ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

চিকিৎসক নিয়োগে গড়িমসি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:২৬:২৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ জুলাই ২০১৯
  • / ২০৮ বার পড়া হয়েছে

আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করা হোক অবিলম্বে
চিকিৎসক সংকটের এ দেশে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে দু’বছরেও ১০ হাজার ডাক্তার নিয়োগের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না হওয়ার বিষয়টি দুর্ভাগ্যজনক। এর ফলে দেশবাসীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা সরকারের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে। তাছাড়া হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়বেন নিয়োগবঞ্চিত চিকিৎসকরা। জানা যায়, ২০১৭ সালের ৫ জুন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ১০ হাজার চিকিৎসক নিয়োগের প্রস্তাব পেশ করে প্রধানমন্ত্রী বরাবর। এতে বলা হয়, ১৯৮২ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত নিয়োগকৃত অনেক চিকিৎসক ইতিমধ্যে চাকরি থেকে অবসরগ্রহণ করেছেন এবং ২০১৯ সালের মধ্যে সবাই অবসরে যাবেন। ফলে বিদ্যমান চিকিৎসক সংকট তীব্রতর হবে এবং চিকিৎসাসেবা মারাত্মক ব্যাহত হবে। তাই স্বল্প সময়ের মধ্যে ১০ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া প্রয়োজন। মন্ত্রণালয়ের এ প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী স্বাক্ষর করেন ২০১৭ সালের ২১ জুন। অর্থাৎ চিকিৎসক নিয়োগের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর একটি নির্দেশনাও বটে। এ নির্দেশনার পর সরকারি কর্মকমিশনের মাধ্যমে চিকিৎসক নিয়োগ পরীক্ষাও অনুষ্ঠিত হয়। অথচ আজও বাস্তবায়ন হয়নি সেই ১০ হাজার চিকিৎসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত- এ কেমন কথা! চিকিৎসা মানুষের অন্যতম মৌলিক অধিকার। সাড়ে ১৬ কোটি জনসংখ্যার এ দেশে জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজন বিপুলসংখ্যক চিকিৎসক। সময়মতো তাদের নিয়োগ দেয়া না হলে এর নিশ্চিত নেতিবাচক প্রভাব পড়বে জনস্বাস্থ্যে। নীতিনির্ধারকদের এটি অনুধাবন করা উচিত। জনসাধারণের চিকিৎসাসেবার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় পড়া কোনোমতেই কাম্য নয়। এ দেশে সাধারণ মানুষের চিকিৎসার জন্য সরকারি চিকিৎসকরাই ভরসা। বিপুল অর্থ ব্যয়ে বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করার সুযোগ অধিকাংশ মানুষের নেই। তাই সরকারি চিকিৎসক নিয়োগ নিয়ে গড়িমসির সুযোগ নেই। তাছাড়া ৮ হাজার ৩৬০ জন বিসিএস উত্তীর্ণ চিকিৎসক সরকারি সেবাদানের নিশ্চয়তা পাওয়ার জন্য বেশ কিছুদিন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে ছোটাছুটি করেছেন। মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তারপরও থেমে আছে তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া। এ অবস্থায় তাদের অনেকেই হতাশাগ্রস্ত হয়ে হয় বিদেশে পাড়ি জমাবেন, নয়তো দেশে অন্য পেশায় নিয়োজিত হবেন। অথচ একেকজন চিকিৎসক তৈরির পেছনে ব্যয় হয় বিপুল অঙ্কের টাকা। বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরও সরকার যদি তাদের চাকরির নিশ্চয়তা দিতে না পারে তাহলে মেধাবীরা চিকিৎসা শিক্ষায় উৎসাহ হারাবেন, এটাই স্বাভাবিক। তাই সরকারের উচিত অবিলম্বে এদিকে দৃষ্টি দেয়া।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

চিকিৎসক নিয়োগে গড়িমসি

আপলোড টাইম : ১০:২৬:২৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ জুলাই ২০১৯

আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করা হোক অবিলম্বে
চিকিৎসক সংকটের এ দেশে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে দু’বছরেও ১০ হাজার ডাক্তার নিয়োগের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না হওয়ার বিষয়টি দুর্ভাগ্যজনক। এর ফলে দেশবাসীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা সরকারের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে। তাছাড়া হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়বেন নিয়োগবঞ্চিত চিকিৎসকরা। জানা যায়, ২০১৭ সালের ৫ জুন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ১০ হাজার চিকিৎসক নিয়োগের প্রস্তাব পেশ করে প্রধানমন্ত্রী বরাবর। এতে বলা হয়, ১৯৮২ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত নিয়োগকৃত অনেক চিকিৎসক ইতিমধ্যে চাকরি থেকে অবসরগ্রহণ করেছেন এবং ২০১৯ সালের মধ্যে সবাই অবসরে যাবেন। ফলে বিদ্যমান চিকিৎসক সংকট তীব্রতর হবে এবং চিকিৎসাসেবা মারাত্মক ব্যাহত হবে। তাই স্বল্প সময়ের মধ্যে ১০ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া প্রয়োজন। মন্ত্রণালয়ের এ প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী স্বাক্ষর করেন ২০১৭ সালের ২১ জুন। অর্থাৎ চিকিৎসক নিয়োগের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর একটি নির্দেশনাও বটে। এ নির্দেশনার পর সরকারি কর্মকমিশনের মাধ্যমে চিকিৎসক নিয়োগ পরীক্ষাও অনুষ্ঠিত হয়। অথচ আজও বাস্তবায়ন হয়নি সেই ১০ হাজার চিকিৎসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত- এ কেমন কথা! চিকিৎসা মানুষের অন্যতম মৌলিক অধিকার। সাড়ে ১৬ কোটি জনসংখ্যার এ দেশে জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজন বিপুলসংখ্যক চিকিৎসক। সময়মতো তাদের নিয়োগ দেয়া না হলে এর নিশ্চিত নেতিবাচক প্রভাব পড়বে জনস্বাস্থ্যে। নীতিনির্ধারকদের এটি অনুধাবন করা উচিত। জনসাধারণের চিকিৎসাসেবার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় পড়া কোনোমতেই কাম্য নয়। এ দেশে সাধারণ মানুষের চিকিৎসার জন্য সরকারি চিকিৎসকরাই ভরসা। বিপুল অর্থ ব্যয়ে বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করার সুযোগ অধিকাংশ মানুষের নেই। তাই সরকারি চিকিৎসক নিয়োগ নিয়ে গড়িমসির সুযোগ নেই। তাছাড়া ৮ হাজার ৩৬০ জন বিসিএস উত্তীর্ণ চিকিৎসক সরকারি সেবাদানের নিশ্চয়তা পাওয়ার জন্য বেশ কিছুদিন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে ছোটাছুটি করেছেন। মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তারপরও থেমে আছে তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া। এ অবস্থায় তাদের অনেকেই হতাশাগ্রস্ত হয়ে হয় বিদেশে পাড়ি জমাবেন, নয়তো দেশে অন্য পেশায় নিয়োজিত হবেন। অথচ একেকজন চিকিৎসক তৈরির পেছনে ব্যয় হয় বিপুল অঙ্কের টাকা। বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরও সরকার যদি তাদের চাকরির নিশ্চয়তা দিতে না পারে তাহলে মেধাবীরা চিকিৎসা শিক্ষায় উৎসাহ হারাবেন, এটাই স্বাভাবিক। তাই সরকারের উচিত অবিলম্বে এদিকে দৃষ্টি দেয়া।