ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গায় অ্যানথ্রাক্স রোগীর সন্ধান: স্বাস্থ্য বিভাগকে চিঠি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:১১:৪৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ নভেম্বর ২০১৮
  • / ৪২৩ বার পড়া হয়েছে

আফজালুল হকঃ চুয়াডাঙ্গায় অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত একজন রোগী শনাক্ত করেছে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত রোগী জাহা বক্স মন্ডল (৪৫) মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার মানিকদিহি গ্রামের আরশাদ আলীর ছেলে। তিনি ৯দিন আগে গরুর মাংস খাওয়ার পর এ রোগে আক্রান্ত হন বলে জানান তিনি। গত ২৭ নভেম্বর চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তির পর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হয় জাহা বক্স অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়েছেন। এবিষয়ে নিশ্চিত হতে জরুরিভাবে রোগীর গ্রামে বিশেষজ্ঞ মেডিকেল টিম পাঠানোর জন্য স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক বরাবর চিঠি দিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. খায়রুল আলম।
সিভিল সার্জন ডা. খায়রুল আলম জানান, জাহা বক্স নামের এক রোগী গত মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। ওই দিনই আমরা তার রক্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রিপোর্ট আমাদের হাতে এসে পৌঁছে। বিকেলে সিভিল সার্জন ডা. খায়রুল আলমের নেতৃত্বে ডা. আবুল হোসেন ও চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. শফিউজ্জামান সুমনের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। মেডিকেল বোর্ড প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত করে জাহাবক্স অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তাই আমরা পুরোপুরি নিশ্চিত হতে স্বাস্থ্য বিভাগের মহা-পরিচাকলকে অবগত করার জন্য বার্তা পাঠিয়েছি।
এদিকে, জাহাবক্সের স্ত্রী জরিনা খাতুন জানান, ৯দিন আগে গ্রামের আলিহিম নামের এক কসাইয়ের কাছ থেকে গরুর মাংস কিনে আনেন তার স্বামী জাহাবক্স। মাংস খাওয়ার দু’দিন পর তার ঠোঁটে-মুখে ছোট ছোট ফোঁট বের হয়। প্রথমে বিষয়টা আমলে না নিলেও দু’দিন পর তার চোখের পাতা ফুলে যায়। পরে আমরা গত মঙ্গলবার জাহাবক্সকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করি। তিনি আরও জানান, আমাদের এলাকায় আরও কয়েকজন ব্যক্তি এমন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তারা তেমন আমল দিচ্ছে না এবং চিকিৎসাও করাচ্ছেন না।
এ প্রসঙ্গে চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. খায়রুল আলম জানান, অ্যানথ্রাক্স মারাত্মক ক্ষতিকর জীবাণু বহনকারি রোগ। অ্যানথ্রাক্স সাধারণত বন্য এবং গৃহপালিত লতাপাতাভোজী স্তন্যপায়ী প্রাণীদের আক্রান্ত করে। এ সকল প্রাণী ঘাস খাওয়ার সময় বা মাঠের চরার সময় খাওয়ার সাথে বা শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে স্পোর প্রাণীর ভিতরে গিয়ে আক্রান্ত হয়। লতাপাতা বা ঘাস খাওয়ার সময়ই বেশির ভাগ প্রাণী অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়। মাংসাশী প্রাণী একই পরিবেশে বাস করে অথবা আক্রান্ত প্রাণী খাওয়ার ফলে অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়। আক্রান্ত প্রাণীর স্পর্শে বা আক্রান্ত প্রাণীর মাংস খাওয়ার ফলে অ্যানথ্রাক্স মানুষের শরীরেও সরাসরি সংক্রমণ হতে পারে। খুব শিঘ্রই স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে টিম এসে বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করবেন ও রোগীর এলাকা পরিদর্শন করবেন। তারপর নিশ্চিত হওয়া যাবে এটা অ্যানথ্রাক্স কিনা অন্য রোগ।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

চুয়াডাঙ্গায় অ্যানথ্রাক্স রোগীর সন্ধান: স্বাস্থ্য বিভাগকে চিঠি

আপলোড টাইম : ১১:১১:৪৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ নভেম্বর ২০১৮

আফজালুল হকঃ চুয়াডাঙ্গায় অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত একজন রোগী শনাক্ত করেছে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত রোগী জাহা বক্স মন্ডল (৪৫) মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার মানিকদিহি গ্রামের আরশাদ আলীর ছেলে। তিনি ৯দিন আগে গরুর মাংস খাওয়ার পর এ রোগে আক্রান্ত হন বলে জানান তিনি। গত ২৭ নভেম্বর চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তির পর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হয় জাহা বক্স অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়েছেন। এবিষয়ে নিশ্চিত হতে জরুরিভাবে রোগীর গ্রামে বিশেষজ্ঞ মেডিকেল টিম পাঠানোর জন্য স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক বরাবর চিঠি দিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. খায়রুল আলম।
সিভিল সার্জন ডা. খায়রুল আলম জানান, জাহা বক্স নামের এক রোগী গত মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। ওই দিনই আমরা তার রক্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রিপোর্ট আমাদের হাতে এসে পৌঁছে। বিকেলে সিভিল সার্জন ডা. খায়রুল আলমের নেতৃত্বে ডা. আবুল হোসেন ও চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. শফিউজ্জামান সুমনের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। মেডিকেল বোর্ড প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত করে জাহাবক্স অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তাই আমরা পুরোপুরি নিশ্চিত হতে স্বাস্থ্য বিভাগের মহা-পরিচাকলকে অবগত করার জন্য বার্তা পাঠিয়েছি।
এদিকে, জাহাবক্সের স্ত্রী জরিনা খাতুন জানান, ৯দিন আগে গ্রামের আলিহিম নামের এক কসাইয়ের কাছ থেকে গরুর মাংস কিনে আনেন তার স্বামী জাহাবক্স। মাংস খাওয়ার দু’দিন পর তার ঠোঁটে-মুখে ছোট ছোট ফোঁট বের হয়। প্রথমে বিষয়টা আমলে না নিলেও দু’দিন পর তার চোখের পাতা ফুলে যায়। পরে আমরা গত মঙ্গলবার জাহাবক্সকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করি। তিনি আরও জানান, আমাদের এলাকায় আরও কয়েকজন ব্যক্তি এমন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তারা তেমন আমল দিচ্ছে না এবং চিকিৎসাও করাচ্ছেন না।
এ প্রসঙ্গে চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. খায়রুল আলম জানান, অ্যানথ্রাক্স মারাত্মক ক্ষতিকর জীবাণু বহনকারি রোগ। অ্যানথ্রাক্স সাধারণত বন্য এবং গৃহপালিত লতাপাতাভোজী স্তন্যপায়ী প্রাণীদের আক্রান্ত করে। এ সকল প্রাণী ঘাস খাওয়ার সময় বা মাঠের চরার সময় খাওয়ার সাথে বা শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে স্পোর প্রাণীর ভিতরে গিয়ে আক্রান্ত হয়। লতাপাতা বা ঘাস খাওয়ার সময়ই বেশির ভাগ প্রাণী অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়। মাংসাশী প্রাণী একই পরিবেশে বাস করে অথবা আক্রান্ত প্রাণী খাওয়ার ফলে অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়। আক্রান্ত প্রাণীর স্পর্শে বা আক্রান্ত প্রাণীর মাংস খাওয়ার ফলে অ্যানথ্রাক্স মানুষের শরীরেও সরাসরি সংক্রমণ হতে পারে। খুব শিঘ্রই স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে টিম এসে বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করবেন ও রোগীর এলাকা পরিদর্শন করবেন। তারপর নিশ্চিত হওয়া যাবে এটা অ্যানথ্রাক্স কিনা অন্য রোগ।