ইপেপার । আজমঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গায় অটো বাইক মালিক-শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৭:৩১:০৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গায় অটো বাইক মালিক-শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির ডাকা ধর্মঘট শুরু হয়েছে। গতকাল রোববার থেকে তাদের এই ধর্মঘট শুরু হয়। ফলে গতকাল সারাদিনই অটো ইজিবাইক শূন্য ছিল চুয়াডাঙ্গার সকল সড়ক। যানজটমুক্ত ছিল গোটা শহর। তবে সারাদিন ইজিবাইক বন্ধ থাকায় কিছুটা ভোগান্তির মুখে পড়লেও তেমন প্রভাব পড়েনি যাত্রী সাধারণের মধ্যে।
গতকাল রোববার শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, শহরের বিভিন্ন এলাকায় যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ইজিবাইক একদম শূন্য। ফলে শহরের প্রাণকেন্দ্র শহীদ হাসান চত্বরের চেহারাও ছিল পুরোপুরি ভিন্ন। কোথাও নেই কোনো যানজট। নেই ইজিবাইকের পার্কিং কিংবা যেখানে সেখানে যাত্রী নামানো-ওঠানোর দৃশ্য। অনেকেই জানিয়েছেন, ইজিবাইক না থাকায় শহর আজ শান্তিপূর্ণ এবং যানজটমুক্ত। তবে শহরের অভ্যন্তরীণ পথে যাতায়াতকারী লোকজন পড়েছেন খানিক ভোগান্তিতে। অনেকেই ইজিবাইকের পরিবর্তে ভ্যানে যাতায়াত করেছেন। এতে গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। বাসের ছাদের ওপরে ওভারলোডে বসে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে অনেক মানুষকে। খালি ট্রাকেও উঠেছেন বহু যাত্রী। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়তে দেখা গেছে অনার্স প্রথম বর্ষের পরীক্ষার্থীদের। তারা পরীক্ষা কেন্দ্রে আসতে গিয়ে যানবাহন না পেয়ে পড়েন চরম দুর্ভোগে। অনেককে পায়ে হেঁটে আসতে দেখা গেছে পরীক্ষা কেন্দ্রে। যানবাহন সংকটের এ সুযোগে কিছু রিকশা চালকও হাকিয়ে বসেন কয়েকগুণ বেশি ভাড়া। বেশ ক’জন মোটরসাইকেল চালককেও এই সুযোগ বুঝে শহরে ভাড়া মারতে দেখা গেছে।
বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাসুদুর রহমান জানান, ইজিবাইক না থাকায় কিছুটা ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। তবে শহরে একদমই যানজট ছিল না। তাই হেঁটেই কাজ সারতে পেরেছি। পরীক্ষার্থী সোহানুর রহমান বলেন, ‘কোন সিস্টেমে যাচ্ছি আমরা। মন চাইল আর হঠাৎ করেই ধর্মঘট ডেকে বসলাম। এটি কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না।’ আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাংবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রহমান জানান, ‘জরুরি কাজে সকালে জেলা শহরে এসেছি। ইজিবাইক চলবে না জানলে আজ আসতাম না। বাড়ি ফিরতেও কষ্ট হবে।’ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে আসা এক রোগীর স্বজন সাইদুর রহমান বলেন, ‘সড়কে ইজিবাইক নেই। তাই বাধ্য হয়েই খোলা ভ্যানে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এ জন্য হাসপাতাল থেকে কোর্ট মোড় পর্যন্ত ৪০ টাকা ভাড়া গুণতে হচ্ছে। অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে।’
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গায় অটো বাইক মালিক-শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম সাজু বলেন, ‘আমাদের ৪ দফা দাবি পরিস্কার। এই দাবি আদায়ে আমরা ধর্মঘট পালন করছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য এ ধর্মঘট চলতে থাকবে।’ চার দফা দাবিসমূহ হলো- বাস মালিক সমিতির লাঠিয়াল বাহিনী রাস্তা থেকে প্রত্যাহার করতে হবে, শহরের মধ্যে বাসস্ট্যান্ড প্রত্যাহার করতে হবে, বাস টার্মিনাল থেকে বাস ছাড়তে হবে এবং পৌরসভার পৌর এলাকার মধ্যেই অটো বাইকের নম্বর দিতে হবে, জেলা ট্রাফিক পুলিশের অটো বাইকের প্রতি জরিমানা আদায় প্রত্যাহার করতে হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

চুয়াডাঙ্গায় অটো বাইক মালিক-শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট

আপলোড টাইম : ০৭:৩১:০৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গায় অটো বাইক মালিক-শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির ডাকা ধর্মঘট শুরু হয়েছে। গতকাল রোববার থেকে তাদের এই ধর্মঘট শুরু হয়। ফলে গতকাল সারাদিনই অটো ইজিবাইক শূন্য ছিল চুয়াডাঙ্গার সকল সড়ক। যানজটমুক্ত ছিল গোটা শহর। তবে সারাদিন ইজিবাইক বন্ধ থাকায় কিছুটা ভোগান্তির মুখে পড়লেও তেমন প্রভাব পড়েনি যাত্রী সাধারণের মধ্যে।
গতকাল রোববার শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, শহরের বিভিন্ন এলাকায় যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ইজিবাইক একদম শূন্য। ফলে শহরের প্রাণকেন্দ্র শহীদ হাসান চত্বরের চেহারাও ছিল পুরোপুরি ভিন্ন। কোথাও নেই কোনো যানজট। নেই ইজিবাইকের পার্কিং কিংবা যেখানে সেখানে যাত্রী নামানো-ওঠানোর দৃশ্য। অনেকেই জানিয়েছেন, ইজিবাইক না থাকায় শহর আজ শান্তিপূর্ণ এবং যানজটমুক্ত। তবে শহরের অভ্যন্তরীণ পথে যাতায়াতকারী লোকজন পড়েছেন খানিক ভোগান্তিতে। অনেকেই ইজিবাইকের পরিবর্তে ভ্যানে যাতায়াত করেছেন। এতে গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। বাসের ছাদের ওপরে ওভারলোডে বসে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে অনেক মানুষকে। খালি ট্রাকেও উঠেছেন বহু যাত্রী। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়তে দেখা গেছে অনার্স প্রথম বর্ষের পরীক্ষার্থীদের। তারা পরীক্ষা কেন্দ্রে আসতে গিয়ে যানবাহন না পেয়ে পড়েন চরম দুর্ভোগে। অনেককে পায়ে হেঁটে আসতে দেখা গেছে পরীক্ষা কেন্দ্রে। যানবাহন সংকটের এ সুযোগে কিছু রিকশা চালকও হাকিয়ে বসেন কয়েকগুণ বেশি ভাড়া। বেশ ক’জন মোটরসাইকেল চালককেও এই সুযোগ বুঝে শহরে ভাড়া মারতে দেখা গেছে।
বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাসুদুর রহমান জানান, ইজিবাইক না থাকায় কিছুটা ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। তবে শহরে একদমই যানজট ছিল না। তাই হেঁটেই কাজ সারতে পেরেছি। পরীক্ষার্থী সোহানুর রহমান বলেন, ‘কোন সিস্টেমে যাচ্ছি আমরা। মন চাইল আর হঠাৎ করেই ধর্মঘট ডেকে বসলাম। এটি কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না।’ আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাংবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রহমান জানান, ‘জরুরি কাজে সকালে জেলা শহরে এসেছি। ইজিবাইক চলবে না জানলে আজ আসতাম না। বাড়ি ফিরতেও কষ্ট হবে।’ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে আসা এক রোগীর স্বজন সাইদুর রহমান বলেন, ‘সড়কে ইজিবাইক নেই। তাই বাধ্য হয়েই খোলা ভ্যানে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এ জন্য হাসপাতাল থেকে কোর্ট মোড় পর্যন্ত ৪০ টাকা ভাড়া গুণতে হচ্ছে। অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে।’
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গায় অটো বাইক মালিক-শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম সাজু বলেন, ‘আমাদের ৪ দফা দাবি পরিস্কার। এই দাবি আদায়ে আমরা ধর্মঘট পালন করছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য এ ধর্মঘট চলতে থাকবে।’ চার দফা দাবিসমূহ হলো- বাস মালিক সমিতির লাঠিয়াল বাহিনী রাস্তা থেকে প্রত্যাহার করতে হবে, শহরের মধ্যে বাসস্ট্যান্ড প্রত্যাহার করতে হবে, বাস টার্মিনাল থেকে বাস ছাড়তে হবে এবং পৌরসভার পৌর এলাকার মধ্যেই অটো বাইকের নম্বর দিতে হবে, জেলা ট্রাফিক পুলিশের অটো বাইকের প্রতি জরিমানা আদায় প্রত্যাহার করতে হবে।