ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

জীবননগর মহিলা কলেজের প্রভাষকের বিরুদ্ধে হাজিরা খাতা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১২:৪৩:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ অক্টোবর ২০১৮
  • / ৫৯৫ বার পড়া হয়েছে

হ-য-ব-র-ল প্রশাসনিক ব্যবস্থায় ক্ষুদ্ধ অভিভাবক মহল
জীবননগর অফিস: জীবননগর সরকারি আদর্শ মহিলা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষের হাতে থেকে জোরপূর্বক হাজিরা খাতা কেড়ে নিয়ে বাকি শিক্ষকদের স্বাক্ষর করতে দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে একই কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক জাকিয়ার বিরুদ্ধে। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার সময় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শিক্ষকদের মধ্যে একটি বাকবিতÐার সৃষ্টি হয়। অবশেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেলিম রেজা কলেজে তাৎক্ষণিক উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
কলেজের শিক্ষকদের সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল ১০টার সময় প্রভাষক জাকিয়া কলেজের প্রিন্সিপালের অফিস রুমে ঢুকে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে খাতা নিতে চায়। এ সময় প্রিন্সিপাল খাতা তার হাতে খাতা দিতে অপরাগত জানালে সে প্রিন্সিপালের সাথে বাজে আচরণ করে। একপর্যায় প্রিন্সিপালের নিকট থেকে হাজিরা খাতা কেড়ে নিজের ব্যাগের ভিতরে রাখে এবং সে আর অন্য শিক্ষকদের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে দিবে না বলে জানায়। এসময় অন্যান্য শিক্ষকরা তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। অবশেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিষয়টি জানালে তিনি ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
জীবননগর সরকারি আদর্শ মহিলা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ আলাউদ্দিনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার কলেজের সকল শিক্ষকদের নিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি সমাধিতে পূষ্পমাল্য অর্পন করতে সকাল ৭টার সময় যাওয়ার কথা। সকল শিক্ষক আসলেও জাকিয়া দেরি করে আসে। তাকে ফোন দিলে তার কোন মতামত পাওয়া যায়নি অবশেষে সকল শিক্ষকের কথামত গাড়ি ছেড়ে দেওয়া হয়। সেই রাগেই হয়ত সে গতকাল সকালে আমার রুমে ঢুকে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে খাতাটি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে, আমি তাকে হাজিরা দিতে অপরাগত জানালে সে আমার কাছ থেকে হাজিরা খাতা কেড়ে নিয়ে চলে যায়।
প্রভাষক জাকিয়ার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, হাজিরা খাতায় নিয়ে গেছি তার একটাই কারণ এখানে অনেক শিক্ষক আছে যারা তিনদিন কলেজে অনুপস্থিত তারা কলেজে এসে একবারে স্বাক্ষর করে। তাছাড়া এই কলেজের অনেক শিক্ষক আছে যারা বিভিন্ন স্কুল ও কলেজ চাকুরী করে। আবার এই কলেজেও চাকুরী করে শুধু তাই নয় অনেকেই কলেজে দেরি করে আসে। বিষয়টি অনেকবার প্রিন্সিপালকে বলেছি তিনি কোন কথায় কান না দিয়ে এক ধরনের অনিয়ম করে চলেছে। যার কারণে আমি বাধ্য হয়ে হাজিরা খাতা প্রিন্সিপালের নিকট থেকে নিয়েছি।
তথ্যনুসন্ধানে জানা গেছে, জীবননগর সরকারি আদর্শ মহিলা ডিগ্রী কলেজটি ২০০০ সালে স্থাপিত হয়। স্থাপিতর পর থেকে কলেজটি খুব সুনামের সাথে পরিচালিত হয়ে আসছে। সম্প্রতি কলেজটি জাতীয়করণ করা হয়। জাতীয়করণ হওয়ার পর থেকেই কলেজের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। কয়েকদিন আগে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সাথে অসদাচরণ, আবার দিন যেতে না যেতেই প্রভাষকের বিরুদ্ধে অধ্যক্ষের সাথে অসদাচরণের অভিযোগ। এ ছাড়াও শিক্ষকদের অনুপস্থিত আর নামমাত্র জীবননগর সরকারি আদর্শ মহিলা ডিগ্রী কলেজে চাকুরী। একই সাথে বিভিন্ন স্কুল কলেজে চাকুরী করার অভিযোগ উঠেছে মনজুরা খাতুন, নাজমুন নাহার, সাইফুল ইসলাম ও মাসুদ হাসানের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয় কলেজের অনেক শিক্ষক আছে যারা নিয়মিত কলেজে না এসেও তাদের হাজিরা খাতায় তাদের প্রতিদিনের হাজিরা উঠে যায়। এ যেন হ-য-ব-র-ল অবস্থা। এদিকে, শিক্ষকদের এ আচারণে অভিভাবক মহল ক্ষুদ্ধ।
জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেলিম রেজার সাথে কথা বললে তিনি বলেন- জীবননগর সরকারি আদর্শ মহিলা ডিগ্রী কলেজে অধ্যক্ষের নিকট থেকে হাজিরা খাতা নেয়ার বিষয়টি আমি শুনেছি এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সেখানে যেয়ে যেটি জানতে পারলাম শিক্ষকদের মধ্যে হয়ত যে কোন মতদ›দ্ব থাকতে পারে যার কারেণই এ ঘটনা ঘটেছে। তাছাড়া আমি যতটুকু জানতে পারলাম এই কলেজের বেশ কিছু শিক্ষক অন্য স্থানে চাকুরী করে এবং কিছু শিক্ষক কলেজে না আসলেও হাজিরা খাতায় তাদের হাজিরা উঠে যায়। আমি প্রিন্সিপালকে এ বিষয়টির বিষয়ে সতর্ক করেছি এবং যে শিক্ষক অন্যস্থানে চাকুরী করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেছি।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

জীবননগর মহিলা কলেজের প্রভাষকের বিরুদ্ধে হাজিরা খাতা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ!

আপলোড টাইম : ১২:৪৩:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ অক্টোবর ২০১৮

হ-য-ব-র-ল প্রশাসনিক ব্যবস্থায় ক্ষুদ্ধ অভিভাবক মহল
জীবননগর অফিস: জীবননগর সরকারি আদর্শ মহিলা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষের হাতে থেকে জোরপূর্বক হাজিরা খাতা কেড়ে নিয়ে বাকি শিক্ষকদের স্বাক্ষর করতে দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে একই কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক জাকিয়ার বিরুদ্ধে। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার সময় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শিক্ষকদের মধ্যে একটি বাকবিতÐার সৃষ্টি হয়। অবশেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেলিম রেজা কলেজে তাৎক্ষণিক উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
কলেজের শিক্ষকদের সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল ১০টার সময় প্রভাষক জাকিয়া কলেজের প্রিন্সিপালের অফিস রুমে ঢুকে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে খাতা নিতে চায়। এ সময় প্রিন্সিপাল খাতা তার হাতে খাতা দিতে অপরাগত জানালে সে প্রিন্সিপালের সাথে বাজে আচরণ করে। একপর্যায় প্রিন্সিপালের নিকট থেকে হাজিরা খাতা কেড়ে নিজের ব্যাগের ভিতরে রাখে এবং সে আর অন্য শিক্ষকদের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে দিবে না বলে জানায়। এসময় অন্যান্য শিক্ষকরা তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। অবশেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিষয়টি জানালে তিনি ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
জীবননগর সরকারি আদর্শ মহিলা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ আলাউদ্দিনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার কলেজের সকল শিক্ষকদের নিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি সমাধিতে পূষ্পমাল্য অর্পন করতে সকাল ৭টার সময় যাওয়ার কথা। সকল শিক্ষক আসলেও জাকিয়া দেরি করে আসে। তাকে ফোন দিলে তার কোন মতামত পাওয়া যায়নি অবশেষে সকল শিক্ষকের কথামত গাড়ি ছেড়ে দেওয়া হয়। সেই রাগেই হয়ত সে গতকাল সকালে আমার রুমে ঢুকে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে খাতাটি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে, আমি তাকে হাজিরা দিতে অপরাগত জানালে সে আমার কাছ থেকে হাজিরা খাতা কেড়ে নিয়ে চলে যায়।
প্রভাষক জাকিয়ার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, হাজিরা খাতায় নিয়ে গেছি তার একটাই কারণ এখানে অনেক শিক্ষক আছে যারা তিনদিন কলেজে অনুপস্থিত তারা কলেজে এসে একবারে স্বাক্ষর করে। তাছাড়া এই কলেজের অনেক শিক্ষক আছে যারা বিভিন্ন স্কুল ও কলেজ চাকুরী করে। আবার এই কলেজেও চাকুরী করে শুধু তাই নয় অনেকেই কলেজে দেরি করে আসে। বিষয়টি অনেকবার প্রিন্সিপালকে বলেছি তিনি কোন কথায় কান না দিয়ে এক ধরনের অনিয়ম করে চলেছে। যার কারণে আমি বাধ্য হয়ে হাজিরা খাতা প্রিন্সিপালের নিকট থেকে নিয়েছি।
তথ্যনুসন্ধানে জানা গেছে, জীবননগর সরকারি আদর্শ মহিলা ডিগ্রী কলেজটি ২০০০ সালে স্থাপিত হয়। স্থাপিতর পর থেকে কলেজটি খুব সুনামের সাথে পরিচালিত হয়ে আসছে। সম্প্রতি কলেজটি জাতীয়করণ করা হয়। জাতীয়করণ হওয়ার পর থেকেই কলেজের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। কয়েকদিন আগে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সাথে অসদাচরণ, আবার দিন যেতে না যেতেই প্রভাষকের বিরুদ্ধে অধ্যক্ষের সাথে অসদাচরণের অভিযোগ। এ ছাড়াও শিক্ষকদের অনুপস্থিত আর নামমাত্র জীবননগর সরকারি আদর্শ মহিলা ডিগ্রী কলেজে চাকুরী। একই সাথে বিভিন্ন স্কুল কলেজে চাকুরী করার অভিযোগ উঠেছে মনজুরা খাতুন, নাজমুন নাহার, সাইফুল ইসলাম ও মাসুদ হাসানের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয় কলেজের অনেক শিক্ষক আছে যারা নিয়মিত কলেজে না এসেও তাদের হাজিরা খাতায় তাদের প্রতিদিনের হাজিরা উঠে যায়। এ যেন হ-য-ব-র-ল অবস্থা। এদিকে, শিক্ষকদের এ আচারণে অভিভাবক মহল ক্ষুদ্ধ।
জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেলিম রেজার সাথে কথা বললে তিনি বলেন- জীবননগর সরকারি আদর্শ মহিলা ডিগ্রী কলেজে অধ্যক্ষের নিকট থেকে হাজিরা খাতা নেয়ার বিষয়টি আমি শুনেছি এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সেখানে যেয়ে যেটি জানতে পারলাম শিক্ষকদের মধ্যে হয়ত যে কোন মতদ›দ্ব থাকতে পারে যার কারেণই এ ঘটনা ঘটেছে। তাছাড়া আমি যতটুকু জানতে পারলাম এই কলেজের বেশ কিছু শিক্ষক অন্য স্থানে চাকুরী করে এবং কিছু শিক্ষক কলেজে না আসলেও হাজিরা খাতায় তাদের হাজিরা উঠে যায়। আমি প্রিন্সিপালকে এ বিষয়টির বিষয়ে সতর্ক করেছি এবং যে শিক্ষক অন্যস্থানে চাকুরী করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেছি।