ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গার স্বর্ণালংকার কারখানার নির্গত বিষাক্ত ধোঁয়ায় দূষিত হচ্ছে পরিবেশ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৫৭:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৮
  • / ৫৪০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের বিভিন্ন স্বর্ণালংকারের কারখানাগুলো থেকে নির্গত হচ্ছে বিষাক্ত ধোঁয়া; আর দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। সরেজমিন দেখা যায়, চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন এলাকাসহ সদর থানার সামনে রয়েছে প্রায় অর্ধধিক স্বর্ণালংকারের শোরুম, দোকান ও কারখানা। এসব কারখানায় স্বর্ণ গলানোর কাজে ব্যবহার করা হয় বিষাক্ত গ্যাস ও এসিড। এসব এসিড তরল অবস্থায় ব্যবহার করা হলেও তা গ্যাস রূপেই নির্গত হচ্ছে। অথচ উন্মুক্তভাবে এ বিষাক্ত গ্যাস নির্গমনে এসব কারখানায় নেই কোন পরিকল্পিত ব্যবস্থা। মাত্র ৫টি কারখানায় ৩০ফিট উচ্চতার ধোঁয়া নির্গমন পাইপ থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় নগন্ন। ফলে একদিকে যেমন এ গ্যাস ছড়িয়ে বাতাসে মিশে জেলা শহরের পরিবেশ হচ্ছে দূষিত অপরদিকে এসব কারখানায় নিয়োজিত শ্রমিকদের উপর পড়ছে বিভিন্ন ক্ষতিকর প্রভাব। তারা আক্রান্ত হচ্ছে ক্যান্সারসহ নানা ধরনের রোগে।
হাতে গোনা কয়েকটি স্বর্ণালংকার কারখানাতে যদিও পাইপ লাইনের সাহায্যে ধোয়া ও গ্যাস নির্গমনের জন্য ব্যবস্থা রাখা হয়েছে কিন্তু কম উচ্চতায় এবং শহরের প্রাণকেন্দ্রে হওয়ায় চুয়াডাঙ্গার আবহাওয়ায় সেগুলোর ক্ষতিকর প্রভাব বরং আরও বেশি পড়ছে বলে ধারণা স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের। পাইপ লাইনগুলো দিয়ে কারখানাগুলোর নির্গত ধোয়ায় সকাল-বিকাল বিশেষ করে সন্ধ্যার পর এই এলাকার অধিকাংশ আকাশ ধোয়াচ্ছন্ন দেখা যায়। তাছাড়া এ উন্মুক্ত পাইপগুলোর পাশেই বেশকটি উঁচু বাসভবন থাকায় পাইপের নির্গত ধোঁয়া সরাসরি ভবনের দরজা-জানালা দিয়ে প্রবেশ করছে বলে অভিযোগ ভবনগুলোর বাসিন্দাদের।
কারখানার পাশে অবস্থিত এমনই একটি ভবনের এক বাসিন্দা জানান, সারাদিনতো বটেই সন্ধ্যার পর থেকে রাত পর্যন্ত কারখানা এ পাইপগুলো থেকে নির্গত ধোয়ায় ভবনের প্রায় প্রত্যেকটি কক্ষ অন্ধকার হয়ে যায়, আর এ ধোয়ার সংস্পর্শে সবারই চোখ জ্বালা-পোড়া করে সারাক্ষণ; এমনকি চোখ দিয়ে পানি ঝরতে থাকে।
ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. আলী হোসেনের সাথে কথা বলে জানা যায়, এই প্রকার এসিড মিশ্রিত ধোঁয়া মানুষের ফুসফুসের জন্য বেশ ক্ষতিকর এবং অনেক ক্ষেত্রে ক্যান্সার সৃষ্টির জন্যও দায়ী এই বিষাক্ত গ্যাস। তাই তিনি এধরনের গ্যাস বায়ুমন্ডলে যাতে না ছড়ায় তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি বলে জানান।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. শেখ সাদী জানান, এখানে একসাথে প্রায় ৬২টি স্বর্ণলঙ্কারের দোকান/কারখানা রয়েছে। যেগুলোর মধ্যে মাত্র ৫টিতে এসিড ও গ্যাসের মাধ্যমে গহণায় রং ও পালিশ করা হয়। ধোঁয়া নির্গমণের জন্য সবকটি কারখানায় ৩০ ফিট উচ্চতার পাইপ রয়েছে। এর চাইতে বেশি উচ্চতার পাইপ লাগালে তা ধমকা হাওয়ায় ভেঙে পড়ে। তবে এ সমস্যা নিরসনে নতুন পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

চুয়াডাঙ্গার স্বর্ণালংকার কারখানার নির্গত বিষাক্ত ধোঁয়ায় দূষিত হচ্ছে পরিবেশ

আপলোড টাইম : ১০:৫৭:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৮

নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের বিভিন্ন স্বর্ণালংকারের কারখানাগুলো থেকে নির্গত হচ্ছে বিষাক্ত ধোঁয়া; আর দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। সরেজমিন দেখা যায়, চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন এলাকাসহ সদর থানার সামনে রয়েছে প্রায় অর্ধধিক স্বর্ণালংকারের শোরুম, দোকান ও কারখানা। এসব কারখানায় স্বর্ণ গলানোর কাজে ব্যবহার করা হয় বিষাক্ত গ্যাস ও এসিড। এসব এসিড তরল অবস্থায় ব্যবহার করা হলেও তা গ্যাস রূপেই নির্গত হচ্ছে। অথচ উন্মুক্তভাবে এ বিষাক্ত গ্যাস নির্গমনে এসব কারখানায় নেই কোন পরিকল্পিত ব্যবস্থা। মাত্র ৫টি কারখানায় ৩০ফিট উচ্চতার ধোঁয়া নির্গমন পাইপ থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় নগন্ন। ফলে একদিকে যেমন এ গ্যাস ছড়িয়ে বাতাসে মিশে জেলা শহরের পরিবেশ হচ্ছে দূষিত অপরদিকে এসব কারখানায় নিয়োজিত শ্রমিকদের উপর পড়ছে বিভিন্ন ক্ষতিকর প্রভাব। তারা আক্রান্ত হচ্ছে ক্যান্সারসহ নানা ধরনের রোগে।
হাতে গোনা কয়েকটি স্বর্ণালংকার কারখানাতে যদিও পাইপ লাইনের সাহায্যে ধোয়া ও গ্যাস নির্গমনের জন্য ব্যবস্থা রাখা হয়েছে কিন্তু কম উচ্চতায় এবং শহরের প্রাণকেন্দ্রে হওয়ায় চুয়াডাঙ্গার আবহাওয়ায় সেগুলোর ক্ষতিকর প্রভাব বরং আরও বেশি পড়ছে বলে ধারণা স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের। পাইপ লাইনগুলো দিয়ে কারখানাগুলোর নির্গত ধোয়ায় সকাল-বিকাল বিশেষ করে সন্ধ্যার পর এই এলাকার অধিকাংশ আকাশ ধোয়াচ্ছন্ন দেখা যায়। তাছাড়া এ উন্মুক্ত পাইপগুলোর পাশেই বেশকটি উঁচু বাসভবন থাকায় পাইপের নির্গত ধোঁয়া সরাসরি ভবনের দরজা-জানালা দিয়ে প্রবেশ করছে বলে অভিযোগ ভবনগুলোর বাসিন্দাদের।
কারখানার পাশে অবস্থিত এমনই একটি ভবনের এক বাসিন্দা জানান, সারাদিনতো বটেই সন্ধ্যার পর থেকে রাত পর্যন্ত কারখানা এ পাইপগুলো থেকে নির্গত ধোয়ায় ভবনের প্রায় প্রত্যেকটি কক্ষ অন্ধকার হয়ে যায়, আর এ ধোয়ার সংস্পর্শে সবারই চোখ জ্বালা-পোড়া করে সারাক্ষণ; এমনকি চোখ দিয়ে পানি ঝরতে থাকে।
ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. আলী হোসেনের সাথে কথা বলে জানা যায়, এই প্রকার এসিড মিশ্রিত ধোঁয়া মানুষের ফুসফুসের জন্য বেশ ক্ষতিকর এবং অনেক ক্ষেত্রে ক্যান্সার সৃষ্টির জন্যও দায়ী এই বিষাক্ত গ্যাস। তাই তিনি এধরনের গ্যাস বায়ুমন্ডলে যাতে না ছড়ায় তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি বলে জানান।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. শেখ সাদী জানান, এখানে একসাথে প্রায় ৬২টি স্বর্ণলঙ্কারের দোকান/কারখানা রয়েছে। যেগুলোর মধ্যে মাত্র ৫টিতে এসিড ও গ্যাসের মাধ্যমে গহণায় রং ও পালিশ করা হয়। ধোঁয়া নির্গমণের জন্য সবকটি কারখানায় ৩০ ফিট উচ্চতার পাইপ রয়েছে। এর চাইতে বেশি উচ্চতার পাইপ লাগালে তা ধমকা হাওয়ায় ভেঙে পড়ে। তবে এ সমস্যা নিরসনে নতুন পরিকল্পনা করা হচ্ছে।