র রাসেল:
চুয়াডাঙ্গায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। জেলায় গতকাল শুক্রবার আরও ৮ জনের শরীরে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা শহরের গুলশান পাড়ার একজন, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স, জীবননগর উপজেলা (ইউএইচসি) নার্স বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে কর্তব্যরত, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দৌলাতদিয়াড়ে একজন, বড়শলুয়ায় দুইজন ও হিজলগাড়ির দুইজন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ ১১ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এ নিয়ে জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৫৪ জনে। নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট একজন, জেলা প্রশাসনের ডরমেটরির একজন আয়ার মেয়ে, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার সিঅ্যান্ডবি পাড়ার একজন, বুজরুকগড়গড়ির একজন, দামুড়হুদা উপজেলার উজিরপুর গ্রামের তিনজন ও নাপিতখালীর একজন, আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার কলেজপাড়ার দুইজন ও বলরামপুরের একজন রয়েছে।
গত এপ্রিল মাসে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল নয়জন। চুয়াডাঙ্গায় ১৯ মার্চ সর্বপ্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। ১৫ দিন হাসপাতালের আইসোলেসনে চিকিৎসাধীন থাকার পর তিনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন। এরপর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত জেলায় আরও ৮ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। তবে চলতি মাসের শুরু থেকে গত ১৫ দিনের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪ জনে। এর মধ্যে রয়েছে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, হাসপাতালের নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ সদস্য, আনসার সদস্য, প্রবাসী ও সাধারণ মানুষ।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান বলেন, ‘দেশে পুলিশ সদস্যরাও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত থাকায় পুলিশের মধ্যেও শঙ্কা ছড়িয়ে পড়েছে। কারণ মাঠের মধ্যে সার্বক্ষণিক দায়িত্বে নিয়োজিত থাকছেন পুলিশ সদস্যরা। এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন স্থানে খাদ্য ও ত্রাণ বিতরণেও পুলিশ দায়িত্ব পালন করছেন। ইতিমধ্যে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলায় একজন পুলিশ সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হোম আইসোলেশনে রয়েছেন।’
এদিকে, এ জেলায় দিন দিন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় মানুষজনের মধ্যে আতঙ্ক বেড়ে চলেছে। চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার নাসিম হোসেন অঙ্কুর নামের একজন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গার মানুষ বোকার পরিচয় দিয়েছে গত পাঁচ দিনে শপিং কমপ্লেক্সে উপচে পড়া ভিড় জমিয়ে। সবাই কতটা বিপদে আছে, বুঝতে পারছে না। সবাইকে নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতন হতে হবে, এর কোনো বিকল্প নেই।’
চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডা. এ এস এম মারুফ হাসান বলেন, ‘প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। মানুষকে আরও অনেক সচেতন হতে হবে। অপ্রয়োজনে বাড়ির বাইরে চলাচল বন্ধ করতে হবে। প্রয়োজনে দোকান-পাট খুললেও সামাজিক দূরত্ব বজায় থেকে কেনাকাটা করতে হবে। আর তা না হলে করোনা আক্রান্ত রোগী আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে গেছে, গতকাল শুক্রবার (১৫ মে) করোনাভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে আলমডাঙ্গা উপজেলা থেকে নতুন ২৬টি নমুনা সংগ্রহ করে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে। জেলা থেকে এ পর্যন্ত মোট নমুনা সংগ্রহ ৬৮১টি, প্রাপ্ত রিপোর্ট ৪৯৪টি, পজেটিভ ৫০টি, নেগেটিভ ৪৪৩টি, সুস্থ ১ ও মৃত্যু ১। জেলার বাইরে থেকে সংগৃহীত নমুনায় জেলায় করোনা শনাক্ত ৪টি। চুয়াডাঙ্গা জেলায় মোট করোনা শনাক্ত ৫৪ জন। শুক্রবার পাঠানো ২৬টি নমুনাসহ ফলাফল পেতে বাকি আছে ১৮৮টি।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

জেলায় ১৫ দিনেই আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৫৪

আপলোড টাইম : ০৯:৫৪:৪৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ মে ২০২০

চুয়াডাঙ্গায় সিনিয়র নার্সসহ আরও ৮ জনের করোনা পজেটিভ
রুদ্র রাসেল:
চুয়াডাঙ্গায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। জেলায় গতকাল শুক্রবার আরও ৮ জনের শরীরে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা শহরের গুলশান পাড়ার একজন, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স, জীবননগর উপজেলা (ইউএইচসি) নার্স বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে কর্তব্যরত, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দৌলাতদিয়াড়ে একজন, বড়শলুয়ায় দুইজন ও হিজলগাড়ির দুইজন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ ১১ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এ নিয়ে জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৫৪ জনে। নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট একজন, জেলা প্রশাসনের ডরমেটরির একজন আয়ার মেয়ে, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার সিঅ্যান্ডবি পাড়ার একজন, বুজরুকগড়গড়ির একজন, দামুড়হুদা উপজেলার উজিরপুর গ্রামের তিনজন ও নাপিতখালীর একজন, আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার কলেজপাড়ার দুইজন ও বলরামপুরের একজন রয়েছে।
গত এপ্রিল মাসে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল নয়জন। চুয়াডাঙ্গায় ১৯ মার্চ সর্বপ্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। ১৫ দিন হাসপাতালের আইসোলেসনে চিকিৎসাধীন থাকার পর তিনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন। এরপর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত জেলায় আরও ৮ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। তবে চলতি মাসের শুরু থেকে গত ১৫ দিনের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪ জনে। এর মধ্যে রয়েছে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, হাসপাতালের নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ সদস্য, আনসার সদস্য, প্রবাসী ও সাধারণ মানুষ।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান বলেন, ‘দেশে পুলিশ সদস্যরাও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত থাকায় পুলিশের মধ্যেও শঙ্কা ছড়িয়ে পড়েছে। কারণ মাঠের মধ্যে সার্বক্ষণিক দায়িত্বে নিয়োজিত থাকছেন পুলিশ সদস্যরা। এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন স্থানে খাদ্য ও ত্রাণ বিতরণেও পুলিশ দায়িত্ব পালন করছেন। ইতিমধ্যে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলায় একজন পুলিশ সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হোম আইসোলেশনে রয়েছেন।’
এদিকে, এ জেলায় দিন দিন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় মানুষজনের মধ্যে আতঙ্ক বেড়ে চলেছে। চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার নাসিম হোসেন অঙ্কুর নামের একজন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গার মানুষ বোকার পরিচয় দিয়েছে গত পাঁচ দিনে শপিং কমপ্লেক্সে উপচে পড়া ভিড় জমিয়ে। সবাই কতটা বিপদে আছে, বুঝতে পারছে না। সবাইকে নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতন হতে হবে, এর কোনো বিকল্প নেই।’
চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডা. এ এস এম মারুফ হাসান বলেন, ‘প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। মানুষকে আরও অনেক সচেতন হতে হবে। অপ্রয়োজনে বাড়ির বাইরে চলাচল বন্ধ করতে হবে। প্রয়োজনে দোকান-পাট খুললেও সামাজিক দূরত্ব বজায় থেকে কেনাকাটা করতে হবে। আর তা না হলে করোনা আক্রান্ত রোগী আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে গেছে, গতকাল শুক্রবার (১৫ মে) করোনাভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে আলমডাঙ্গা উপজেলা থেকে নতুন ২৬টি নমুনা সংগ্রহ করে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে। জেলা থেকে এ পর্যন্ত মোট নমুনা সংগ্রহ ৬৮১টি, প্রাপ্ত রিপোর্ট ৪৯৪টি, পজেটিভ ৫০টি, নেগেটিভ ৪৪৩টি, সুস্থ ১ ও মৃত্যু ১। জেলার বাইরে থেকে সংগৃহীত নমুনায় জেলায় করোনা শনাক্ত ৪টি। চুয়াডাঙ্গা জেলায় মোট করোনা শনাক্ত ৫৪ জন। শুক্রবার পাঠানো ২৬টি নমুনাসহ ফলাফল পেতে বাকি আছে ১৮৮টি।