ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

গাংনীতে পাকা রাস্তা নির্মাণে পরিত্যক্ত ইট ব্যবহার!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৩৫:১৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০১৯
  • / ২১৩ বার পড়া হয়েছে

গাংনী অফিস:
মেহেরপুরের গাংনী পৌরসভার শিশিরপাড়া থেকে বাঁশবাড়িয়া পর্যন্ত নতুন রাস্তা নির্মাণে ইটভাটার দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত ইট ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে জনমনে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স রোমান এন্টারপ্রাইজের দাবি, তারা সংশ্লিষ্টদের অনুমতি নিয়ে আদলা বা আধা ভাঙা ইট দিয়ে সড়ক নির্মাণ করছেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে পৌর মেয়র ও পৌরসভার উপসহকারী প্রকৌশলী জামিরুল ইসলাম প্রতিবাদ করে বলেন, ‘এই ইট আমি কয়েকবার গাড়ি থেকে নামাতে দিইনি। কিন্তু আমি দুপুরে বাড়ি গেলে আবারও এই ইট সড়ক তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। যা আমার জানার বাইরে।’
এদিকে, অনিয়মের অভিযোগ তুলে এলাকাবাসী প্রথমে কাজ বন্ধ করে দিলেও পরে জেলা এলজিইডির কর্মকর্তার আশ্বাসে পুনরায় কাজ করতে দেন। কাজ শুরুর এক দিন পর আবারও নিম্নমানের ইটের খোয়া দিয়ে রাস্তা নির্মাণ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাজের অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন নিম্নমানের ইটের কথা স্বীকার করে বলেন, এখন সবাই নিম্নমানের ইটের সঙ্গে যতটুকু পারা যায় ভালো ইট মিশিয়ে কাজ করছে। এক প্রশ্নের জবাবে তাঁরা বলেন, ভালো ইট না পাওয়া গেলে যে নিম্নমানের ইট দিয়ে কাজ করতে হবে, এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তারপরও দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য নিম্নমানের ইট ব্যবহার করা হচ্ছে।’
১১৪০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৩ মিটার প্রস্থের এ রাস্তার কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫৩ লক্ষ টাকা। রোববার বিকেলে স্থানীয়রা রাস্তার কাজে অসস্তুষ্ট ও ক্ষোভ প্রকাশ করায় গাংনী পৌরসভার প্রকৌশলী জামিরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি নিম্নমানের ইট সরিয়ে নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিলেও তাঁরা তাঁর কথা অগ্রাহ্য করে নিম্নমানের ইট দিয়ে কাজ চালিয়ে যান। সাংবাদিকদের তিনি জানান, ‘রাস্তা নির্মাণে যে মানের মালামাল ব্যবহার করার নির্দেশ দেওয়া আছে, সেভাবেই কাজ করতে হবে। এখানে কোনো প্রকার অজুহাত চলবে না। নির্দেশ না মানলে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হবে।’ এ সময় তিনি কাজ বন্ধ রাখার জন্য বললেও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাঁর নির্দেশ মানেনি। এদিকে নি¤œমানের কাজের বিষয়ে স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিকদের বলেন, ‘এভাবে যদি নিম্নমানের কাজ চলতে থাকে, তাহলে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে প্রতিকার চাইব। তারপরও যদি কাজ ভালোভাবে না হয়, তাহলে কাজ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হব।’ স্থানীয়রা আরও জানান, এলাকার কিছু প্রভাবশালী নেতাকে হাত করে ঠিকাদারের লোকজন নিম্নমানের মালামাল দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।
গাংনী পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম বলেন, তাঁর যুবলীগের সম্মেলনে ঢাকায় আসার সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিম্নমানের মালামাল দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। তিনি কাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। যতক্ষণ ভালো মালামাল দিয়ে কাজ করা হবে না, ততক্ষণ কাজ বন্ধ রাখা হবে। রাস্তার কাজে কোনোভাবেই অনিয়ম সহ্য করা হবে না।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

গাংনীতে পাকা রাস্তা নির্মাণে পরিত্যক্ত ইট ব্যবহার!

আপলোড টাইম : ১০:৩৫:১৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০১৯

গাংনী অফিস:
মেহেরপুরের গাংনী পৌরসভার শিশিরপাড়া থেকে বাঁশবাড়িয়া পর্যন্ত নতুন রাস্তা নির্মাণে ইটভাটার দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত ইট ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে জনমনে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স রোমান এন্টারপ্রাইজের দাবি, তারা সংশ্লিষ্টদের অনুমতি নিয়ে আদলা বা আধা ভাঙা ইট দিয়ে সড়ক নির্মাণ করছেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে পৌর মেয়র ও পৌরসভার উপসহকারী প্রকৌশলী জামিরুল ইসলাম প্রতিবাদ করে বলেন, ‘এই ইট আমি কয়েকবার গাড়ি থেকে নামাতে দিইনি। কিন্তু আমি দুপুরে বাড়ি গেলে আবারও এই ইট সড়ক তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। যা আমার জানার বাইরে।’
এদিকে, অনিয়মের অভিযোগ তুলে এলাকাবাসী প্রথমে কাজ বন্ধ করে দিলেও পরে জেলা এলজিইডির কর্মকর্তার আশ্বাসে পুনরায় কাজ করতে দেন। কাজ শুরুর এক দিন পর আবারও নিম্নমানের ইটের খোয়া দিয়ে রাস্তা নির্মাণ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাজের অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন নিম্নমানের ইটের কথা স্বীকার করে বলেন, এখন সবাই নিম্নমানের ইটের সঙ্গে যতটুকু পারা যায় ভালো ইট মিশিয়ে কাজ করছে। এক প্রশ্নের জবাবে তাঁরা বলেন, ভালো ইট না পাওয়া গেলে যে নিম্নমানের ইট দিয়ে কাজ করতে হবে, এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তারপরও দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য নিম্নমানের ইট ব্যবহার করা হচ্ছে।’
১১৪০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৩ মিটার প্রস্থের এ রাস্তার কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫৩ লক্ষ টাকা। রোববার বিকেলে স্থানীয়রা রাস্তার কাজে অসস্তুষ্ট ও ক্ষোভ প্রকাশ করায় গাংনী পৌরসভার প্রকৌশলী জামিরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি নিম্নমানের ইট সরিয়ে নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিলেও তাঁরা তাঁর কথা অগ্রাহ্য করে নিম্নমানের ইট দিয়ে কাজ চালিয়ে যান। সাংবাদিকদের তিনি জানান, ‘রাস্তা নির্মাণে যে মানের মালামাল ব্যবহার করার নির্দেশ দেওয়া আছে, সেভাবেই কাজ করতে হবে। এখানে কোনো প্রকার অজুহাত চলবে না। নির্দেশ না মানলে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হবে।’ এ সময় তিনি কাজ বন্ধ রাখার জন্য বললেও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাঁর নির্দেশ মানেনি। এদিকে নি¤œমানের কাজের বিষয়ে স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিকদের বলেন, ‘এভাবে যদি নিম্নমানের কাজ চলতে থাকে, তাহলে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে প্রতিকার চাইব। তারপরও যদি কাজ ভালোভাবে না হয়, তাহলে কাজ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হব।’ স্থানীয়রা আরও জানান, এলাকার কিছু প্রভাবশালী নেতাকে হাত করে ঠিকাদারের লোকজন নিম্নমানের মালামাল দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।
গাংনী পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম বলেন, তাঁর যুবলীগের সম্মেলনে ঢাকায় আসার সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিম্নমানের মালামাল দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। তিনি কাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। যতক্ষণ ভালো মালামাল দিয়ে কাজ করা হবে না, ততক্ষণ কাজ বন্ধ রাখা হবে। রাস্তার কাজে কোনোভাবেই অনিয়ম সহ্য করা হবে না।