ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

গ্লিটার নিষিদ্ধের দাবি বিজ্ঞানীদের

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৫৬:০১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ ডিসেম্বর ২০১৭
  • / ৭১৮ বার পড়া হয়েছে

প্রযুক্তি ডেস্ক: নিজেকে চটজলদি ঝলমলে করে সাজাতে গ্লিটার মেকআপের জুড়ি নেই। আকর্ষণীয় সাজের জন্য গ্লিটারের ব্যবহার সম্প্রতি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে ত্বক থেকে গ্লিটার পুরোপুরি পরিষ্কার সহজ ব্যাপার নয়, এটি ত্বকে লেগে থাকে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা গ্লিটারের আরো ভয়াবহ দিক উন্মোচন করেছেন। এই ক্ষুদ্র কণাগুলো প্লাস্টিকের দূষণের ক্রমবর্ধমান সমস্যায় অবদান রাখছে এবং গবেষকরা মেকআপের এই উপকরণটি নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন। প্যাকেজিং, বোতল এবং খাবার পাত্রকে প্লাস্টিক বর্জ্যের প্রধান অপরাধী হিসেবে প্রায়ই দায়ী করা হয়, এবার এই তালিকায় যোগ করা হচ্ছে গ্লিটারকে। মাইক্রোপ্লাস্টিক বিশেষ করে মাইক্রোবেডগুলো সাম্প্রতিক সময়ে খবরের শিরোনাম হয়েছে সাগরে বর্জ্য বৃদ্ধির কারণে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, গ্লিটারের মাইক্রোপ্লাস্টিকগুলো যা মাত্র ০.২ ইঞ্চি (৫মিমি) আকৃতির, এগুলোকে সমুদ্রের অতিক্ষুদ্র জীব প্ল্যাঙ্কটন খাবার হিসেবে গ্রহণ করছে। সমুদ্রের বাস্তসংস্থানের একেবারে ক্ষুদ্র একক প্লাস্টিক খেতে শুরু করায় এর প্রভাব অনতিবিলম্বেই গোটা বাস্তু সংস্থানের ওপর পরবে। কারণ এই প্লাঙ্কটনগুলোকে আবার খাবার হিসেবে গ্রহণ করছে অন্য প্রাণীরা। এভাবে বাস্তসংস্থানের এক পর্যায়ে প্লাস্টিক দ্বারা পুরো সামুদ্রিক প্রাণীকূলই আক্রান্ত হয়ে যাচ্ছে। আর এভাবে দীর্ঘসময় চললে সমুদ্রের অনেক প্রাণীই চিরতরে বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। নিউজিল্যান্ডের ম্যাসি ইউনিভার্সিটির এনভায়রনমেন্টাল অ্যানথ্রোপলজিস্ট ড. ত্রিশিয়া ফারেলি যুক্তরাজ্যের ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি মনে করি সকল ধরনের গ্লিটার নিষিদ্ধ করা উচিত। কারণ এটি মাইক্রোপ্লাস্টিক।’ পানির ফিল্টার প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে মাইক্রোপ্লাস্টিক খুবই ছোট এবং ইতিমধ্যে খাবার পানীয়তে এসে মিশছে। যদিও মনে ধরা হচ্ছে, গ্লিটার ইতিমধ্যে আমাদের শরীরে প্রবেশ করছে কিন্তু এটি মানব স্বাস্থ্যের জন্য কেমন ক্ষতিকর হবে সে সম্পর্কে এখনো ধারণা নেই। কিন্তু বিশ্বজুড়ে পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ক্ষতির জন্য গ্লিটারের ভূমিকা যথেষ্ট বড়। মাইক্রোবেডের ব্যাপার সমালোচনা হওয়ায় ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে এটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এবার একই ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে কসমেটিক্স পণ্য এবং মেকআপের চকচকে সাজ গ্লিটারের ওপর। প্রতিবছর টন টন প্লাস্টিক বর্জ্য রিসাইকেলের বাইরে থেকে যায়, যা শেষশেষ তা সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রে গিয়ে মেশে। প্লাস্টিক হাজার হাজার বছরেও ভাঙে না। ধারণা করা হয় যে, ইতিমধ্যে সাগরে লাখ লাখ প্লাস্টিক বর্জ্য রয়েছে এবং প্রতিদিন প্লাস্টিক বর্জ্যের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৬ সালের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী সাগরে প্লাস্টিক আবর্জনার পরিমাণ ২০৫০ সালে মাছের তুলনায় বেশি হবে, যদি প্লাস্টিক রিসাইকেলে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হয়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

গ্লিটার নিষিদ্ধের দাবি বিজ্ঞানীদের

আপলোড টাইম : ১০:৫৬:০১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ ডিসেম্বর ২০১৭

প্রযুক্তি ডেস্ক: নিজেকে চটজলদি ঝলমলে করে সাজাতে গ্লিটার মেকআপের জুড়ি নেই। আকর্ষণীয় সাজের জন্য গ্লিটারের ব্যবহার সম্প্রতি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে ত্বক থেকে গ্লিটার পুরোপুরি পরিষ্কার সহজ ব্যাপার নয়, এটি ত্বকে লেগে থাকে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা গ্লিটারের আরো ভয়াবহ দিক উন্মোচন করেছেন। এই ক্ষুদ্র কণাগুলো প্লাস্টিকের দূষণের ক্রমবর্ধমান সমস্যায় অবদান রাখছে এবং গবেষকরা মেকআপের এই উপকরণটি নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন। প্যাকেজিং, বোতল এবং খাবার পাত্রকে প্লাস্টিক বর্জ্যের প্রধান অপরাধী হিসেবে প্রায়ই দায়ী করা হয়, এবার এই তালিকায় যোগ করা হচ্ছে গ্লিটারকে। মাইক্রোপ্লাস্টিক বিশেষ করে মাইক্রোবেডগুলো সাম্প্রতিক সময়ে খবরের শিরোনাম হয়েছে সাগরে বর্জ্য বৃদ্ধির কারণে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, গ্লিটারের মাইক্রোপ্লাস্টিকগুলো যা মাত্র ০.২ ইঞ্চি (৫মিমি) আকৃতির, এগুলোকে সমুদ্রের অতিক্ষুদ্র জীব প্ল্যাঙ্কটন খাবার হিসেবে গ্রহণ করছে। সমুদ্রের বাস্তসংস্থানের একেবারে ক্ষুদ্র একক প্লাস্টিক খেতে শুরু করায় এর প্রভাব অনতিবিলম্বেই গোটা বাস্তু সংস্থানের ওপর পরবে। কারণ এই প্লাঙ্কটনগুলোকে আবার খাবার হিসেবে গ্রহণ করছে অন্য প্রাণীরা। এভাবে বাস্তসংস্থানের এক পর্যায়ে প্লাস্টিক দ্বারা পুরো সামুদ্রিক প্রাণীকূলই আক্রান্ত হয়ে যাচ্ছে। আর এভাবে দীর্ঘসময় চললে সমুদ্রের অনেক প্রাণীই চিরতরে বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। নিউজিল্যান্ডের ম্যাসি ইউনিভার্সিটির এনভায়রনমেন্টাল অ্যানথ্রোপলজিস্ট ড. ত্রিশিয়া ফারেলি যুক্তরাজ্যের ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি মনে করি সকল ধরনের গ্লিটার নিষিদ্ধ করা উচিত। কারণ এটি মাইক্রোপ্লাস্টিক।’ পানির ফিল্টার প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে মাইক্রোপ্লাস্টিক খুবই ছোট এবং ইতিমধ্যে খাবার পানীয়তে এসে মিশছে। যদিও মনে ধরা হচ্ছে, গ্লিটার ইতিমধ্যে আমাদের শরীরে প্রবেশ করছে কিন্তু এটি মানব স্বাস্থ্যের জন্য কেমন ক্ষতিকর হবে সে সম্পর্কে এখনো ধারণা নেই। কিন্তু বিশ্বজুড়ে পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ক্ষতির জন্য গ্লিটারের ভূমিকা যথেষ্ট বড়। মাইক্রোবেডের ব্যাপার সমালোচনা হওয়ায় ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে এটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এবার একই ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে কসমেটিক্স পণ্য এবং মেকআপের চকচকে সাজ গ্লিটারের ওপর। প্রতিবছর টন টন প্লাস্টিক বর্জ্য রিসাইকেলের বাইরে থেকে যায়, যা শেষশেষ তা সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রে গিয়ে মেশে। প্লাস্টিক হাজার হাজার বছরেও ভাঙে না। ধারণা করা হয় যে, ইতিমধ্যে সাগরে লাখ লাখ প্লাস্টিক বর্জ্য রয়েছে এবং প্রতিদিন প্লাস্টিক বর্জ্যের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৬ সালের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী সাগরে প্লাস্টিক আবর্জনার পরিমাণ ২০৫০ সালে মাছের তুলনায় বেশি হবে, যদি প্লাস্টিক রিসাইকেলে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হয়।