ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এ গাড়ির সাথে সাথে হারিয়ে যাচ্ছে কাঠের সেই চাকা তৈরি শিল্প

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:৩০:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭
  • / ৪১১৭ বার পড়া হয়েছে

বিলুপ্তির পথে গ্রামীণ ঐতিহ্য : চুয়াডাঙ্গায় গরুর গাড়ি এখন শুধুই স্মৃতি

হাফিজুর রহমান কাজল: ‘ও কি গাড়িয়াল ভাই, কত রব আমি পন্থের দিকে চাইয়া রে.., যেদিন গাড়িয়াল উজান যায়, নারীর মন মোর ছুইরা রয় রে…, ও কি গাড়িয়াল ভাই, হাঁকাও গাড়ি তুই চিলমারীর বন্দর এ রে’ এক সময়ের এ দেশের বিখ্যাত বন্দর চিলমারীতে এসে এভাবেই গানে গানে ব্রহ্মপুত্র তীরের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য কেন্দ্রের বর্ণনা দিয়েছিলেন বাংলা গানের জনপ্রিয় শিল্পী আব্বাস উদ্দিন। গানে গানে তুলে ধরেন তখনকার প্রধান বাহন গরুর গাড়ি ও গাড়িয়ালের কথা। গানে তুলে ধরেছেন গাড়িয়ালের নববধূর আকুতিকেও। কিন্তু সেই জনপদ থাকলেও কালের প্রবাহে হারিয়ে যেতে বসেছে সেই বাংলার ঐতিহ্যের সাথে যোগসূত্রেয় ও আত্মীয়তা বহু যুগের সেই গরুরগাড়ী। একটা সময় ছিল যখন বাড়িতে কুটুম আসত পালকি কিংবা গরুর গাড়ি চড়ে; বিয়ের বরযাত্রী এসেছে গরুর গাড়িতে চড়ে। বউ যাবে বাপের বাড়ি, তাই প্রয়োজন গরুর গাড়ি। এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে, রেলস্টেশন থেকে বাড়িতে যাওয়া-আসার জন্য একমাত্র বাহন ছিল গরুর গাড়ি। গরুর গাড়ি হল দুই চাকাবিশিষ্ট গরু বা বলদে টানা একপ্রকার যান বিশেষ। গরুর গাড়ির চালির উপরে নৌকার ছইয়ের মতো ছাউনি দেওয়া হতো। সাধারণত: চালক বসেন গাড়ির সামনের দিকে। ছাউনির ভেতরে যাত্রীরা বসতেন। ছাউনির দু’পাশে শাড়ি কাপড় টাঙিয়ে পর্দার ব্যবস্থা করা হতো। সাথে থাকত টিনের ট্রাংক, কিংবা কাপড় পেচানো পোটলা-পাটলি। বিভিন্ন কৃষিজাত দ্রব্য ও ফসল বহনের কাজে গরুর গাড়ির প্রচলন ব্যাপক। গেঁয়োমেঠোপথে ধুলো উড়িয়ে গাড়িয়ালরা চলতেন পল্লীবালাদের নিয়ে। সে ছিল এক অপরুপ নয়নাভিরাম দৃষ্টিকাড়া দৃশ্য। গাড়ি চালাতে চালাতে গাড়িয়াল সুর করে লোকগীতি গাইত। গরুর গাড়ির চাকার ক্যাঁচর ক্যাঁচর শব্দ আর সেসব গান পল্লীর পথে এক ভিন্ন আমেজ ছড়িয়ে দিত। এখনও পল্লীবাংলায় মাঠ আছে, সেসব মাঠে সরষে ফুলও ফোটে। কিন্তু গরুর গাড়ির ওই দৃশ্য সহজে চোখে পড়ে না।
গ্রাম বাংলায় ঐতিহ্যগতভাবে গরুর গাড়ি কিছুদিন আগে পর্যন্তও যাতায়াত ও মালবহনের কাজে প্রভূত পরিমানে ব্যবহৃত হত। কিন্তু বর্তমানে নানাধরণের ইঞ্জিনচালিত যানের ভীড়ে ধীর গতির এই যানটির ব্যবহার হারিয়ে যেতে বসেছে। সভ্যতার প্রায় সূচনালগ্ন থেকেই গরুর গাড়ি এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকার প্রায় সর্বত্রই ছিল যাতায়াত ও পরিবহনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ যান। কিন্তু পশ্চিম ইউরোপে পরে দ্রুতগামী ঘোড়ার টানা গাড়ির ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিবহন ও যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে গরুর গাড়ির ব্যবহার কমে আসে। গরুর গাড়ি সম্পূর্ণরূপে আমাদের দেশিয় প্রযুক্তিতে তৈরি। আমাদের দেশের বাঁশ, কাঠ ব্যবহার করা হয় গরুর গাড়ি তৈরিতে। কাঠমিস্ত্রি ও কামারের যৌথ চেষ্টায় গরুর গাড়ির চাকা তৈরি হয়। গরুর গাড়িও পল্লীবাংলার এক ধরনের লোকশিল্প; কুটির শিল্পও বটে। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে হাওর অঞ্চলে ধান ও খড়-কুটো পরিবহনে গরুর গাড়ির ভূমিকা ছিল অপরিসীম।
আগের দিনে বিয়ে বাড়ি বা মালামাল পরিবহনে গরুর গাড়ি ছিল একমাত্র ভরসা। গরুর গলায় ঘন্টা লাগিয়ে ছই উঠিয়ে গরুর গাড়ি বিয়ে বাড়িতে নেয়া হত। কার গাড়ি আগে যাবে, তা নিয়েও ছিল বিশেষ প্রতিযোগিতা। গ্রামের অবস্থা সম্পন্ন লোকজন ও গৃহস্থরা গরু গাড়ি ব্যবহার করতেন। কখনও কখনও তা আবার ভাড়ায় দিতেন। এখন আর গরুর গাড়ি নেই। গরুর গাড়ি এখন শুধুই স্মৃতি। যান্ত্রিক সভ্যতার যুগে এসে সেই জনপ্রিয় গরুর গাড়ি এখন বিলুপ্ত হওয়ার পথে। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ি এখন বিলুপ্তি প্রায়। প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ ঐতিহ্য এই গরুর গাড়ি। দিনে দিনে নতুন নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবনের ফলে মানুষের জীবনযাত্রার উন্নয়ন ঘটেছে। ইঞ্জিনচালিত গাড়ির পাশে টিকে থাকাটা দায় হয়ে পড়েছে গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ির। এক সময় গরুর গাড়ি ছাড়া কোন গ্রামেই বিয়ে হতো না। হতো না কৃষকের ঘরে খন্দকুটো তোলা, জমিতে সার দেয়া এমনকি বাজারে কৃষকের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি পর্যন্ত করা যেত না গরু-মহিষের গাড়ি ছাড়া।
বর্তমান আধুনিক যন্ত্রের গাড়ি প্রতুলতায় গরু বা মহিষের গাড়ির আর প্রয়োজন হচ্ছে না। গরু-মহিষের গাড়িগুলো যে চাকার উপর ভর করে অনিন্দ্য সুন্দর মেঠোপথ বেয়ে সুমিষ্ট রোদ্রুর ভরদুপুরে কিংবা গোঁধূলিলগ্নে চলত, সেই চাকা ছিল কাঠের তৈরি। এ গাড়ির সাথে সাথে হারিয়ে যাচ্ছে কাঠের সেই চাকা শিল্প। চাকার প্রয়োজনে  জেলার দামুড়হুদাসহ এজনপদে গড়ে উঠেছিল চাকা তৈরির কারখানা। ২৫-৩০  বছর পূর্বে প্রায় প্রতিটি পরিবারেই কম হলেও একটি করে গরুর গাড়ি ছিল। অনেক বিত্তবান পরিবারে ২টি থেকে ৪টি পর্যন্তও গরু-মহিষের গাড়ি ছিল। সে সময়ে অধিকাংশ নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের আয়ের উৎস ছিল গরু-মহিষের গাড়ি। এই গাড়ির উপর নির্ভর করে চলত ঐসব পরিবারের সংসার। মালামাল আনা-নেওয়া, গামীণ বধূদের যাওয়া-আসা চলত এসব গাড়িতে। কিন্তু এখন বাস, মাইক্রোবাস, ভটভটি, নছিমন, করিমনসহ ইঞ্জিনচালিত নানা গাড়িতেই এসব কাজ চলছে। যার কারণে গরুর গাড়ি হারিয়ে যাচ্ছে, নিশ্চিহ্ন হতে বসেছে গ্রাম বাংলার ঐত্যিহ্যবাহী এ বাহন যা হয়ত: পরবর্তী প্রজন্মের কাছে থেকে যাবে চির অচেনা চির অজানা। অম্লান হয়ে থাকবে কেবল কবি-সাহিত্যিকদের কলমের ডগায় কিংবা দাদা-দাদীর গল্পাসরের খোরাক হয়ে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এ গাড়ির সাথে সাথে হারিয়ে যাচ্ছে কাঠের সেই চাকা তৈরি শিল্প

আপলোড টাইম : ১১:৩০:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭

বিলুপ্তির পথে গ্রামীণ ঐতিহ্য : চুয়াডাঙ্গায় গরুর গাড়ি এখন শুধুই স্মৃতি

হাফিজুর রহমান কাজল: ‘ও কি গাড়িয়াল ভাই, কত রব আমি পন্থের দিকে চাইয়া রে.., যেদিন গাড়িয়াল উজান যায়, নারীর মন মোর ছুইরা রয় রে…, ও কি গাড়িয়াল ভাই, হাঁকাও গাড়ি তুই চিলমারীর বন্দর এ রে’ এক সময়ের এ দেশের বিখ্যাত বন্দর চিলমারীতে এসে এভাবেই গানে গানে ব্রহ্মপুত্র তীরের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য কেন্দ্রের বর্ণনা দিয়েছিলেন বাংলা গানের জনপ্রিয় শিল্পী আব্বাস উদ্দিন। গানে গানে তুলে ধরেন তখনকার প্রধান বাহন গরুর গাড়ি ও গাড়িয়ালের কথা। গানে তুলে ধরেছেন গাড়িয়ালের নববধূর আকুতিকেও। কিন্তু সেই জনপদ থাকলেও কালের প্রবাহে হারিয়ে যেতে বসেছে সেই বাংলার ঐতিহ্যের সাথে যোগসূত্রেয় ও আত্মীয়তা বহু যুগের সেই গরুরগাড়ী। একটা সময় ছিল যখন বাড়িতে কুটুম আসত পালকি কিংবা গরুর গাড়ি চড়ে; বিয়ের বরযাত্রী এসেছে গরুর গাড়িতে চড়ে। বউ যাবে বাপের বাড়ি, তাই প্রয়োজন গরুর গাড়ি। এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে, রেলস্টেশন থেকে বাড়িতে যাওয়া-আসার জন্য একমাত্র বাহন ছিল গরুর গাড়ি। গরুর গাড়ি হল দুই চাকাবিশিষ্ট গরু বা বলদে টানা একপ্রকার যান বিশেষ। গরুর গাড়ির চালির উপরে নৌকার ছইয়ের মতো ছাউনি দেওয়া হতো। সাধারণত: চালক বসেন গাড়ির সামনের দিকে। ছাউনির ভেতরে যাত্রীরা বসতেন। ছাউনির দু’পাশে শাড়ি কাপড় টাঙিয়ে পর্দার ব্যবস্থা করা হতো। সাথে থাকত টিনের ট্রাংক, কিংবা কাপড় পেচানো পোটলা-পাটলি। বিভিন্ন কৃষিজাত দ্রব্য ও ফসল বহনের কাজে গরুর গাড়ির প্রচলন ব্যাপক। গেঁয়োমেঠোপথে ধুলো উড়িয়ে গাড়িয়ালরা চলতেন পল্লীবালাদের নিয়ে। সে ছিল এক অপরুপ নয়নাভিরাম দৃষ্টিকাড়া দৃশ্য। গাড়ি চালাতে চালাতে গাড়িয়াল সুর করে লোকগীতি গাইত। গরুর গাড়ির চাকার ক্যাঁচর ক্যাঁচর শব্দ আর সেসব গান পল্লীর পথে এক ভিন্ন আমেজ ছড়িয়ে দিত। এখনও পল্লীবাংলায় মাঠ আছে, সেসব মাঠে সরষে ফুলও ফোটে। কিন্তু গরুর গাড়ির ওই দৃশ্য সহজে চোখে পড়ে না।
গ্রাম বাংলায় ঐতিহ্যগতভাবে গরুর গাড়ি কিছুদিন আগে পর্যন্তও যাতায়াত ও মালবহনের কাজে প্রভূত পরিমানে ব্যবহৃত হত। কিন্তু বর্তমানে নানাধরণের ইঞ্জিনচালিত যানের ভীড়ে ধীর গতির এই যানটির ব্যবহার হারিয়ে যেতে বসেছে। সভ্যতার প্রায় সূচনালগ্ন থেকেই গরুর গাড়ি এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকার প্রায় সর্বত্রই ছিল যাতায়াত ও পরিবহনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ যান। কিন্তু পশ্চিম ইউরোপে পরে দ্রুতগামী ঘোড়ার টানা গাড়ির ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিবহন ও যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে গরুর গাড়ির ব্যবহার কমে আসে। গরুর গাড়ি সম্পূর্ণরূপে আমাদের দেশিয় প্রযুক্তিতে তৈরি। আমাদের দেশের বাঁশ, কাঠ ব্যবহার করা হয় গরুর গাড়ি তৈরিতে। কাঠমিস্ত্রি ও কামারের যৌথ চেষ্টায় গরুর গাড়ির চাকা তৈরি হয়। গরুর গাড়িও পল্লীবাংলার এক ধরনের লোকশিল্প; কুটির শিল্পও বটে। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে হাওর অঞ্চলে ধান ও খড়-কুটো পরিবহনে গরুর গাড়ির ভূমিকা ছিল অপরিসীম।
আগের দিনে বিয়ে বাড়ি বা মালামাল পরিবহনে গরুর গাড়ি ছিল একমাত্র ভরসা। গরুর গলায় ঘন্টা লাগিয়ে ছই উঠিয়ে গরুর গাড়ি বিয়ে বাড়িতে নেয়া হত। কার গাড়ি আগে যাবে, তা নিয়েও ছিল বিশেষ প্রতিযোগিতা। গ্রামের অবস্থা সম্পন্ন লোকজন ও গৃহস্থরা গরু গাড়ি ব্যবহার করতেন। কখনও কখনও তা আবার ভাড়ায় দিতেন। এখন আর গরুর গাড়ি নেই। গরুর গাড়ি এখন শুধুই স্মৃতি। যান্ত্রিক সভ্যতার যুগে এসে সেই জনপ্রিয় গরুর গাড়ি এখন বিলুপ্ত হওয়ার পথে। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ি এখন বিলুপ্তি প্রায়। প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ ঐতিহ্য এই গরুর গাড়ি। দিনে দিনে নতুন নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবনের ফলে মানুষের জীবনযাত্রার উন্নয়ন ঘটেছে। ইঞ্জিনচালিত গাড়ির পাশে টিকে থাকাটা দায় হয়ে পড়েছে গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ির। এক সময় গরুর গাড়ি ছাড়া কোন গ্রামেই বিয়ে হতো না। হতো না কৃষকের ঘরে খন্দকুটো তোলা, জমিতে সার দেয়া এমনকি বাজারে কৃষকের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি পর্যন্ত করা যেত না গরু-মহিষের গাড়ি ছাড়া।
বর্তমান আধুনিক যন্ত্রের গাড়ি প্রতুলতায় গরু বা মহিষের গাড়ির আর প্রয়োজন হচ্ছে না। গরু-মহিষের গাড়িগুলো যে চাকার উপর ভর করে অনিন্দ্য সুন্দর মেঠোপথ বেয়ে সুমিষ্ট রোদ্রুর ভরদুপুরে কিংবা গোঁধূলিলগ্নে চলত, সেই চাকা ছিল কাঠের তৈরি। এ গাড়ির সাথে সাথে হারিয়ে যাচ্ছে কাঠের সেই চাকা শিল্প। চাকার প্রয়োজনে  জেলার দামুড়হুদাসহ এজনপদে গড়ে উঠেছিল চাকা তৈরির কারখানা। ২৫-৩০  বছর পূর্বে প্রায় প্রতিটি পরিবারেই কম হলেও একটি করে গরুর গাড়ি ছিল। অনেক বিত্তবান পরিবারে ২টি থেকে ৪টি পর্যন্তও গরু-মহিষের গাড়ি ছিল। সে সময়ে অধিকাংশ নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের আয়ের উৎস ছিল গরু-মহিষের গাড়ি। এই গাড়ির উপর নির্ভর করে চলত ঐসব পরিবারের সংসার। মালামাল আনা-নেওয়া, গামীণ বধূদের যাওয়া-আসা চলত এসব গাড়িতে। কিন্তু এখন বাস, মাইক্রোবাস, ভটভটি, নছিমন, করিমনসহ ইঞ্জিনচালিত নানা গাড়িতেই এসব কাজ চলছে। যার কারণে গরুর গাড়ি হারিয়ে যাচ্ছে, নিশ্চিহ্ন হতে বসেছে গ্রাম বাংলার ঐত্যিহ্যবাহী এ বাহন যা হয়ত: পরবর্তী প্রজন্মের কাছে থেকে যাবে চির অচেনা চির অজানা। অম্লান হয়ে থাকবে কেবল কবি-সাহিত্যিকদের কলমের ডগায় কিংবা দাদা-দাদীর গল্পাসরের খোরাক হয়ে।