ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

গাংনীতে প্রেমের টানে অজানার উদ্দেশ্যে শ্যালিকা-দুলাভাই

গাংনী অফিস:
  • আপলোড টাইম : ১১:১৯:০৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ মে ২০২২
  • / ৭ বার পড়া হয়েছে

মেহেরপুরের গাংনীতে স্থানীয় সালিশে বেআইনিভাবে আটকে রেখে জোরপূর্বক স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর গ্রহণ করে এক ব্যক্তিকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে গত শনিবার স্থানীয় একটি অনলাইন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সংবাদ সংশ্লিষ্ট আমলি আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট এস এম শরিয়ত উল্লাহর নজরে এলে তিনি স্বপ্রণোদিতভাবে বিষয়টি আমলে নিয়ে গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জকে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেন।

 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিন পূর্বে গাংনী উপজেলার কাজীপুর গ্রামের মজিবর রহমানের মেয়েকে (১৬) নিয়ে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি দেয় বেতবাড়ীয়া গ্রামের জাফর মোল্লার ছেলে শাহাবুল মোল্লা (২৪)। তারা সম্পর্কে শ্যালিকা-দুলাভাই। পরে শাহাবুলের পরিবারের লোকজন তাদের দুজনকে বাড়িতে নিয়ে আসে। উভয় পরিবারের লোকজন বেতবাড়ীয়া গ্রামের ইউপি সদস্য সাইদুর রহমানের বাসায় গ্রাম্য সালিশ বসায়। এসময় দু’পক্ষের কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সংঘর্ষে ২-৩ জন আহত হয়। পরে ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাজীপুর ইউপি সদস্য ফুলচাঁদ এসে দু’পক্ষের মধ্যে সমঝোতা নিয়ে আসেন। ইউপি সদস্য সাইদুর রহমান ও ফুলচাঁদ শাহাবুল ইসলামকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। ওই সময় নগদ ৫০ হাজার টাকা ও এক মাসের মধ্যে আরও ১ লাখ পরিশোধ করতে হবে এমন শব্দ স্ট্যাম্পের লিখিত নেন।

 

এবিষয়ে শাহাবুল ইসলাম জানান, ‘৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাইদুর রহমানের বাড়িতে আমাকে আটকে রেখে গ্রাম্য সালিশ পরিচালনা করে। পরে সকলের সিদ্ধান্তে আমার কাছে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে গ্রাম্য সালিশের মাতব্বররা।’

এবিষয়ে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের (বেতবাড়ীয়া) ইউপি সদস্য সাইদুর রহমান জানান, উভয় পক্ষের লোকজন নিয়ে গ্রাম্য সালিশ করা হয়েছে। সালিশ চলাকালীন সময়ে সামান্য ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। এতে কয়েকজন আহত হতে পারে। তার কাছে কোনো প্রকার জরিমানা করা হয়নি। যাতে ওই মেয়ের বিয়েতে একটা খরচ হবে, তাই বিয়ের খরচ বাবদ ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন।

এবিষয়ে ২ নম্বর ওয়ার্ডের (কাজীপুর) ইউপি সদস্য জানান, ‘শাহাবুল ইসলাম আমার ভাইয়ের জামাই। তাকে ভয় দেখানোর জন্য স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিয়ে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। নগদ ৫০ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে এবং এক মাসের মধ্যে ১ লাখ টাকা দিতে বলা হয়েছে। যেহেতু আমরা তাকে ভয় দেখিয়েছি, তাই শাহাবুলকে টাকা ফেরত দেওয়া হবে।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক স্কুল শিক্ষক জানান, ‘ওই গ্রাম্য সালিশে আমি উপস্থিত ছিলাম। দু’পক্ষের মধ্যে টাকা-পয়সা দিয়ে মীমাংসা চলছিল। এমন সময় দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে হাতাহাতি শুরু হয়। এতে কয়েকজন আহত হয়। ছেলেটিকে ঘরের মধ্যে বন্দী করে উভয় ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যরা জোরপূর্বক এমন জরিমানা আদায় করেছেন যা আমাদের কাম্য ছিল না।’

এদিকে, উক্ত সংবাদটি সঠিক হয়ে থাকলে তা ফৌজদারি অপরাধ যা শাস্তিযোগ্য মর্মে উল্লেখ করে আদালত বিষয়টি তদন্তের জন্য গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ প্রদান করেন। আগামী ১৬ জুন তদন্ত রিপোর্ট দাখিলের জন্য আদালত দিন ধার্য করেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

গাংনীতে প্রেমের টানে অজানার উদ্দেশ্যে শ্যালিকা-দুলাভাই

আপলোড টাইম : ১১:১৯:০৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ মে ২০২২

মেহেরপুরের গাংনীতে স্থানীয় সালিশে বেআইনিভাবে আটকে রেখে জোরপূর্বক স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর গ্রহণ করে এক ব্যক্তিকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে গত শনিবার স্থানীয় একটি অনলাইন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সংবাদ সংশ্লিষ্ট আমলি আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট এস এম শরিয়ত উল্লাহর নজরে এলে তিনি স্বপ্রণোদিতভাবে বিষয়টি আমলে নিয়ে গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জকে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেন।

 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিন পূর্বে গাংনী উপজেলার কাজীপুর গ্রামের মজিবর রহমানের মেয়েকে (১৬) নিয়ে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি দেয় বেতবাড়ীয়া গ্রামের জাফর মোল্লার ছেলে শাহাবুল মোল্লা (২৪)। তারা সম্পর্কে শ্যালিকা-দুলাভাই। পরে শাহাবুলের পরিবারের লোকজন তাদের দুজনকে বাড়িতে নিয়ে আসে। উভয় পরিবারের লোকজন বেতবাড়ীয়া গ্রামের ইউপি সদস্য সাইদুর রহমানের বাসায় গ্রাম্য সালিশ বসায়। এসময় দু’পক্ষের কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সংঘর্ষে ২-৩ জন আহত হয়। পরে ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাজীপুর ইউপি সদস্য ফুলচাঁদ এসে দু’পক্ষের মধ্যে সমঝোতা নিয়ে আসেন। ইউপি সদস্য সাইদুর রহমান ও ফুলচাঁদ শাহাবুল ইসলামকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। ওই সময় নগদ ৫০ হাজার টাকা ও এক মাসের মধ্যে আরও ১ লাখ পরিশোধ করতে হবে এমন শব্দ স্ট্যাম্পের লিখিত নেন।

 

এবিষয়ে শাহাবুল ইসলাম জানান, ‘৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাইদুর রহমানের বাড়িতে আমাকে আটকে রেখে গ্রাম্য সালিশ পরিচালনা করে। পরে সকলের সিদ্ধান্তে আমার কাছে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে গ্রাম্য সালিশের মাতব্বররা।’

এবিষয়ে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের (বেতবাড়ীয়া) ইউপি সদস্য সাইদুর রহমান জানান, উভয় পক্ষের লোকজন নিয়ে গ্রাম্য সালিশ করা হয়েছে। সালিশ চলাকালীন সময়ে সামান্য ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। এতে কয়েকজন আহত হতে পারে। তার কাছে কোনো প্রকার জরিমানা করা হয়নি। যাতে ওই মেয়ের বিয়েতে একটা খরচ হবে, তাই বিয়ের খরচ বাবদ ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন।

এবিষয়ে ২ নম্বর ওয়ার্ডের (কাজীপুর) ইউপি সদস্য জানান, ‘শাহাবুল ইসলাম আমার ভাইয়ের জামাই। তাকে ভয় দেখানোর জন্য স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিয়ে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। নগদ ৫০ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে এবং এক মাসের মধ্যে ১ লাখ টাকা দিতে বলা হয়েছে। যেহেতু আমরা তাকে ভয় দেখিয়েছি, তাই শাহাবুলকে টাকা ফেরত দেওয়া হবে।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক স্কুল শিক্ষক জানান, ‘ওই গ্রাম্য সালিশে আমি উপস্থিত ছিলাম। দু’পক্ষের মধ্যে টাকা-পয়সা দিয়ে মীমাংসা চলছিল। এমন সময় দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে হাতাহাতি শুরু হয়। এতে কয়েকজন আহত হয়। ছেলেটিকে ঘরের মধ্যে বন্দী করে উভয় ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যরা জোরপূর্বক এমন জরিমানা আদায় করেছেন যা আমাদের কাম্য ছিল না।’

এদিকে, উক্ত সংবাদটি সঠিক হয়ে থাকলে তা ফৌজদারি অপরাধ যা শাস্তিযোগ্য মর্মে উল্লেখ করে আদালত বিষয়টি তদন্তের জন্য গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ প্রদান করেন। আগামী ১৬ জুন তদন্ত রিপোর্ট দাখিলের জন্য আদালত দিন ধার্য করেন।