ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গা শহরের বিভিন্ন সড়কের আশপাশে যত্রতত্র ট্রাক পার্কিং : পথচারিদের দুর্ভোগ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৩২:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৯ ডিসেম্বর ২০১৭
  • / ৩১০ বার পড়া হয়েছে

দীর্ঘ তিন বছর একই স্থানে সড়ক জুড়ে পড়ে আছে একটি ট্রাক

নিজস্ব প্রতিবেদক: একদিন দু’দিন নয়, দীর্ঘ তিন বছর ধরে শহরের প্রধান সড়কের পাশেই রয়েছে একটি ট্রাকটি। চুয়াডাঙ্গা শহরের একাডেমি মোড় সংলগ্ন হক ফিলিং ষ্টেশনের সামনে রাস্তা জুড়ে পড়ে আছে ওই ট্রাকটি। শুধু ওই একটি ট্রাকই নয়, তদারকি না থাকায় দিন দিন শহরের বিভিন্ন সড়কের আশপাশে এমনকি সড়কের অর্ধেক যায়গা জুড়েও ট্রাক রাখার প্রবনতা বেড়েই চলেছে। একইসাথে প্রধান সড়কের যেখানে সেখানে রাখা হচ্ছে ইট ও বালুসহ বিভিন্ন সামগ্রী। তার সাথে খানাখন্দে ভরা চলাচলের অনুপযোগী সড়কতো রয়েছেই। এতে একদিকে পথচারিদের চলাচলে যেমন সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে, তেমনই ঘটছে ছোটবড় দুর্ঘটনা। রাস্তার উপর ট্রাক রাখতে জনগণ বাধা দিলেও ট্রাকের মালিক ও চালকরা কাউকে তোয়াক্কা করছে না। আবার ট্রাফিক পুলিশ রাস্তার উপর রেখে দেয়া এসব ট্রাক, ইট ও বালুর বিয়য়ে কোন ব্যবস্থা নেয় না বলেও অবিযোগ রয়েছে। অথচ শহরের প্রবেশ মুখে প্রতিদিনই তারা গাড়ি চেকিংয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে।
চুয়াডাঙ্গা শহরের প্রধান কয়েকটি সমস্যরা মধ্যে সড়কের বেহাল দশা অন্যতম। ১৯৭৩ সালে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর এমন ভাঙ্গাচোরা রাস্তা পৌরবাসী কখনও দেখেনি। এর উপর ফ্রি স্টাইলে রাস্তার উপর পার্কিং করে রাখা হচ্ছে বাস, ট্রাক। নতুন করে যোগ হয়েছে ইট, বালু ও কাঠ রাখার প্রবণতা। এতে সড়কে চলাচলকারী পথচারীসহ বিভিন্ন যানবাহন চালকদের পড়তে হচ্ছে সীমাহীন দূর্ভোগে।
শহরের বাসটার্মিনাল থেকে দৌলাতদিয়াড় বাস টার্মিনালের দূরত্ব ৩ কিলোমিটার। প্রধান সড়কের দুই ধারে রাখা হচ্ছে ট্রাকগুলো। এতে রাস্তা এতোটাই সরু হয়ে যাচ্ছে অপর একটি গাড়ী যাওয়ার সুযোগ থাকছেনা। যার কারনে সাধারন মানুষের চলাচলের ব্যাঘাত ঘটছে। বাড়ছে ছোট খাট দূর্ঘটনা। শহরের বাসটার্মিনাল, রেলবাজার, একাডেমির মোড়, বড়বাজার, কোর্ট মোড় ও দৌলতদিয়াড় এলাকায় এমনিতেই যানবাহনের চাপ একটু বেশি। আর এসকল স্থানে ট্রাকের চালকরা রাস্তার উপর ট্রাক রেখে দিয়ে ধোয়া মোছাসহ গাড়ী মেরামতের কাজ করে। সন্ধ্যার পর ট্রাক রাখার পার্কিং আরো দীর্ঘ হয়।
রেলবাজার থেকে একাডেমি মোড় পর্যন্ত অলিখিত ট্রাক টার্মিনালে পরিণত হয়েছে। সব সময় এ এলাকায় রাস্তার উপর ৩০-৪০টি ট্রাক দাড় করিয়ে রাখা হয়। এদের মধ্যে হক ফিলিং ষ্টেশনের সামনে একটি ট্রাক ৩-৪ বছর ধরে ফেলে রাখা হয়েছে। নড়াচড়া না করায় ট্রাকের নিচে জন্মেছে ঘাষ। ট্রাকের দরজায় লেখা আছে মুন্সি মটরস। ট্রাক নং চুয়াডাঙ্গা ট-০২-০০৬৮। এ ব্যাপারে হক ফিলিং ষ্টেশনের সহকারি ম্যানেজার আশাবুল হক জানান, ট্রাকটি কয়েক বছর ধরে রেখে দেয়া হয়েছে। এ ট্রাকটি রেখে দেওয়ার কারনে অন্য ট্রাক ড্রাইভাররা এর সামনে অনায়াসে গাড়ি এনে রেখে দেয়। ইদানিং চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব থেকে জান্নাতুল মওলা গোরস্থান সংলগ্ন রাস্তার উপর ইট, বালু, কাঠ রাখার প্রতিযোগিতা চলছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলার চার উপজেলায় ট্রাকের সংখ্যা প্রায় ২ হাজার। এরমধ্যে ১০ চাকা বিশিষ্ট ৫শ ট্রাক দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলাচল করে থাকে। এদিকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও রাস্তার উপর গাড়ি পার্কিং বন্ধ করার জন্য কয়েকমাস আগে জেলা প্রশাসন থেকে উদ্যোগ নেয়া হয়। তবে তা আজও বাস্তবায়ন করা হয়নি।
এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র ওবাইদুর রহমান চৌধুরী জিপু যত্রতত্র ট্রাক পার্র্কিং ও ধোঁয়া মোছার কথা স্বীকার করে বলেন, ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসন, চালক ও মালিকদের সাথে বৈঠক করা হয়েছে। অতি সত্বর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

চুয়াডাঙ্গা শহরের বিভিন্ন সড়কের আশপাশে যত্রতত্র ট্রাক পার্কিং : পথচারিদের দুর্ভোগ

আপলোড টাইম : ১০:৩২:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৯ ডিসেম্বর ২০১৭

দীর্ঘ তিন বছর একই স্থানে সড়ক জুড়ে পড়ে আছে একটি ট্রাক

নিজস্ব প্রতিবেদক: একদিন দু’দিন নয়, দীর্ঘ তিন বছর ধরে শহরের প্রধান সড়কের পাশেই রয়েছে একটি ট্রাকটি। চুয়াডাঙ্গা শহরের একাডেমি মোড় সংলগ্ন হক ফিলিং ষ্টেশনের সামনে রাস্তা জুড়ে পড়ে আছে ওই ট্রাকটি। শুধু ওই একটি ট্রাকই নয়, তদারকি না থাকায় দিন দিন শহরের বিভিন্ন সড়কের আশপাশে এমনকি সড়কের অর্ধেক যায়গা জুড়েও ট্রাক রাখার প্রবনতা বেড়েই চলেছে। একইসাথে প্রধান সড়কের যেখানে সেখানে রাখা হচ্ছে ইট ও বালুসহ বিভিন্ন সামগ্রী। তার সাথে খানাখন্দে ভরা চলাচলের অনুপযোগী সড়কতো রয়েছেই। এতে একদিকে পথচারিদের চলাচলে যেমন সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে, তেমনই ঘটছে ছোটবড় দুর্ঘটনা। রাস্তার উপর ট্রাক রাখতে জনগণ বাধা দিলেও ট্রাকের মালিক ও চালকরা কাউকে তোয়াক্কা করছে না। আবার ট্রাফিক পুলিশ রাস্তার উপর রেখে দেয়া এসব ট্রাক, ইট ও বালুর বিয়য়ে কোন ব্যবস্থা নেয় না বলেও অবিযোগ রয়েছে। অথচ শহরের প্রবেশ মুখে প্রতিদিনই তারা গাড়ি চেকিংয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে।
চুয়াডাঙ্গা শহরের প্রধান কয়েকটি সমস্যরা মধ্যে সড়কের বেহাল দশা অন্যতম। ১৯৭৩ সালে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর এমন ভাঙ্গাচোরা রাস্তা পৌরবাসী কখনও দেখেনি। এর উপর ফ্রি স্টাইলে রাস্তার উপর পার্কিং করে রাখা হচ্ছে বাস, ট্রাক। নতুন করে যোগ হয়েছে ইট, বালু ও কাঠ রাখার প্রবণতা। এতে সড়কে চলাচলকারী পথচারীসহ বিভিন্ন যানবাহন চালকদের পড়তে হচ্ছে সীমাহীন দূর্ভোগে।
শহরের বাসটার্মিনাল থেকে দৌলাতদিয়াড় বাস টার্মিনালের দূরত্ব ৩ কিলোমিটার। প্রধান সড়কের দুই ধারে রাখা হচ্ছে ট্রাকগুলো। এতে রাস্তা এতোটাই সরু হয়ে যাচ্ছে অপর একটি গাড়ী যাওয়ার সুযোগ থাকছেনা। যার কারনে সাধারন মানুষের চলাচলের ব্যাঘাত ঘটছে। বাড়ছে ছোট খাট দূর্ঘটনা। শহরের বাসটার্মিনাল, রেলবাজার, একাডেমির মোড়, বড়বাজার, কোর্ট মোড় ও দৌলতদিয়াড় এলাকায় এমনিতেই যানবাহনের চাপ একটু বেশি। আর এসকল স্থানে ট্রাকের চালকরা রাস্তার উপর ট্রাক রেখে দিয়ে ধোয়া মোছাসহ গাড়ী মেরামতের কাজ করে। সন্ধ্যার পর ট্রাক রাখার পার্কিং আরো দীর্ঘ হয়।
রেলবাজার থেকে একাডেমি মোড় পর্যন্ত অলিখিত ট্রাক টার্মিনালে পরিণত হয়েছে। সব সময় এ এলাকায় রাস্তার উপর ৩০-৪০টি ট্রাক দাড় করিয়ে রাখা হয়। এদের মধ্যে হক ফিলিং ষ্টেশনের সামনে একটি ট্রাক ৩-৪ বছর ধরে ফেলে রাখা হয়েছে। নড়াচড়া না করায় ট্রাকের নিচে জন্মেছে ঘাষ। ট্রাকের দরজায় লেখা আছে মুন্সি মটরস। ট্রাক নং চুয়াডাঙ্গা ট-০২-০০৬৮। এ ব্যাপারে হক ফিলিং ষ্টেশনের সহকারি ম্যানেজার আশাবুল হক জানান, ট্রাকটি কয়েক বছর ধরে রেখে দেয়া হয়েছে। এ ট্রাকটি রেখে দেওয়ার কারনে অন্য ট্রাক ড্রাইভাররা এর সামনে অনায়াসে গাড়ি এনে রেখে দেয়। ইদানিং চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব থেকে জান্নাতুল মওলা গোরস্থান সংলগ্ন রাস্তার উপর ইট, বালু, কাঠ রাখার প্রতিযোগিতা চলছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলার চার উপজেলায় ট্রাকের সংখ্যা প্রায় ২ হাজার। এরমধ্যে ১০ চাকা বিশিষ্ট ৫শ ট্রাক দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলাচল করে থাকে। এদিকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও রাস্তার উপর গাড়ি পার্কিং বন্ধ করার জন্য কয়েকমাস আগে জেলা প্রশাসন থেকে উদ্যোগ নেয়া হয়। তবে তা আজও বাস্তবায়ন করা হয়নি।
এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র ওবাইদুর রহমান চৌধুরী জিপু যত্রতত্র ট্রাক পার্র্কিং ও ধোঁয়া মোছার কথা স্বীকার করে বলেন, ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসন, চালক ও মালিকদের সাথে বৈঠক করা হয়েছে। অতি সত্বর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।