ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহে আরও ১৩ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:০৬:৩৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ অগাস্ট ২০১৯
  • / ২১৭ বার পড়া হয়েছে

এক মাসে সারা দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ১৫ হাজারের অধিক, ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি ১৪৭৭ ও মৃত্যু ৪ জনের
সমীকরণ প্রতিবেদন:
রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীর চাপ বেড়েই চলেছে। অন্যান্য রোগীর পাশাপাশি ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তিদের চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক, নার্সসহ সংশ্লিষ্টরা। গত মঙ্গলবার ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে পাঁচজনের মৃত্যুর পর গতকাল বুধবারও চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আক্রান্তদের মধ্যে পুলিশের এক নারী উপপরির্শক (এসআই) রয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী ইতিমধ্যে দেশের ৬৪ জেলাতেই ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৪৭৭ জন। এ পর্যন্ত ভর্তি হয়েছেন ১৭ হাজার ১৮৩ জন। এর মধ্যে জুলাই মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৪ হাজার ৯৯৬ জন। এ দিকে চুয়াডাঙ্গায় দুই, মেহেরপুরে ছয় ও ঝিনাইদহে আরও পাঁচ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। তাঁদের সবাইকে ইতিমধ্যে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা:


চুয়াডাঙ্গায় আরও দুজন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করেছে সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গতকাল বুধবার দুপুরে জ্বরে আক্রান্ত ওই দুই রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এলে চিকিৎসকেরা জানান, তাঁরা ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত। আক্রান্ত রোগীরা হলেন হালিমা বেগম (৩৫) ও জুলেখা (২১)।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জ স্কুলপাড়ার শরিফুল ইসলামের স্ত্রী হালিমা বেগম গত শনিবার থেকে জ্বরে আক্রান্ত হন। জ্বরের ওষুধ সেবন করেও জ্বর না কমায় গতকাল পরিবারের সদস্যরা তাঁকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা যায়, তিনি ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত। এ ছাড়াও জুলেখা নামের অপর এক নারী দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার বাড্ডাতে থাকা অবস্থায় জ্বরে আক্রান্ত হন। জ্বর না কমায় চুয়াডাঙ্গায় নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন তিনি। গতকাল বুধবার হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করলে তাঁর শরীরে ডেঙ্গু ভাইরাস শনাক্ত হয়। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত জুলেখা চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গাইদঘাট বিশ্বাসপাড়ার শেখ ফরিদের স্ত্রী। চাকরি সূত্রে স্বামী শেখ ফরিদের সঙ্গে তিনি ঢাকাতে থাকেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত সরোজগঞ্জের হালিমা বেগম বাড়ি ফিরে গেলেও সদর হাসপাতালের ডেঙ্গু জোনে চিকিৎসাধীন আছেন গাইদঘাটের জুলেখা।
মেহেরপুর:


ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল ও গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছয়জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। গত মঙ্গলবার দুজন এবং বাকিরা গতকাল বুধবার সকালে ভর্তি হয়েছেন। ডেঙ্গু আক্রান্তরা হলেন মেহেরপুর শহরের কোর্টপাড়ার মান্নান মিয়ার ছেলে উৎস, তিনি ঢাকাতে লেখাপড়া করেন। মুজিবনগর উপজেলার সোনাপুর গ্রামের সামছুদ্দিনের ছেলে হৃদয় খান, তিনি ঢাকার মহাখালিতে চাকরি করেন। গাংনী উপজেলার কাথুলী গ্রামের জিন্নাত আলীর মেয়ে জান্নাতুল, তিনি এইচএসসি পাস করে ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং করছিলেন। আক্রান্ত এ তিনজন মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
অপরদিকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন গাংনী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়পাড়ার হোসেন আলীর স্ত্রী আম্বিয়া খাতুন, চৌগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাছিমা খাতুন এবং ধানখোলা ইউনিয়নের ২ নম্বর সংরক্ষিত মহিলা সদস্য সুফিয়া খাতুন। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসার সুবিধার্থে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে পৃথক একটি আইসোলেশন ওয়ার্ড (ডেঙ্গু জোন) তৈরি করা হয়েছে। গাংনীতে একটি কেবিনে ওই তিন রোগীকে রাখা হয়েছে।
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ইউপি সদস্য সুফিয়া খাতুন বলেন, কয়েক দিন আগে তিনি ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে একটি রোগী দেখতে গিয়ে সেখানে রাত কাটিয়েছিলেন। সে দিন থেকেই তিনি জ্বরে ভুগছেন। বাড়ি এসে জ্বর ভালো না হওয়ায় গতকাল বুধবার সকালে একটি ক্লিনিকে পরীক্ষা করার পর ডেঙ্গু জ্বর শনাক্ত হলে হাসপাতালে ভর্তি হন। এ ছাড়া প্রধান শিক্ষক নাছিমা খাতুন ও গৃহবধূ আম্বিয়া খাতুন দীর্ঘদিন ধরে গাংনীতে অবস্থান করছেন। ফলে গাংনীতে ডেঙ্গুর জীবাণু রয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ দিকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক আলোচনা সভা করেছে মেহেরপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। গতকাল বুধবার দুপুরে মেহেরপুরের গণমাধ্যমকর্মী ও বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সিভিল সার্জন ডা. শামীম আরা নাজনিনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক মো. আতাউল গনি। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. তাহাজ্জেল হোসেন, পৌর মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম, জেলা বিএমএ-এর সভাপতি ডা. রমেশ চন্দ্র নাথ, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলোক কুমার দাস প্রমুখ।
এ সময় জেলা প্রশাসক বলেন, ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সবাই মিলে একসঙ্গে এর প্রতিরোধে কাজ করতে হবে। নিজ নিজ বাড়ির আঙ্গিনা পরিষ্কার রাখতে হবে। বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্নভাবে জনসচেতনা বৃদ্ধি করতে হবে।
সিভিল সার্জন শামীম আরা নাজনিন বলেন, ডেঙ্গু রোগ শনাক্ত করার কীট খুব দ্রুত মেহেরপুরে এসে পৌঁছাবে। ‘আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী ডেঙ্গুতে আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। আতঙ্কিত না হয়ে সবার মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।’
ঝিনাইদহ:
ঝিনাইদহে ২৪ ঘণ্টায় আরও ৫ ডেঙ্গু রোগীর সন্ধান মিলেছে। এ নিয়ে ঝিনাইদহে মোট ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ২৬ জন। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের পরিসংখ্যান কর্মকর্তা আব্দুল কাদের খবরের সত্যতা নিশ্চত করে জানান, প্রতি ২৪ ঘণ্টায় (মঙ্গল থেকে বুধবার বিকেল পর্যন্ত) হাসপাতালে ৫ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন, তাঁরা এখন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আইয়ুব আলী জানান, জেলায় গত ২৪ দিনে ২৬ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রন্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। তিনি ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবাইকে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহে আরও ১৩ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত

আপলোড টাইম : ১০:০৬:৩৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ অগাস্ট ২০১৯

এক মাসে সারা দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ১৫ হাজারের অধিক, ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি ১৪৭৭ ও মৃত্যু ৪ জনের
সমীকরণ প্রতিবেদন:
রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীর চাপ বেড়েই চলেছে। অন্যান্য রোগীর পাশাপাশি ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তিদের চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক, নার্সসহ সংশ্লিষ্টরা। গত মঙ্গলবার ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে পাঁচজনের মৃত্যুর পর গতকাল বুধবারও চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আক্রান্তদের মধ্যে পুলিশের এক নারী উপপরির্শক (এসআই) রয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী ইতিমধ্যে দেশের ৬৪ জেলাতেই ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৪৭৭ জন। এ পর্যন্ত ভর্তি হয়েছেন ১৭ হাজার ১৮৩ জন। এর মধ্যে জুলাই মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৪ হাজার ৯৯৬ জন। এ দিকে চুয়াডাঙ্গায় দুই, মেহেরপুরে ছয় ও ঝিনাইদহে আরও পাঁচ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। তাঁদের সবাইকে ইতিমধ্যে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা:


চুয়াডাঙ্গায় আরও দুজন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করেছে সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গতকাল বুধবার দুপুরে জ্বরে আক্রান্ত ওই দুই রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এলে চিকিৎসকেরা জানান, তাঁরা ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত। আক্রান্ত রোগীরা হলেন হালিমা বেগম (৩৫) ও জুলেখা (২১)।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জ স্কুলপাড়ার শরিফুল ইসলামের স্ত্রী হালিমা বেগম গত শনিবার থেকে জ্বরে আক্রান্ত হন। জ্বরের ওষুধ সেবন করেও জ্বর না কমায় গতকাল পরিবারের সদস্যরা তাঁকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা যায়, তিনি ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত। এ ছাড়াও জুলেখা নামের অপর এক নারী দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার বাড্ডাতে থাকা অবস্থায় জ্বরে আক্রান্ত হন। জ্বর না কমায় চুয়াডাঙ্গায় নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন তিনি। গতকাল বুধবার হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করলে তাঁর শরীরে ডেঙ্গু ভাইরাস শনাক্ত হয়। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত জুলেখা চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গাইদঘাট বিশ্বাসপাড়ার শেখ ফরিদের স্ত্রী। চাকরি সূত্রে স্বামী শেখ ফরিদের সঙ্গে তিনি ঢাকাতে থাকেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত সরোজগঞ্জের হালিমা বেগম বাড়ি ফিরে গেলেও সদর হাসপাতালের ডেঙ্গু জোনে চিকিৎসাধীন আছেন গাইদঘাটের জুলেখা।
মেহেরপুর:


ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল ও গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছয়জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। গত মঙ্গলবার দুজন এবং বাকিরা গতকাল বুধবার সকালে ভর্তি হয়েছেন। ডেঙ্গু আক্রান্তরা হলেন মেহেরপুর শহরের কোর্টপাড়ার মান্নান মিয়ার ছেলে উৎস, তিনি ঢাকাতে লেখাপড়া করেন। মুজিবনগর উপজেলার সোনাপুর গ্রামের সামছুদ্দিনের ছেলে হৃদয় খান, তিনি ঢাকার মহাখালিতে চাকরি করেন। গাংনী উপজেলার কাথুলী গ্রামের জিন্নাত আলীর মেয়ে জান্নাতুল, তিনি এইচএসসি পাস করে ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং করছিলেন। আক্রান্ত এ তিনজন মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
অপরদিকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন গাংনী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়পাড়ার হোসেন আলীর স্ত্রী আম্বিয়া খাতুন, চৌগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাছিমা খাতুন এবং ধানখোলা ইউনিয়নের ২ নম্বর সংরক্ষিত মহিলা সদস্য সুফিয়া খাতুন। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসার সুবিধার্থে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে পৃথক একটি আইসোলেশন ওয়ার্ড (ডেঙ্গু জোন) তৈরি করা হয়েছে। গাংনীতে একটি কেবিনে ওই তিন রোগীকে রাখা হয়েছে।
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ইউপি সদস্য সুফিয়া খাতুন বলেন, কয়েক দিন আগে তিনি ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে একটি রোগী দেখতে গিয়ে সেখানে রাত কাটিয়েছিলেন। সে দিন থেকেই তিনি জ্বরে ভুগছেন। বাড়ি এসে জ্বর ভালো না হওয়ায় গতকাল বুধবার সকালে একটি ক্লিনিকে পরীক্ষা করার পর ডেঙ্গু জ্বর শনাক্ত হলে হাসপাতালে ভর্তি হন। এ ছাড়া প্রধান শিক্ষক নাছিমা খাতুন ও গৃহবধূ আম্বিয়া খাতুন দীর্ঘদিন ধরে গাংনীতে অবস্থান করছেন। ফলে গাংনীতে ডেঙ্গুর জীবাণু রয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ দিকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক আলোচনা সভা করেছে মেহেরপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। গতকাল বুধবার দুপুরে মেহেরপুরের গণমাধ্যমকর্মী ও বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সিভিল সার্জন ডা. শামীম আরা নাজনিনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক মো. আতাউল গনি। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. তাহাজ্জেল হোসেন, পৌর মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম, জেলা বিএমএ-এর সভাপতি ডা. রমেশ চন্দ্র নাথ, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলোক কুমার দাস প্রমুখ।
এ সময় জেলা প্রশাসক বলেন, ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সবাই মিলে একসঙ্গে এর প্রতিরোধে কাজ করতে হবে। নিজ নিজ বাড়ির আঙ্গিনা পরিষ্কার রাখতে হবে। বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্নভাবে জনসচেতনা বৃদ্ধি করতে হবে।
সিভিল সার্জন শামীম আরা নাজনিন বলেন, ডেঙ্গু রোগ শনাক্ত করার কীট খুব দ্রুত মেহেরপুরে এসে পৌঁছাবে। ‘আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী ডেঙ্গুতে আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। আতঙ্কিত না হয়ে সবার মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।’
ঝিনাইদহ:
ঝিনাইদহে ২৪ ঘণ্টায় আরও ৫ ডেঙ্গু রোগীর সন্ধান মিলেছে। এ নিয়ে ঝিনাইদহে মোট ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ২৬ জন। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের পরিসংখ্যান কর্মকর্তা আব্দুল কাদের খবরের সত্যতা নিশ্চত করে জানান, প্রতি ২৪ ঘণ্টায় (মঙ্গল থেকে বুধবার বিকেল পর্যন্ত) হাসপাতালে ৫ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন, তাঁরা এখন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আইয়ুব আলী জানান, জেলায় গত ২৪ দিনে ২৬ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রন্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। তিনি ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবাইকে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।