ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৬:০৭:৪৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭
  • / ৮৬১ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় মাথাভাঙ্গা ও মেহেরপুরের মুজিবনগরে ভৈরব নদীতে

দর্শনা অফিস/মেহেরপুর অফিস: দর্শনায় মাথাভাঙ্গা নদীতে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়েছে। গতকাল দর্শনা প্রত্যয় উন্মুক্ত পাঠাগরের আয়োজনে এবং ওয়েভ ফাউন্ডেশনের সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া কর্মসূচির সহযোগিতায় এ নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রত্যয় উন্মুক্ত পাঠাগারের উপদেষ্টা আয়ুব আলী রাজুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজী আলী আজগার টগর। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক জিয়া উদ্দিন আহম্মেদ, ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নিবার্হী পরিচালক মহাসিন আলী, ওয়েভ ফাউন্ডেশনের উপ-নিবার্হী পরিচালক আনোয়ার হোসেন, পারকৃষ্ণপুর মদনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এসএএম জাকারিয়া আলম, কুড়–লগাছী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ এনামুল কবির ইনু, ঢাকাস্থ দর্শনা পরিবারের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ পিন্টু, দর্শনা পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, পারকৃষ্ণপুর মদনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বরকত আলী। এছাড়া, পারকুষ্ণপুর গ্রামে ইসকাত আলী, শফিউল্লাহ, জিয়াউল হক, উন্মুক্ত পাঠাগারের সভাপতি কিতাব আলী ও সাধারণ সম্পাদক সাকিল হোসেন। এসব অতিথিরা হঠাৎ বিকালের বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে মধ্যে নৌকা বাইচ অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। এছাড়া মাথাভাঙ্গা নদীর দুধারে প্রায় ১২/১৫ হাজার মানুষ এ নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা উপভোগ করেন। দর্শনা এলাকার আশে পাশের ৯টি দল এ নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। এসব দল গুলো চন্ডিপুর একাদশ, সিংনগর একাদশ, কুড়–লগাছী একাদশ, রঘুনাথপুর একাদশ, পারকুষ্ণপুর আধুনিক স্পোটিং ক্লাব, সুলতানপুর একাদশ, পারকৃষ্ণপুর একাদশ, টেন ষ্টার একাদশ ও বিশ্বাস হার্ডওয়্যার একাদশ। এ ৯টি দলের মধ্যে পারকুষ্ণপুর আধুনিক স্পোটিং ক্লাব প্রথম স্থান, চন্ডিপুর একাদশ দ্বিতীয় স্থান ও পারকুষ্ণপুর একাদশ তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে। বিজয়ীদের মধ্যে প্রথম পুরুস্কার ২০ হাজার টাকার চেক তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সাংসদ হাজী আলী আজগার টগর, দ্বিতীয় পুরুস্কার ১৫ হাজার টাকার চেক তুলে দেন জেলা প্রশাসক জিয়া উদ্দিন আহম্মেদ ও তৃতীয় ১০ হাজার টাকার চেক তুলে দেন ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহাসিন আলী। নৌকা বাইচ অনুষ্ঠানের আগে থেকে দর্শনা আনন্দধামের শিল্পীর গানে গানে মাথাভাঙ্গা নদীর ধারে অবস্থিত দর্শকদের মাতিয়ে তোলেন।
এদিকে, মাঝিদের হেঁইয়ো রে হেঁইয়ো শব্দের ছন্দে মেহেরপুরের ভৈরব নদীতে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহি নৌকাবাইচ প্রতিযোগীতা। সোমবার দিনব্যাপি মুজিবনগর উপজেলার পুরন্দরপুর গ্রামবাসির আয়োজনে গৌরিনগর ঘাটে এই প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হয়। ঐতিহ্যবাহি নৌকা নিয়ে এমন প্রতিযোগিতামূলক খেলা দেখে নতুন প্রজন্মের দাবী তারা প্রতিবছর এই খেলার আয়োজন দেখতে চাই। স্বাধীনতার পর জেলার ভৈরব নদীটি এক সময় মরা খালে পরিনত হলে নৌকা বাইচ প্রতিযোগীতা বন্ধ হয়ে পড়ে। ভৈরব নদী পূনঃখনন করার ফলে নতুন প্রজন্মের কাছে হারোনো এই ঐতিহ্য তুলে ধরতে নৌকা-বাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। ভৈরব নদীর দুপাড়ে নৌকা বাইচ দেখতে হাজার হাজার নারী-পুরুষের ঢল নামে। কেউ নৌকা, কেউ বা বোটে করে নৌকা বাইচ উপভোগ করতে আসেন। প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ২০টি নৌকা অংশগ্রহণ করে। আয়োজকরা বলছেন, নৌকা বাইচ গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলা। যুগে যুগে গ্রাম বাংলায় এ নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এ খেলাকে কেন্দ্র করে গ্রাম বাংলার সকল মানুষ একত্রে মিলিত হয়। নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতায় প্রথম হয় গৌরিনগর দল। খেলা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরন করেন মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি আলামিন হোসেন, মহাজনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমাম হোসেন মিলু, দারিয়াপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তাকিন হোসেন খোকন, সাধারন সম্পাদক মাহাবুব আলম রবিসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। আয়োজক কমিটির সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম জানান, নতুন প্রজন্মের কাছে হারানো এই ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে আজকের এই নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করি। প্রতি বছর এই নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে বলে তিনি জানান। মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন বলেন, ঐতিহ্যবাহী এই নৌকা বাইচ খেলা আবারো নতুন প্রজন্মের কাছে ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। যারা এই আয়োজন করছেন তাদের বিভিন্ন সহযোগিতা করা হবে। আর এই ধরনের আয়োজন যাতে প্রতিবছর হয় তার জন্য সব ব্যবস্থা করা হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত

আপলোড টাইম : ০৬:০৭:৪৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭

চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় মাথাভাঙ্গা ও মেহেরপুরের মুজিবনগরে ভৈরব নদীতে

দর্শনা অফিস/মেহেরপুর অফিস: দর্শনায় মাথাভাঙ্গা নদীতে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়েছে। গতকাল দর্শনা প্রত্যয় উন্মুক্ত পাঠাগরের আয়োজনে এবং ওয়েভ ফাউন্ডেশনের সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া কর্মসূচির সহযোগিতায় এ নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রত্যয় উন্মুক্ত পাঠাগারের উপদেষ্টা আয়ুব আলী রাজুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজী আলী আজগার টগর। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক জিয়া উদ্দিন আহম্মেদ, ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নিবার্হী পরিচালক মহাসিন আলী, ওয়েভ ফাউন্ডেশনের উপ-নিবার্হী পরিচালক আনোয়ার হোসেন, পারকৃষ্ণপুর মদনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এসএএম জাকারিয়া আলম, কুড়–লগাছী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ এনামুল কবির ইনু, ঢাকাস্থ দর্শনা পরিবারের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ পিন্টু, দর্শনা পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, পারকৃষ্ণপুর মদনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বরকত আলী। এছাড়া, পারকুষ্ণপুর গ্রামে ইসকাত আলী, শফিউল্লাহ, জিয়াউল হক, উন্মুক্ত পাঠাগারের সভাপতি কিতাব আলী ও সাধারণ সম্পাদক সাকিল হোসেন। এসব অতিথিরা হঠাৎ বিকালের বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে মধ্যে নৌকা বাইচ অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। এছাড়া মাথাভাঙ্গা নদীর দুধারে প্রায় ১২/১৫ হাজার মানুষ এ নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা উপভোগ করেন। দর্শনা এলাকার আশে পাশের ৯টি দল এ নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। এসব দল গুলো চন্ডিপুর একাদশ, সিংনগর একাদশ, কুড়–লগাছী একাদশ, রঘুনাথপুর একাদশ, পারকুষ্ণপুর আধুনিক স্পোটিং ক্লাব, সুলতানপুর একাদশ, পারকৃষ্ণপুর একাদশ, টেন ষ্টার একাদশ ও বিশ্বাস হার্ডওয়্যার একাদশ। এ ৯টি দলের মধ্যে পারকুষ্ণপুর আধুনিক স্পোটিং ক্লাব প্রথম স্থান, চন্ডিপুর একাদশ দ্বিতীয় স্থান ও পারকুষ্ণপুর একাদশ তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে। বিজয়ীদের মধ্যে প্রথম পুরুস্কার ২০ হাজার টাকার চেক তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সাংসদ হাজী আলী আজগার টগর, দ্বিতীয় পুরুস্কার ১৫ হাজার টাকার চেক তুলে দেন জেলা প্রশাসক জিয়া উদ্দিন আহম্মেদ ও তৃতীয় ১০ হাজার টাকার চেক তুলে দেন ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহাসিন আলী। নৌকা বাইচ অনুষ্ঠানের আগে থেকে দর্শনা আনন্দধামের শিল্পীর গানে গানে মাথাভাঙ্গা নদীর ধারে অবস্থিত দর্শকদের মাতিয়ে তোলেন।
এদিকে, মাঝিদের হেঁইয়ো রে হেঁইয়ো শব্দের ছন্দে মেহেরপুরের ভৈরব নদীতে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহি নৌকাবাইচ প্রতিযোগীতা। সোমবার দিনব্যাপি মুজিবনগর উপজেলার পুরন্দরপুর গ্রামবাসির আয়োজনে গৌরিনগর ঘাটে এই প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হয়। ঐতিহ্যবাহি নৌকা নিয়ে এমন প্রতিযোগিতামূলক খেলা দেখে নতুন প্রজন্মের দাবী তারা প্রতিবছর এই খেলার আয়োজন দেখতে চাই। স্বাধীনতার পর জেলার ভৈরব নদীটি এক সময় মরা খালে পরিনত হলে নৌকা বাইচ প্রতিযোগীতা বন্ধ হয়ে পড়ে। ভৈরব নদী পূনঃখনন করার ফলে নতুন প্রজন্মের কাছে হারোনো এই ঐতিহ্য তুলে ধরতে নৌকা-বাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। ভৈরব নদীর দুপাড়ে নৌকা বাইচ দেখতে হাজার হাজার নারী-পুরুষের ঢল নামে। কেউ নৌকা, কেউ বা বোটে করে নৌকা বাইচ উপভোগ করতে আসেন। প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ২০টি নৌকা অংশগ্রহণ করে। আয়োজকরা বলছেন, নৌকা বাইচ গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলা। যুগে যুগে গ্রাম বাংলায় এ নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এ খেলাকে কেন্দ্র করে গ্রাম বাংলার সকল মানুষ একত্রে মিলিত হয়। নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতায় প্রথম হয় গৌরিনগর দল। খেলা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরন করেন মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি আলামিন হোসেন, মহাজনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমাম হোসেন মিলু, দারিয়াপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তাকিন হোসেন খোকন, সাধারন সম্পাদক মাহাবুব আলম রবিসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। আয়োজক কমিটির সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম জানান, নতুন প্রজন্মের কাছে হারানো এই ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে আজকের এই নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করি। প্রতি বছর এই নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে বলে তিনি জানান। মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন বলেন, ঐতিহ্যবাহী এই নৌকা বাইচ খেলা আবারো নতুন প্রজন্মের কাছে ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। যারা এই আয়োজন করছেন তাদের বিভিন্ন সহযোগিতা করা হবে। আর এই ধরনের আয়োজন যাতে প্রতিবছর হয় তার জন্য সব ব্যবস্থা করা হবে।