ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ ঘাটতির আশঙ্কা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৪৭:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ মার্চ ২০২৩
  • / ৩ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন:

গ্রীষ্ম মৌসুমে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে না- এমনই আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের। চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হলেই গত বছরের মতো লোডশেডিং হতে পারে। এবার ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত ঘাটতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। এখনো পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও সেচ কাজে বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হলে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত জ¦ালানির জোগান প্রয়োজনের তুলনায় কম হলেই রাজধানীসহ সব শহর এলাকায় লোডশেডিং বেড়ে যেতে পারে। বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ বিভাগ চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। আশা করা হচ্ছে গ্যাস থেকে ৬ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট, ফার্নেস অয়েল থেকে ৫ হাজার মেগাওয়াট, কয়লা থেকে ৩ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট এবং অন্যান্য উৎস থেকে ১ হাজার মেগাওয়াটসহ মোট ১৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারবে। এতেই চাহিদা মিটবে। তবে এ লক্ষ্য পূরণ করতে কিছুটা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। তখন নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ না করতে পারলে সেচ কাজ ব্যাহত হবে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেচ সুবিধা দিতেই হবে। শিল্প খাতেও উৎপাদন ঠিক রাখতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হবে। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত পর্যাপ্ত জ¦ালানির সংস্থান করতে না পারলে লোডশেডিং এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। দেশে এখন বিদ্যুতের সর্বোচ্চ উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে ২৫ হাজার মেগাওয়াট। এবার গ্রীষ্ম মৌসুমে ১৬ হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুতের প্রয়োজন হবে। বর্তমানে ১৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। এখন উৎপাদন বাড়িয়ে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। কিন্তু এতে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে জ্বালানি। বিশ্বব্যাপী ডলার সংকটের কারণে যে অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছে, বাংলাদেশও তার থেকে রেহাই পায়নি। ডলার সংকটের কারণে সময়মতো বিদ্যুৎ উৎপাদনের পর্যাপ্ত জ¦ালানি আমদানি সম্ভব হচ্ছে না। গ্রীষ্ম মৌসুমে জ¦ালানির অভাব হলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ঘাটতি হতে পারে। গত মাসে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটে কয়লা সংকটের কারণে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা আসার পর আবারো উৎপাদন অব্যাহত রাখার চেষ্টা চলছে।

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, চাহিদার সঙ্গে সমন্বয় রেখে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো হচ্ছে। বিদ্যুৎ ঘাটতির আশঙ্কা দেখা দিলে তা সংশ্লিষ্ট বিতরণ কোম্পানিগুলোকে বিকল্প উপায়ে সমাধানের উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কৃষকরা সেচের সময় পিক ও অফপিক আওয়ার মেনে চললে ভালো ফল পাওয়া যাবে। কৃষকদের সার্বিক সমন্বয়ের মাধ্যমে তদারকি জোরদার করেতে পারলে কৃষকরা উপকৃত হবে। বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য জ¦ালানি আমদানি করতে হয়। ডলার সংকটের কারণে কয়লার জন্য সময়মতো এলসি খুলতে না পারায় কয়লার মজুত শেষ হয়ে যায়। আরো বেশ কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লার প্রয়োজন হয়। ডলারের জোগান না থাকলে কয়লার সংকটে এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে উৎপাদন ব্যাহত হবে। নিয়ম অনুযায়ী এক মাসের কয়লা মজুত রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। জ¦ালানি আমদানিতে যেন ডলার সংকট না হয় সেজন্য এবার বিশেষ নজর দেয়া হবে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনার পর পরিকল্পনা করা হয়েছে।

তারা আরো বলেন, আশার কথা হচ্ছে এলএনজি আমদানিও বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। স্পট মার্কেট থেকে ৮ কার্গো এলএনজি কেনার চুক্তি হয়েছে। ইতোমধ্যেই এক কার্গো এলএনজি দেশে এসে পৌঁছেছে। নিয়মিত এলএনজির কার্গো এসে পৌঁছালে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে গ্যাস সরবরাহ অব্যাহত থাকবে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। এছাড়া আগামী ৩০ জুনের মধ্যে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিট উৎপাদনে যাওয়ার কথা রয়েছে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দুটি ইউনিট উৎপাদনে থাকলে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি ভালোই থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। অন্যদিকে শিগগিরই উৎপাদনে আসছে দেশের প্রথম সুপার ক্রিটিক্যাল বিদ্যুৎকেন্দ্র চট্টগ্রামের বাঁশখালির এস আলম গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ‘এসএস পাওয়ার’। ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে প্রথমে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে। এই বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হলে গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি হবে। এই সময়ে এসএস পাওয়ার বিদ্যুৎ বিভাগকে ভালো সহযোগিতা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই মাসে ভারত থেকে আদানির বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সবকিছু ঠিক থাকলে বিদ্যুতের সংকট হবে না।

প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাস থেকে শুরু হয়ে ৩১ মে পর্যন্ত সেচ মৌসুম চলে। এ সময় বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ে। গত সেচ মৌসুমে এপ্রিল মাসে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল ১৪ হাজার ৭৮২ মেগাওয়াট। চলতি বছর সেচ মৌসুমে বিদ্যুতের সম্ভাব্য চাহিদা ১৬ হাজার মেগাওয়াট। চলতি সেচ মৌসুমে মোট সেচ সংযোগের সংখ্যা ৪ লাখ ৬৫ হাজার ৪৫৬। এজন্য ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন হবে।

জ¦ালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম বলেন, সরকার একদিকে তাদের খেয়াল খুশিমতো বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে মানুষের কষ্ট বাড়াচ্ছে। এরপরও যদি গ্রীষ্ম মৌসুমে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে না পারে তা হবে খুবই দুঃখজনক। গ্রীষ্ম মৌসুমে সেচ কাজ পুরোদমে চলে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকলে সেচ কাজ ব্যাহত হয়। আবার শিল্পেও বিদ্যুৎ দিতে হবে। তাই সরকারকে পরিকল্পনা করেই বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়াতে হবে। তা না হলে আবাসিকে লোডশেডিংয়ের শঙ্কা রয়েছে।

পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন বলেন, গ্রীষ্ম মৌসুমে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে নানান পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য জ¦ালানি আমদানি করতে প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান করতে জ¦ালানি বিভাগের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। অর্থের জোগান দেয়ার আশ্বাসও পাওয়া গেছে। এবার গত বছরের মতো লোডশেডিং যেন না হয় সেজন্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের ওপর জোর দেয়া হয়েছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ ঘাটতির আশঙ্কা

আপলোড টাইম : ০৮:৪৭:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ মার্চ ২০২৩

সমীকরণ প্রতিবেদন:

গ্রীষ্ম মৌসুমে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে না- এমনই আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের। চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হলেই গত বছরের মতো লোডশেডিং হতে পারে। এবার ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত ঘাটতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। এখনো পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও সেচ কাজে বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হলে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত জ¦ালানির জোগান প্রয়োজনের তুলনায় কম হলেই রাজধানীসহ সব শহর এলাকায় লোডশেডিং বেড়ে যেতে পারে। বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ বিভাগ চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। আশা করা হচ্ছে গ্যাস থেকে ৬ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট, ফার্নেস অয়েল থেকে ৫ হাজার মেগাওয়াট, কয়লা থেকে ৩ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট এবং অন্যান্য উৎস থেকে ১ হাজার মেগাওয়াটসহ মোট ১৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারবে। এতেই চাহিদা মিটবে। তবে এ লক্ষ্য পূরণ করতে কিছুটা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। তখন নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ না করতে পারলে সেচ কাজ ব্যাহত হবে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেচ সুবিধা দিতেই হবে। শিল্প খাতেও উৎপাদন ঠিক রাখতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হবে। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত পর্যাপ্ত জ¦ালানির সংস্থান করতে না পারলে লোডশেডিং এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। দেশে এখন বিদ্যুতের সর্বোচ্চ উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে ২৫ হাজার মেগাওয়াট। এবার গ্রীষ্ম মৌসুমে ১৬ হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুতের প্রয়োজন হবে। বর্তমানে ১৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। এখন উৎপাদন বাড়িয়ে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। কিন্তু এতে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে জ্বালানি। বিশ্বব্যাপী ডলার সংকটের কারণে যে অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছে, বাংলাদেশও তার থেকে রেহাই পায়নি। ডলার সংকটের কারণে সময়মতো বিদ্যুৎ উৎপাদনের পর্যাপ্ত জ¦ালানি আমদানি সম্ভব হচ্ছে না। গ্রীষ্ম মৌসুমে জ¦ালানির অভাব হলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ঘাটতি হতে পারে। গত মাসে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটে কয়লা সংকটের কারণে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা আসার পর আবারো উৎপাদন অব্যাহত রাখার চেষ্টা চলছে।

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, চাহিদার সঙ্গে সমন্বয় রেখে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো হচ্ছে। বিদ্যুৎ ঘাটতির আশঙ্কা দেখা দিলে তা সংশ্লিষ্ট বিতরণ কোম্পানিগুলোকে বিকল্প উপায়ে সমাধানের উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কৃষকরা সেচের সময় পিক ও অফপিক আওয়ার মেনে চললে ভালো ফল পাওয়া যাবে। কৃষকদের সার্বিক সমন্বয়ের মাধ্যমে তদারকি জোরদার করেতে পারলে কৃষকরা উপকৃত হবে। বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য জ¦ালানি আমদানি করতে হয়। ডলার সংকটের কারণে কয়লার জন্য সময়মতো এলসি খুলতে না পারায় কয়লার মজুত শেষ হয়ে যায়। আরো বেশ কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লার প্রয়োজন হয়। ডলারের জোগান না থাকলে কয়লার সংকটে এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে উৎপাদন ব্যাহত হবে। নিয়ম অনুযায়ী এক মাসের কয়লা মজুত রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। জ¦ালানি আমদানিতে যেন ডলার সংকট না হয় সেজন্য এবার বিশেষ নজর দেয়া হবে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনার পর পরিকল্পনা করা হয়েছে।

তারা আরো বলেন, আশার কথা হচ্ছে এলএনজি আমদানিও বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। স্পট মার্কেট থেকে ৮ কার্গো এলএনজি কেনার চুক্তি হয়েছে। ইতোমধ্যেই এক কার্গো এলএনজি দেশে এসে পৌঁছেছে। নিয়মিত এলএনজির কার্গো এসে পৌঁছালে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে গ্যাস সরবরাহ অব্যাহত থাকবে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। এছাড়া আগামী ৩০ জুনের মধ্যে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিট উৎপাদনে যাওয়ার কথা রয়েছে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দুটি ইউনিট উৎপাদনে থাকলে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি ভালোই থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। অন্যদিকে শিগগিরই উৎপাদনে আসছে দেশের প্রথম সুপার ক্রিটিক্যাল বিদ্যুৎকেন্দ্র চট্টগ্রামের বাঁশখালির এস আলম গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ‘এসএস পাওয়ার’। ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে প্রথমে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে। এই বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হলে গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি হবে। এই সময়ে এসএস পাওয়ার বিদ্যুৎ বিভাগকে ভালো সহযোগিতা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই মাসে ভারত থেকে আদানির বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সবকিছু ঠিক থাকলে বিদ্যুতের সংকট হবে না।

প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাস থেকে শুরু হয়ে ৩১ মে পর্যন্ত সেচ মৌসুম চলে। এ সময় বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ে। গত সেচ মৌসুমে এপ্রিল মাসে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল ১৪ হাজার ৭৮২ মেগাওয়াট। চলতি বছর সেচ মৌসুমে বিদ্যুতের সম্ভাব্য চাহিদা ১৬ হাজার মেগাওয়াট। চলতি সেচ মৌসুমে মোট সেচ সংযোগের সংখ্যা ৪ লাখ ৬৫ হাজার ৪৫৬। এজন্য ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন হবে।

জ¦ালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম বলেন, সরকার একদিকে তাদের খেয়াল খুশিমতো বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে মানুষের কষ্ট বাড়াচ্ছে। এরপরও যদি গ্রীষ্ম মৌসুমে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে না পারে তা হবে খুবই দুঃখজনক। গ্রীষ্ম মৌসুমে সেচ কাজ পুরোদমে চলে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকলে সেচ কাজ ব্যাহত হয়। আবার শিল্পেও বিদ্যুৎ দিতে হবে। তাই সরকারকে পরিকল্পনা করেই বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়াতে হবে। তা না হলে আবাসিকে লোডশেডিংয়ের শঙ্কা রয়েছে।

পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন বলেন, গ্রীষ্ম মৌসুমে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে নানান পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য জ¦ালানি আমদানি করতে প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান করতে জ¦ালানি বিভাগের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। অর্থের জোগান দেয়ার আশ্বাসও পাওয়া গেছে। এবার গত বছরের মতো লোডশেডিং যেন না হয় সেজন্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের ওপর জোর দেয়া হয়েছে।