ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

জালনোটের দৌরাত্ম্য : অপরাধ দমনে চাই আরও কড়া আইন

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৪২:৪০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭
  • / ৪১৪ বার পড়া হয়েছে

জালনোট দেশের অর্থনীতির জন্য বিসংবাদ ডেকে আনছে। জালনোটের কারণে বাংলাদেশের বিপুলসংখ্যক নাগরিক ভারত সফরকালে বিপাকে পড়ছে। ভারত সফরকালে সীমান্ত এলাকা থেকে ভারতীয় রুপি কিনে সে রুপি ব্যবহার করতে গিয়ে জড়িয়ে পড়ছে আইনি ঝামেলায়। দেশের অর্থনীতির জন্য প্রত্যক্ষ হুমকি হিসেবে বিবেচিত হওয়ার পরও জালনোট চক্রের সদস্যদের সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। গ্রেফতারের পরও তারা কীভাবে পার পায় তাও একটি বড় মাপের প্রশ্ন। আইনের ফাঁক দিয়ে এ অপরাধের সঙ্গে যুক্তরা বার বার গ্রেফতারের পরও বেরিয়ে আসছে। আবারও তারা যুক্ত হচ্ছে জালনোটের ব্যবসায়। এদেরই একজন লিয়াকত আলী। তিনি তার ঘরে বসিয়েছিলেন ভারতীয় জাল রুপি তৈরির টাঁকশাল। প্রতি মাসে ৫০-৬০ লাখ রুপি তৈরি করে তা বাজারে ছেড়ে মাসিক আয় হতো দেড় থেকে দুই লাখ টাকা। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে এভাবেই রুপি তৈরি করে আসছিলেন এই জালিয়াত। জাল রুপি তৈরি করতে গিয়ে বেশ কয়েকবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেফতারও হন তিনি। সর্বশেষ বুধবার রাতে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা উত্তরপাড়ার একটি বাড়ি থেকে লিয়াকতকে গ্রেফতার করেন র‌্যাব সদস্যরা। এসময় তার কাছ থেকে ভারতীয় ১০ লাখ জাল রুপিসহ রুপি তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। জালনোট তৈরিকারী চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয়। কিন্তু মামলার দুর্বলতায় জালিয়াতরা সহজেই জামিন পেয়ে যায়। পুলিশ এ ব্যাপারে যাদের সাক্ষী করে প্রায়শই তাদের খোঁজ পাওয়া যায় না। ফলে মামলার নিষ্পত্তি অসম্ভব হয়ে পড়ে। জালনোট ব্যবসায়ীদের অর্থনৈতিক সামর্থ্যের কারণে তাদের জামিন দেওয়ার জন্য আইনি তৎপরতা চালাতে আইনজীবীদের কেউ কেউ মুখিয়ে থাকেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে উচ্চ আদালতে তারা জামিন পায় আইনের ফাঁক গলিয়ে। স্মর্তব্য, জালনোট ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে মৃত্যুদ-ের বিধান ছিল। ১৯৮৭ সালে তা রহিত করে যাবজ্জীবন কারাদ- করা হয়। মৃত্যুদ-ের পুনঃপ্রবর্তন না হোক, এ অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের জামিন অযোগ্য করে যাবজ্জীবন কারাদ-, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ও আর্থিক জরিমানা সংবলিত নতুন আইন প্রণয়নের বিষয়টি প্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে। সরকার বিষয়টি ভেবে দেখলেই ভালো করবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

জালনোটের দৌরাত্ম্য : অপরাধ দমনে চাই আরও কড়া আইন

আপলোড টাইম : ০৯:৪২:৪০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭

জালনোট দেশের অর্থনীতির জন্য বিসংবাদ ডেকে আনছে। জালনোটের কারণে বাংলাদেশের বিপুলসংখ্যক নাগরিক ভারত সফরকালে বিপাকে পড়ছে। ভারত সফরকালে সীমান্ত এলাকা থেকে ভারতীয় রুপি কিনে সে রুপি ব্যবহার করতে গিয়ে জড়িয়ে পড়ছে আইনি ঝামেলায়। দেশের অর্থনীতির জন্য প্রত্যক্ষ হুমকি হিসেবে বিবেচিত হওয়ার পরও জালনোট চক্রের সদস্যদের সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। গ্রেফতারের পরও তারা কীভাবে পার পায় তাও একটি বড় মাপের প্রশ্ন। আইনের ফাঁক দিয়ে এ অপরাধের সঙ্গে যুক্তরা বার বার গ্রেফতারের পরও বেরিয়ে আসছে। আবারও তারা যুক্ত হচ্ছে জালনোটের ব্যবসায়। এদেরই একজন লিয়াকত আলী। তিনি তার ঘরে বসিয়েছিলেন ভারতীয় জাল রুপি তৈরির টাঁকশাল। প্রতি মাসে ৫০-৬০ লাখ রুপি তৈরি করে তা বাজারে ছেড়ে মাসিক আয় হতো দেড় থেকে দুই লাখ টাকা। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে এভাবেই রুপি তৈরি করে আসছিলেন এই জালিয়াত। জাল রুপি তৈরি করতে গিয়ে বেশ কয়েকবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেফতারও হন তিনি। সর্বশেষ বুধবার রাতে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা উত্তরপাড়ার একটি বাড়ি থেকে লিয়াকতকে গ্রেফতার করেন র‌্যাব সদস্যরা। এসময় তার কাছ থেকে ভারতীয় ১০ লাখ জাল রুপিসহ রুপি তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। জালনোট তৈরিকারী চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয়। কিন্তু মামলার দুর্বলতায় জালিয়াতরা সহজেই জামিন পেয়ে যায়। পুলিশ এ ব্যাপারে যাদের সাক্ষী করে প্রায়শই তাদের খোঁজ পাওয়া যায় না। ফলে মামলার নিষ্পত্তি অসম্ভব হয়ে পড়ে। জালনোট ব্যবসায়ীদের অর্থনৈতিক সামর্থ্যের কারণে তাদের জামিন দেওয়ার জন্য আইনি তৎপরতা চালাতে আইনজীবীদের কেউ কেউ মুখিয়ে থাকেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে উচ্চ আদালতে তারা জামিন পায় আইনের ফাঁক গলিয়ে। স্মর্তব্য, জালনোট ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে মৃত্যুদ-ের বিধান ছিল। ১৯৮৭ সালে তা রহিত করে যাবজ্জীবন কারাদ- করা হয়। মৃত্যুদ-ের পুনঃপ্রবর্তন না হোক, এ অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের জামিন অযোগ্য করে যাবজ্জীবন কারাদ-, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ও আর্থিক জরিমানা সংবলিত নতুন আইন প্রণয়নের বিষয়টি প্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে। সরকার বিষয়টি ভেবে দেখলেই ভালো করবে।