ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

জান্নাতের পথ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৫৩:৪৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২০
  • / ১৬৯ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম প্রতিবেদন
সিরিয়া থেকে দুজন ইহুদি পন্ডিত রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে এসে উপস্থিত হলেন। তাঁরা তাঁকে দেখা মাত্রই তওরাতে বর্ণিত আখেরি নবীর গুণাবলি তাঁদের সামনে ভেসে ওঠে। জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কি মুহাম্মদ? নবীজি বললেন, হ্যাঁ, আমি মুহাম্মদ, আমি আহমদ। চেহারায় ভক্তির ছাপ নিয়ে আবারও জিজ্ঞাসা করলেন, আমরা আপনাকে কিছু প্রশ্ন করতে চাই, যদি আপনি সঠিক জবাব দিতে পারেন তাহলে আমরা আপনার ওপর ইমান আনব। নবীজি অনুমতি দিলেন।
তাঁরা বললেন, কিতাবুল্লাহর মাঝে সবচেয়ে বড় শাহাদাত কোনটি? অমনি আসমান থেকে ওহি নাজিল হলো। নবীজি সেই নাজিলকৃত আয়াত শুনিয়ে দিলেন, শাহিদাল্লাহু আন্নাহু লা ইলাহা ইল্লা হুওয়া ওয়াল মালা ইকাতু ওয়া উলুল ইল্মি কা ইমাম বিলকিস্তি লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল আজিজুল হাকিম’ সূরা আলে ইমরান। নবীজির জবানে এ আয়াত শুনে তাঁরা মুসলমান হয়ে গেলেন। মুফাসসিররা তাঁদের কিতাবের পাদটীকায় লিখেন, ‘এ আয়াত নাজিল করার ২ হাজার বছর আগে আল্লাহ মানুষের রিজিক সৃষ্টি করেছেন, এর আরও ২ হাজার বছর আগে আল্লাহ নিজেই নিজের সম্পর্কে সাক্ষ্য দিচ্ছেন, এ আয়াত তিলাওয়াত করার মাধ্যমে। বলছেন, (উল্লিখিত আয়াতের বঙ্গানুবাদ) ইবাদতের উপযুক্ত আল্লাহ্ ছাড়া আর কোনো মাবুদ নেই। ফেরেশতারাও সাক্ষ্য দিচ্ছেন এবং ন্যায়নিষ্ঠ জ্ঞানীরাও সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, আল্লাহ ছাড়া ইবাদতের উপযুক্ত আর কেউ নেই। তিনি পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলছেন, এ আয়াত তিলাওয়াতকারীকে কিয়ামতের দিন আল্লাহর সামনে উপস্থিত করা হবে, তখন আল্লাহ বলবেন, এই বান্দার ব্যাপারে আমার একটি অঙ্গীকার রয়েছে এবং আমি সে অঙ্গীকার পূরণ করার বেশি উপযুক্ত। এজন্য এই বান্দাকে আজ আমি জান্নাত দান করালাম।’ তাফসিরে কামালাইন।
সাইদ ইবনে জুবাইর থেকে বর্ণিত, খানায়ে কাবার মধ্যে ৩৬০টি মূর্তি ছিল, কিন্তু যখন এ আয়াত মদিনায় নাজিল হলো তখন সব মূর্তির মস্তক অবনত হয়ে গেল। সূরা আলে ইমরানের এ আয়াতের মধ্যে আল্লাহ তিনটি নিয়ামতের কথা উল্লেখ করেছেন। এক. সবচেয়ে ছোট দরজার নিয়ামত হলো দুনিয়ায় ইজ্জত, সুখ-শান্তি। দ্বিতীয়. মধ্যম দরজার নিয়ামত হলো জান্নাত।
তৃতীয়. সর্বোচ্চ দরজার নিয়ামত হলো মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি। আল্লাহর সন্তুষ্টি সবচেয়ে বড় নিয়ামত, এর কারণ হলো, জান্নাতিরা জান্নাতে যাওয়ার পর অফুরন্ত নিয়ামত পাওয়ার পরও কিঞ্চিত আশঙ্কা থেকে যাবে যে, এই সীমাহীন অফুরন্ত নিয়ামত চিরস্থায়ী কিনা। কিন্তু যখন আল্লাহতায়ালা জান্নাতবাসীদের জিজ্ঞাসা করবেন, তোমাদের আরও কিছু প্রয়োজন আছে কি? জান্নাতিরা সবাই একসঙ্গে বলে উঠবে, হে আমাদের মহান প্রভু! এত কিছু পাওয়ার পরও আমাদের আরও কি কিছু প্রয়োজন আছে! সবচেয়ে বড় নিয়ামতের ব্যাপারে তখন মহান আল্লাহ জান্নাতবাসীদের বলবেন, আজ আমি তোমাদের আমার সন্তুষ্টি দান করলাম। আর কখনো অসন্তুষ্টি হব না। জান্নাতবাসীরা আনন্দে খুশিতে শুকরিয়া জ্ঞাপনের পর সেই মনের কিঞ্চিত আশঙ্কা দূর হয়ে যাবে। এবার জান্নাতিরা নিশ্চিত তারা চিরস্থায়ী জান্নাতি। আর কখনো নিয়ামত ছিনিয়ে নেওয়া হবে না।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

জান্নাতের পথ

আপলোড টাইম : ০৮:৫৩:৪৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২০

ধর্ম প্রতিবেদন
সিরিয়া থেকে দুজন ইহুদি পন্ডিত রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে এসে উপস্থিত হলেন। তাঁরা তাঁকে দেখা মাত্রই তওরাতে বর্ণিত আখেরি নবীর গুণাবলি তাঁদের সামনে ভেসে ওঠে। জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কি মুহাম্মদ? নবীজি বললেন, হ্যাঁ, আমি মুহাম্মদ, আমি আহমদ। চেহারায় ভক্তির ছাপ নিয়ে আবারও জিজ্ঞাসা করলেন, আমরা আপনাকে কিছু প্রশ্ন করতে চাই, যদি আপনি সঠিক জবাব দিতে পারেন তাহলে আমরা আপনার ওপর ইমান আনব। নবীজি অনুমতি দিলেন।
তাঁরা বললেন, কিতাবুল্লাহর মাঝে সবচেয়ে বড় শাহাদাত কোনটি? অমনি আসমান থেকে ওহি নাজিল হলো। নবীজি সেই নাজিলকৃত আয়াত শুনিয়ে দিলেন, শাহিদাল্লাহু আন্নাহু লা ইলাহা ইল্লা হুওয়া ওয়াল মালা ইকাতু ওয়া উলুল ইল্মি কা ইমাম বিলকিস্তি লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল আজিজুল হাকিম’ সূরা আলে ইমরান। নবীজির জবানে এ আয়াত শুনে তাঁরা মুসলমান হয়ে গেলেন। মুফাসসিররা তাঁদের কিতাবের পাদটীকায় লিখেন, ‘এ আয়াত নাজিল করার ২ হাজার বছর আগে আল্লাহ মানুষের রিজিক সৃষ্টি করেছেন, এর আরও ২ হাজার বছর আগে আল্লাহ নিজেই নিজের সম্পর্কে সাক্ষ্য দিচ্ছেন, এ আয়াত তিলাওয়াত করার মাধ্যমে। বলছেন, (উল্লিখিত আয়াতের বঙ্গানুবাদ) ইবাদতের উপযুক্ত আল্লাহ্ ছাড়া আর কোনো মাবুদ নেই। ফেরেশতারাও সাক্ষ্য দিচ্ছেন এবং ন্যায়নিষ্ঠ জ্ঞানীরাও সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, আল্লাহ ছাড়া ইবাদতের উপযুক্ত আর কেউ নেই। তিনি পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলছেন, এ আয়াত তিলাওয়াতকারীকে কিয়ামতের দিন আল্লাহর সামনে উপস্থিত করা হবে, তখন আল্লাহ বলবেন, এই বান্দার ব্যাপারে আমার একটি অঙ্গীকার রয়েছে এবং আমি সে অঙ্গীকার পূরণ করার বেশি উপযুক্ত। এজন্য এই বান্দাকে আজ আমি জান্নাত দান করালাম।’ তাফসিরে কামালাইন।
সাইদ ইবনে জুবাইর থেকে বর্ণিত, খানায়ে কাবার মধ্যে ৩৬০টি মূর্তি ছিল, কিন্তু যখন এ আয়াত মদিনায় নাজিল হলো তখন সব মূর্তির মস্তক অবনত হয়ে গেল। সূরা আলে ইমরানের এ আয়াতের মধ্যে আল্লাহ তিনটি নিয়ামতের কথা উল্লেখ করেছেন। এক. সবচেয়ে ছোট দরজার নিয়ামত হলো দুনিয়ায় ইজ্জত, সুখ-শান্তি। দ্বিতীয়. মধ্যম দরজার নিয়ামত হলো জান্নাত।
তৃতীয়. সর্বোচ্চ দরজার নিয়ামত হলো মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি। আল্লাহর সন্তুষ্টি সবচেয়ে বড় নিয়ামত, এর কারণ হলো, জান্নাতিরা জান্নাতে যাওয়ার পর অফুরন্ত নিয়ামত পাওয়ার পরও কিঞ্চিত আশঙ্কা থেকে যাবে যে, এই সীমাহীন অফুরন্ত নিয়ামত চিরস্থায়ী কিনা। কিন্তু যখন আল্লাহতায়ালা জান্নাতবাসীদের জিজ্ঞাসা করবেন, তোমাদের আরও কিছু প্রয়োজন আছে কি? জান্নাতিরা সবাই একসঙ্গে বলে উঠবে, হে আমাদের মহান প্রভু! এত কিছু পাওয়ার পরও আমাদের আরও কি কিছু প্রয়োজন আছে! সবচেয়ে বড় নিয়ামতের ব্যাপারে তখন মহান আল্লাহ জান্নাতবাসীদের বলবেন, আজ আমি তোমাদের আমার সন্তুষ্টি দান করলাম। আর কখনো অসন্তুষ্টি হব না। জান্নাতবাসীরা আনন্দে খুশিতে শুকরিয়া জ্ঞাপনের পর সেই মনের কিঞ্চিত আশঙ্কা দূর হয়ে যাবে। এবার জান্নাতিরা নিশ্চিত তারা চিরস্থায়ী জান্নাতি। আর কখনো নিয়ামত ছিনিয়ে নেওয়া হবে না।