ইপেপার । আজমঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গা সদরের দোস্ত গ্রামের মাদ্রাসা পাড়ায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে পূর্ব শক্রতার জের : মায়ের লাশ সামনে রেখেই দুই ভাইয়ের মারামারি : চাচা-ভাতিজাসহ আহত-৩

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৪:১৮:০৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ জুলাই ২০১৭
  • / ৫৪০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা সদরের দোস্ত গ্রামের মাদ্রাসা পাড়ায় জমিজমা সংক্রান্ত পূর্ব শক্রতার জের ও দু’ভাই এর মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধে মারামারিরর ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সন্ধ্যায় এ ঘটনার সূত্রপাত হয়।
জানা যায়, মাদ্রাসাপাড়ার মৃত নুরুল হক মৌলভীর স্ত্রী আয়েশা বেগম (৭৫) বার্ধক্যজনিত কারণে ইন্তেকাল করেন। খবর পেয়ে মরহুমার ছেলে আব্দুল হান্নান মাকে দেখতে আসে। এ সময় তুচ্ছ কথায় ছোট ভাই আব্দুল মান্নানের সাথে কথা কাটা কাটি হয় বড় ভাই হান্নানের। এক পর্যায়ে মায়ের লাশ রেখেই দু’ভাই এর মধ্যে হাতাহাতির সূত্রপাত হলে তাদের দু’জনকে ঠেকাতে এসে মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে আমিনুল ইসলামের স্ত্রী শাহানা খাতুন (২৪) ও আব্দুল মান্নানের ছেলে মমিনুল ইসলাম (২২)। মারামারিতে আহত হান্নান, শাহানা ও মমিনুলকে রাতেই সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দোস্ত গ্রামের মাদ্রাসাপাড়ার মৃত নুরুল হক মৌলভী অনেকদিন আগেই মারা গেছেন। রেখে গেছেন ৫ ছেলে আর ৩০বিঘা জমি। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তাদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। গতকাল তাদের মা আয়েশা বেগম মারা যাওয়ায় সকলে একত্রিত হয়। তবে সেজোভাই আ.হান্নানের সাথে ন’ভাই আ.মান্নানের বিরোধটা একটু বেশিই ছিল। দফায় দফায় উভয়ের পরিবারের হামলা আর মামলার খেলা চলে আসছে অনেদিন ধরেই। সকল ঘটনার মূলে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ। কেউ বলে জমি আমার আর ‘ও’ জোর কওে দখল করে রেখেছে। আরেকজন বলে আমার দলিল আছে জমি কী করে ‘ও’র হয়। বুধবার সন্ধ্যায় এই শক্রতা নিয়েই মনে মনে জেদ ছিল হান্নান ও মান্নানের। তাই তুচ্ছ ঘটনায় উত্তেজিত হয়ে মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে তারা।
আহত আ.হান্নান বলেন, আমার মা মারা যাওয়ার খবর পেয়ে আমি তাকে দেখতে যায়। এ সময় আমার ছোট ভাই মান্নান আমার উপর চড়াও হয়। পরে তার পরিবারের লোকজন মিলে আমাকে পিটিয়ে জখম করে। তবে জমিজমা সংক্রান্ত পূর্ব শক্রতার কথা স্বীকার করে আ.হান্নান জানান, জমিজমা নিয়ে তাদের সাথে আমাদের দীর্ঘদিনের বিবাদ রয়েছে। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে মারামারি হয়েছে। আমি তাদের নামে ৪টি মামলা করেছি। বিপরীতে তারা আমার নামে ৭টা মামলা করেছে। আজকের এ ঘটনাও আমি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবো।
আহত শাহানা খাতুন বলেন, আমার দাদিশাশুড়ি দীর্ঘদিন যাবত অসুস্থ আছে। বুধবার সন্ধ্যায় তিনি মারা যান। আমি তার পাশে কোরআন শরিফ ও দোয়া-দরূদ পড়ছিলাম। এ সময় আমার চাচাশ্বশুর(আ.হান্নান) এসে আমাকে উঠতে বলে। বলে সে কোরআন শরিফ পড়বে। আরও বলে তোরা আমার মাকে মেরে ফেলেছিস। এ নিয়ে তার সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আমাকে চড়-থাপ্পড় আর কিলঘুষি মারতে থাকে। আমাকে ঠেকাতে আসলে আমার দেবর মমিনুলকেও মারধর করে।
এদিকে উভয়ের পরিবারের মধ্যে বিরোধ আজ নতুন নয়, চলছে দীর্ঘদিন ধরেই। এসব নিয়েই চলে আসছে হামলা-মামলা খেলা। এ ব্যাপার নিয়েও উভয় পরিবারের লোকজন মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে। কিন্তু মায়ের লাশ সামনে রেখে তার দাফনকার্য নিয়ে চিন্তা না করে দুই ভাইয়ের মারামারিতে জড়িয়ে পড়ার ঘটনায় অনেকে অবাক হয়েছেন। এখনও মায়ের লাশ দাফন নিয়ে নির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ফলে এলাকাজুড়ে চলছে নিন্দার ঝড়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

চুয়াডাঙ্গা সদরের দোস্ত গ্রামের মাদ্রাসা পাড়ায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে পূর্ব শক্রতার জের : মায়ের লাশ সামনে রেখেই দুই ভাইয়ের মারামারি : চাচা-ভাতিজাসহ আহত-৩

আপলোড টাইম : ০৪:১৮:০৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ জুলাই ২০১৭

নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা সদরের দোস্ত গ্রামের মাদ্রাসা পাড়ায় জমিজমা সংক্রান্ত পূর্ব শক্রতার জের ও দু’ভাই এর মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধে মারামারিরর ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সন্ধ্যায় এ ঘটনার সূত্রপাত হয়।
জানা যায়, মাদ্রাসাপাড়ার মৃত নুরুল হক মৌলভীর স্ত্রী আয়েশা বেগম (৭৫) বার্ধক্যজনিত কারণে ইন্তেকাল করেন। খবর পেয়ে মরহুমার ছেলে আব্দুল হান্নান মাকে দেখতে আসে। এ সময় তুচ্ছ কথায় ছোট ভাই আব্দুল মান্নানের সাথে কথা কাটা কাটি হয় বড় ভাই হান্নানের। এক পর্যায়ে মায়ের লাশ রেখেই দু’ভাই এর মধ্যে হাতাহাতির সূত্রপাত হলে তাদের দু’জনকে ঠেকাতে এসে মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে আমিনুল ইসলামের স্ত্রী শাহানা খাতুন (২৪) ও আব্দুল মান্নানের ছেলে মমিনুল ইসলাম (২২)। মারামারিতে আহত হান্নান, শাহানা ও মমিনুলকে রাতেই সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দোস্ত গ্রামের মাদ্রাসাপাড়ার মৃত নুরুল হক মৌলভী অনেকদিন আগেই মারা গেছেন। রেখে গেছেন ৫ ছেলে আর ৩০বিঘা জমি। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তাদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। গতকাল তাদের মা আয়েশা বেগম মারা যাওয়ায় সকলে একত্রিত হয়। তবে সেজোভাই আ.হান্নানের সাথে ন’ভাই আ.মান্নানের বিরোধটা একটু বেশিই ছিল। দফায় দফায় উভয়ের পরিবারের হামলা আর মামলার খেলা চলে আসছে অনেদিন ধরেই। সকল ঘটনার মূলে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ। কেউ বলে জমি আমার আর ‘ও’ জোর কওে দখল করে রেখেছে। আরেকজন বলে আমার দলিল আছে জমি কী করে ‘ও’র হয়। বুধবার সন্ধ্যায় এই শক্রতা নিয়েই মনে মনে জেদ ছিল হান্নান ও মান্নানের। তাই তুচ্ছ ঘটনায় উত্তেজিত হয়ে মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে তারা।
আহত আ.হান্নান বলেন, আমার মা মারা যাওয়ার খবর পেয়ে আমি তাকে দেখতে যায়। এ সময় আমার ছোট ভাই মান্নান আমার উপর চড়াও হয়। পরে তার পরিবারের লোকজন মিলে আমাকে পিটিয়ে জখম করে। তবে জমিজমা সংক্রান্ত পূর্ব শক্রতার কথা স্বীকার করে আ.হান্নান জানান, জমিজমা নিয়ে তাদের সাথে আমাদের দীর্ঘদিনের বিবাদ রয়েছে। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে মারামারি হয়েছে। আমি তাদের নামে ৪টি মামলা করেছি। বিপরীতে তারা আমার নামে ৭টা মামলা করেছে। আজকের এ ঘটনাও আমি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবো।
আহত শাহানা খাতুন বলেন, আমার দাদিশাশুড়ি দীর্ঘদিন যাবত অসুস্থ আছে। বুধবার সন্ধ্যায় তিনি মারা যান। আমি তার পাশে কোরআন শরিফ ও দোয়া-দরূদ পড়ছিলাম। এ সময় আমার চাচাশ্বশুর(আ.হান্নান) এসে আমাকে উঠতে বলে। বলে সে কোরআন শরিফ পড়বে। আরও বলে তোরা আমার মাকে মেরে ফেলেছিস। এ নিয়ে তার সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আমাকে চড়-থাপ্পড় আর কিলঘুষি মারতে থাকে। আমাকে ঠেকাতে আসলে আমার দেবর মমিনুলকেও মারধর করে।
এদিকে উভয়ের পরিবারের মধ্যে বিরোধ আজ নতুন নয়, চলছে দীর্ঘদিন ধরেই। এসব নিয়েই চলে আসছে হামলা-মামলা খেলা। এ ব্যাপার নিয়েও উভয় পরিবারের লোকজন মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে। কিন্তু মায়ের লাশ সামনে রেখে তার দাফনকার্য নিয়ে চিন্তা না করে দুই ভাইয়ের মারামারিতে জড়িয়ে পড়ার ঘটনায় অনেকে অবাক হয়েছেন। এখনও মায়ের লাশ দাফন নিয়ে নির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ফলে এলাকাজুড়ে চলছে নিন্দার ঝড়।