ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

জীবননগর রায়পুরে ভুয়া ভাউচারে প্রকল্পের টাকা আত্মসাত! ইউপি চেয়ারম্যান তাহাজ্জত মীর্জার বিরুদ্ধে ১১ ইউপি সদস্যের অনাস্থা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৫:০৮:০০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই ২০১৭
  • / ৯৪৩ বার পড়া হয়েছে

জীবননগর রায়পুরে ভুয়া ভাউচারে প্রকল্পের টাকা আত্মসাত!
ইউপি চেয়ারম্যান তাহাজ্জত মীর্জার বিরুদ্ধে ১১ ইউপি সদস্যের অনাস্থা
jibonnagar news pic 12-7-17জীবননগর অফিস: জীবননগর উপজেলার ৬নং রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাহাজ্জত হোসেন মীর্জার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ইউনিয়নের ১১জন ইউপি সদস্য লিখিত অনাস্থা জ্ঞাপন করে। গত মঙ্গলবার ইউনিয়নের ১১জন ইউপি সদস্য চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা জ্ঞাপন করে লিখিত অভিযোগপত্র বিভাগীয় কমিশনার-খুলনা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার জীবননগর, চুয়াডাঙ্গা ও উপ-পরিচালক, দূর্নীতি দমন বিভাগ, খুলনা বরাবর পেশ করেন। লিখিত অনাস্থা জ্ঞাপন করার পর থেকে ইউপি চেয়ারম্যন তাহাজ্জত হোসেন মীর্জা বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন এবং সাংবাদিকদের একটি বিশ্বাসযোগ্য মাধ্যম দিয়ে জানান বিষয়টি তিনি মিমাংসা করে ফেলেছেন। অথচ গতকাল খোঁজ নিয়ে জানা যায় চেয়ারম্যান তাহাজ্জত হোসেন মীর্জা বিষয়টি মিমাংসা করেননি এবং তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সত্যতাও মিলছে বলে জানা গেছে।
অভিযোগকারী ইউপি সদস্যরা মিলনুর রহমান, জেহের আলী, আব্দুল লতিফ, আসাদুল হক, আব্দুল মালেক, ফয়জুন নেছা, আব্দুস শুকুর, তরিকুল ইসলাম, কহিনুর, কুলসুম ও নুরুননাহার উক্ত চেয়ারম্যনের উপযুক্ত বিচার ও শাস্তির ব্যবস্থাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছেন।
এছাড়াও ইউপি চেয়ারম্যন তাহাজ্জত হোসেন মীর্জার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষদেরকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে টাকা আদায়, বিনা অপরাধে গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে মোট অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়াসহ আরো অনেক অভিযোগ তোলেন ইউনিয়নবাসী।
এবিষয়ে রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাহাজ্জত হোসেন মীর্জার সাথে কথা বললে তিনি সাংবাদিকদেরকে জানান, আমার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ তুলে ইউপি সদস্যরা অনাস্থা জ্ঞাপন করেছেন তা সত্য নয়। তিনি বলেন, প্রত্যেক প্রকল্পের নিয়মনুযায়ী সভাপতি হয় ইউপি সদস্যরা বিধায় আমার সভাপতি হওয়ার সুযোগ নেই।
এ বিষয়ে গত মঙ্গলবার স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক আঞ্জুমান আরার সাথে কথা বললে তিনি জানান যে, অভিযোগ পাওয়া মাত্র তদন্তপূর্বক ইউপি চেয়ারম্যান যদি অভিযুক্ত হোন তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, জীবননগর উপজেলার বৃহত্তর সাবেক বাঁকা ইউনিয়ন জনগনের সুবিধা ও এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে ২০১২ সালে ভেঙ্গে ৩টি ইউনিয়নে রূপান্তরিত করা হয়। ৩নং বাঁকা, ৫নং হাসাদাহ ও ৬নং রায়পুর ইউনিয়ন। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালের ২৭শে এপ্রিল নবগঠিত অত্র ইউনিয়ন গুলিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নবগঠিত রায়পুর ইউনিয় পরিষদ নির্বাচনে তাহাজ্জত হোসেন মীর্জা চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়ে অত্র ইউনিয়নের ১১ জন ইউপি সদস্যসহ তিনি ৪ঠা জুন ২০১৩ সালে শপথ গ্রহন করেন এবং ৮ই জুন ২০১৩ সালে নবগঠিত রায়পুর ইউনিয়নের দায়িত্বভার গ্রহন করেন। সেই থেকেই তাহাজ্জত চেয়ারম্যন একক সিদ্ধান্তে পরিষদের সমস্ত কার্যক্রম বিগত ৪ বছর যাবত এককভাবে পরিচালনা করে আসছেন ইউপি সদস্যদের পরামর্শ ছাড়াই বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। ইতোপূর্বে ইউপি সদস্যরা ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম ও আয়/ব্যয়ের হিসাব জানতে চাইলে তিনি তাদেরকে এড়িয়ে চলেছেন, এমনকি মারমুখি ভূমিকায় ইউপি সদস্যদেরকে দমিয়ে রাখার অবিযোগও নতুন নয়।
এছাড়া তাহাজ্জত চেয়ারম্যন বিগত ৪বছর বিভিন্ন ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন, এডিপির অর্থায়নে নির্মিত রাস্তা দেখিয়ে এলজিএসপির টাকা আত্মসাত ও কর্মসৃজনের লেবার দিয়ে খাল খনন করে ১% এর এক লক্ষ টাকা আত্মসাৎ, সরকারী অনেক টাকা আত্মসাৎসহ গত ২বছর যাবত ইউপি সদস্যদের কোন সম্মানি ভাতা দেওয়া হয়নি তার বিরুদ্ধে এই রকম অভিযোগ তুলে অত্র ইউনিয়নের ১১জন ইউপি সদস্য তার বিরুদ্ধে অনাস্থা জ্ঞাপন করেছেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

জীবননগর রায়পুরে ভুয়া ভাউচারে প্রকল্পের টাকা আত্মসাত! ইউপি চেয়ারম্যান তাহাজ্জত মীর্জার বিরুদ্ধে ১১ ইউপি সদস্যের অনাস্থা

আপলোড টাইম : ০৫:০৮:০০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই ২০১৭

জীবননগর রায়পুরে ভুয়া ভাউচারে প্রকল্পের টাকা আত্মসাত!
ইউপি চেয়ারম্যান তাহাজ্জত মীর্জার বিরুদ্ধে ১১ ইউপি সদস্যের অনাস্থা
jibonnagar news pic 12-7-17জীবননগর অফিস: জীবননগর উপজেলার ৬নং রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাহাজ্জত হোসেন মীর্জার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ইউনিয়নের ১১জন ইউপি সদস্য লিখিত অনাস্থা জ্ঞাপন করে। গত মঙ্গলবার ইউনিয়নের ১১জন ইউপি সদস্য চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা জ্ঞাপন করে লিখিত অভিযোগপত্র বিভাগীয় কমিশনার-খুলনা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার জীবননগর, চুয়াডাঙ্গা ও উপ-পরিচালক, দূর্নীতি দমন বিভাগ, খুলনা বরাবর পেশ করেন। লিখিত অনাস্থা জ্ঞাপন করার পর থেকে ইউপি চেয়ারম্যন তাহাজ্জত হোসেন মীর্জা বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন এবং সাংবাদিকদের একটি বিশ্বাসযোগ্য মাধ্যম দিয়ে জানান বিষয়টি তিনি মিমাংসা করে ফেলেছেন। অথচ গতকাল খোঁজ নিয়ে জানা যায় চেয়ারম্যান তাহাজ্জত হোসেন মীর্জা বিষয়টি মিমাংসা করেননি এবং তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সত্যতাও মিলছে বলে জানা গেছে।
অভিযোগকারী ইউপি সদস্যরা মিলনুর রহমান, জেহের আলী, আব্দুল লতিফ, আসাদুল হক, আব্দুল মালেক, ফয়জুন নেছা, আব্দুস শুকুর, তরিকুল ইসলাম, কহিনুর, কুলসুম ও নুরুননাহার উক্ত চেয়ারম্যনের উপযুক্ত বিচার ও শাস্তির ব্যবস্থাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছেন।
এছাড়াও ইউপি চেয়ারম্যন তাহাজ্জত হোসেন মীর্জার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষদেরকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে টাকা আদায়, বিনা অপরাধে গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে মোট অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়াসহ আরো অনেক অভিযোগ তোলেন ইউনিয়নবাসী।
এবিষয়ে রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাহাজ্জত হোসেন মীর্জার সাথে কথা বললে তিনি সাংবাদিকদেরকে জানান, আমার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ তুলে ইউপি সদস্যরা অনাস্থা জ্ঞাপন করেছেন তা সত্য নয়। তিনি বলেন, প্রত্যেক প্রকল্পের নিয়মনুযায়ী সভাপতি হয় ইউপি সদস্যরা বিধায় আমার সভাপতি হওয়ার সুযোগ নেই।
এ বিষয়ে গত মঙ্গলবার স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক আঞ্জুমান আরার সাথে কথা বললে তিনি জানান যে, অভিযোগ পাওয়া মাত্র তদন্তপূর্বক ইউপি চেয়ারম্যান যদি অভিযুক্ত হোন তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, জীবননগর উপজেলার বৃহত্তর সাবেক বাঁকা ইউনিয়ন জনগনের সুবিধা ও এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে ২০১২ সালে ভেঙ্গে ৩টি ইউনিয়নে রূপান্তরিত করা হয়। ৩নং বাঁকা, ৫নং হাসাদাহ ও ৬নং রায়পুর ইউনিয়ন। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালের ২৭শে এপ্রিল নবগঠিত অত্র ইউনিয়ন গুলিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নবগঠিত রায়পুর ইউনিয় পরিষদ নির্বাচনে তাহাজ্জত হোসেন মীর্জা চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়ে অত্র ইউনিয়নের ১১ জন ইউপি সদস্যসহ তিনি ৪ঠা জুন ২০১৩ সালে শপথ গ্রহন করেন এবং ৮ই জুন ২০১৩ সালে নবগঠিত রায়পুর ইউনিয়নের দায়িত্বভার গ্রহন করেন। সেই থেকেই তাহাজ্জত চেয়ারম্যন একক সিদ্ধান্তে পরিষদের সমস্ত কার্যক্রম বিগত ৪ বছর যাবত এককভাবে পরিচালনা করে আসছেন ইউপি সদস্যদের পরামর্শ ছাড়াই বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। ইতোপূর্বে ইউপি সদস্যরা ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম ও আয়/ব্যয়ের হিসাব জানতে চাইলে তিনি তাদেরকে এড়িয়ে চলেছেন, এমনকি মারমুখি ভূমিকায় ইউপি সদস্যদেরকে দমিয়ে রাখার অবিযোগও নতুন নয়।
এছাড়া তাহাজ্জত চেয়ারম্যন বিগত ৪বছর বিভিন্ন ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন, এডিপির অর্থায়নে নির্মিত রাস্তা দেখিয়ে এলজিএসপির টাকা আত্মসাত ও কর্মসৃজনের লেবার দিয়ে খাল খনন করে ১% এর এক লক্ষ টাকা আত্মসাৎ, সরকারী অনেক টাকা আত্মসাৎসহ গত ২বছর যাবত ইউপি সদস্যদের কোন সম্মানি ভাতা দেওয়া হয়নি তার বিরুদ্ধে এই রকম অভিযোগ তুলে অত্র ইউনিয়নের ১১জন ইউপি সদস্য তার বিরুদ্ধে অনাস্থা জ্ঞাপন করেছেন।