ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গায় তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে আনতে গিয়ে বিপত্তি!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:১২:৩৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • / ১২৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:
এনএসআই সদস্যের সহায়তায় চুয়াডাঙ্গা নিলার মোড় থেকে তালাক নেওয়া স্ত্রীকে আনতে গিয়ে মেয়ে পক্ষের বাধায় সাবেক স্বামীসহ তাঁর লোকজন পালালেও মোটরসাইকেলসহ এনামুল নামের এক এনএসআই সদস্যকে আটক করেছে মেয়ে পক্ষের লোকজনসহ স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে সদর থানার পুলিশ নিলার মোড় থেকে ওই এনএসআই সদস্যকে উদ্ধার করে কর্তৃপক্ষের কাছে সোপর্দ করেছে। তবে চুয়াডাঙ্গা এনএসআই কর্তৃপক্ষ দাবি করছে তাদের কোনো সদস্য আটক হয়নি। এদিকে, এ ঘটনায় এনএসআই সদস্যকে জড়ানো আইনসম্মতা হয়নি বলে জানিয়েছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ খান। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার নিলার মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিলার মোড়ের আইয়ুব আলীর মেয়ে বীথি খাতুনের সাবেক স্বামী ঝিনাইদহ জেলার মেহেদী কয়েকটি মোটরসাইকেল ও একটি প্রাইভেটকারে নারীসহ ৭-৮ জন লোক সঙ্গে নিয়ে আইয়ুব আলীর বাড়ির সামনে থামেন তাঁর তালাক হয়ে যাওয়া স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। এ সময় মেয়ে পক্ষের লোকজন বাধা দেওয়াসহ চিৎকার-চেচামেচি শুরু করলে প্রাইভেটকারসহ কয়েকটি মোটরসাইকেল আরোহী চলে গেলেও এনামুল নামে একজনকে আটক করে তারা। আটক ব্যক্তি ওই সময় নিজেকে এনএসআই সদস্য পরিচয় দিলে সদর থানার পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ খান ফোর্স ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই এনএসআই সদস্যকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেন। পরে চুয়াডাঙ্গা এনএসআই কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁকে হস্তান্তর করেন।
স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, নিলার মোড়ের আইয়ুব আলীর মেয়ে বীথি খাতুন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ভুলটিয়া গ্রামে নানীর বাড়ি থেকে লেখাপড়া করার সময় ঝিনাইদহ জেলার মেহেদী নামে এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। পরে তারা বিয়ে করে ঝিনাইদহতে সংসারও করছিলেন কিছুদিন। প্রায় চার মাস পূর্বে বীথির পরীবারের লোকজন বীথিকে বাড়ি নিয়ে আসলে কোনো এক কারণবসত মেহেদীকে তালাক দিয়ে দেয় বীথি। স্থানীয়রা আরও জানায়, তালাক দেওয়ার পরেও উভয়ের মধ্যে মোবাইলে কথাবার্তা হতো। সেই কারণে বীথির সাবেক স্বামী মেহেদী তার আত্মীয়-স্বজনসহ পরিচিত ওই এসএসআই সদস্যদের সহায়তায় তালাক হয়ে যাওয়া স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে আসেন। মেহেদীসহ তার লোকজন ওই মেয়ের বাড়ির সামনে থামলে এনএসআই সদস্য নামাজ পড়তে যান। এ সময় মেয়ে পক্ষের লোকজনের বাধায় মেহেদীসহ তার লোকজন পালিয়ে গেলেও নামাজ পড়ে ঘটনাস্থলে ফিরে আসলে ওই এনএসাই সদস্যকে আটক করে মেয়ে পক্ষের লোকজন। পরে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) চুয়াডাঙ্গার উপপরিচালক জি এম জামিল সিদ্দিক জানান, তাঁদের সদস্যকে আটক করা হয়নি। তিনি আরও জানান, এনামুল নামের এনএসআই সদস্যের সঙ্গে মেহেদীর পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরেই মেহেদীর সঙ্গে তিনি গিয়েছিলেন।
আটক এনএসআই সদস্যকে উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ খান জানান, তিনি খবর পেয়ে এনামুল নামে চুয়াডাঙ্গার এক এনএসআই সদস্যকে ঘটনাস্থল থেকে থানা হেফাজতে নিয়ে আসেন। পরে তাঁকে ঊর্ধ্বতন কর্র্তৃপক্ষের কাছে বুঝিয়ে দেন। তিনি আরও বলেন, তালাক হয়ে যাওয়া স্ত্রীকে আনতে এনএসআই সদস্যের এভাবে সঙ্গে যাওয়াটা আইনসম্মত হয়নি।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

চুয়াডাঙ্গায় তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে আনতে গিয়ে বিপত্তি!

আপলোড টাইম : ০৯:১২:৩৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক:
এনএসআই সদস্যের সহায়তায় চুয়াডাঙ্গা নিলার মোড় থেকে তালাক নেওয়া স্ত্রীকে আনতে গিয়ে মেয়ে পক্ষের বাধায় সাবেক স্বামীসহ তাঁর লোকজন পালালেও মোটরসাইকেলসহ এনামুল নামের এক এনএসআই সদস্যকে আটক করেছে মেয়ে পক্ষের লোকজনসহ স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে সদর থানার পুলিশ নিলার মোড় থেকে ওই এনএসআই সদস্যকে উদ্ধার করে কর্তৃপক্ষের কাছে সোপর্দ করেছে। তবে চুয়াডাঙ্গা এনএসআই কর্তৃপক্ষ দাবি করছে তাদের কোনো সদস্য আটক হয়নি। এদিকে, এ ঘটনায় এনএসআই সদস্যকে জড়ানো আইনসম্মতা হয়নি বলে জানিয়েছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ খান। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার নিলার মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিলার মোড়ের আইয়ুব আলীর মেয়ে বীথি খাতুনের সাবেক স্বামী ঝিনাইদহ জেলার মেহেদী কয়েকটি মোটরসাইকেল ও একটি প্রাইভেটকারে নারীসহ ৭-৮ জন লোক সঙ্গে নিয়ে আইয়ুব আলীর বাড়ির সামনে থামেন তাঁর তালাক হয়ে যাওয়া স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। এ সময় মেয়ে পক্ষের লোকজন বাধা দেওয়াসহ চিৎকার-চেচামেচি শুরু করলে প্রাইভেটকারসহ কয়েকটি মোটরসাইকেল আরোহী চলে গেলেও এনামুল নামে একজনকে আটক করে তারা। আটক ব্যক্তি ওই সময় নিজেকে এনএসআই সদস্য পরিচয় দিলে সদর থানার পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ খান ফোর্স ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই এনএসআই সদস্যকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেন। পরে চুয়াডাঙ্গা এনএসআই কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁকে হস্তান্তর করেন।
স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, নিলার মোড়ের আইয়ুব আলীর মেয়ে বীথি খাতুন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ভুলটিয়া গ্রামে নানীর বাড়ি থেকে লেখাপড়া করার সময় ঝিনাইদহ জেলার মেহেদী নামে এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। পরে তারা বিয়ে করে ঝিনাইদহতে সংসারও করছিলেন কিছুদিন। প্রায় চার মাস পূর্বে বীথির পরীবারের লোকজন বীথিকে বাড়ি নিয়ে আসলে কোনো এক কারণবসত মেহেদীকে তালাক দিয়ে দেয় বীথি। স্থানীয়রা আরও জানায়, তালাক দেওয়ার পরেও উভয়ের মধ্যে মোবাইলে কথাবার্তা হতো। সেই কারণে বীথির সাবেক স্বামী মেহেদী তার আত্মীয়-স্বজনসহ পরিচিত ওই এসএসআই সদস্যদের সহায়তায় তালাক হয়ে যাওয়া স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে আসেন। মেহেদীসহ তার লোকজন ওই মেয়ের বাড়ির সামনে থামলে এনএসআই সদস্য নামাজ পড়তে যান। এ সময় মেয়ে পক্ষের লোকজনের বাধায় মেহেদীসহ তার লোকজন পালিয়ে গেলেও নামাজ পড়ে ঘটনাস্থলে ফিরে আসলে ওই এনএসাই সদস্যকে আটক করে মেয়ে পক্ষের লোকজন। পরে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) চুয়াডাঙ্গার উপপরিচালক জি এম জামিল সিদ্দিক জানান, তাঁদের সদস্যকে আটক করা হয়নি। তিনি আরও জানান, এনামুল নামের এনএসআই সদস্যের সঙ্গে মেহেদীর পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরেই মেহেদীর সঙ্গে তিনি গিয়েছিলেন।
আটক এনএসআই সদস্যকে উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ খান জানান, তিনি খবর পেয়ে এনামুল নামে চুয়াডাঙ্গার এক এনএসআই সদস্যকে ঘটনাস্থল থেকে থানা হেফাজতে নিয়ে আসেন। পরে তাঁকে ঊর্ধ্বতন কর্র্তৃপক্ষের কাছে বুঝিয়ে দেন। তিনি আরও বলেন, তালাক হয়ে যাওয়া স্ত্রীকে আনতে এনএসআই সদস্যের এভাবে সঙ্গে যাওয়াটা আইনসম্মত হয়নি।