ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

চালের বাজারে সিন্ডিকেট

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:১৯:০৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • / ২৮ বার পড়া হয়েছে

কিছুতেই স্থিতিশীল রাখা যাচ্ছে না চালের বাজার। সরকারের পক্ষ থেকে মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরিচালিত হচ্ছে মোবাইল কোর্ট। জেল-জরিমানা হচ্ছে অনেক ব্যবসায়ীর। এর পরও বার বার অস্থির হয়ে উঠছে চালের বাজার। একবার দাম বাড়লে আর কমছে না কোনভাবেই। প্রচার মাধ্যম তথ্য-উপাত্ত দিয়ে এই অস্থিরতার পেছনে সিন্ডিকেট রয়েছে বলে খবর প্রকাশ করছে। গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টেও তাই বলা হয়েছে। এরপরও নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না সিন্ডিকেটের কারসাজি। সর্বশেষ গত শুক্রবার পত্রিকায় রিপোর্ট এসেছে, একটি গোয়েন্দা সংস্থা চালের বাজার অস্থির করার পেছনে জড়িতদের চিহ্নিত করে রিপোর্ট দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। রিপোর্টে কয়েকজন ব্যবসায়ীর নাম উল্লেখ করে বলা হয়েছে, তদন্তে বারবার এসব ব্যক্তির নামই উঠে আসছে। প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না। চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে গঠিত বিভিন্ন কমিটির কার্যক্রম ও মনিটরিং ব্যবস্থা আরও গতিশীল করার সুপারিশ করেছে সংস্থাটি।
দেশে চালের ঘাটতি নেই। বিগত বোরো ও আউশের মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। মাঠে রয়েছে আমন। বন্যা বা প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে আমনেও ভাল ফলনের আশা করা হচ্ছে। চালু রয়েছে ওএমএস কর্যক্রম। এর পরও অস্থির হয়ে উঠেছে চালের বাজার। বর্তমানে খুচরা বাজারে প্রতিকেজি মোটা চালের দাম ৫২ টাকা, যা গত কয়েক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। চিকন চালের দাম আরও বেশি। এই দাম বৃদ্ধির পেছনে কোন যুক্তি নেই। নানা অজুহাতে চালের দাম বৃদ্ধি পায়। অজুহাতগুলোর মধ্যে থাকে বন্যা, খরাসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ। যখন কোন কিছুই থাকে না তখন পাইকারি ব্যবসায়ীরা দাম বৃদ্ধির দায় চাপান মিল মালিকদের ওপর। মিল মালিকরা বলেন, বাজারে ধানের সরবরাহ কম, তাই দাম বেশি। ব্যবসায়ীরা এসব কারণ দেখালেও বাজারের চালের সরবরাহে কোন ঘাটতি দেখা যায় না। আবার ভরা মৌসুম এলে বাজারে ধানের সরবরাহ বাড়ে, দামও কমে। চালের দাম কমার ইতিহাস রয়েছে খুব কম। বিষয়গুলো খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী- সবার কাছেই স্পষ্ট। বাস্তবে কোন ব্যবস্থাই কার্যকর হচ্ছে না। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দেয়া গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে মনিটরিং ব্যবস্থা খুব দুর্বল। এই দুর্বলতার সুযোগে অসাধু চাল ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফার আশায় সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। চালের দাম স্থিতিশীল রাখতে সরকার গৃহীত বিদ্যমান ব্যবস্থাগুলোকে গতিশীল করার সুপারিশ করা হয় রিপোর্টে। এতে আরও বলা হয়, মিল মালিক, আড়তদার, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা কোনভাবেই যেন সিন্ডিকেট গঠন করতে না পারেন, সেদিকে নিয়মিত নজরদারি বাড়াতে হবে। কৃষকের উৎপাদন খরচের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে চালের দাম নির্ধারণ করে দিয়ে কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। কোন্ পর্যায় থেকে চালের দাম বৃদ্ধি শুরু হয় তা নির্ধারণ করে ব্যবস্থা নিতে হবে দ্রুত। বিশ্বের কোন দেশে চালের বাজারের এমন অস্থিরতা দেখা যায় না। উন্নত দেশগুলোতে সহজে খাদ্যশস্যের দাম ওঠা-নামা করতে দেখা যায় না। তাহলে বাংলাদেশে কেন এমন হয়, এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে দ্রুত এর সমাধান বের করতে হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

চালের বাজারে সিন্ডিকেট

আপলোড টাইম : ১১:১৯:০৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১

কিছুতেই স্থিতিশীল রাখা যাচ্ছে না চালের বাজার। সরকারের পক্ষ থেকে মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরিচালিত হচ্ছে মোবাইল কোর্ট। জেল-জরিমানা হচ্ছে অনেক ব্যবসায়ীর। এর পরও বার বার অস্থির হয়ে উঠছে চালের বাজার। একবার দাম বাড়লে আর কমছে না কোনভাবেই। প্রচার মাধ্যম তথ্য-উপাত্ত দিয়ে এই অস্থিরতার পেছনে সিন্ডিকেট রয়েছে বলে খবর প্রকাশ করছে। গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টেও তাই বলা হয়েছে। এরপরও নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না সিন্ডিকেটের কারসাজি। সর্বশেষ গত শুক্রবার পত্রিকায় রিপোর্ট এসেছে, একটি গোয়েন্দা সংস্থা চালের বাজার অস্থির করার পেছনে জড়িতদের চিহ্নিত করে রিপোর্ট দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। রিপোর্টে কয়েকজন ব্যবসায়ীর নাম উল্লেখ করে বলা হয়েছে, তদন্তে বারবার এসব ব্যক্তির নামই উঠে আসছে। প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না। চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে গঠিত বিভিন্ন কমিটির কার্যক্রম ও মনিটরিং ব্যবস্থা আরও গতিশীল করার সুপারিশ করেছে সংস্থাটি।
দেশে চালের ঘাটতি নেই। বিগত বোরো ও আউশের মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। মাঠে রয়েছে আমন। বন্যা বা প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে আমনেও ভাল ফলনের আশা করা হচ্ছে। চালু রয়েছে ওএমএস কর্যক্রম। এর পরও অস্থির হয়ে উঠেছে চালের বাজার। বর্তমানে খুচরা বাজারে প্রতিকেজি মোটা চালের দাম ৫২ টাকা, যা গত কয়েক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। চিকন চালের দাম আরও বেশি। এই দাম বৃদ্ধির পেছনে কোন যুক্তি নেই। নানা অজুহাতে চালের দাম বৃদ্ধি পায়। অজুহাতগুলোর মধ্যে থাকে বন্যা, খরাসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ। যখন কোন কিছুই থাকে না তখন পাইকারি ব্যবসায়ীরা দাম বৃদ্ধির দায় চাপান মিল মালিকদের ওপর। মিল মালিকরা বলেন, বাজারে ধানের সরবরাহ কম, তাই দাম বেশি। ব্যবসায়ীরা এসব কারণ দেখালেও বাজারের চালের সরবরাহে কোন ঘাটতি দেখা যায় না। আবার ভরা মৌসুম এলে বাজারে ধানের সরবরাহ বাড়ে, দামও কমে। চালের দাম কমার ইতিহাস রয়েছে খুব কম। বিষয়গুলো খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী- সবার কাছেই স্পষ্ট। বাস্তবে কোন ব্যবস্থাই কার্যকর হচ্ছে না। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দেয়া গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে মনিটরিং ব্যবস্থা খুব দুর্বল। এই দুর্বলতার সুযোগে অসাধু চাল ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফার আশায় সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। চালের দাম স্থিতিশীল রাখতে সরকার গৃহীত বিদ্যমান ব্যবস্থাগুলোকে গতিশীল করার সুপারিশ করা হয় রিপোর্টে। এতে আরও বলা হয়, মিল মালিক, আড়তদার, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা কোনভাবেই যেন সিন্ডিকেট গঠন করতে না পারেন, সেদিকে নিয়মিত নজরদারি বাড়াতে হবে। কৃষকের উৎপাদন খরচের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে চালের দাম নির্ধারণ করে দিয়ে কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। কোন্ পর্যায় থেকে চালের দাম বৃদ্ধি শুরু হয় তা নির্ধারণ করে ব্যবস্থা নিতে হবে দ্রুত। বিশ্বের কোন দেশে চালের বাজারের এমন অস্থিরতা দেখা যায় না। উন্নত দেশগুলোতে সহজে খাদ্যশস্যের দাম ওঠা-নামা করতে দেখা যায় না। তাহলে বাংলাদেশে কেন এমন হয়, এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে দ্রুত এর সমাধান বের করতে হবে।