ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

জাতীয় গ্রীড ও উৎপাদন কেন্দ্র সংস্কারের কারণে বিদ্যুত ঘাটতি : চাহিদার অর্ধেক বিদ্যুতেই গ্রাহকসেবা! : চুয়াডাঙ্গায় ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ বিদ্যুত গ্রাহকেরা : রোববার নাগাদ বিদ্যুত সরবরাহ স্বাভাবিক ও লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে আসার সম্ভাবনা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৫:২৭:০৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ মে ২০১৭
  • / ৩৮১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গায় অসহনীয় লোডশেডিংয়ে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। এমনিতেই চুয়াডাঙ্গায় ভু-প্রকৃতিগত কারণে শীতে সর্বনিম্ন ও গ্রীস্মে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড রয়েছে। এ অবস্থায় চরম বিদ্যুত ঘাটতির মুখে পড়ছে চুয়াডাঙ্গা। চাহিদার তুলনায় অর্ধেক বিদ্যুতও পাচ্ছে না বিদ্যুত বিতরণ বিভাগ। ফলে জেলার সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যেও পর্যাপ্ত বিদ্যুত সরবরাহ করতে পারছে তারা। কিশোরগঞ্জের ভৈরবে জাতীয় গ্রীডের একটি বৈদ্যুতিক টাওয়ার ভেঙে এবং সিরাজগঞ্জ ও রাজশাহীতে বৈদ্যুতিক গ্রীডের সমস্যা এবং বেশকয়েকটি উৎপাদন কেন্দ্রে একইসাথে সংস্কার কাজ চলমান থাকায় চুয়াডাঙ্গায় এই বিদ্যুত ঘাটতি দেখা দিয়েছে। জাতীয় গ্রীডের বিদ্যুত সমস্যা সমাধান হলেই চাহিদা অনুযায়ি সরবরাহ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী চুয়াডাঙ্গা বিদ্যুত বিতরণ বিভাগ। প্রতিবছর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকে চুয়াডাঙ্গা জেলায়। গতবছর অধিকাংশ সময়ই ৩৮ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায়। সে হিসেবে এখনকার বিদ্যুত ব্যবস্থা একেবারেই গতানুগতিক। চলতি গরম মৌসুমে এখানে সবোর্চ্চ তাপমাত্রা ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং প্রতিদিনই প্রায় ঝড়বৃষ্টি হবার কারণে গড় তাপমাত্রা ৩৪ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস অব্যাহত রয়েছে।
ওজোপাডিকো সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গায় বিদ্যুতের চাহিদা ২১ মেগাওয়াট। তার মধ্যে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের ৫টি ফিডারে ১২ মেগাওয়াট, আলমডাঙ্গায় সাড়ে ৩ মেগাওয়াট এবং মেহেরপুরে সাড়ে ৫ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে চাহিদার তুলনায় বিদ্যুত প্রাপ্তির হার একেবারেই নগন্য। ২১ মেগাওয়াটের বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৯ থেকে ১২ মেগাওয়াট বিদ্যুত। কোন কোন সময় ১৩/১৪ মেগাওয়াট বিদ্যুত পাওয়া গেলেও ৮/৯ মেগাওয়াট বিদ্যুত প্রাপ্তিরও রেকর্ড রয়েছে। গড়ে মাত্র ১২ মেগাওয়াট বিদ্যুত চুয়াডাঙ্গা শহরসহ মেহেরপুর ও আলমডাঙ্গায় সরবরাহ করা হচ্ছে। স্বল্প মেগাওয়াট বিদ্যুত সবকটি এলাকায় সরবরাহ করতে বেশিরভাগ এলাকায় লোডশেডিং রাখা হচ্ছে। ফলে বিদ্যুত ঘাটতির কারণে লোডশেডিং তীব্র আকার ধারণ করেছে।
ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড চুয়াডাঙ্গার ভৌগলিক এলাকার মধ্যে রয়েছে পৌর এলাকার মসজিদপাড়া, বাগানপাড়া, ইসলামপাড়া, জ্বিনতলাপাড়া, পৌর কলেজপাড়া, তালতলা, হাজরাহাটি, ভিমরুল্লা, হাটকালুগঞ্জ, কেদারগঞ্জ, পলাশপাড়া, গুলশানপাড়া, কোর্টপাড়া, কলেজ রোড, মুক্তিপাড়া, আরামপাড়া, বড় বাজারপাড়া, রেলপাড়া, নূরনগর, সাতগাড়ী, বেলগাছী, দিগড়ী, ওয়াবদাপাড়া, বুজরুকগড়গড়ি, সুমিরদিয়া। পৌর এলাকার বাইরে আছে দৌলতদিয়াড়, উজিরপুর, সরোজগঞ্জ, বদরগঞ্জ, ডিঙ্গেদহ বাজার। সর্বমোট ১০২ বর্গ কিলোমিটার ভৌগলিক আয়তনের মধ্যে হাসপাতাল, কলেজ, বড়বাজার, হাজরাহাটি, বিডিআর নামের ৫টি ১১ কিলোভোল্টের ফিডার আছে। তার আওতায় মধ্যচাপের ২৫টি, সেচপাম্পের ১৪২টি, ক্ষুদ্রশিল্প ৪২৫টি, আবাসিক ২৪ হাজার ২৫৫টি, বানিজ্যিক ৪ হাজার ৫২টি এবং অন্যান্য ২৬৪টি গ্রাহকসহ মোট ২৯ হাজার ১৬৩টি বিদ্যুত গ্রাহক রয়েছে। ২৯ হাজার ১৬৩টি গ্রাহকের বিদ্যুতের চাহিদা ১২ মেগাওয়াট। বিদ্যুত ঘাটতির কারণে এই গ্রাহকদের মধ্যে সরবরাহ করা হচ্ছে মাত্র ৫/৭ মেগাওয়াট বিদ্যুত। যার কারণে চুয়াডাঙ্গায় লোডশেডিং সমস্যা প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা বিদ্যুত বিতরণ বিভাগের স্যুইচ বোর্ড অ্যাটেইন্ডেন্ট (এসবিএ) এসএম ওবাইদুল্লাহ জানান, বর্তমানে মানুষের প্রতিদিনই বিদ্যুতের বহুবিধ চাহিদা বাড়ছে। অধিকাংশ বাড়িতেই বিদ্যুতের সাহায্যে রান্না-বাড়াসহ সকল প্রকার কাজ করা হচ্ছে। দিনে দিনে বাড়ছে বিদ্যুতের চাহিদা। সেই তুলনায় যে বিদ্যুত পাওয়া যাচ্ছে তা বিতরণ করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হচ্ছে তাদের। সে ক্ষেত্রে স্বল্প বিদ্যুত সরবরাহ করতে গিয়ে নানা সমস্যার সম্মুখিন হতে হচ্ছে। ভৌগলিক আয়তনে তুলনামূলক বড় একটি ফিডারে বিদ্যুত দিতে গেলে অন্তত দুইটি অন্য ছোট আয়তনের ফিডার বন্ধ রাখতে হচ্ছে। পশ্চিমাঞ্চল বিদ্যুত বিতরণ কোম্পানি লিমিটেড চুয়াডাঙ্গার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সবুক্ত গীন জানান, চুয়াডাঙ্গায় বিদ্যুত ঘাটতির কারণে লোডশেডিং দেখা দিয়েছে। চাহিদা অনুযায়ি ২১ মেগাওয়াটের বিপরীতে প্রাপ্ত ১০/১২ মেগাওয়াট বিদ্যুত সবকটি এলাকায় সরবরাহ করতে হচ্ছে। কিশোরগঞ্জের ভৈরবে একটি জাতীয় গ্রীডের বৈদ্যুতিক টাওয়ার ভেঙে পড়ায় বিদ্যুতের ঘাটতি প্রকটভাবে দেখা দিয়েছে। এছাড়া, সিরাজগঞ্জ ও রাজশাহীতেও বিদ্যুতিক সমস্যার কারণে বিদ্যুত ঘাটতিতে পড়েছে। বিদ্যুতিক লাইনে ভোল্টেজ আপ-ডাউনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরও বলে, চুয়াডাঙ্গায় যে মেশিন আছে তাতে সর্বোচ্চ ভোল্টেজ দেয়া আছে। ভোল্টেজ আপ-ডাউনের সমস্যাটি গ্রিড থেকে হয়ে আসে। ফলে চুয়াডাঙ্গা থেকে এ সমস্যা নিরসন সম্ভব নয়। এবিষয়ে ওজোপাডিকো’র প্রধান কার্যালয়ের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবু হাসান জানান, সারাদেশে বেশকয়েকটি বিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্রের একযোগে সংস্কার কাজ চলমান থাকায় সরবরাহ ঘাটতির কারণে এই বিদ্যুত সঙ্কটের সৃষ্টি হয়েছে। আগামী রোববার নাগাদ বিদ্যুত সরবরাহ স্বাভাবিক ও লোডশেডিং সহনীয় মাত্রায় আসবে বলে জানান তিনি। একটি বৈদ্যুতিক লাইনে ত্রুটি থাকায় বিদ্যুত ঘাটতির মুখে পড়েছে চুয়াডাঙ্গা। বর্তমানে যে লাইনে বিদ্যুত সরবরাহ করা হচ্ছে ওই লাইনটি ক্ষতিগ্রস্থ হলে চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুর অন্ধকার হয়ে যাবে। ভৈরবের টাওয়ারটি দ্রুত মেরামতসহ যেন অপর লাইনটি অকেজো হয়ে না পড়ে সেদিকে লক্ষ রেখে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় গ্রাহকরা।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

জাতীয় গ্রীড ও উৎপাদন কেন্দ্র সংস্কারের কারণে বিদ্যুত ঘাটতি : চাহিদার অর্ধেক বিদ্যুতেই গ্রাহকসেবা! : চুয়াডাঙ্গায় ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ বিদ্যুত গ্রাহকেরা : রোববার নাগাদ বিদ্যুত সরবরাহ স্বাভাবিক ও লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে আসার সম্ভাবনা

আপলোড টাইম : ০৫:২৭:০৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ মে ২০১৭

নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গায় অসহনীয় লোডশেডিংয়ে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। এমনিতেই চুয়াডাঙ্গায় ভু-প্রকৃতিগত কারণে শীতে সর্বনিম্ন ও গ্রীস্মে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড রয়েছে। এ অবস্থায় চরম বিদ্যুত ঘাটতির মুখে পড়ছে চুয়াডাঙ্গা। চাহিদার তুলনায় অর্ধেক বিদ্যুতও পাচ্ছে না বিদ্যুত বিতরণ বিভাগ। ফলে জেলার সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যেও পর্যাপ্ত বিদ্যুত সরবরাহ করতে পারছে তারা। কিশোরগঞ্জের ভৈরবে জাতীয় গ্রীডের একটি বৈদ্যুতিক টাওয়ার ভেঙে এবং সিরাজগঞ্জ ও রাজশাহীতে বৈদ্যুতিক গ্রীডের সমস্যা এবং বেশকয়েকটি উৎপাদন কেন্দ্রে একইসাথে সংস্কার কাজ চলমান থাকায় চুয়াডাঙ্গায় এই বিদ্যুত ঘাটতি দেখা দিয়েছে। জাতীয় গ্রীডের বিদ্যুত সমস্যা সমাধান হলেই চাহিদা অনুযায়ি সরবরাহ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী চুয়াডাঙ্গা বিদ্যুত বিতরণ বিভাগ। প্রতিবছর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকে চুয়াডাঙ্গা জেলায়। গতবছর অধিকাংশ সময়ই ৩৮ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায়। সে হিসেবে এখনকার বিদ্যুত ব্যবস্থা একেবারেই গতানুগতিক। চলতি গরম মৌসুমে এখানে সবোর্চ্চ তাপমাত্রা ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং প্রতিদিনই প্রায় ঝড়বৃষ্টি হবার কারণে গড় তাপমাত্রা ৩৪ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস অব্যাহত রয়েছে।
ওজোপাডিকো সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গায় বিদ্যুতের চাহিদা ২১ মেগাওয়াট। তার মধ্যে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের ৫টি ফিডারে ১২ মেগাওয়াট, আলমডাঙ্গায় সাড়ে ৩ মেগাওয়াট এবং মেহেরপুরে সাড়ে ৫ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে চাহিদার তুলনায় বিদ্যুত প্রাপ্তির হার একেবারেই নগন্য। ২১ মেগাওয়াটের বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৯ থেকে ১২ মেগাওয়াট বিদ্যুত। কোন কোন সময় ১৩/১৪ মেগাওয়াট বিদ্যুত পাওয়া গেলেও ৮/৯ মেগাওয়াট বিদ্যুত প্রাপ্তিরও রেকর্ড রয়েছে। গড়ে মাত্র ১২ মেগাওয়াট বিদ্যুত চুয়াডাঙ্গা শহরসহ মেহেরপুর ও আলমডাঙ্গায় সরবরাহ করা হচ্ছে। স্বল্প মেগাওয়াট বিদ্যুত সবকটি এলাকায় সরবরাহ করতে বেশিরভাগ এলাকায় লোডশেডিং রাখা হচ্ছে। ফলে বিদ্যুত ঘাটতির কারণে লোডশেডিং তীব্র আকার ধারণ করেছে।
ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড চুয়াডাঙ্গার ভৌগলিক এলাকার মধ্যে রয়েছে পৌর এলাকার মসজিদপাড়া, বাগানপাড়া, ইসলামপাড়া, জ্বিনতলাপাড়া, পৌর কলেজপাড়া, তালতলা, হাজরাহাটি, ভিমরুল্লা, হাটকালুগঞ্জ, কেদারগঞ্জ, পলাশপাড়া, গুলশানপাড়া, কোর্টপাড়া, কলেজ রোড, মুক্তিপাড়া, আরামপাড়া, বড় বাজারপাড়া, রেলপাড়া, নূরনগর, সাতগাড়ী, বেলগাছী, দিগড়ী, ওয়াবদাপাড়া, বুজরুকগড়গড়ি, সুমিরদিয়া। পৌর এলাকার বাইরে আছে দৌলতদিয়াড়, উজিরপুর, সরোজগঞ্জ, বদরগঞ্জ, ডিঙ্গেদহ বাজার। সর্বমোট ১০২ বর্গ কিলোমিটার ভৌগলিক আয়তনের মধ্যে হাসপাতাল, কলেজ, বড়বাজার, হাজরাহাটি, বিডিআর নামের ৫টি ১১ কিলোভোল্টের ফিডার আছে। তার আওতায় মধ্যচাপের ২৫টি, সেচপাম্পের ১৪২টি, ক্ষুদ্রশিল্প ৪২৫টি, আবাসিক ২৪ হাজার ২৫৫টি, বানিজ্যিক ৪ হাজার ৫২টি এবং অন্যান্য ২৬৪টি গ্রাহকসহ মোট ২৯ হাজার ১৬৩টি বিদ্যুত গ্রাহক রয়েছে। ২৯ হাজার ১৬৩টি গ্রাহকের বিদ্যুতের চাহিদা ১২ মেগাওয়াট। বিদ্যুত ঘাটতির কারণে এই গ্রাহকদের মধ্যে সরবরাহ করা হচ্ছে মাত্র ৫/৭ মেগাওয়াট বিদ্যুত। যার কারণে চুয়াডাঙ্গায় লোডশেডিং সমস্যা প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা বিদ্যুত বিতরণ বিভাগের স্যুইচ বোর্ড অ্যাটেইন্ডেন্ট (এসবিএ) এসএম ওবাইদুল্লাহ জানান, বর্তমানে মানুষের প্রতিদিনই বিদ্যুতের বহুবিধ চাহিদা বাড়ছে। অধিকাংশ বাড়িতেই বিদ্যুতের সাহায্যে রান্না-বাড়াসহ সকল প্রকার কাজ করা হচ্ছে। দিনে দিনে বাড়ছে বিদ্যুতের চাহিদা। সেই তুলনায় যে বিদ্যুত পাওয়া যাচ্ছে তা বিতরণ করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হচ্ছে তাদের। সে ক্ষেত্রে স্বল্প বিদ্যুত সরবরাহ করতে গিয়ে নানা সমস্যার সম্মুখিন হতে হচ্ছে। ভৌগলিক আয়তনে তুলনামূলক বড় একটি ফিডারে বিদ্যুত দিতে গেলে অন্তত দুইটি অন্য ছোট আয়তনের ফিডার বন্ধ রাখতে হচ্ছে। পশ্চিমাঞ্চল বিদ্যুত বিতরণ কোম্পানি লিমিটেড চুয়াডাঙ্গার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সবুক্ত গীন জানান, চুয়াডাঙ্গায় বিদ্যুত ঘাটতির কারণে লোডশেডিং দেখা দিয়েছে। চাহিদা অনুযায়ি ২১ মেগাওয়াটের বিপরীতে প্রাপ্ত ১০/১২ মেগাওয়াট বিদ্যুত সবকটি এলাকায় সরবরাহ করতে হচ্ছে। কিশোরগঞ্জের ভৈরবে একটি জাতীয় গ্রীডের বৈদ্যুতিক টাওয়ার ভেঙে পড়ায় বিদ্যুতের ঘাটতি প্রকটভাবে দেখা দিয়েছে। এছাড়া, সিরাজগঞ্জ ও রাজশাহীতেও বিদ্যুতিক সমস্যার কারণে বিদ্যুত ঘাটতিতে পড়েছে। বিদ্যুতিক লাইনে ভোল্টেজ আপ-ডাউনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরও বলে, চুয়াডাঙ্গায় যে মেশিন আছে তাতে সর্বোচ্চ ভোল্টেজ দেয়া আছে। ভোল্টেজ আপ-ডাউনের সমস্যাটি গ্রিড থেকে হয়ে আসে। ফলে চুয়াডাঙ্গা থেকে এ সমস্যা নিরসন সম্ভব নয়। এবিষয়ে ওজোপাডিকো’র প্রধান কার্যালয়ের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবু হাসান জানান, সারাদেশে বেশকয়েকটি বিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্রের একযোগে সংস্কার কাজ চলমান থাকায় সরবরাহ ঘাটতির কারণে এই বিদ্যুত সঙ্কটের সৃষ্টি হয়েছে। আগামী রোববার নাগাদ বিদ্যুত সরবরাহ স্বাভাবিক ও লোডশেডিং সহনীয় মাত্রায় আসবে বলে জানান তিনি। একটি বৈদ্যুতিক লাইনে ত্রুটি থাকায় বিদ্যুত ঘাটতির মুখে পড়েছে চুয়াডাঙ্গা। বর্তমানে যে লাইনে বিদ্যুত সরবরাহ করা হচ্ছে ওই লাইনটি ক্ষতিগ্রস্থ হলে চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুর অন্ধকার হয়ে যাবে। ভৈরবের টাওয়ারটি দ্রুত মেরামতসহ যেন অপর লাইনটি অকেজো হয়ে না পড়ে সেদিকে লক্ষ রেখে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় গ্রাহকরা।