ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুরে ও ঝিনাইদহে ৪০৪টি পরিবার পেল সরকারি ঘর

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:২২:১৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ জুন ২০২১
  • / ১০০ বার পড়া হয়েছে

সারা দেশের ৫৩ হাজার ৩৪০টি পরিবারকে জমিসহ পাকা ঘর প্রদান করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
সমীকরণ প্রতিবেদন:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ক্ষমতায় বসে শুধু নিজে খাব, নিজে ভালো থাকব সেটা তো না। ক্ষমতায় থাকা মানে হচ্ছে মানুষের সেবা করার একটা সুযোগ, মানুষের জন্য কিছু করার সুযোগ। গতকাল রোববার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ঘর ‘উপহার’ দেওয়ার অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্ববধানে পরিচালিত ‘আশ্রয়ন প্রকল্পের’ দ্বিতীয় ধাপে সাড়ে ৫৩ হাজার পরিবারকে বিনামূল্যে দুই শতক জমিসহ সেমিপাকা ঘর উপহার দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর ১৯৯৬ পর্যন্ত সময়ে যারা ক্ষমতায় ছিলেন, তারা কেবল ‘লুটপাটের রাজনীতি’ করে গেছেন। তিনি বলেন, ক্ষমতায় বসে শুধু নিজে খাব, নিজে ভালো থাকব সেটা তো না। ক্ষমতায় থাকা মানে হচ্ছে মানুষের সেবা করার একটা সুযোগ, মানুষের জন্য কিছু করার সুযোগ। মানুষের সেবক হিসেবে যখনই প্রথম সরকার গঠন করি, আমি ঘোষণা দিয়েছিলাম, যে সেবক হিসেবেই নিজেকে আমরা তৈরি করেছি এবং সেভাবেই সাহায্য করে যাচ্ছি কাজ করে যাচ্ছি।
এদিকে, সারা দেশের সঙ্গে একযোগে চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহ জেলার প্রত্যোকটা উপজেলায় ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষকে ঘর ও জমি প্রদানের উদ্বাধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি এসব উপজেলায় ঘর ও জমি প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
চুয়াডাঙ্গা:


এবার দ্বিতীয় ধাপে চুয়াডাঙ্গার আরও ১৭৫টি ভূমিহীন পরিবার পেল সরকারি ঘর। গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চুয়াডাঙ্গার চারটি উপজেলাসহ সারা দেশের ৪৫৯টি উপজেলায় ৫৩ হাজার ৩৪০টি পরিবারকে ২ শতক জমির মালিকানাসহ সেমি পাকা ঘর ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষকে দেওয়ার দ্বিতীয় ধাপের উদ্বোধন করেন। গত জানুয়ারিতে প্রথম পর্যায়ে ৬৯ হাজার ৯০৪টি পরিবারকে ঘর প্রদানের পর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় দ্বিতীয় পর্যায়ে গতকাল রোববার আরও উপহার দিলেন প্রধানমন্ত্রী। মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে বিনা মূল্যে দেশের সব ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে ঘর করে দেওয়ার সরকারি প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এ ঘর প্রদান করা হয়।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে যাঁরা ঘর পেয়েছেন, তাঁদের কষ্ট দূর করা এবং তাঁদের মুখের হাসি আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া। ক্ষমতা মানে ভোগবিলাস নয়। ক্ষমতা হলো মানুষের সেবা করা। মানুষের জন্য কাজ করা।’ শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘করোনার কারণে আমি যেতে না পারায় আমার পক্ষ থেকে স্থানীয় সংসদ সদস্য, ডিসি ও ইউএনও উপকারভোগীদের হাতে জমির দলিল ও ঘরের চাবি তুলে দেবেন।’
এদিকে, চুয়াডাঙ্গা প্রান্তে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষ থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত ছিলেন অতিথিরা। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এমন কোনো দিক নেই যে প্রধানমন্ত্রীর নজর নেই। তাঁর ভাবনা দূরদর্শী। প্রত্যেকটি সময় তিনি বাংলাদেশের মানুষের কথা ভাবেন। তাঁর ভাবনায় ভোগ-বিলাস নেই, আছে মানুষের কল্যাণের কথা। পৃথিবীর আর কোনো সরকার একসাথে এতো মানুষকে বিনামূল্যে জমিসহ পাকা ঘর উপহার দেয়নি। এটি নতুন এক ইতিহাস।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে নতুন ইতিহাসের সৃষ্টি করলেন। তার আমরা সাক্ষী হতে পেরে গর্বিত। ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের ঘর নির্মাণের পাশাপাশি তাঁদের নামে জমির দলিল নিবন্ধন করে দিচ্ছে বর্তমান সরকার। এ কার্যক্রমে চুয়াডাঙ্গা জেলার ১ হাজার ১৩২টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার চিহ্নিত করা হয়। তাঁদেরকে সরকারিভাবে ঘর নির্ধারণ করে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। ইতোমধ্যে প্রথম ধাপে ১৩৪টি পরিবারের মধ্যে নির্মিত ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। এবার দ্বিতীয় ধাপের অংশ হিসেবে ১৭৫টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মধ্যে ঘর হস্তান্তর করা হলো।
চুয়াডাঙ্গা প্রান্তে অনুষ্ঠানে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিকুর রহমানের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মনিরা পারভীন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া আফরিন, চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কনক কুমার দাস, চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর আলম মালিক, সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইসরাত জাহান, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নান প্রমুখ।
সরকারের দেওয়া এ ঘরের দলিলে জমির মালিকানা স্বামী ও স্ত্রীর যৌথ নামে করে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের নামে স্থায়ী দলিলের পাশাপাশি নামজারি করে খাজনা দাখিলাও দেওয়া হয়েছে। সেমি পাকা ঘরে আছে দুটি রুম, একটি বড় বারান্দা, রান্নাঘর ও শৌচাগার। পাশাপাশি সুপেয় পানি ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা আছে।
মুজিববর্ষে ‘বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’ প্রধানমন্ত্রীর এমন সিদ্ধান্তের আলোকে গতকালের আশ্রয়ণের মধ্যদিয়ে গত ৬ মাসে মোট ১ লাখ ২৩ হাজার ২৪৪টি পরিবারকে ভূমি ও গৃহ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া গত বছর প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে সরকারের সিনিয়র সচিব ও সচিবেরা তাঁদের নিজস্ব অর্থায়নে ১৬০টি পরিবারকে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সেমি পাকা গৃহনির্মাণ করে দিয়েছেন। তারও আগে জলবায়ু উদ্বাস্তু পরিবারকে বহুতল ভবনে একটি করে ফ্ল্যাট প্রদানের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৪০৯টি পরিবারকে খুরশকুল বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস গণভবন প্রান্তে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। তিনি অনুষ্ঠানে ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে শেখ হাসিনা মডেল’ শীর্ষক একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠান থেকে প্রধানমন্ত্রী চারটি উপজেলার উপকারভোগী ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। একসঙ্গে এত মানুষকে বিনা মূল্যে বাড়ি-ঘর দেওয়ার ঘটনা পৃথিবীতে নজিরবিহীন উল্লেখ করে আহমদ কায়কাউস বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আরও এক লাখ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে বিনা মূল্যে জমিসহ ঘর প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। বিনা মূল্যে প্রধানমন্ত্রীর ঘর প্রদান উপলক্ষে ১৭ জুন এক সংবাদ সম্মেলনে মূখ্য সচিব বলেছিলেন, ‘যদি দুই ডেসিমেল জায়গার মূল্য গড়ে ৫০ হাজার টাকাও ধরি, তাহলে একেকটি পরিবার প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার টাকার সম্পদ পাচ্ছে। প্রতিটি বাড়ির নির্মাণ খরচ প্রায় দুই লাখ টাকা। ইউটিলিটি সংযোগ বাবদ আরও প্রায় ১০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে।’
আশ্রয়ণ প্রকল্পের তালিকা অনুযায়ী দেশে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের সংখ্যা ২ লাখ ৯৩ হাজার ৩৬১টি (ক-শ্রেণি)। আর শুধু গৃহহীন পরিবার হচ্ছে ৫ লাখ ৯২ হাজার ২৬১টি (খ-শ্রেণি)।
আলমডাঙ্গা:


আলমডাঙ্গায় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় ৪৫টি পরিবারকে সরকারি ঘর ও জমির দলিল হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল রোববার গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। পরে আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা সুবিধাভোগীদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি বুঝিয়ে দেন।
এদিকে, আলমডাঙ্গায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে ইউএনও পুলক কুমার মণ্ডলের সভাপতিত্বে অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান আইয়ুব হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাড. সালমুন আহম্মেদ ডন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কাজী মারজাহান নিতু, সহকারী কমিশনার (ভূমি) হুমায়ন কবীর, আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলমগীর কবীর, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. সাহাবুদ্দিন আহমেদ সাবু, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর মোহাম্মদ জকু ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন।
কলেজিয়েট স্কুলের উপাধ্যক্ষ শামীম রেজার উপস্থাপনায় আরও উপস্থিত ছিলে ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান রুন্নু, আব্দুল হালিম, আবুল কালাম আজাদ, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা, আব্দুল্লাহিল কাফি, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এনামুল হক, উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুর রশীদ প্রমুখ।
দামুড়হুদা:


মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রম দ্বিতীয় পর্যায়ে ভার্চুয়ালের মাধ্যমে শুভ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উপস্থিত থেকে গৃহহীন পরিবারকে গৃহের চাবি ও জমির কাগজপত্র হস্তান্তর করেন। গতকাল রোববার বেলা ১১টার দিকে দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদের হলরুমে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন দামুড়হুদা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুদীপ্ত কুমার সিংহ, উপজেলা প্রকৌশলী খালিদ হাসান, মৎস্য কর্মকর্ত আয়ুব আলী, কৃষি সম্প্রসারণ অভিজিৎ কুমার বিশ্বাস, জুড়ানপুর ইউনিয় পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন, কুড়ুলগাছি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ এনামুল হক ইনু ও হাউলী ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়াম্যান নিজাম উদ্দীন।
জানা যায়, দামুড়হুদা উপজেলায় দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর উপহার স্বরুপ দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিলারা রহমানের তত্ত্বাবধনে ৩২ জন গৃহহীন পরিবারের জন্য ঘর তৈরি করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গৃহহীনদের মধ্যে এ ঘর উদ্বোধন করার পরে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিলারা রহমান ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলী মুনছুর বাবু উপস্থিত থেকে ৩২ জন গৃহহীনদের মধ্যে ঘরের চাবি ও জমির কাগজপত্র তুলে দেন।
উপকারভোগী ঘর পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, ‘আমি গরীব মানুষ নিজের কোনো ঘরবাড়ি নেই, সারা জীবন থেকে এসেছি ভাড়া ঘরে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জমি ও ঘর দেওয়ায় আমি অনেক খুশি আমার পরিবার ও অনেক খুশি হয়েছে। আমার মাথা গোজার জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান হলো। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনা করি।’
গাংনী:


গাংনীতে ভূমিহীন ও গৃহহীন ২৬টি পরিবার পেল আশ্রয়স্থল। প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় এসব পরিবারকে দুই শতক করে জমি ও বাড়ি দেওয়া হয়েছে। প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে এক সময়ের সম্পদহীন এসব পরিবার জমি ও বাড়ির মালিকানা পেয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়াল কনফারেন্সে উদ্বোধনের পর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব পরিবারের কাছে জমি ও ঘরের মালিকানা কাগজপত্র বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মৌসুমি খানমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ খালেক, গাংনী পৌর মেয়র আহম্মেদ আলী, গাংনী প্রেসক্লাবের সভাপতি রমজান আলী, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাড. রাশেদুল ইসলাম জুয়েল ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা ইয়াসমিন।
ঝিনাইদহ:


ঝিনাইদহে ১৮৭ জন ভূমি ও গৃহহীনদের মধ্যে ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল রোববার দুপুরে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এ উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম শাহীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে জেলা প্রশাসক মজিবর রহমান ও অন্যদের মধ্যে পুলিশ সুপার মুনতাসিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সেলিম রেজা ও স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক ইয়ারুল ইসলাম বক্তব্য দেন। ভিডিও কনফানেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জমি ও গৃহ প্রধান কার্যক্রম ২য় পর্যায়ের উদ্বোধন করলে ঝিনাইদহেও সুবিধাভোগীদের মধ্যে চাবি হস্তান্তর করা হয়। উল্লেখ্য, মুজিববর্ষে জেলায় মোট ৭০৫টি ভূমি ও গৃহহীন পরিবারকে সরকারি ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ৪০৭টি ঘর ভূমি ও গৃহহীনদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং রোববার দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৮৬টি ঘর হস্তান্তর করা হবে। বাকি ঘরগুলো নির্মাণাধীন রয়েছে।
কালীগঞ্জ:

‘বাংলাদেশের একজন মানুষও ভূমিহীন থাকবে না’ মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া এমন নির্দেশনায় ২য় দফায় ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমির দলিলসহ ঘর প্রদান করা হয়েছে। গতকাল রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশব্যাপী গৃহ প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে পরিষদের অডিটরিয়ামে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গৃহহীন পরিবারদের হাতে জমির দলিল ও ঘরের চাবি তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। এবার উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গৃহহীনদের জন্য ২য় পর্যায়ের বরাদ্দকৃত ৫টি ও ১ম দফায় ১৫টিসহ মোট ২০টি ঘর প্রদান করা হয়।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সূবর্ণা রানী সাহার সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর সিদ্দিকী ঠান্ডু, পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ, কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহা. মাহফুজুর রহমান মিয়া ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শিবলী নোমানী।
কালীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ভূপালী সরকারের সঞ্চালনায় ঘর প্রদান উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্স অনুষ্ঠানে উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, ইউপি চেয়ারম্যান, গণমাধ্যমকর্মী ও সুধীজনেরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ১ম পর্যায়ে কালীগঞ্জে ২৭ জন গৃহহীন পরিবারের জন্য ঘর বরাদ্দ করা হয়েছিল। এরমধ্যে সে সময়ে প্রস্তুতকৃত ১২টি পরিবারকে ঘর দেওয়া হয়। সেই বাকি ১৫টি ও এবারে কোলা ইউনিয়নে আরও ৫টি ঘরসহ এ উপজেলায় দু’দফায় সর্বমোট ৩২ জন গৃহহীন পরিবারকে ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুরে ও ঝিনাইদহে ৪০৪টি পরিবার পেল সরকারি ঘর

আপলোড টাইম : ০৯:২২:১৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ জুন ২০২১

সারা দেশের ৫৩ হাজার ৩৪০টি পরিবারকে জমিসহ পাকা ঘর প্রদান করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
সমীকরণ প্রতিবেদন:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ক্ষমতায় বসে শুধু নিজে খাব, নিজে ভালো থাকব সেটা তো না। ক্ষমতায় থাকা মানে হচ্ছে মানুষের সেবা করার একটা সুযোগ, মানুষের জন্য কিছু করার সুযোগ। গতকাল রোববার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ঘর ‘উপহার’ দেওয়ার অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্ববধানে পরিচালিত ‘আশ্রয়ন প্রকল্পের’ দ্বিতীয় ধাপে সাড়ে ৫৩ হাজার পরিবারকে বিনামূল্যে দুই শতক জমিসহ সেমিপাকা ঘর উপহার দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর ১৯৯৬ পর্যন্ত সময়ে যারা ক্ষমতায় ছিলেন, তারা কেবল ‘লুটপাটের রাজনীতি’ করে গেছেন। তিনি বলেন, ক্ষমতায় বসে শুধু নিজে খাব, নিজে ভালো থাকব সেটা তো না। ক্ষমতায় থাকা মানে হচ্ছে মানুষের সেবা করার একটা সুযোগ, মানুষের জন্য কিছু করার সুযোগ। মানুষের সেবক হিসেবে যখনই প্রথম সরকার গঠন করি, আমি ঘোষণা দিয়েছিলাম, যে সেবক হিসেবেই নিজেকে আমরা তৈরি করেছি এবং সেভাবেই সাহায্য করে যাচ্ছি কাজ করে যাচ্ছি।
এদিকে, সারা দেশের সঙ্গে একযোগে চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহ জেলার প্রত্যোকটা উপজেলায় ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষকে ঘর ও জমি প্রদানের উদ্বাধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি এসব উপজেলায় ঘর ও জমি প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
চুয়াডাঙ্গা:


এবার দ্বিতীয় ধাপে চুয়াডাঙ্গার আরও ১৭৫টি ভূমিহীন পরিবার পেল সরকারি ঘর। গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চুয়াডাঙ্গার চারটি উপজেলাসহ সারা দেশের ৪৫৯টি উপজেলায় ৫৩ হাজার ৩৪০টি পরিবারকে ২ শতক জমির মালিকানাসহ সেমি পাকা ঘর ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষকে দেওয়ার দ্বিতীয় ধাপের উদ্বোধন করেন। গত জানুয়ারিতে প্রথম পর্যায়ে ৬৯ হাজার ৯০৪টি পরিবারকে ঘর প্রদানের পর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় দ্বিতীয় পর্যায়ে গতকাল রোববার আরও উপহার দিলেন প্রধানমন্ত্রী। মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে বিনা মূল্যে দেশের সব ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে ঘর করে দেওয়ার সরকারি প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এ ঘর প্রদান করা হয়।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে যাঁরা ঘর পেয়েছেন, তাঁদের কষ্ট দূর করা এবং তাঁদের মুখের হাসি আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া। ক্ষমতা মানে ভোগবিলাস নয়। ক্ষমতা হলো মানুষের সেবা করা। মানুষের জন্য কাজ করা।’ শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘করোনার কারণে আমি যেতে না পারায় আমার পক্ষ থেকে স্থানীয় সংসদ সদস্য, ডিসি ও ইউএনও উপকারভোগীদের হাতে জমির দলিল ও ঘরের চাবি তুলে দেবেন।’
এদিকে, চুয়াডাঙ্গা প্রান্তে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষ থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত ছিলেন অতিথিরা। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এমন কোনো দিক নেই যে প্রধানমন্ত্রীর নজর নেই। তাঁর ভাবনা দূরদর্শী। প্রত্যেকটি সময় তিনি বাংলাদেশের মানুষের কথা ভাবেন। তাঁর ভাবনায় ভোগ-বিলাস নেই, আছে মানুষের কল্যাণের কথা। পৃথিবীর আর কোনো সরকার একসাথে এতো মানুষকে বিনামূল্যে জমিসহ পাকা ঘর উপহার দেয়নি। এটি নতুন এক ইতিহাস।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে নতুন ইতিহাসের সৃষ্টি করলেন। তার আমরা সাক্ষী হতে পেরে গর্বিত। ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের ঘর নির্মাণের পাশাপাশি তাঁদের নামে জমির দলিল নিবন্ধন করে দিচ্ছে বর্তমান সরকার। এ কার্যক্রমে চুয়াডাঙ্গা জেলার ১ হাজার ১৩২টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার চিহ্নিত করা হয়। তাঁদেরকে সরকারিভাবে ঘর নির্ধারণ করে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। ইতোমধ্যে প্রথম ধাপে ১৩৪টি পরিবারের মধ্যে নির্মিত ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। এবার দ্বিতীয় ধাপের অংশ হিসেবে ১৭৫টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মধ্যে ঘর হস্তান্তর করা হলো।
চুয়াডাঙ্গা প্রান্তে অনুষ্ঠানে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিকুর রহমানের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মনিরা পারভীন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া আফরিন, চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কনক কুমার দাস, চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর আলম মালিক, সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইসরাত জাহান, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নান প্রমুখ।
সরকারের দেওয়া এ ঘরের দলিলে জমির মালিকানা স্বামী ও স্ত্রীর যৌথ নামে করে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের নামে স্থায়ী দলিলের পাশাপাশি নামজারি করে খাজনা দাখিলাও দেওয়া হয়েছে। সেমি পাকা ঘরে আছে দুটি রুম, একটি বড় বারান্দা, রান্নাঘর ও শৌচাগার। পাশাপাশি সুপেয় পানি ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা আছে।
মুজিববর্ষে ‘বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’ প্রধানমন্ত্রীর এমন সিদ্ধান্তের আলোকে গতকালের আশ্রয়ণের মধ্যদিয়ে গত ৬ মাসে মোট ১ লাখ ২৩ হাজার ২৪৪টি পরিবারকে ভূমি ও গৃহ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া গত বছর প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে সরকারের সিনিয়র সচিব ও সচিবেরা তাঁদের নিজস্ব অর্থায়নে ১৬০টি পরিবারকে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সেমি পাকা গৃহনির্মাণ করে দিয়েছেন। তারও আগে জলবায়ু উদ্বাস্তু পরিবারকে বহুতল ভবনে একটি করে ফ্ল্যাট প্রদানের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৪০৯টি পরিবারকে খুরশকুল বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস গণভবন প্রান্তে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। তিনি অনুষ্ঠানে ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে শেখ হাসিনা মডেল’ শীর্ষক একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠান থেকে প্রধানমন্ত্রী চারটি উপজেলার উপকারভোগী ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। একসঙ্গে এত মানুষকে বিনা মূল্যে বাড়ি-ঘর দেওয়ার ঘটনা পৃথিবীতে নজিরবিহীন উল্লেখ করে আহমদ কায়কাউস বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আরও এক লাখ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে বিনা মূল্যে জমিসহ ঘর প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। বিনা মূল্যে প্রধানমন্ত্রীর ঘর প্রদান উপলক্ষে ১৭ জুন এক সংবাদ সম্মেলনে মূখ্য সচিব বলেছিলেন, ‘যদি দুই ডেসিমেল জায়গার মূল্য গড়ে ৫০ হাজার টাকাও ধরি, তাহলে একেকটি পরিবার প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার টাকার সম্পদ পাচ্ছে। প্রতিটি বাড়ির নির্মাণ খরচ প্রায় দুই লাখ টাকা। ইউটিলিটি সংযোগ বাবদ আরও প্রায় ১০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে।’
আশ্রয়ণ প্রকল্পের তালিকা অনুযায়ী দেশে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের সংখ্যা ২ লাখ ৯৩ হাজার ৩৬১টি (ক-শ্রেণি)। আর শুধু গৃহহীন পরিবার হচ্ছে ৫ লাখ ৯২ হাজার ২৬১টি (খ-শ্রেণি)।
আলমডাঙ্গা:


আলমডাঙ্গায় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় ৪৫টি পরিবারকে সরকারি ঘর ও জমির দলিল হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল রোববার গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। পরে আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা সুবিধাভোগীদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি বুঝিয়ে দেন।
এদিকে, আলমডাঙ্গায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে ইউএনও পুলক কুমার মণ্ডলের সভাপতিত্বে অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান আইয়ুব হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাড. সালমুন আহম্মেদ ডন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কাজী মারজাহান নিতু, সহকারী কমিশনার (ভূমি) হুমায়ন কবীর, আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলমগীর কবীর, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. সাহাবুদ্দিন আহমেদ সাবু, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর মোহাম্মদ জকু ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন।
কলেজিয়েট স্কুলের উপাধ্যক্ষ শামীম রেজার উপস্থাপনায় আরও উপস্থিত ছিলে ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান রুন্নু, আব্দুল হালিম, আবুল কালাম আজাদ, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা, আব্দুল্লাহিল কাফি, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এনামুল হক, উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুর রশীদ প্রমুখ।
দামুড়হুদা:


মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রম দ্বিতীয় পর্যায়ে ভার্চুয়ালের মাধ্যমে শুভ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উপস্থিত থেকে গৃহহীন পরিবারকে গৃহের চাবি ও জমির কাগজপত্র হস্তান্তর করেন। গতকাল রোববার বেলা ১১টার দিকে দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদের হলরুমে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন দামুড়হুদা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুদীপ্ত কুমার সিংহ, উপজেলা প্রকৌশলী খালিদ হাসান, মৎস্য কর্মকর্ত আয়ুব আলী, কৃষি সম্প্রসারণ অভিজিৎ কুমার বিশ্বাস, জুড়ানপুর ইউনিয় পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন, কুড়ুলগাছি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ এনামুল হক ইনু ও হাউলী ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়াম্যান নিজাম উদ্দীন।
জানা যায়, দামুড়হুদা উপজেলায় দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর উপহার স্বরুপ দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিলারা রহমানের তত্ত্বাবধনে ৩২ জন গৃহহীন পরিবারের জন্য ঘর তৈরি করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গৃহহীনদের মধ্যে এ ঘর উদ্বোধন করার পরে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিলারা রহমান ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলী মুনছুর বাবু উপস্থিত থেকে ৩২ জন গৃহহীনদের মধ্যে ঘরের চাবি ও জমির কাগজপত্র তুলে দেন।
উপকারভোগী ঘর পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, ‘আমি গরীব মানুষ নিজের কোনো ঘরবাড়ি নেই, সারা জীবন থেকে এসেছি ভাড়া ঘরে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জমি ও ঘর দেওয়ায় আমি অনেক খুশি আমার পরিবার ও অনেক খুশি হয়েছে। আমার মাথা গোজার জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান হলো। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনা করি।’
গাংনী:


গাংনীতে ভূমিহীন ও গৃহহীন ২৬টি পরিবার পেল আশ্রয়স্থল। প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় এসব পরিবারকে দুই শতক করে জমি ও বাড়ি দেওয়া হয়েছে। প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে এক সময়ের সম্পদহীন এসব পরিবার জমি ও বাড়ির মালিকানা পেয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়াল কনফারেন্সে উদ্বোধনের পর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব পরিবারের কাছে জমি ও ঘরের মালিকানা কাগজপত্র বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মৌসুমি খানমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ খালেক, গাংনী পৌর মেয়র আহম্মেদ আলী, গাংনী প্রেসক্লাবের সভাপতি রমজান আলী, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাড. রাশেদুল ইসলাম জুয়েল ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা ইয়াসমিন।
ঝিনাইদহ:


ঝিনাইদহে ১৮৭ জন ভূমি ও গৃহহীনদের মধ্যে ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল রোববার দুপুরে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এ উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম শাহীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে জেলা প্রশাসক মজিবর রহমান ও অন্যদের মধ্যে পুলিশ সুপার মুনতাসিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সেলিম রেজা ও স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক ইয়ারুল ইসলাম বক্তব্য দেন। ভিডিও কনফানেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জমি ও গৃহ প্রধান কার্যক্রম ২য় পর্যায়ের উদ্বোধন করলে ঝিনাইদহেও সুবিধাভোগীদের মধ্যে চাবি হস্তান্তর করা হয়। উল্লেখ্য, মুজিববর্ষে জেলায় মোট ৭০৫টি ভূমি ও গৃহহীন পরিবারকে সরকারি ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ৪০৭টি ঘর ভূমি ও গৃহহীনদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং রোববার দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৮৬টি ঘর হস্তান্তর করা হবে। বাকি ঘরগুলো নির্মাণাধীন রয়েছে।
কালীগঞ্জ:

‘বাংলাদেশের একজন মানুষও ভূমিহীন থাকবে না’ মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া এমন নির্দেশনায় ২য় দফায় ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমির দলিলসহ ঘর প্রদান করা হয়েছে। গতকাল রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশব্যাপী গৃহ প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে পরিষদের অডিটরিয়ামে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গৃহহীন পরিবারদের হাতে জমির দলিল ও ঘরের চাবি তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। এবার উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গৃহহীনদের জন্য ২য় পর্যায়ের বরাদ্দকৃত ৫টি ও ১ম দফায় ১৫টিসহ মোট ২০টি ঘর প্রদান করা হয়।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সূবর্ণা রানী সাহার সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর সিদ্দিকী ঠান্ডু, পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ, কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহা. মাহফুজুর রহমান মিয়া ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শিবলী নোমানী।
কালীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ভূপালী সরকারের সঞ্চালনায় ঘর প্রদান উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্স অনুষ্ঠানে উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, ইউপি চেয়ারম্যান, গণমাধ্যমকর্মী ও সুধীজনেরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ১ম পর্যায়ে কালীগঞ্জে ২৭ জন গৃহহীন পরিবারের জন্য ঘর বরাদ্দ করা হয়েছিল। এরমধ্যে সে সময়ে প্রস্তুতকৃত ১২টি পরিবারকে ঘর দেওয়া হয়। সেই বাকি ১৫টি ও এবারে কোলা ইউনিয়নে আরও ৫টি ঘরসহ এ উপজেলায় দু’দফায় সর্বমোট ৩২ জন গৃহহীন পরিবারকে ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে।