ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

জীবন সুন্দর করা কুরআনের উপদেশ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:১৫:৩৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ জুন ২০২০
  • / ২০১ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম প্রতিবেদন:
সুন্দর পরিচ্ছন্ন ও উন্নত জীবনের পথ দেখায় কুরআন। মানুষের কথা বলা থেকে শুরু করে চলাফেরা, দেখাশোনা, খাওয়া-দাওয়া কোনো কিছুই বাদ যায়নি। সবই আলোচিত হয়েছে কুরআনে। প্রয়োজন শুধু তা পড়ে দেখার এবং বুঝে আমল করার। তবেই উন্নততর হবে মানুষের জীবনমান। মানুষের জীবন ঘনিষ্ঠ কুরআনের উপদেশগুলো হলো-
– কথা বলার আওয়াজ: ‘আর কণ্ঠ স্বর নিচু কর। নিঃসন্দেহে গাধার স্বরই সর্বাপেক্ষা অপ্রীতিকর।’ (সুরা লোকমান : আয়াত ১৯)
– কথা বলার ধরন: ‘মানুষের সঙ্গে সুন্দর ও উত্তম তথা প্রাঞ্জল ভাষায় কথা বল।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ৮৩)
‘যে বিষয়ে জ্ঞান নেই, সে সম্পর্কে কথা না বলা অর্থাৎ জ্ঞানহীন অসাড় কথা না বলা।’ (সুরা বনি ইসরাঈল : আয়াত ৩৬)
কুরআনের যত স্থানেই কথা বলার বর্ণনা এসেছে, সব স্থানেই সঙ্গত ন্যায় কথা বলার কথা বলা হয়েছে।
– চলাফেরা: পৃথিবীতে দম্ভভরে (অহংকারের সঙ্গে) পদচারণা করো না। নিশ্চয় তুমি তো ভূ-পৃষ্ঠকে কখনই বিদীর্ণ করতে পারবে না এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না।’ (সুরা বনি ইসরাঈল : আয়াত ৩৭)
– দৃষ্টি
আপনি দৃষ্টি তুলে ওই বস্তুর দিকে (লোভাতুর দৃষ্টিতে) তাকাবেন না, যা আমি তাদের মধ্যে কয়েক প্রকার লোককে ভোগ করার জন্যে দিয়েছি, তাদের জন্য চিন্তিত হবেন না আর ঈমানদারদের জন্য স্বীয় বাহু নত করুন।’ (সুরা হিজর : আয়াত ৮৮)
– সামাজিক ভারসাম্য রক্ষা
‘যদি মুমিনদের দুই দল যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়ে, তবে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দেবে। অতপর যদি তাদের একদল অপর দলের ওপর চড়াও হয়, তবে তোমরা আক্রমণকারী দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে; যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে। যদি ফিরে আসে, তবে তোমরা তাদের মধ্যে ন্যায়ানুগ পন্থায় মীমাংসা করে দেবে এবং ইনছাফ করবে। নিশ্চয় আল্লাহ ইনছাফকারীদেরকে পছন্দ করেন।’ (সুরা হুজুরাত : আয়াত ৯)
‘মুমিনগণ, কেউ যেন অপর কাউকে উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোন নারী অপর নারীকেও যেন উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারিণী অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। কেউ বিশ্বাস স্থাপন করলে তাদের মন্দ নামে ডাকা গোনাহ। যারা এহেন কাজ থেকে তওবা না করে তারাই জালেম।’ (সুরা হুজুরাত : আয়াত ১১)
– হিংসা বিদ্বেষ, ধারণা ও পরনিন্দা না করা
‘মুমিনগণ, তোমরা অনেক ধারণা থেকে বেঁচে থাক। নিশ্চয় কতক ধারণা গোনাহ। আর গোপনীয় বিষয় সন্ধান করো না। তোমাদের কেউ যেন কারও পশ্চাতে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি তার মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়াকে পছন্দ করবে? বস্তুত তোমরা তো একে ঘৃণাই কর। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তওবাহ কবুলকারী, পরম দয়ালু।’ (সুরা হুজরাত : আয়াত ১২)
– অপচয় না করা ‘হে বনি আদম! তোমরা প্রত্যেক নামাজের সময় সাজসজ্জা পরিধান করে নাও, খাও ও পান কর এবং অপব্যয় করো না। তিনি অপব্যয়ীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা আরাফ : আয়াত ৩১) কুরআনের এ সুন্দর গুণগুলো মানুষের জীবনে বাস্তবায়িত হলে হিংসা ও ঘৃণামুক্ত সুন্দর সমাজ তৈরি হতো। প্রতিটি পরিবার কুরআনের সৌন্দর্য রঙ ছিটিয়ে জীবন ও জগৎকে সুখ ও সমৃদ্ধিতে ভরে দিতো। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআনের উল্লেখিত গুণে ব্যক্তি পরিবার ও সমাজ জীবন সাজানোর তাওফিক দান করুন। আমিন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

জীবন সুন্দর করা কুরআনের উপদেশ

আপলোড টাইম : ১০:১৫:৩৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ জুন ২০২০

ধর্ম প্রতিবেদন:
সুন্দর পরিচ্ছন্ন ও উন্নত জীবনের পথ দেখায় কুরআন। মানুষের কথা বলা থেকে শুরু করে চলাফেরা, দেখাশোনা, খাওয়া-দাওয়া কোনো কিছুই বাদ যায়নি। সবই আলোচিত হয়েছে কুরআনে। প্রয়োজন শুধু তা পড়ে দেখার এবং বুঝে আমল করার। তবেই উন্নততর হবে মানুষের জীবনমান। মানুষের জীবন ঘনিষ্ঠ কুরআনের উপদেশগুলো হলো-
– কথা বলার আওয়াজ: ‘আর কণ্ঠ স্বর নিচু কর। নিঃসন্দেহে গাধার স্বরই সর্বাপেক্ষা অপ্রীতিকর।’ (সুরা লোকমান : আয়াত ১৯)
– কথা বলার ধরন: ‘মানুষের সঙ্গে সুন্দর ও উত্তম তথা প্রাঞ্জল ভাষায় কথা বল।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ৮৩)
‘যে বিষয়ে জ্ঞান নেই, সে সম্পর্কে কথা না বলা অর্থাৎ জ্ঞানহীন অসাড় কথা না বলা।’ (সুরা বনি ইসরাঈল : আয়াত ৩৬)
কুরআনের যত স্থানেই কথা বলার বর্ণনা এসেছে, সব স্থানেই সঙ্গত ন্যায় কথা বলার কথা বলা হয়েছে।
– চলাফেরা: পৃথিবীতে দম্ভভরে (অহংকারের সঙ্গে) পদচারণা করো না। নিশ্চয় তুমি তো ভূ-পৃষ্ঠকে কখনই বিদীর্ণ করতে পারবে না এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না।’ (সুরা বনি ইসরাঈল : আয়াত ৩৭)
– দৃষ্টি
আপনি দৃষ্টি তুলে ওই বস্তুর দিকে (লোভাতুর দৃষ্টিতে) তাকাবেন না, যা আমি তাদের মধ্যে কয়েক প্রকার লোককে ভোগ করার জন্যে দিয়েছি, তাদের জন্য চিন্তিত হবেন না আর ঈমানদারদের জন্য স্বীয় বাহু নত করুন।’ (সুরা হিজর : আয়াত ৮৮)
– সামাজিক ভারসাম্য রক্ষা
‘যদি মুমিনদের দুই দল যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়ে, তবে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দেবে। অতপর যদি তাদের একদল অপর দলের ওপর চড়াও হয়, তবে তোমরা আক্রমণকারী দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে; যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে। যদি ফিরে আসে, তবে তোমরা তাদের মধ্যে ন্যায়ানুগ পন্থায় মীমাংসা করে দেবে এবং ইনছাফ করবে। নিশ্চয় আল্লাহ ইনছাফকারীদেরকে পছন্দ করেন।’ (সুরা হুজুরাত : আয়াত ৯)
‘মুমিনগণ, কেউ যেন অপর কাউকে উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোন নারী অপর নারীকেও যেন উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারিণী অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। কেউ বিশ্বাস স্থাপন করলে তাদের মন্দ নামে ডাকা গোনাহ। যারা এহেন কাজ থেকে তওবা না করে তারাই জালেম।’ (সুরা হুজুরাত : আয়াত ১১)
– হিংসা বিদ্বেষ, ধারণা ও পরনিন্দা না করা
‘মুমিনগণ, তোমরা অনেক ধারণা থেকে বেঁচে থাক। নিশ্চয় কতক ধারণা গোনাহ। আর গোপনীয় বিষয় সন্ধান করো না। তোমাদের কেউ যেন কারও পশ্চাতে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি তার মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়াকে পছন্দ করবে? বস্তুত তোমরা তো একে ঘৃণাই কর। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তওবাহ কবুলকারী, পরম দয়ালু।’ (সুরা হুজরাত : আয়াত ১২)
– অপচয় না করা ‘হে বনি আদম! তোমরা প্রত্যেক নামাজের সময় সাজসজ্জা পরিধান করে নাও, খাও ও পান কর এবং অপব্যয় করো না। তিনি অপব্যয়ীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা আরাফ : আয়াত ৩১) কুরআনের এ সুন্দর গুণগুলো মানুষের জীবনে বাস্তবায়িত হলে হিংসা ও ঘৃণামুক্ত সুন্দর সমাজ তৈরি হতো। প্রতিটি পরিবার কুরআনের সৌন্দর্য রঙ ছিটিয়ে জীবন ও জগৎকে সুখ ও সমৃদ্ধিতে ভরে দিতো। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআনের উল্লেখিত গুণে ব্যক্তি পরিবার ও সমাজ জীবন সাজানোর তাওফিক দান করুন। আমিন।