ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

জমেছে পশুর হাট : খামারি রক্ষায় উদ্যোগ নিন

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:১৭:৪১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অগাস্ট ২০১৮
  • / ৩০৩ বার পড়া হয়েছে

পবিত্র ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদের আর মাত্র সাত দিন বাকি। এরই মধ্যে সারা দেশে জমে উঠছে গবাদি পশুর হাট-বাজার। কোনো কোনো হাটে পশু নিয়ে আসা শুরু হয়েছে। এবার সবচেয়ে ভালো সংবাদটি হচ্ছে, দেশেই চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত গবাদি পশু উৎপাদিত হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এবার গবাদি পশুর চাহিদা রয়েছে এক কোটি চার লাখ, উৎপাদিত পশুর সংখ্যা এক কোটি ১৬ লাখ। অর্থাৎ চাহিদার চেয়ে ১২ লাখ পশু অতিরিক্ত উৎপাদন হয়েছে। এরপরও সীমান্ত দিয়ে চোরাচালান হয়ে অনেক পশু আসছে। পথে পথে চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করা গেলে এ বছর কোরবানির পশুর দাম সহনীয় পর্যায়ে থাকবে বলেই আশা করা হচ্ছে। বাংলাদেশে এ বছর ব্যাপকভাবে গবাদি পশু উৎপাদিত হয়েছে। দেশের প্রায় প্রতিটি গ্রামে গড়ে উঠেছে পশুর খামার। যার যার সাধ্যমতো সেখানে পশু পালন করা হয়েছে। এই ধারাটি শুধু কোরবানি নয়, সারা বছরের মাংসের চাহিদা পূরণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। অর্থনীতিতেও এর ভূমিকা হবে সুদূরপ্রসারী। বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর লাখো কোটি টাকার ওপর বাইরে চলে যায় পশু চোরাচালানের মাধ্যমে। এ থেকে রক্ষা পাবে দেশের অর্থনীতি। তাই পশু পালনের এই ধারাকে সর্বতোভাবে সহায়তা করা প্রয়োজন। পশুখাদ্যের অত্যাধিক দামের মধ্যেও যারা এসব খামার চালিয়ে এসেছে, সামান্য লাভ না পেলে তারা নিরুৎসাহ হবে এবং সেটা হবে দেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এ জন্য চোরাচালান হয়ে পশু আসা বন্ধ করতে হবে। সীমান্তে কঠোর নজরদারি থাকতে হবে। পথে ও হাটে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। আগের বছরগুলোর তুলনায় গত দুই বছর চাঁদাবাজির অভিযোগ কিছুটা কম থাকলেও চাঁদাবাজি ছিল। এবার যেন তা-ও না থাকে সে জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর তৎপরতা আরো বাড়াতে হবে। বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত টোল আদায়ের যেসব অভিযোগ পাওয়া যায়, তা-ও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তা না হলে কৃষক বা খামারিরা লোকসানের মুখে পড়বে এবং পশু পালনে নিরুৎসাহ হবে। প্রতিবছরই এ সময়ে দেশব্যাপী জাল টাকা, অজ্ঞান পার্টি, ছিনতাইকারীচক্রের দৌরাত্ম্য বেড়ে যেতে দেখা যায়। এতেও ক্রেতা-বিক্রেতাদের পাশাপাশি অনেক খামারি সর্বস্বান্ত হয়ে যায়। এদিকেও বিশেষ নজর দিতে হবে। পাশাপাশি পশু পালন ও খামার ব্যবস্থাপনাকে কিছুটা আধুনিক করা গেলে এবং গোখাদ্য সহজলভ্য হলে এসব খামারির মাধ্যমে মাংস ও দুগ্ধ উৎপাদনে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারবে বলেই মনে করেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। সরকার বিষয়টি জরুরি ভিত্তিতে বিবেচনা করতে পারে। ঈদুল আজহা মুসলমানদের প্রধান দুটি ধর্মীয় উৎসবের একটি। এই উৎসব যেন যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য নিয়ে উদ্যাপিত হয় সে জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি থাকতে হবে। কিছু অসাধু ব্যক্তি অধিক লাভের আশায় কৃত্রিমভাবে ক্ষতিকর উপাদান দিয়ে পশু মোটাতাজা করে। তেমন কোনো পশু যেন কোনো হাটে ঢুকতে না পারে সেদিকে কড়া নজরদারি রাখতে হবে। আমরা চাই, কোরবানির ঈদ নির্বিঘœ হোক, আনন্দময় হোক।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

জমেছে পশুর হাট : খামারি রক্ষায় উদ্যোগ নিন

আপলোড টাইম : ০৯:১৭:৪১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অগাস্ট ২০১৮

পবিত্র ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদের আর মাত্র সাত দিন বাকি। এরই মধ্যে সারা দেশে জমে উঠছে গবাদি পশুর হাট-বাজার। কোনো কোনো হাটে পশু নিয়ে আসা শুরু হয়েছে। এবার সবচেয়ে ভালো সংবাদটি হচ্ছে, দেশেই চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত গবাদি পশু উৎপাদিত হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এবার গবাদি পশুর চাহিদা রয়েছে এক কোটি চার লাখ, উৎপাদিত পশুর সংখ্যা এক কোটি ১৬ লাখ। অর্থাৎ চাহিদার চেয়ে ১২ লাখ পশু অতিরিক্ত উৎপাদন হয়েছে। এরপরও সীমান্ত দিয়ে চোরাচালান হয়ে অনেক পশু আসছে। পথে পথে চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করা গেলে এ বছর কোরবানির পশুর দাম সহনীয় পর্যায়ে থাকবে বলেই আশা করা হচ্ছে। বাংলাদেশে এ বছর ব্যাপকভাবে গবাদি পশু উৎপাদিত হয়েছে। দেশের প্রায় প্রতিটি গ্রামে গড়ে উঠেছে পশুর খামার। যার যার সাধ্যমতো সেখানে পশু পালন করা হয়েছে। এই ধারাটি শুধু কোরবানি নয়, সারা বছরের মাংসের চাহিদা পূরণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। অর্থনীতিতেও এর ভূমিকা হবে সুদূরপ্রসারী। বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর লাখো কোটি টাকার ওপর বাইরে চলে যায় পশু চোরাচালানের মাধ্যমে। এ থেকে রক্ষা পাবে দেশের অর্থনীতি। তাই পশু পালনের এই ধারাকে সর্বতোভাবে সহায়তা করা প্রয়োজন। পশুখাদ্যের অত্যাধিক দামের মধ্যেও যারা এসব খামার চালিয়ে এসেছে, সামান্য লাভ না পেলে তারা নিরুৎসাহ হবে এবং সেটা হবে দেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এ জন্য চোরাচালান হয়ে পশু আসা বন্ধ করতে হবে। সীমান্তে কঠোর নজরদারি থাকতে হবে। পথে ও হাটে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। আগের বছরগুলোর তুলনায় গত দুই বছর চাঁদাবাজির অভিযোগ কিছুটা কম থাকলেও চাঁদাবাজি ছিল। এবার যেন তা-ও না থাকে সে জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর তৎপরতা আরো বাড়াতে হবে। বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত টোল আদায়ের যেসব অভিযোগ পাওয়া যায়, তা-ও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তা না হলে কৃষক বা খামারিরা লোকসানের মুখে পড়বে এবং পশু পালনে নিরুৎসাহ হবে। প্রতিবছরই এ সময়ে দেশব্যাপী জাল টাকা, অজ্ঞান পার্টি, ছিনতাইকারীচক্রের দৌরাত্ম্য বেড়ে যেতে দেখা যায়। এতেও ক্রেতা-বিক্রেতাদের পাশাপাশি অনেক খামারি সর্বস্বান্ত হয়ে যায়। এদিকেও বিশেষ নজর দিতে হবে। পাশাপাশি পশু পালন ও খামার ব্যবস্থাপনাকে কিছুটা আধুনিক করা গেলে এবং গোখাদ্য সহজলভ্য হলে এসব খামারির মাধ্যমে মাংস ও দুগ্ধ উৎপাদনে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারবে বলেই মনে করেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। সরকার বিষয়টি জরুরি ভিত্তিতে বিবেচনা করতে পারে। ঈদুল আজহা মুসলমানদের প্রধান দুটি ধর্মীয় উৎসবের একটি। এই উৎসব যেন যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য নিয়ে উদ্যাপিত হয় সে জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি থাকতে হবে। কিছু অসাধু ব্যক্তি অধিক লাভের আশায় কৃত্রিমভাবে ক্ষতিকর উপাদান দিয়ে পশু মোটাতাজা করে। তেমন কোনো পশু যেন কোনো হাটে ঢুকতে না পারে সেদিকে কড়া নজরদারি রাখতে হবে। আমরা চাই, কোরবানির ঈদ নির্বিঘœ হোক, আনন্দময় হোক।