ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গায় বিমানবন্দর স্থাপনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব রাখবো

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:১৩:৩১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ মার্চ ২০১৯
  • / ৬৯৬৮ বার পড়া হয়েছে

বঙ্গবন্ধু-বঙ্গমাতার ম্যুরাল উদ্বোধন শেষে আলোচনা সভায় জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী
এসএম শাফায়েত:
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন এমপি বলেছেন, ‘চুয়াডাঙ্গার সঙ্গে আমাদের আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে বহুদিনের। আমার পিতা ছহিউদ্দীন বিশ্বাস সাইকেলে করে এই অঞ্চলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাতো। এই অঞ্চলের মানুষের জীবন মানোন্নয়নে আমার ভাবনার অন্ত নেই। আমরা চাই- মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহের মধ্যবর্তী স্থানে যদি একটি বিমানবন্দর হয়। তাতে করে আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে। সেটি যদি বাস্তবায়ন করতে চাই তবে, চুয়াডাঙ্গাতেই করতে হবে। যেহেতু চুয়াডাঙ্গার সাথে মেহেরপুর, কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহের মাঝামাঝি দূরত্ব রয়েছে। ফলে আমরা এক ঘন্টায় গাড়িযোগে বিমানবন্দরে পৌছাতে পারবো। আরও আধাঘন্টা মিলিয়ে সর্বোচ্চ দু’ঘন্টায় ঢাকাতে পৌছাতে পারবো। এ ধরণের পারস্পারিক উন্নয়ন নিয়ে শিগগিরই আলোচনায় বসবো। এ ব্যাপারে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব রাখবো। যেন চুয়াডাঙ্গাতে কোনো মাঝামাঝি স্থানে বিমানবন্দরটি হয়।’
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের টেনিস গ্রাউন্ড মাঠে আয়োজিত ‘স্বাধীনতা অর্জনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রেরণাশক্তি মহিয়সী নারী বেগম ফজিলাতুন্নছা মুজিব’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন তিনি। এর আগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্ত্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ম্যুরাল উদ্বোধন করেন প্রতিমন্ত্রী।’
বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতার ইতিহাস বিজড়িত স্মৃতি চারণ করে ফরহাদ হোসেন বলেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্য একটি ভাষা পেয়েছি, দেশ পেয়েছি আমরা। চুয়াডাঙ্গায় বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতার ম্যুরাল স্থাপন একটি বিরল দৃষ্টান্ত। অন্যান্য জেলায় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল আছে। কিন্তু কোথাও বঙ্গবন্ধু-বঙ্গমাতার ম্যুরাল এক ক্যানভাসে নাই। চুয়াডাঙ্গায় এটি স্থাপন করে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক গোপাল চন্দ্র দাস একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। বঙ্গবন্ধুর সাফল্যের প্রেরণা ছিলেন বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বেগম ফজিলাতুন্নেছাকে রেণু নামে ডাকতেন। অসমাপ্ত আত্মজীবনিতে তিনি লিখেছেন, ‘রেণু আমার জন্য টাকা জোগাড় করে রাখত। আর কাপড়-চোপড় যোগাড় করে রাখত, আমার জেলের আগাম প্রস্তুতি স্বরুপ।’ বঙ্গবন্ধু আমাদের দুইটা জিনিস উপহার দিয়েছেন- একটি হলো মুক্তির স্বাদ, অপরটি উন্নত জাতি হিসেবে মাথা উচুঁ করে দাড়ানোর শক্তি।”

তিনি বলেন, ‘মুজিবনগর চুয়াডাঙ্গায় হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ১৪ তারিখে পাকবাহিনী হামলার জন্য এখানে বসতে না পেরে সেটা মেহেরপুরের আ¤্রকাননে হয়েছে। ফলে ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের আ¤্রকাননে অস্থায়ী সরকার গঠন করা হয়।’ প্রতিমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে আরও বলেন, ‘আমি কর্মসংস্থানসহ কলকারখানা বৃদ্ধি, শিল্পাঞ্চল সৃষ্টির নতুন নতুন পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করবো। চুয়াডাঙ্গা ভালো থাকলে মেহেরপুর ভালো থাকবে। মেহেরপুর ভালো থাকলে চুয়াডাঙ্গাও ভালো থাকবে।’
জেলা প্রশাসক গোপাল চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) খোন্দকার ফরহাদ আহমদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান পিপিএম (বার), জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সেখ সামসুল আবেদীন খোকন, চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক মুন্সী আলমগীর হান্নান ও ম্যুরাল শিল্পী দামুড়হুদার সন্তান মিজানুর রহমান লিটন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ ইয়াহ ইয়া খাঁন, সিভিল সার্জন ডা. খায়রুল আলম, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ কামরুজ্জামান, জেলা নির্বাচন অফিসার তারেক আহমেমদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, গণমাধ্যমকর্মী ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের অধ্যাপক মুন্সি আবু সাইফ। পরিশেষে রাজবাড়ী দীব্য নৃত্য শিল্পী গোষ্ঠী ও স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে শেষ হয় আয়োজন। এর আগে বিকেল ৬টা নাগাদ মাননীয় প্রতিমন্ত্রী বিশাল গাড়ীবহরযোগে চুয়াডাঙ্গা সার্কিট হাউসে পৌছালে জেলা পুলিশের একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

চুয়াডাঙ্গায় বিমানবন্দর স্থাপনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব রাখবো

আপলোড টাইম : ০৯:১৩:৩১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ মার্চ ২০১৯

বঙ্গবন্ধু-বঙ্গমাতার ম্যুরাল উদ্বোধন শেষে আলোচনা সভায় জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী
এসএম শাফায়েত:
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন এমপি বলেছেন, ‘চুয়াডাঙ্গার সঙ্গে আমাদের আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে বহুদিনের। আমার পিতা ছহিউদ্দীন বিশ্বাস সাইকেলে করে এই অঞ্চলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাতো। এই অঞ্চলের মানুষের জীবন মানোন্নয়নে আমার ভাবনার অন্ত নেই। আমরা চাই- মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহের মধ্যবর্তী স্থানে যদি একটি বিমানবন্দর হয়। তাতে করে আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে। সেটি যদি বাস্তবায়ন করতে চাই তবে, চুয়াডাঙ্গাতেই করতে হবে। যেহেতু চুয়াডাঙ্গার সাথে মেহেরপুর, কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহের মাঝামাঝি দূরত্ব রয়েছে। ফলে আমরা এক ঘন্টায় গাড়িযোগে বিমানবন্দরে পৌছাতে পারবো। আরও আধাঘন্টা মিলিয়ে সর্বোচ্চ দু’ঘন্টায় ঢাকাতে পৌছাতে পারবো। এ ধরণের পারস্পারিক উন্নয়ন নিয়ে শিগগিরই আলোচনায় বসবো। এ ব্যাপারে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব রাখবো। যেন চুয়াডাঙ্গাতে কোনো মাঝামাঝি স্থানে বিমানবন্দরটি হয়।’
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের টেনিস গ্রাউন্ড মাঠে আয়োজিত ‘স্বাধীনতা অর্জনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রেরণাশক্তি মহিয়সী নারী বেগম ফজিলাতুন্নছা মুজিব’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন তিনি। এর আগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্ত্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ম্যুরাল উদ্বোধন করেন প্রতিমন্ত্রী।’
বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতার ইতিহাস বিজড়িত স্মৃতি চারণ করে ফরহাদ হোসেন বলেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্য একটি ভাষা পেয়েছি, দেশ পেয়েছি আমরা। চুয়াডাঙ্গায় বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতার ম্যুরাল স্থাপন একটি বিরল দৃষ্টান্ত। অন্যান্য জেলায় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল আছে। কিন্তু কোথাও বঙ্গবন্ধু-বঙ্গমাতার ম্যুরাল এক ক্যানভাসে নাই। চুয়াডাঙ্গায় এটি স্থাপন করে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক গোপাল চন্দ্র দাস একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। বঙ্গবন্ধুর সাফল্যের প্রেরণা ছিলেন বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বেগম ফজিলাতুন্নেছাকে রেণু নামে ডাকতেন। অসমাপ্ত আত্মজীবনিতে তিনি লিখেছেন, ‘রেণু আমার জন্য টাকা জোগাড় করে রাখত। আর কাপড়-চোপড় যোগাড় করে রাখত, আমার জেলের আগাম প্রস্তুতি স্বরুপ।’ বঙ্গবন্ধু আমাদের দুইটা জিনিস উপহার দিয়েছেন- একটি হলো মুক্তির স্বাদ, অপরটি উন্নত জাতি হিসেবে মাথা উচুঁ করে দাড়ানোর শক্তি।”

তিনি বলেন, ‘মুজিবনগর চুয়াডাঙ্গায় হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ১৪ তারিখে পাকবাহিনী হামলার জন্য এখানে বসতে না পেরে সেটা মেহেরপুরের আ¤্রকাননে হয়েছে। ফলে ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের আ¤্রকাননে অস্থায়ী সরকার গঠন করা হয়।’ প্রতিমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে আরও বলেন, ‘আমি কর্মসংস্থানসহ কলকারখানা বৃদ্ধি, শিল্পাঞ্চল সৃষ্টির নতুন নতুন পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করবো। চুয়াডাঙ্গা ভালো থাকলে মেহেরপুর ভালো থাকবে। মেহেরপুর ভালো থাকলে চুয়াডাঙ্গাও ভালো থাকবে।’
জেলা প্রশাসক গোপাল চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) খোন্দকার ফরহাদ আহমদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান পিপিএম (বার), জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সেখ সামসুল আবেদীন খোকন, চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক মুন্সী আলমগীর হান্নান ও ম্যুরাল শিল্পী দামুড়হুদার সন্তান মিজানুর রহমান লিটন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ ইয়াহ ইয়া খাঁন, সিভিল সার্জন ডা. খায়রুল আলম, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ কামরুজ্জামান, জেলা নির্বাচন অফিসার তারেক আহমেমদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, গণমাধ্যমকর্মী ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের অধ্যাপক মুন্সি আবু সাইফ। পরিশেষে রাজবাড়ী দীব্য নৃত্য শিল্পী গোষ্ঠী ও স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে শেষ হয় আয়োজন। এর আগে বিকেল ৬টা নাগাদ মাননীয় প্রতিমন্ত্রী বিশাল গাড়ীবহরযোগে চুয়াডাঙ্গা সার্কিট হাউসে পৌছালে জেলা পুলিশের একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে।