ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

জীবননগরে আদম ব্যবসায়ী সাবিলের খপ্পড়ে ৩ যুবক সর্বশান্ত:টাকা ফেরত চাওয়ায় যুবকদের প্রাণনাশের হুমকি : আদালতে মামলা দায়ের

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৪:৫৯:৪৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অগাস্ট ২০১৭
  • / ৩৪৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: সৌদি আরবে ভাল চাকুরী আর মোটা অংকের বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে ৩মাসের ভিসা দিয়ে ৩ যুবকের সাথে প্রতারনা, কাজ না পেয়ে নিজের জীবন বাঁচাতে বাড়ি ফিরেছে ৩ যুবক। চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের হরিহরনগর গ্রামের আদম ব্যবসায়ী সাবিল ও তার খালাতো ভাই ওয়ার্ড মেম্বার আরজামের খপড়ে পড়ে সর্বশান্ত এই তিন যুবক জীবননগর উপজেলার ৪নং সীমান্ত ইউনিয়নের হরিহরনগর গ্রামের মৃত মহিউদ্দিনের ছেলে নুর হোসেন (২৮), মৃত মোস্তফা বিশ্বাসের ছেলে একরামুল হক (২৯) ও আব্দুর গফুরের ছেলে আব্দুর রহমানকে (৩২) ভাল কাজ আর মোটা অংকের বেতনের লোভ দেখিয়ে তাদের বিদেশ পাঠানোর কথা বলেন। একই গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে সাবিল। তাদের নিকট থেকে সৌদি পাঠানোর নাম করে ৭লক্ষ টাকা করে মোট ২১লক্ষ টাকাও হাতিয়ে নিয়েছে আদম ব্যবসায়ী সাবিল। তার ধোকায় পড়ে সৌদি ফেরত তিন যুবক তাদের শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। সঠিক বিচারের জন্য সমাজপ্রেিদর দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
স্থানীয় এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, সীমান্ত ইউনিয়নের ৫নং ওর্য়াড হরিহরনগর গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের তিন ছেলের মধ্যে দুই ছেলে কাবিল (৩০) ও রবিল (৪১) দীর্ঘ দিন যাবৎ সৌদি থাকেন। আর সাবিল (২৬) নিজ বাড়ি হরিহরনগরেই থাকেন। দুই ভাই সৌদি থাকার সুযোগে সাবিল স্থানীয় ওর্য়াড মেম্বার আরজামের জোগসাজে এলাকায় আদম ব্যবসায়ী হিসাবে কিং খান হিসাবে হয়ে ওঠেন। আদম ব্যবসার সুযোগে সে হরিহরনগরসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের বেকার যুবকদের নিকট সৌদিতে ভাল কাজ আর মোটা অংকের বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে তাদের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাদের সাথে প্রতারণা করার অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে প্রতারনার শিকার তিন যুবক নুর হোসেন, একরামুল ও আব্দুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, সাবিল আমাদেরকে সৌদি আরবে ভাল কাজ আর ভাল বেতনের কথা বলে সৌদী আরবে পাঠিয়ে দেয়। সৌদি আরবে যাওয়ার পর সেখানে থাকা, সাবিলের দুই ভাই রবিল ও কাবিল আমাদেরকে কোন কাজ না দিয়ে বলে, তোমরা এখানে খাও দাও ঘুরে বেড়াও কাজ পেতে কয়েক দিন দেরি হবে। এ ভাবে তিন মাস কেটে গেল। আমরা তিন মাস পরে কাজ দেওয়ার কথা বললে তারা আমাদেরকে নিয়ে যুদ্ধ বিগ্রহ এলাকা ইয়েমেনে বর্ডার সংলগ্ন স্থানে নিয়ে যায় এবং একটি ঘরের ভিতরে আটকিয়ে রাখে। সেখানে প্রতিনিয়িত তারা এক বার করে খাবার দিয়ে ঘরের ভিতরে আটকিয়ে অমানুষিক ভাবে নির্যাতন করত তাদের নির্যাতন সহ্য করতে না পারায় ওখানে থাকা বাংলাদেশী কিছু নাগরিকদের সাহায্যেই আমরা বাড়ি ফিরে আসি। বাড়ি ফিরে এসে তাকে বিষয়টি বললে সে আমাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এমন কি সাবিল ও তার খালাতো ভাই ওর্য়াড মেম্বার আরজাম আলী আমাদের বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি দিতে থাকে। তাদের কাছে আমরা টাকা ফেরত চাইলে সাবিল তার খালাতো ভাই আরজাম মেম্বারকে সাথে নিয়ে বলে তোদের একটাকাও দেব না, পারলে কিছু করে নিস তোদের যে টাকা দেব সেই টাকা আমি পুলিশকে দিয়ে ম্যানেজ করে নেব। আর বেশি কথা বললে তোদের বাড়িতে ফেন্সিডিল রেখে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেব।
এ ব্যাপারে সাবিলের সাথে কথা বললে তিনি বলেন আমরা তাদের সাথে কোন প্রতারণা করিনি, তাদের যে কাজ দেওয়ার কথা ছিল, সেই কাজ দিয়েছি। এখন তারা যদি কাজ না পারে তাহলে আমাদের তো কিছু করার নেই। আমরা গ্রামে প্রায় ১৫ জনকে বিদেশে পাঠিয়েছি তারা কোন দিন অভিযোগ করেনি আর এরা কাজ না পেরে চলে এসেছে এখন আমার উপর দোশারোপ করছে। তারা যে টাকা ফেরত চাচ্ছে, সেই টাকা আমি কি ভাবে দেব? আমি লোক পাঠানোর জন্য জনপ্রতি ৫০ হাজার টাকা পেতাম, আর বাকি টাকা অন্যপাটি নিত।
এ ব্যাপারে ওয়ার্ড মেম্বার আরজাম আলীর সাথে কথা বলার জন্য গেলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি। পরবর্তীতে তিনি বলেন, আমি এই আদম ব্যবসার সাথে জড়িত নয়। সাবিল আমার আত্বীয় ঠিক আছে, কিন্তু আমি কারও নিকট থেকে টাকা গ্রহন করেনি যারা আমার বিরুদ্ধে বলেছে তারা সম্পন্ন মিথ্যা বলেছে।
এ ব্যাপারে জীবননগর থানার এসআই আব্দুল হাইয়ের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, বিদেশে পাঠানোর নাম করে যাদের সাথে প্রতারণা করেছে তারা থানায় একটি অভিযোগ করায় আমি গত মঙ্গলবার হরিহরনগর গ্রামে গিয়েছিলাম। তবে তারা কোটে মামলা করেছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

জীবননগরে আদম ব্যবসায়ী সাবিলের খপ্পড়ে ৩ যুবক সর্বশান্ত:টাকা ফেরত চাওয়ায় যুবকদের প্রাণনাশের হুমকি : আদালতে মামলা দায়ের

আপলোড টাইম : ০৪:৫৯:৪৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অগাস্ট ২০১৭

নিজস্ব প্রতিবেদক: সৌদি আরবে ভাল চাকুরী আর মোটা অংকের বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে ৩মাসের ভিসা দিয়ে ৩ যুবকের সাথে প্রতারনা, কাজ না পেয়ে নিজের জীবন বাঁচাতে বাড়ি ফিরেছে ৩ যুবক। চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের হরিহরনগর গ্রামের আদম ব্যবসায়ী সাবিল ও তার খালাতো ভাই ওয়ার্ড মেম্বার আরজামের খপড়ে পড়ে সর্বশান্ত এই তিন যুবক জীবননগর উপজেলার ৪নং সীমান্ত ইউনিয়নের হরিহরনগর গ্রামের মৃত মহিউদ্দিনের ছেলে নুর হোসেন (২৮), মৃত মোস্তফা বিশ্বাসের ছেলে একরামুল হক (২৯) ও আব্দুর গফুরের ছেলে আব্দুর রহমানকে (৩২) ভাল কাজ আর মোটা অংকের বেতনের লোভ দেখিয়ে তাদের বিদেশ পাঠানোর কথা বলেন। একই গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে সাবিল। তাদের নিকট থেকে সৌদি পাঠানোর নাম করে ৭লক্ষ টাকা করে মোট ২১লক্ষ টাকাও হাতিয়ে নিয়েছে আদম ব্যবসায়ী সাবিল। তার ধোকায় পড়ে সৌদি ফেরত তিন যুবক তাদের শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। সঠিক বিচারের জন্য সমাজপ্রেিদর দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
স্থানীয় এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, সীমান্ত ইউনিয়নের ৫নং ওর্য়াড হরিহরনগর গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের তিন ছেলের মধ্যে দুই ছেলে কাবিল (৩০) ও রবিল (৪১) দীর্ঘ দিন যাবৎ সৌদি থাকেন। আর সাবিল (২৬) নিজ বাড়ি হরিহরনগরেই থাকেন। দুই ভাই সৌদি থাকার সুযোগে সাবিল স্থানীয় ওর্য়াড মেম্বার আরজামের জোগসাজে এলাকায় আদম ব্যবসায়ী হিসাবে কিং খান হিসাবে হয়ে ওঠেন। আদম ব্যবসার সুযোগে সে হরিহরনগরসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের বেকার যুবকদের নিকট সৌদিতে ভাল কাজ আর মোটা অংকের বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে তাদের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাদের সাথে প্রতারণা করার অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে প্রতারনার শিকার তিন যুবক নুর হোসেন, একরামুল ও আব্দুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, সাবিল আমাদেরকে সৌদি আরবে ভাল কাজ আর ভাল বেতনের কথা বলে সৌদী আরবে পাঠিয়ে দেয়। সৌদি আরবে যাওয়ার পর সেখানে থাকা, সাবিলের দুই ভাই রবিল ও কাবিল আমাদেরকে কোন কাজ না দিয়ে বলে, তোমরা এখানে খাও দাও ঘুরে বেড়াও কাজ পেতে কয়েক দিন দেরি হবে। এ ভাবে তিন মাস কেটে গেল। আমরা তিন মাস পরে কাজ দেওয়ার কথা বললে তারা আমাদেরকে নিয়ে যুদ্ধ বিগ্রহ এলাকা ইয়েমেনে বর্ডার সংলগ্ন স্থানে নিয়ে যায় এবং একটি ঘরের ভিতরে আটকিয়ে রাখে। সেখানে প্রতিনিয়িত তারা এক বার করে খাবার দিয়ে ঘরের ভিতরে আটকিয়ে অমানুষিক ভাবে নির্যাতন করত তাদের নির্যাতন সহ্য করতে না পারায় ওখানে থাকা বাংলাদেশী কিছু নাগরিকদের সাহায্যেই আমরা বাড়ি ফিরে আসি। বাড়ি ফিরে এসে তাকে বিষয়টি বললে সে আমাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এমন কি সাবিল ও তার খালাতো ভাই ওর্য়াড মেম্বার আরজাম আলী আমাদের বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি দিতে থাকে। তাদের কাছে আমরা টাকা ফেরত চাইলে সাবিল তার খালাতো ভাই আরজাম মেম্বারকে সাথে নিয়ে বলে তোদের একটাকাও দেব না, পারলে কিছু করে নিস তোদের যে টাকা দেব সেই টাকা আমি পুলিশকে দিয়ে ম্যানেজ করে নেব। আর বেশি কথা বললে তোদের বাড়িতে ফেন্সিডিল রেখে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেব।
এ ব্যাপারে সাবিলের সাথে কথা বললে তিনি বলেন আমরা তাদের সাথে কোন প্রতারণা করিনি, তাদের যে কাজ দেওয়ার কথা ছিল, সেই কাজ দিয়েছি। এখন তারা যদি কাজ না পারে তাহলে আমাদের তো কিছু করার নেই। আমরা গ্রামে প্রায় ১৫ জনকে বিদেশে পাঠিয়েছি তারা কোন দিন অভিযোগ করেনি আর এরা কাজ না পেরে চলে এসেছে এখন আমার উপর দোশারোপ করছে। তারা যে টাকা ফেরত চাচ্ছে, সেই টাকা আমি কি ভাবে দেব? আমি লোক পাঠানোর জন্য জনপ্রতি ৫০ হাজার টাকা পেতাম, আর বাকি টাকা অন্যপাটি নিত।
এ ব্যাপারে ওয়ার্ড মেম্বার আরজাম আলীর সাথে কথা বলার জন্য গেলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি। পরবর্তীতে তিনি বলেন, আমি এই আদম ব্যবসার সাথে জড়িত নয়। সাবিল আমার আত্বীয় ঠিক আছে, কিন্তু আমি কারও নিকট থেকে টাকা গ্রহন করেনি যারা আমার বিরুদ্ধে বলেছে তারা সম্পন্ন মিথ্যা বলেছে।
এ ব্যাপারে জীবননগর থানার এসআই আব্দুল হাইয়ের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, বিদেশে পাঠানোর নাম করে যাদের সাথে প্রতারণা করেছে তারা থানায় একটি অভিযোগ করায় আমি গত মঙ্গলবার হরিহরনগর গ্রামে গিয়েছিলাম। তবে তারা কোটে মামলা করেছে।